পেপার স্প্রের নাম প্রথম শুনি প্রায় বছরখানেক আগে। ২০১১ সালের নভেম্বরে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিসে টিউশন ফি বৃদ্ধির কারণে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের উপর পেপার স্প্রে নিক্ষেপ করা হয়। মুখ ঢেকে বসে থাকা নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের উপর হেঁটে হেঁটে নির্বিকারভাবে পুরো এক ক্যানিস্টার পেপার স্প্রে খালি করছে ইউনিভার্সিটি পুলিশ, এই ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে ছড়ায় ইন্টারনেটে।
এরপর আর এটাকে "Excessive Force" স্বীকার না করে উপায় থাকে না। স্প্রে ছিটানোর জন্য ভিডিওতে পরিচয় প্রকাশিত হওয়া পুলিশ লেফটেনেন্ট জন পাইক-ই শুধু না, তার সাথে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয় পুলিশ চীফকেও (সূত্র)। সেইসাথে ক্ষতিগ্রস্ত ২১ ছাত্রকে মোট ১ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় (সূত্র)।
উল্লেখ্য, ঘটনাটার অমানবিক দিকটাই ছিল মুখ্য, এখানে কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
বাংলাদেশে বেসরকারি স্কুল শিক্ষকদের উপর এবার একই ঘটনা ঘটাল বাংলাদেশী পুলিশ। এই ঘটনায় সেকেন্দার আলী নামে একজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, “আগে থেকে জ্বরা না থাকলে পেপার স্প্রেতে কোনো ব্যক্তির মরার সম্ভাবনা নেই। যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর যদি ময়নাতদন্ত করা হত, তাহলে তা নিশ্চিত হওয়া যেত।” (সূত্র)
(ছবিসূত্র: ফেইসবুকে কল্লোল মুস্তাফার প্রোফাইল থেকে)
একজন স্কুল শিক্ষক তার সারাজীবনের অবদান শেষে রাস্তায় কুকুরের মত লাথি-গুঁতা আর পেপার স্প্রে খেয়ে মারা গেলেন, এই লজ্জা কোথায় রাখি?
আমাদের শিক্ষকদের চিৎকার করে পড়াতে হয়, তারপরেও তারা নিজের চাওয়াটা জোর গলায় বলা শিখেননি কখনো। সরকার তাদের বেতনের দায়িত্বটা নিক এটা বলতে এদের বেশিরভাগ হয়তো জীবনে এই প্রথম এবং শেষবারবারের মত সোচ্চার হয়েছেন। এইসব দুস্থ-দরিদ্র মানুষ, একদিন রোগে-শোকে যারা নিজ থেকেই মারা যেতেন, এভাবে পোকামাকড়ের মত এদের স্প্রে ছিটিয়ে মারার খুব কি দরকার ছিল? ক্ষমতার দম্ভে সরকার যে আপদ এদেশে আমদানি করলেন, কোনদিন বিরোধীদলে গেলে সেটা উনাদের উপরই প্রয়োগ করা হবে না সেই গ্যারান্টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের আছে তো?
এরপর মৃত শিক্ষক সেকেন্দার আলীর পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়া যেত, এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ অফিসারদের বিচার চাওয়া যেত, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্যে সরাসরি অস্বীকারের পরে এই পেপার স্প্রে'ই যে আদৌ নিষিদ্ধ হবে সেটুকু আশা করাও কষ্টকর হয়ে গেল। শিক্ষকদের দাবী কতটা যৌক্তিক, মাসে প্রায় ৬০০০ টাকার বেতনে এই বাজারে সংসার চালানো যায় কিনা, ১০০ টাকার বাড়িভাড়া ভাতায় কোন বস্তিতেও থাকা সম্ভব কিনা অথবা এসব ঘরোয়া সমস্যার সমাধান না করে সেনাবাহিনীর জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র কেনা কতটুকু যৌক্তিক সেসব অন্য কোথাও আলোচনা করা যাবে, এখন মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে- এই ঝুঁকিপূর্ণ, বিতর্কিত, অমানবিক অস্ত্রটি আমাদের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সত্যিই প্রয়োজন আছে কিনা।
পেপার স্প্রে কতটুকু নিরাপদ বা এর ব্যবহার কতটুকু সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত এটা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে। আমেরিকার বিচার বিভাগের রিপোর্ট পড়লে মনে হয় তুলশী পাতা ধোয়া পানিও হয়তো পেপার স্প্রে থেকে বেশি বিপজ্জনক। আবার লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস পত্রিকার এক রিপোর্টে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ৬১টি মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পেপার স্প্রেকে। যুদ্ধক্ষেত্রেও এর ব্যবহার নিষিদ্ধ, কারণ এটাকে রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হয়। হংকং-এ পেপার স্প্রের ব্যবহার আগ্নেয়াস্ত্রের সাথে তুলনীয়, লাইসেন্স ছাড়া কারো কাছে পেপার স্প্রে পাওয়া গেলে ১৪ বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে। ফিনল্যান্ডেও একই অবস্থা, লাইসেন্স ছাড়া এর ব্যবহার করা যাবে না। বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে এসব দেশে সাধারণ মানুষের পেপার স্প্রে ব্যবহার বা বহনের অনুমতি পর্যন্ত নেই। (সূত্র)
হ্যাঁ, অন্যরকম উদাহরণও আছে, আমেরিকায় সাধারণ নাগরিকেরা আত্মরক্ষায় যত্রতত্র পেপার স্প্রে ব্যবহার করছেন, কিন্তু তাই বলে সেটা অনুসরণীয় হতে হবে এমনটা ঠিক নাও হতে পারে। আমেরিকাতে তো আগ্নেয়াস্ত্র বহনের আইনগত বাধাও আমাদের হিসেবে কল্পনাতীত শিথিল, আমরা, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষেরাও যদি সেটা অনুসরণ করে এখন হাতে হাতে অস্ত্র তুলে নেই, কেমন হবে ব্যাপারটা?
Pepper Spray Update: More Fatalities, More Questions শিরোনামে একটা লেখায় ভীতিকর কিছু তথ্য উল্লেখ করা আছে। কিছু চুম্বক অংশের অনুবাদ তুলে দেয়া যায় এখানে:
১) পেপার স্প্রে নিক্ষেপ করার প্রতি ৬শ' ঘটনায় একজন মারা যাওয়ার পরিসংখ্যান আছে। এরকম ২৬ জনের ময়নাতদন্তের পরে বলা হয়েছে, পেপার স্প্রে সম্পর্কে আমরা এত কম জানি, ময়নাতদন্তে কী দেখে নিশ্চিত হওয়া যাবে সেটা পেপার স্প্রেতে মৃত্যু এ সম্পর্কে মেডিকেল এক্সামিনারদের ধারণা না থাকা খুবই স্বাভাবিক।
২) পেপার স্প্রে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স টেকনোলজি কর্পোরেশন তাদের নিজেদেরই একটা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে কারো উপর মাত্র এক সেকেন্ডের বেশি স্প্রে করা হলে সেটাই মাত্রাতিরিক্ত ডোজ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩) ইউএস আর্মির একটা গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে পেপার স্প্রের মূল উপাদান কার্সিনোজেনিক (ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়ায়), নিউরোটক্সিক (স্নায়ুতন্ত্রের জন্য বিষ), সেই সাথে হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুসে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। সাথে মৃত্যুঝুঁকিরও আশংকা আছে।
৪) আগের থেকে অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট থাকলে পেপার স্প্রেতে ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যায় আরও বেশি।
এত কিছুর পরেও একজন মন্ত্রী কিভাবে দাবি করেন পেপার স্প্রে ক্ষতিকর না, সেটা আমার বোধের বাইরে। ভুলটা স্বীকার করে নিলে মহাভারত অশুদ্ধ হতো না, যেদেশ থেকে এই পেপার স্প্রের বোতল তারা আমদানি করেছেন, চাক্ষুষ উদাহরণ তো সেখানেই আছে। নাকি ক্যানিস্টারটাই শুধু আনতে পারি আমরা, সাথে শুভবুদ্ধিটুকু না?
সন্ধ্যার খবরে জানা গেল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পেপার স্প্রে বন্ধ করার জন্য স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী, কৃতজ্ঞতা থাকলো তার প্রতি। সেকেন্দার আলী আর ফিরবেন না, হতভাগা এই শিক্ষক মরে গিয়ে শেষ শিক্ষাটা দিয়ে গেছেন এই দেশের চোখ বুজে থাকা নীতিনির্ধারকদের। তারপরও কি আরো বেশি ক্ষতি হবার জন্য বসে থাকবেন তারা?
মন্তব্য
স্বরাস্ট্রমন্ত্রীকে পেপার স্প্রে করা হউক।
জামাতশিবিরের ক্যাডাররা পুলিশকে কুপিয়ে মেরে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, ঢাকার রাজপথে পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে, তাদের গায়ে পেপার স্প্রে মারা হয় না, পেপার স্প্রে মারা হয় প্রৌঢ়, ক্লান্ত, অর্ধভুক্ত, আগন্তুক কিছু শিক্ষককে। তাদের দোষ তারা পয়সা চেয়েছেন সরকারের কাছ থেকে। আর সরকারের কাছ থেকে না চাইতেই পয়সা চলে যায় হলমার্কের তানভীরদের পকেটে।
মহিউদ্দীন খান আলমগীরকে পুলিশ ধরে চারদিক থেকে পেপার স্প্রে করছে, এরকম একটা দৃশ্য আজ স্বপ্নে দেখতে চাই।
স্বপ্নের সেই দৃশ্যে মখার পরনের পরিধেয় কিছুটা আলগা করে দেয়ার দাবি জানায়ে গেলাম
এই খবরটা পড়ার পর থেকে আমার শুধু মনে হচ্ছে, জাতি হিসেবে এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখি। একদল শিক্ষক, যাদের কোনো রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি নেই, যারা চায় না যুদ্ধপরাধীর বিচার বন্ধ হোক, যারা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বিদেশে বাড়ি কিনে না, দেশে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করে না, যারা রাস্তায় নেমেছে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে, তাদের উপর এতোটা নির্মম হওয়া কি আদৌ জরুরী ছিলো?
কল্লোল মুস্তফার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেই জানতে পারলাম যে লাল মরিচের গুড়া ৩০ থেকে ৫০ হাজার স্কোভিল(ঝাল মাপার একক) ঝাল; সেখানে এই পিপার স্প্রে প্রায় ২ লক্ষ স্কোভিল ঝাল। কোনো একবেলা রান্নাতে মরিচের গুড়া বেশি পড়ে গেলে কিংবা রান্নার পর হাত সাবান দিয়ে ধুতে ভুলে গেলে পরের কয়েকটা ঘন্টা হাত রীতিমতো জ্বলতে থাকে- সেখানে ২ লক্ষ স্কোভিল ঝালের এই স্প্রে খোলা ত্বকের উপর স্প্রে করলে কী বীভৎস অনুভূতি হওয়ার কথা, তা আমার চিন্তারও বাইরে।
এতো তীব্র ক্রোধ চলে আসে এসব দেখলে যে সত্যি সত্যি কথা বলার আর আগ্রহ থাকে না।
অলমিতি বিস্তারেণ
রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি নেই এটা ভাবার কোন কারন আছে কি? শিক্ষকরা আন্দোলন করার এত সাহস পায় কোত্থেকে ভেবে দেখেছেন কি? এর পিছনে যে জামাত শিবির এর হাত নেই তাই বা নিশ্চিত হলেন কি করে? জামাত শিবির ইদানিংকালের যেকোন সরকার বিরোধী আন্দোলনে পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ে এটা কি জানা আছে আপনার?
আপনার মন্তব্যটা কয়েকবার পড়লাম। কোথাও কোনো সারকাজম মিস করলাম না কি... শেষ লাইন পড়ে মনে হচ্ছে আপনি সিরিয়াস। সিরিয়াস মন্তব্য ভেবেই উত্তরটা লিখছি।
অনেক কিছু লিখেও মুছে দিলাম। আপনার মন্তব্যটা আমার কাছে স্রেফ অমানবিক মনে হলো। সম্ভবত আপনার কোনো ধারণা নেই কীভাবে এইসব শিক্ষকদের দিন গুজরান হয়। একটা লিঙ্ক দিচ্ছি, পড়ে আলোকিত হন। তারপর আমাকে জানায়েন আপনি কোথায় রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি পেয়েছেন।
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=3c0c072390b8bb91dc57d6d5a06ff6c6&nttl=16012013166413
আর জামাত শিবির এই আন্দোলনে কী কলকাঠি নাড়তেছে, সম্ভবত সেই ব্যাপারে আপনার ভালোই জানাশোনা আছে। আমি কি জানি সেই প্রশ্ন না করে, আপনার জ্ঞান আমাদেরকে জানায়েন।
অলমিতি বিস্তারেণ
এসব লোকজনই একদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ার দখল করে বসে পড়ে
শিক্ষকদের আন্দোলন "সরকার বিরোধী" আপনার এমন ভাবারই বা কারণ কি? এজেন্ডায় কোথাও জালিম সরকারের পতন চাই ধরণের কথাবার্তা চোখে পড়ে নাই। শিক্ষকদের বেতনভাতা নিয়ে সংকটটাও এমনকি বর্তমান সরকার সৃষ্ট না, এই সমাজটা বলতে গেলে চিরনিগৃহীত।
জামাত শিবির বগল বাজাচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নাই। সমস্ত জল ঘোলা করে অবশেষে আজকে শিক্ষকদের সাথে বৈঠকে বসতে রাজী হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সরকারের কোন কাজের সমালোচনা করার আগে জামাতের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি কিনা এটা আমি যদি সচেতনভাবে দশবার ভাবতে পারি, সরকারের মন্ত্রীরা ভাবেন না কেন? কেন একজন সেকেন্দার আলী মারা যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়?
জামাত শিবির এই আন্দোলনে ইন্ধন দিচ্ছে এটা গুরুতর অভিযোগ, সেরকম কিছু জানা থাকলে আমি লিখতাম না এই বিষয়ে। এই পোস্টের প্রতিটা ফ্যাক্ট সূত্র সহ উল্লেখ করা হয়েছে, এখানে আপনার মন্তব্যের সূত্রও আশা করব।
আপনার কথাগুলো জাস্ট অমানবিক লাগলো। সরকার বিব্রত হবে এমন কিছু ঘটলে বিরোধীদল তো বগল বাজাবেই, সেটাই তো স্বাভাবিক তাই না?? এমন বাজে অবস্থা তৈরির জন্য তো সরকার ই দায়ী।
আর জামাত শিবির এখন তো আর অহিংস আন্দোলন করেনা, তারা যদি থাকতো তো আমি নিশ্চিত যে পুলিশের পিপার স্প্রে এর বদলে তারাও পুলিশের উপর বিষাক্ত কোন কেমিক্যাল স্প্রে করত। ( ইদানিং তো তাই দেখে আসছি, পুলিশ ই জামাত শিবিরের হাতে মাইর খায়)।
আর আমার মতে এই আন্দোলনের সাথে রাজনৈতিক সন্ধি (দুরভিসন্ধি কি না, তা আপনি প্রমান দেন) আছেই (কারন আমাদের জীবনের সাথে রাজনীতি অঙ্গাঙ্গিক ভাবেই জড়িত, এদের আলাদাভাবে দেখা ভুল)।
মুল লেখার প্রতি সহমত
অনধিকার থেকেই জিজ্ঞাসা করছি, কোথায় থাকেন আপনি? কোথায় বড় হয়েছেন? কোনদিন এমন কোন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে? আমি আন্দোলনে থাতা প্রত্যেকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। মানুষের জীবন কতটা কঠিন হয়, আগে অনেকভাবে জানলেও আরেকটু ভালভাবে জেনেছি।
একজন আওয়ামী লীগার অথবা একজন জামাতীই এভাবে ভাবতে পারে। জামাতী বা বিন্পি হলেও আপনি এই চিন্তা করতেন যে, ভারতীয় দালাল কিংবা র'-এর এজেন্টরা এটা করাচ্ছে।
আমি অনেক আগে থেকেই বিশ্বাস করতাম যে, আমাদের দেশে অসুস্থ মানুষেরা রাজনীতি করে, অথবা রাজীনীতিতে আসলে মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়। বিশ্বাসটা আরেকটু পোক্ত হল।
হেল...
আমার স্কুলের চান্দিয়া স্যারের কথা মনে পড়ে। সেই ৭০ দশকের কথা।
উনি পিটিয়ে আমাদের পশ্চাদ দেশ লাল করতেন। আমি ভাবি আমার আজকের অবস্থানের পিছনে উনার অবদান।
উপরের ছবিটা দেখে আমার চোখে পানি এসেছে। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আমার চান্দিয়া স্যারের মত কোন এক শিখ্খক এরকম ভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
আমি কি সেই জাতির একজন যারা মানুষ গড়ার কারিগরদের এভাবে কষ্ট দেয়
হিমু দা , আপনার মত এইরকম স্বপ্ন আমারও খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
লজ্জায় সত্যি মাথা অবনত হয়ে গেছে। মানুষ গড়ার কারিগররা কি আসলেই এত বিধ্বংসী যে তাদের গায়ে এই স্প্রে ছিটিয়ে দিতে হবে!
গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় হলেও আমাদের দেশের স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয় একটা অভিশপ্ত জায়গা। আজব আজব সব চিড়িয়া এখানে এসে ধানপানচিড়া চিবায় আর যুগান্তকারী একেকটা ডায়ালগ উৎক্ষেপণ করে। স্বরাস্ট্রমন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত হওয়ার আগে সব ভাবী-মন্ত্রীমহোদয়/দয়াকে জাস্টিন টিম্বারলেকের গানের শুধুমাত্র হোয়াট গৌজ অ্যারাউন্ড, কামজ অ্যারাউন্ড- নিদেনপক্ষে দশলক্ষ বার করে শ্রবন, লিখন এবং বলন প্রক্রিয়ায় বাধ্য করা হলে যদি এই মন্ত্রণালয়ের অভিশাপ কিছুটা দূর হয়! নাইলে সামনে ঘোর অমানিশা... মন্ত্রণালয়েরও, এবং সেই সূত্রে দেশেরও।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সীমহীন অমানবিকতার মধ্যে দিয়ে মানুষগুলো বেঁচে আছে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আবারও বলি, 'জাতি হিসাবে এ লজ্জা রাখি কোথায় !'
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
এই লজ্জা আমরা কোথায় রাখি !!!
খবরটা পড়ার পর থেকেই প্রচণ্ড খারাপ লাগছে।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
শুধুমাত্র শিবির/রাজাকারদের উপর প্রয়োগ হলে আপত্তি নাই।
আব্দুল্লাহ এ.এম.
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
লেখাটির জন্য কৃতজ্ঞতা মেহদী ভাই!
_____________________
Give Her Freedom!
পেপার স্প্রে কিন্তু অনেক মেয়েরা ব্যবহার করে আত্মরক্ষার কাজে। কোনো দুষ্ট লোক আক্রমণ করলে ব্যাগ থেকে বের করে স্প্রে করে দিতে পারে। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় নীরব এলাকা দিয়ে চলার সময় মেয়েদের আত্মরক্ষার অস্ত্র হিসেবে পেপার স্প্রে ব্যবহার করতে দেখেছি।
তবে এ বিষয়ে যা পড়লাম সেটা পড়ে আসলেই অবাক হয়েছি। বেশ টক্সিক এই রাসায়নিক অস্ত্র বাংলাদেশে আমদানী করা কেনো দরকার পড়লো সেটা বুঝলাম না।
পেপার স্প্রে আত্মরক্ষার জন্য কার্যকর জিনিস। আম্রিকায় ইউনিভার্সিটির ডর্মে যেসব ছাত্র 'রেসিডেন্সিয়াল এডভাইজার' থাকে তাদের আইন-শৃংখলা রক্ষার প্রয়োজনে ডর্মের অন্য ছাত্রদের ওপর পেপার স্প্রে ব্যবহার করার অনুমতি থাকে। তবে এটা যেন যত্রতত্র ব্যবহার না করা হয় এবং অন্যের ওপর প্রয়োগ করা হলে যন্ত্রণা যে কত তীব্র হয় তা বোঝার জন্য ট্রেনিংয়ে আগে এদের নিজেদের ওপরই পেপার স্প্রে প্রয়োগ করে নিতে হয় এবং যারা এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে তাদের কাছে শুনেছি তারা তাদের সবচেয়ে বড় শত্রুকেও কখনো পেপার স্প্রে মারা হোক তা চায় না। সেজন্য বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া পেপার স্প্রে ব্যবহারের কথাও তেমন শোনা যায় না। বাংলাদেশের পুলিশের হাতে পেপার স্প্রে দেয়ার আগে তাদেরও এই ট্রেনিং দেয়া উচিত ছিলো।
খুবই গুরূত্বপূর্ণ পোষ্ট।
আচ্ছা আত্মরক্ষার জন্যেও যদি এই স্প্রে কে রাখতে হয়, তবুও এটিকে আরেকটু কম বিষাক্ত করে বানানো যায় না কি?
মানে 'সবজান্তা' যেরকম বলেছেন, সেই সূত্র ধরে বলতে চাইছি, ২লক্ষ স্কোভিল থেকে কমিয়ে ৭০-৮০ হাজার স্কোভিল করা যায় না কি?
আর সত্যি, শিক্ষকদের ওপর এরকম ব্যবহারের নিন্দার কোনও ভাষা নেই।
লেখকের সাথে সহমত
নতুন মন্তব্য করুন