অমি রহমান পিয়ালের বিবাহ (র্দূ)ঘটনা, দিনলিপির ৪র্থ কিস্তি...

আরিফ জেবতিক এর ছবি
লিখেছেন আরিফ জেবতিক (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/০৫/২০০৭ - ১০:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দ্বিতীয় কিস্তি
তৃতীয় কিস্তি

এক.
আমি যেমন কম্পুকানা ,জামাল ভাষ্কর তেমনি নুনকানা।তার জ্বিহবার টেস্ট বোর্ডে নিশ্চয়ই মারাত্মক কোন সমস্যা আছে,তার নুনের আন্দাজ জ্ঞান কম।বাসায় ঢুকে দেখলাম,মৌসুম অলরেডি বিয়ের আসন পেতে রেখেছেন,আর জামাল ভাষ্কর বিপুল উদ্যমে মাংস রান্না করে চলছেন।পোলাও রান্না নাকি অলরেডি শেষ।আগেই বলেছি,জামাল ভাষ্করের স্বাদজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন আছে,তাই সারিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হলো রান্নার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে তদন্ত চালাতে।

সারিয়া একবাটি চাল নিয়ে আসলেন,সেগুলো আক্ষরিক অর্থেই চাল,তবে হয়তো কোন কারনে হলুদ রং দেয়া হয়েছে,সেই চাল আমরা সকলেই এক চামুচ করে মুখে দিলাম। জামাল ভাস্কর প্রবল উদ্যমে এই চালকে পোলাও বলে দাবী করতে লাগলেন ।এগুলোকে পোলাও বলা চলে, তবে লবন দেয়া হয় নি,পেয়াজ দেয়া হয়নি,তেল দেয়া হয়নি,আদা দেয়া হয়নি এমনকি পানি দিয়ে সিদ্ধও দেয়া হয় নি।
সুতরাং আমরা সারিয়াকে দায়িত্ব দিলাম সেগুলোকে সংশোধন করার জন্য।

অন্যদিকে মাংসে যে জামাল ভাষ্কর লবন দেন নি ,এ বিষয়ে আমরা মাংস টেস্ট না করেই সহমত প্রকাশ করলাম।
তুমুল আড্ডা জমলো।কিন্তু প্রত্যেককেই দেখা যায় কিছুক্ষন পর পর উঠে চলে যায়,তারপর মিনিট দুয়েক পর এসে আবার আড্ডাতে যোগ দেয়।নজমুল আলবাব এমনিতেই ভ্যাবাচেকা অবস্থায় আছে।তাকে পথ থেকে ধরে আনা হয়েছে,এবং সে এখনও কনফার্ম হতে পারে নি,কার বিয়ে পড়ানো হবে,তার নিজেরও হতে পারে,সুতরাং সে শরৎ ফিরে এলে তাকে জিজ্ঞেস করলো,ভাই আপনি কোথায় গিয়েছিলেন? শরৎ বিজ্ঞের হাসি হেসে বললো,মাংসের তরকারিতে একটু লবন দিয়ে এলাম,জামাল ভাষ্করকে বলবেন না যেন।শুনলে বেচারা মনে কষ্ট পাবে।
আমরা সবাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করে একযোগে অট্টহাসি দিয়ে উঠলাম।কারন দেখা গেল,সকলেই এই মহতি চিন্তায় একবার করে বাকি সবার অগোচরে মাংসের ঝোলে ১ চামচ করে লবন রেটিং করে এসেছেন।কৌশিক করেছেন,সারিয়া করেছেন,মৌসুম করেছেন,আমি করেছি এবং শেষ পর্যন্ত শরৎও করেছেন। পিয়াল ভাই বিব্রত মুখে বললেন,‘ ইয়ে,আমি অবশ্য বেশি দেইনি,মাত্র দুই চামচ লবন দিয়েছি...’।

দুই.
জামাল ভাষ্কর আর মৌসুম চলে গেলেন তাদের পূর্ব নির্ধারিত দাওয়াতে যোগ দিতে। (আমার অবশ্য প্রবল সন্দেহ এই যে,দাওয়াত টাওয়াত এগুলো সব মিছে কথা।নিজের রান্না সম্মন্ধে জামাল ভাষ্করের নিজেরই প্রবল সন্দেহ দেখা দেয়ায়,তিনি আর মৌসুম বাইরে খেতে চলে গেলেন।)

কাজী চলে এসেছেন।তিনি এসেই বললেন,এটা কোথায় আসলাম?এটা তো বাসা বাসা লাগে না।সবাই এক বয়েসী মানুষ।এখানে নিশ্চয়ই কোন ফ্যাকরা আছে।এ বিয়ে আমি পড়াতে পারবো না।হায়,হায়,বলে কী!! সবার মুখ শুকিয়ে যায়।
দ্রুত বুদ্ধি বাতলায় শরৎ।অন্য বয়েসী কয়েকজনকে ধরে আনা যায় কি না।
ফোন দেয়া হলো জামাল ভাষ্করকে ,তিনি নিশ্চিত করলেন ফেরার পথে তিনি প্রতিবেশীর কিউট বাচ্চাটিকে আধাঘন্টার জন্য ধার আনতে পারবেণ।পাশের ফ্ল্যাটে একজন বর্ষীয়ান কাজের বুয়ার খোজ পাওয়া গেল।তাকেও ধরে আনা হলো দ্রুত।
ব্যস,বেশ একটা বাসা বাসা ভাব এলো।কাজী সাহেবকে দেখে মনে হলো না তিনি সন্তুষ্ট।

এবার বললেন,মেয়ের পক্ষের আত্মীয় স্বজন কোথায়?

(চলবে আরো...)


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।