(আদমচরিত শব্দটির ওপর আমি পোস্টের শিরোনাম হিসেবে মৌরসী পাট্টা নিলাম। এখন থেকে আদম ব্যাটার কান্ড কারখানা ধারাবাহিকভাবে ফাঁস করা হবে।)
আদম একটু দুষ্টু, নিয়মকানুন মানতে চায় না। কিন্তু স্বর্গের নন্দনকাননের কানুন বড় কঠিন, পান থেকে চুন খসলে স্বর্গ থেকে খেদিয়ে দেয়া হয়। আদম সেটা জানে, কিন্তু পরোয়া করে না। বড় ব্যাদড়া।
ঈভ আগের রাতে কচুসেদ্ধ আর ভাত রান্না করেছিলো। পেটপুরে খেয়েছিলো আদম। ঈভ মাগী তরকারিতে সবসময় লবণের নয়ছয় করে, কিন্তু গতরাতে একেবারে টিপটপ লবণ ছিলো সালুনে। শানকি চেটে ফর্সা করে দিয়েছিলো আদম। ঈভ ঠাট্টা করে বলেছিলো, ভুলো কুত্তাটার জন্যেও কিছু রাখলে না? আদম মনে মনে এক দুষ্টু স্বর্গদূতের কাছে শেখা কয়েকটা বাজে গাল দিয়েছিলো ঈভকে। আরে, কুত্তা কচু খায়? কচু তো খায়, শুয়োর! ঈশ্বর তো সেদিন বলেছিলেন, রতনে রতন চেনে শুয়োরে চেনে কচু!
কিন্তু অমন পেটপুরে খেয়েই আদমের কাল হয়েছে। স্বর্গের উদ্যানের একটু দূরে চরতে বেরিয়েছিলো সে বিকেলে, সন্ধ্যে হবো হবো করছে, কুটির বহুদূর, এর মধ্যে প্রবল টাট্টি চেপেছে আদম বাবাজীর। বাধ্য হয়ে এক ঝোপের আড়ালে বসে পড়েছে সে।
স্বর্গে যেখানে সেখানে হাগু করা কঠোর দন্ডনীয় অপরাধ। কত গরুছাগল এই অপরাধে স্বর্গচু্যত হয়ে পৃথিবীর এখানে ওখানে ছিটকে পড়েছে। কিন্তু আদম বড় ব্যাদড়া। তাছাড়া কাপড় নষ্ট করাও স্বর্গে নিষিদ্ধ। কী করবে বেচারা? পড়েছে শাঁখের করাতের মুখে।
গুনগুন গান গাইতে গাইতে একেবারে মন খুলে হেগে যাচ্ছে আদম, এমন সময় তার মনে হলো, ঝোপের বাইরে দাঁড়িয়ে কে যেন তাকে দেখছে। আদমের একটু ভয় লাগলো, শিয়াল না তো? শিয়ালে কামড়ে দিলে জলাতঙ্ক হবে তো!
কাঁপাকাঁপা গলায় আদম বলে, "ক্যাঠা রে? ক্যাঠা ঐখানে? ঐ কথা কছ না ক্যা?"
এবার কে যেন ছুটে পালায় সশব্দে।
আদম একটু নিশ্চিন্ত হয়। খাটাস হবে কোন। শালা, হাগুর সময় দিষ্টোরাপ!
কয়েকটা বড় বড় পাতা প্রয়োগে একটু সাফ সুতরো হয়ে আদম আবারও নিজের আপেলপাতাটা কোমরে পরে নেয়।
পরদিন সকালে একেবারে কুরুক্ষেত্র বেধে যায়।
স্বর্গের পত্রিকা দৈনিক স্বর্গবার্তা খুলে আদম হতবাক! একেবারে প্রথম পৃষ্ঠায় তার ছবি ছাপা হয়েছে, ঝোপে বসে হাসিমুখে মলত্যাগ করছে সে। বড় বড় লাল শিরোনাম, "আদমের কান্ড!"
পত্রিকা পড়ে আদম শিউরে ওঠে, একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা, আদম কী কী গান গাইছিলো, কোন দিকে মুখ করে এই কর্মটি করছিলো, কী কী পাতা দিয়ে পরিষ্কৃত হলো তার বুকভাঙা বিবরণ। আর এহেন কুকর্মের কুফল সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ স্বর্গদূতদের সাক্ষাৎকারও আছে। পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে আদম, এ ব্যাপারে কারও কোন সন্দেহ নাই।
ঈভ তো পত্রিকা পড়ে হেসে খুন। আদম বার কয়েখ চোখ রাঙিয়েছে, ঈভ বারণ শোনে না, সে বড় অবাধ্য। আদম মনে মনে শপথ উচ্চারণ করে, ঈভকে সে একদিন রীতিমতো ইয়ে করে ছাড়বে!
আদমের পত্রিকা পড়া শেষ হতে না হতেই এক লেঠেল স্বর্গদূত এসে মোচে তা দিয়ে বলে, "আদম, চলো হামার সাথে! কতর্া তোমাকে বুলাইতেছে!"
আদমের হাঁটু কেঁপে ওঠে। সর্বনাশ, স্বর্গবাসের পালা চুকলো নাকি?
আদম ঈশ্বরের কাছে গিয়ে একেবারে পায়ের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে কান্না জুড়ে দেয়। লজ্জা পেয়েছে সে। ঈশ্বর ভ্রুকুটি করেন। আদম ইনিয়ে বিনিয়ে সব খুলে বলে, কিভাবে ঈভ কচুসেদ্ধ রান্না করেছিলো, লবণ ঠিক হওয়ায় লোভে পড়ে বেশি খেয়ে ফেলেছিলো সে, পরে বেগ সামলাতে না পেরে ঝোপেঝাড়ে কাজ সারতে হয়েছিলো। সে বড় লজ্জিত, এমনটা সে আর করবে না।
ঈশ্বর একটু নরম হয়ে আসেন। বেচারা, ছেলেমানুষ। না হয় একটু বেজায়গায় হেগে ফেলেছে, জ্ঞানবৃক্ষের ফল তো আর খায় নি! থাক। তিনি এবারের মতো আদমকে ক্ষমা করে দ্যান।
আদম চোখ মুছতে মুছতে আবার ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করে। হাঁটতে হাঁটতে সে ঈশ্বরের অলক্ষ্যে এক কঠিন শপথ নেয়। এক দিন আসবে, আজ হোক কাল হোক দশ বছর পর হোক, এই মিডিয়ার মস্তানি সে নিকেশ করে ছাড়বে। সে না পারলে তার পুত্র, পুত্র না পারলে পৌত্র, পৌত্র না পারলে প্রপৌত্র ... পুরুষানুক্রমে মিডিয়ার টুঁটি চেপে ধরবে আদম। ব্যাটারা সব ফাঁস করে দেয়!
(আচ্ছা, আমাদের মন্ত্রীরাও তো সব আদমসন্তান, নাকি?)
সবাই যেইভাবে চোখের মাথা খাইয়া পুরাতন লেখা পোস্টাইতেছেন তাতে মনে হইল, আমিও দিয়া দিই খান কতক, অন্তত যতদিন না নূতন লেখা সারিয়া উঠিতে পারি..
মন্তব্য
যাউক। মুখা আইলো শেষ পর্যন্ত।
কিন্তু কাকা নতুন লেখা নামাও !
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
মুখে, বুখে আয় বাবুল!
হাঁটুপানির জলদস্যু
চলতে থাকুক। এগুলো প্রতিবারই নতুন মনে হয়।
এই লেখাগুলি তো পুরান হবার নয়। কাজেই আদমের ফ্লাডিং চলিতে থাকুক।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
খুড়ো মুখা
ফাটাইছো সেইরম
চমেৎকার!
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
ওরে মুখা তুই চলে এসেছিস! চালিয়ে যা বাপধন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ম্যালাদিন আগে ব্লগস্পটে পড়ছিলাম।
তারপর থেকে মুখফোড় ছিল প্রিয় বুকমার্কে। তখন আরএসএস বা হাবিজাবি প্রযুক্তি এতো জানতাম না।
সেই মুগ্ধতা আবারো।
স্যালুট ও উত্তম জাঝা।
আহা কি আরামদায়ক দিলাম জাঝা
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
জাঝা
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
মুখফোড়ের আগমনে আজ বাংলার আকাশে বাতাসে আনন্দের ঘনঘটা!
কি মাঝি? ডরাইলা?
মুখফোঁড়ের ফোড়াফুড়ি অব্যাহত থাকুক!
ফারাবী
নতুন মন্তব্য করুন