আমরা যারা ড. জাফর ইকবালের বই পড়ে বড় হয়েছি, রাশেদের সাথে সেই যুদ্ধে আমরা সবাই ছিলাম। যুদ্ধে শহীদ হয়ে যাওয়া সব রাশেদ ছিল আমাদের বন্ধু, আমাদের ভাই। আমরা যারা ড. জাফর ইকবালের বই পড়ে বড় হয়েছি, তারা জানতাম সবসময়, একজন বিখ্যাত মানুষ দিয়ে কিছু হয় না, কিন্তু একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়। আমাদের মধ্যে কখনো সাম্প্রদায়িকতার স্থান ছিল না, আদিবাসী থোয়াংসা চাই ছিল আমাদের প্রাণের বন্ধু। আমরা যারা ড. জাফর ইকবালের লেখা শিশুসাহিত্য এখনো পড়ি, আমরা জানি এখন তিনি লিখে যান ডরেমন আর হিন্দী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। দেশে গণিত অলিম্পিয়াড হয়, বিজ্ঞানমনস্ক একটা প্রজন্ম তৈরি হতে থাকে। দেশের মন্ত্রীরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা হবে কি হবে না এই টালবাহানায় লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে তামাশারত, সে অবস্থায় একদিন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঘোষণা আসে- আন্তর্জাতিক গণিত, পদার্থবিজ্ঞান অথবা ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে পদকপ্রাপ্তরা কোন ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই তাদের পছন্দমত বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। বেল অথবা ক্যালটেকে অনায়াসে যিনি নিজের জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারতেন, সেই একজন ড. জাফর ইকবাল ক্ষ্যাপার মত এদেশে পড়ে থেকে প্রজন্ম গড়ার জন্য লড়াই করে যান।
প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর আসলে এই কথাগুলো মনে হয়। কত অভাগা আমরা! এরকম একশজন খাঁটি মানুষ বেঁচে থাকলে কত সহজে এই দেশটা পাল্টে দেয়া যেত!
মন্তব্য
অভাগা দেশ! শুয়োর চরে খায় এখন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সবচেয়ে কষ্ট লাগে যখন দেখি রাজাকার আমার দেশের পতাকা তার গাড়িতে লাগিয়ে ঘোরে।
বাংলাদেশের মানুষের গোল্ডফিশের মস্তিষ্ক। এরপরও রাজাকারকে ভোট দেয়।
---
মিলন
একদিন যখন বাংলাদেশ কথিত "উন্নয়নশীল" থেকে "উন্নত" রাষ্ট্রে পরিণত হবে, আকাশে মেঘেদের মাঝে নিঃশ্বাস নিবে অট্টালিকার সারি, জিডিপির গ্রাফ একপেশে ভাবে উঠতেই থাকবে ক্লান্তিহীনভাবে, ১০০% বিশুদ্ধ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সব সেক্টরে দাপট দেখাবে বিশ্বের রঙ্গমঞ্চে সেইদিনও হাহাকার করে উঠবে এই বুক- আমাদের শিক্ষকরা যদি বেঁচে থাকতেন !
বেশীরভাগ বর্তমান শিক্ষকের ওয়ালে আজকে কিছু লিখা থাকবেনা, ১৪ই ডিসেম্বর তাদের কাছে অন্য ৩৬৪ এর মতই। এই দিনটা পালন করার, স্মরণ করার মেরুদণ্ড - মস্তিষ্ক- হৃদপিণ্ড তাদের নেই। থু !!!!!
আমার ধারণা বাংলাদেশের একাডেমিক সেক্টরের ক্রমশ অধঃপতনের একটা অন্যতম প্রধান এবং নিরব কারণ, দেশের এই প্রথমসারির বুদ্ধিজীবীদের হত্যা। নৈতিক অধঃপতনের ব্যাপারটাও সম্ভবত লং টার্ম বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে এর হাত ধরেই এসেছে।
আজকে ফেসবুকে দেখলাম এক পণ্ডিত দাবি করছেন যে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে আসলে কিছু থাকা উচিত না- বিভেদ সৃষ্টি হয়, আরো নানাবিধ বালছাল। সত্যিকারের বুদ্ধিজীবীরা বেঁচে থাকলে বোধহয় এই মৌসুমী, উঠতি বুদ্ধিজীবিতার প্রাদুর্ভাব থেকেও বাঁচা যেতো।
অনেক অনেক দিন পর তোমার লেখা দেখে ভালো লাগলো। মাঝে মধ্যে কিন্তু লিখতে পারো- এতে কোনো ক্ষতি নাই
অলমিতি বিস্তারেণ
একমত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমরা যারা ড. জাফর ইকবালের বই পড়ে বড় হয়েছি, তারা জেনেছি আমাদের করার আছে অনেক কিছু। গরীব দেশের গরীব নাগরিক হয়েও আমরা নিজেদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শিখেছি।
যতই অন্ধকারের বিষ ছড়ানো হোক না, আগামীদিনের জন্য যে ছেলেমেয়েরা এখন প্রস্তুত হচ্ছে, তাদের দমাতে পারবে না।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
facebook
সেই বেজন্মারা তো দেশটাকে তাদের ছাগোপযোগী বিচরণক্ষেত্র করার জন্যেই একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যায় মেতেছিলো। আমাদের জাফর ইকবালরা আজো তাদের হনন-দৃষ্টি থেকে মুক্ত নন।
বর্তমান প্রজন্ম এই বিষয়টা যতো বেশি উপলব্ধি করবেন, এ জাতির আগামী ততই কণ্টকমুক্ত হয়ে ঊঠবে।
মেহদী নামের কেউ যে সচলে আছেন সেটাই তো ভুলে গিয়েছিলাম ! হা হা হা !
ধন্যবাদ মেহদী।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
স্যালুট বস
কিছুই বলার নেই।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
তোমার স্ট্যাটাস আকারে আগেই পড়েছি লেখাগুলো। এর চেয়ে সহজ করে আসলে কিছু বলার নেই।
কথাটা যতবার মনে হয় কষ্ট, রাগ, হতাশা অনেকগুলো অনুভূতি একত্রে বোধ হয় নিজের ভিতর। এই আজন্ম আফসোস টা আমাদের আর কখনই যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একটা ঘরে কাঁচের শোকেসে আখা আছে অসংখ্য মাথার খুলি, রায়ের বাজার বধ্যভূমি থেকে পাওয়া। আর দেয়ালে আছে হত্যা করা মানুষগুলোর জীবনী, কীর্তি। তাদের এক একজনের মেধার পরিচয় দেখে গর্বে বুক ফুলে ঊঠে, তারপরেই চোখ পরে খুলি গুলোর উপর। কত সহজ প্রতিভা ধ্বংস করে দেয়া!!!
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
কিছু বলার নাই। এই কষ্ট কোনদিন দূর হবার নয়।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আর আমরা যারা বড় হয়ে ড: জাফর ইকবালের বই পড়েছি, আপনার সাথে সহমত।
পড়তে পড়তে একটু আগে এই লেখাটা খুঁজে পেলাম।
এখন ডিসেম্বর মাস চলে, আজ আবার জাফর স্যারের জন্মদিন। এদিনে আমার একটাই আক্ষেপ, স্যারের চিন্তাগুলোকে, পরিকল্পনাগুলোকে নিয়ে গবেষণা করে
রাষ্ট্রযন্ত্র কেনো সামনে এগোতে চায়না?
রাষ্ট্রের চেয়ে ব্যক্তির ভূমিকা বড় হয়ে উঠবে-এটাই বোধহয় রাষ্ট্রের ভয়। এ কারণেই রাষ্ট্রযন্ত্র স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে আসতে পারছেনা।
----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য
লেখার প্রতিটা লাইনের সাথে প্রচন্ডভাবে সহমত, ২৫-২৬ মার্চ আর ১৪-১৫ই ডিসেম্বর, এই মাত্র চারটি দিনে জাতি হিসাবে আমরা কতটা পিছিয়ে গেছি সেটা চারপাশে তাকালেই দেখতে পাই।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
নতুন মন্তব্য করুন