(উৎসর্গ: অমি রহমান পিয়াল। তার সঙ্গেও আমার একটা ছোট্ট মোবাইল কাহিনী আছে..হা:হা:হা:)
[b]এক.
গভীর আগ্রহে আমি মোবাইলের সেটটি দেখলাম। এটাকে সেট বলা যায়, রেডিও বলা যায়,এমনকি ছোট খাটো মিনিবাসও বলা চলে।
ভাইয়া কয়দিন ধরেই একটা মোবাইল সেট দিবে দিবে করছিল, কিন্তু সে যে প্রাগৈতিহাসিক কালের তার প্রথম সেটটি গছিয়ে দিবে সেটা বুঝি নাই।এন্টিক জিনিষের প্রতি আমার ঝোক আছে,কিন্তু মূল্যবান এন্টিক জিনিষ সাথে নিয়ে ঘুরার ব্যাপারেও আমার তীব্র আপত্তি ।বন্যেরা বনে সুন্দর,এন্টিকরা জাদুঘরে।
যথারীতি একটা সিমকার্ড কেনা হলো। মানুষের ঝোক আছে সহজ নাম্বার কেনার ব্যাপারে,আমি পছন্দ করি জটিল নাম্বার।সহজ নাম্বারের সমস্যা হচ্ছে,নাম্বারটি সবার মনে থাকে এবং খাজুইরা ফোন বেশি আসে। ধরা যাক এখানকার কোন ব্লগারের নাম্বার 01711-121314। এখন ,'বারো'-'তেরো' -'চৌদ্দ' এভাবে এই নাম্বারটি সহজেই সবার মনে থাকবে।সো,আপনার দরকার কৌশিকের নাম্বার,রাইসুর নাম্বার কিংবা হাসান মোরশেদের নাম্বার..আপনি তখন সেই 'বারো'-'তেরো' -'চৌদ্দ' অলারে প্রথমে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করবেন,কারন শুধু তার নাম্বারটিই আপনার মনে আছে।
এখন খুজতে খুজতে একটা জটিল নাম্বার কেনা হলো। নাম্বারটি বোধ হয় স্টিফেন হকিং তার কোন গোপন হিসাব নিকাশ করার কাজে লাগিয়েছিলেন,পরে নাম্বারের স্বত্ব গ্রামীন ফোনকে দান করেছেন,আর সৌভাগ্য বশত: আমি সেই নাম্বারের অধিকারী হয়েছি। নাম্বার পেয়ে সবথেকে বড়ো মুশকিল হলো আমার,নিজেই মনে রাখতে পারি না।
নতুন মোবাইলের মালিক হয়েছি,সবাইকে আগ্রহ নিয়ে নাম্বার দিতে যাই,কিন্তু 'জিরো ওয়ান সেভেন...' বলার পরেই তালগোল পাকিয়ে ফেলি।প্রেস্টিজের উপর নগ্ন হামলা!!
তো, এক পদ্ধতি বের করে ফেললাম।কাগজে নাম্বার লিখে সেলোটেপ দিয়ে মোবাইলের পিছনে আটকে রাখলাম। কেউ নাম্বার চাইলেই তাকে মোবাইলের পাছা দেখিয়ে দেই, যা ব্যাটা খাইট্টা খা..।
দুই.
কথায় আছে মাগনা গরুর দাত নাই।পাঠক আপনিও একটা কথা স্মরণ রাখুন যে মাগনা মোবাইলের মাউথ স্পিকার নাই।আমার সদ্য লব্দ মোবাইলের মাউথ ম্পিকার দেখা গেলো খুবই দুর্বল। একেবারে মুখের সামনে নিয়ে কথা না বললে ,ওপর পাশে কথা শুনতে পারে না। তো এখন আমার কথা বলাটা হয়ে গেল একটা উপভোগ্য দৃশ্য। ধরুন কেউ ফোন করেছে,আমি প্রথমে মুখের কাছে নিয়ে বললাম,'হ্যালো' পরক্ষনেই কানের কাছে চেপে ধরে অন্যপক্ষের কথা শুনলাম। এভাবে প্রতিবার কান আর মুখ করতে থাকলাম কথোপকথন চালিয়ে যাওয়ার জন্য। ওনেকটা পুলিশ সার্জেন্টদের ওয়্যারলেসের মতো।
আমার এই শিল্প সম্মত প্রয়াসে লাভ হলো এই যে,কব্জির ব্যায়াম বেড়ে গেল সাংঘাতিক। তাছাড়া আমার ফোনে কথা বলার স্টাইলটা শিল্পকলার মর্যাদা পেয়ে গেল।গোটা ভোরের কাগজ অফিসে অচিরেই সেই শিল্পকলার খবর ছড়িয়ে পড়ল। আমার কাছে ফোন এলে সবাই কাজকর্ম বাদ দিয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে।
সঞ্জীব দা,(দলছুট খ্যাত সঞ্জীব চৌধুরী) একদিন সবাইকে ডেকে বললেন,তোমরা আরিফের মোবাইল নিয়ে যে হাসাহাসি করো,এটা কি ঠিক ?জানো সার্ক সম্মেলনে যে শিল্পী দল আছে তাদের মধ্যে আরিফ কে রাখা হবে। ভারতীয়রা দেখাবে ্ওড়িশ্যা নৃত্য, ভুটান দেখাবে তাদের বাশি নৃত্য আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরিফ দেখাবে মোবাইল কোরিওগ্রাফী।
দেখ কান্ড,আমি মরি আমার যন্ত্রনায়,আর সারা অফিস দেখি ঠা ঠা করে হাসে....
-----------------------------------------
প্রথম পর্ব সমাপ্ত।দ্বিতীয় পর্বে রোমান্টিক কাহিনীগুলো আসতে পারে।সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন..
-------------------------
নিছক রম্য।সত্য মিথ্যা প্রমানের ঠ্যাকা লেখকের না।
মন্তব্য
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
নতুন মন্তব্য করুন