ট্রপিকাল মেঘ ডিপলোমেটিক সফরে ছুটছে সমুদ্রের ঐ পাশে আর আকাশে এক মস্ত বৈরী চাঁদের ডাকে নিশাচরী কীটের দল বেড়িয়েছে খাদ্য সন্ধ্যানে, যদিও এলাকার মেনি বিড়ালটা এদিক সেদিক ঘুড়ে কিছুই না পেয়ে চোখ ভিজিয়ে জোছনা দেখছে-
অতএব লিখতেই হচ্ছে আরও একটা জোছনাবারের চিঠি, হয়ত তুমি এখন বত্রিশ হাজার বাগানের ঐ পাড়ে কোন ঢুলু ঢুলু পর্দা টেনে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছো, এ চিঠি যাবে তোমার ঘুমের ভেতর মস্তিষ্কের সেই পুরান আবেগী আদ্র লেটার বক্সে; যদিও কাল সকালে ঘুম ভেঙ্গে কিছুই মনে পড়বে না তোমার- কিছুই যায় আসে না; আজ সারারাত তোমার ঘুমের ভেতর গভীর কোন স্বপ্ন হয়ে আমার চিঠি যাবে তোমার কাছে, ধরো - বৃষ্টিধারার মত তিমির কুয়াশা নেমে আমাদের আড়ালে লুকিয়ে রাখে লোক দৃষ্টি থেকে, তবু তোমার আমার ওষ্ঠে আটকা পড়ে আছে সব শব্দ, উচ্চারণ ও চিহ্ন কোন এক বিচিত্র সংকোচে অথবা জড়তায়; যদিও উড়ে যাওয়া একটা কাক আমাদের দেখে ভেবেছে আমরা কষ্টের নীল ফেরীওয়ালা তবু সে জানে এটা- তুমুল প্রিয় শরতের আকাশের মত ঘরে না ফেরের শংঙ্খনীল; ধরো হাঁটতে হাঁটতে আমরা পেয়ে গেলাম একটা বেলী ফুলের গাছ আর অমনি ভাঙ্গলো আমাদের বোধিত্ব- তুমি ভাসিয়ে গাইলে ঐ ভাটিয়ালী গানটা আর স্বপ্নের রহস্যময়ী ক্ষমতায় আমরা তখন একটা নৌকার ছৈয়ের নিচে গুটিসুটি হয়ে নদীর জল দেখছি, ছৈ থেকে বেড়িয়ে দেখো আমরা একটা কাঠের ব্রীজের উপর, ব্রীজের নিচে যে জল তার কোন তল নাই; দূরে দেখো সওদাগরী জাহাজ বাণিজ্য করতে আসছে মধ্যবিত্তের বন্দরে, আচ্ছা তুমি কী জানো দিনের পর দিন এ সমুদ্র যাত্রা কত ভয়াবহ একাকী, তোমার মনে আছে একবার সন্ধ্যায় রেস্তোরায় বসে তোমাকে স্টারফিশ ও বুড়োর গল্প শুনিয়েছিলাম, তোমার চোখ গড়িয়ে দুই কী এক ফোঁটা জল পড়েছিলো আমার হাতে, তাকিয়ে দেখো আমার হাতে সেই জল এখনো গড়াগড়ি খাচ্ছে, এ জল ভীষন ভারী শুকায় না কখনো, আচ্ছা ভালো কথা তোমার চুলের সুগন্ধী ঐ ফুলটা কী- হাসনা হেনা নাকি রমনীর গোপন গোলাপ, ঐ গন্ধটা শিকড়ের মত আমার সমস্ত শরীরের গভীরে ঢুকে পড়ে শিরায় ধমনীতে, যদিও কথাটা বলিনি তবুও আমার চোখে তখন অত্যাচারী জলের সঞ্চয়, চোখ বন্ধ করলেই ভেসে যাবে সমস্ত পৃথিবী, বাড়ন্ত গরম ভাতে ফুঁ দেবার মত করে আমার চোখে ফুঁ দুয়ে তাড়িয়ে দাওতো সব বাষ্প, দেখো প্রজাপতির কার্নিভাল এসেছে আমাদের ব্যক্তিগত ফুল বাগানের টানে অথচ আমরা ভেবেছি আমদের আবেগ বুড়িয়ে গেছে, তোমার অপেক্ষায় এ শহরের গাছগুলোতে কুঁড়িগুলো ফুল হয়ে ফুটেনি, তোমাকে দেখে ওরা ফুটছে পরাগ মৌমাছি আড়মোড়া ভেঙ্গে বেড়িয়েছে চাক থেকে, সমস্ত শহরে যখন নেমে এসেছে স্নিগ্ধ প্রশান্তি এরই মধ্যে ধরো আমরা হাঁটছি, গোল ঘুরানো সিড়ি বেয়ে আমরা উঠে গেলাম আমার বাড়ির ছাঁদের ওপর যেটা নাকি পৃথিবীর সবচেয়ে উচুঁতম পাহাড় কারণ ওখান থেকে পৃথিবীর সব আনাচে কানাচে দেখা যায়, ওখান থেকে আকাশটা সব চাইতে কাছে, কান পেতে শুনি আকাশের নিজস্ব শব্দ যেমন মেঘের নড়া চড়া, পাখির ডানা ঝাপটানো, বাতাসের পিঠে বাতাসের ধাক্কা- আকাশ খবর দেয় দূর নদীয়ার যে বাউল সুন্দর বন গেছে স্বপ্ন শিকারে- সে আর ফিরে আসেনি, ওর সাধনা সফল ভেবে যেইনা সিগ্রেটে আগুন ধরিয়েছি ওমনি দেখি তুমি দূরে সরে যাচ্ছো, দৌড়ে গিয়ে তোমার হাত ধরি, তবুও তুমি দূরে সরে যাচ্ছো, বুঝেছি স্বপ্ন আর চিঠি দুটোর আমার নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে থাকে বাস্তবের মত, ওহো খেয়াল করিনি সকাল হতে চললো, ডাকপিওন এখন ফিরে যাবে বাড়ি, ভোরের শিশিরের মত এই চিঠি মিলিয়ে যাবে তোমার মনের মধ্যে, আর কিছুই মনে পড়বে না, যেভাবে আমাকে মনে পড়েনি তোমার স্বপ্নযুগের পর সহস্র বছর- আবার দেখা হবে নতুন চিঠির ভেতর সেইসব অলিতে গলিতে, সেই পর্যন্ত ধরো- তুমি আর আমি হাঁটছি, শুধু তুমি আর আমি, মানুষের ভালোবাসাটুকু সাথে নিয়ে
ফুলস্টপ
মন্তব্য
সুন্দর স্বপ্ন ! লুবিকে নিয়ে আর কোনো ছবি আঁকছেন না নাকি ?
আঁকি তবে নিতান্তই লুবির মায়ায় পরে, সখ থেকে আর আঁকা হয়না। ফেইসবুকে দুএকটা দিয়েছি।
দারুণ এঁকেছো। স্বপ্ন, ছবি, সবই
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আসলে লেখালিখি আর আঁকার প্রতি যে প্যাশন ছিল তা আর অবশিষ্ট নাই। সখের সাইকেল শেষ হয়ে গেছে, আবার এই সাইকেলে ফেরত আসতে সময় লাগবে। আমার চিঠি লেখার বাতিক আছে। এটাও একজনকে চিঠি লিখছিলাম। দুই চার লাইন লিখে আর তাকে লিখতে পাঠাতে ইচ্ছা হলনা। কিন্তু চিঠিটা শেষ করতে ইচ্ছে হল। এইভাবেই...
ছবি - লেখা দুটোতেই হাত পা খুলে তারা!!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তারাগুলো সাজিয়ে রাখলাম আকাশে
খুব ভালো লাগলো।
তমিজ উদদীন লোদী
ধন্য ধন্য...
কবিতা না হয়ে গল্প হলো কেন !
লেখাটা কবিতার ছাপ বেশী আছে
ছবিটাও সুন্দর হয়েছে
"ফুলগুলো সব লাল না হয়ে নীল হল ক্যান?" অর্ণবের গানটার কথা মনে পড়ে গেলো। কথাগুলো ঠিক লিখেছিতো? লিরিকটা ঠিক মনে পড়ছে না। যাই হোক।
আমার কবিতা আর অন্যান্য লেখার পার্থক্য শুধু দৈর্ঘ্যে। বর্ণনাগত তেমন পার্থক্য নাই। এটা আমার একটা সীমাবন্ধতা। অথবা এমনও হতে পারে আমি গদ্যের মত করে লিখতেও চাইনি কখনো। এভাবেই ভালো লাগে লিখতে। তবে ইদানিং একদমই লিখতে ইচ্ছা করে না। তাই ব্লগেও লেখা হয়না/আসা হয়না ...
ঘনবুনোটের জ্যোৎস্নাকবিতা। রিমঝিম রিমঝিম করে আলো ঝরছে আর কুশি কুশি হাতে ডাকছে তারার কুঁড়িরা।
কবি, ভালো থাকবেন। এক আকাশ শুভেচ্ছা।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তারার পাশে শুভেচ্ছাও আকাশে উঠিয়ে রাখলাম...
অসাধারণ! সিম্পলি অসাধারণ!!
ধন্যবাদ বড় ভাই। ছোট ভাইয়ের এই দুপাতা অখাদ্য পড়েও সব সময় পিঠ চাপড়ে বাহ বাহ দেন, খুব আন্তরিকতা অনুভব করি। সত্যি! আপনি বরাবরই আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ...
গল্পটা পড়া মাত্র নীচের ছবিটার কথা মনে পড়লো।
অনেক ধন্যবাদ।
...........................
Every Picture Tells a Story
ছবিটা চমৎকার। একটা ছবি একেক মানুষ একেকভাবে দেখে। আমি একজন সমুদ্র পর্যটককে দেখছি যে নিজেই কিনা বানভাসী। ভাবতে পারছিনা বাকিরা ছবিটা দেখে কী ভাববে...
কবিতার মতো, চমৎকার।
বহুদিন কবিতা লিখি না। লিখতে পারি না। কেন পারি না কে জানে...
কবিতাই, প্রায়ই সচলে পোস্ট না করা চিঠি দিতে পারেন তো।
হুম দেখি...
নদীর জল আর শিশির মাখা লেখা অন্যরকম এক অনুভবে ডুবিয়ে দেয়।
ভালো লাগলো কাব্যময় গদ্য.....
------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....
-----------------------------------------------------------------------------------------------------
" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি
ধন্যবাদ...
বাহ্।
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
প্রিয় ভাই,
ভালোবাসাদের পাঠিয়ে দিলাম তোর কাছেই!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
ছবিটা দারুণ। লেখাও।
মাঝে মাঝে এভাবে না-পাঠানো চিঠি পোস্ট করলেও পারো।
আবারও মুগ্ধ হলাম, সিম্ফনীর মতো কানে বেজে গেলো একটার পর একটা শব্দের অনুরনন! অসাধারন একটা দ্যোতনা তৈরী হয় আপনার লেখায়। শুভেচ্ছা,
নতুন মন্তব্য করুন