১.
কজমোয় পৌঁছে একটু তব্দা খেয়েছি। ২য় বাংলাদেশী ব্লগারস মিট। শেষমেষ যা দাঁড়ালো, ইংরেজী ব্লগার ও বাংলা ব্লগার। তবে জাতীয়তা বাংলাদেশী। প্রতিনিধিত্ব দুটো গ্রুপের। কর্পোরেট ব্লগারস ও সামহোয়ার ইন ব্লগারস। সঙ্গে সচলায়তনকে কমন ধরলে আমি আর জেবতিক আরিফ। জেবতিক সুন্দরভাবে ধরিয়ে দিল আইডিয়াটার অসাড়তা। গতবছর মাকসুদের বাসায় রেজওয়ান, ওয়ামীসহ কয়েকজন ব্লগার মিট করেছেন। এটাকে ধরা হচ্ছে প্রথম বাংলাদেশী ব্লগারস মিট। জেবতিক বললেন, সামহোয়ারের ব্লগাররা অহরহই মিট করছেন। এইতো কালপুরুষের বাসাতেই জড়ো হয়েছিলেন জনাবিশেক। তারপর ও কমন ইস্যুতে মতৈক্য এবং ব্লগারস ডে পালন করার ব্যাপারে আমার অনাপত্তি। সব মিলিয়ে কিছু আইডিয়া নিয়ে ফেরা ক্যারিয়ার ব্লগের জন্য। অফিস ফেরার তাড়া ছিল বলে শেষপর্যন্ত থাকা হয়নি। উপসংহারও তাই অজানা।
২.
অফিসে ফিরে আরেক চমক। একটা সার্কুলার এসেছে ঢাকা ক্লাবের। সেখানে ৩ নভেম্বর থেকো আরোপিত ড্রেস কোডের উল্লেখ। যে পোশাকে সেখানে ঢোকা যাবে না তার তালিকায় সবচেয়ে উপরের নামটা- আওয়ামী ড্রেস। শেখ মুজিব বেনিয়াবাদের প্রতিনিধিত্ব করতেন না জানি। তবে নেতারা স্যুট পড়ে মদের গেলাসে চুমুক দিয়ে জুয়া খেলতে যান কিনা জানা নেই। ফতুয়া, টিশার্ট ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আওয়ামী ড্রেস নামটাই কেমন ধাক্কা খায় চোখে। অনেকটা উপনিবেশবাদ আমলে সব কলোনিয়াল ক্লাবগুলোয় লেখা নেটিভস এন্ড ডগস নট এলাউডের মতো। ১৫টি সব মিলিয়ে, সবশেষে লেখা পুরুষ এবং ছেলে শিশুদের কানে দুল থাকলে ঢুকতে দেওয়া হবে না। জব্বর বলেছেন ক্লাব সেক্রেটারি গ্রুপ ক্যাপ্টেন মুজাহিদুল ইসলাম। মোজা ছাড়া জুতা, লুঙ্গি ও ধুতির সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী ড্রেস।
৩.
ঢাকা শহরে ডেটিংয়ের জন্য জায়গাজমি কমে আসছে। বিশ্ব বিদ্যালয় এলাকার পর এবার নিষিদ্ধ হয়েছে বেইলি রোডের নাটক সরনিতে আপত্তিকর ঘেষাঘেষি। তারপরও হাতের পাঁচ ছিল কিছু। এবার সেখানেও বাগড়া! সবারতো আর লিটন নামের বন্ধু নেই যার ফ্লাটে বৃন্দাবন বানানো যাবে। এরকম কিছু বাস্তুহারার জন্য ওয়েব সিটি ছিল চমতকার জায়গা। বাংলা মটরের এই সাইবার ক্যাফেতে একটা কিউবিকল ভাড়া নিয়ে যা খুশী করা যায়। উপরে লুকানো সিসিটিভি নেই। সেখানে বেরসিক পুলিশ গিয়ে ইচ্ছেমতো নাজেহাল করেছে প্রাইভেসির খোঁজে থাকা কাপলদের। যাক একটা গেছে তো কি হয়েছে, একদম জরুরি হলে একটা ঠিকানা দিচ্ছি। লক্ষ্মীবাজার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল ফেলে একটু এগোলে হাতের বাঁয়ে পড়বে পিজা লক্ষ্মী। সেখানে নিচের কাউন্টারে ঘণ্টা প্রতি ১৮০ টাকা গুনে দিয়ে সোজা সিড়ি বেয়ে দোতালায়। খাট আছে কিনা জানি না, উপরে যাওয়া হয়নি। তবে আমাকে পটেনশিয়াল কাস্টমার ভেবে দরটা বলেছিল ম্যানেজার।
৪.
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে গত ক’দিন ধরেই সরব অনেক ব্লগার। আমিও। তো আমারো একটা প্রশ্ন ছিল জানার, এত মরিয়া জামাত হলো কি করে? ডাইরেক্ট এগ্রেসিভ কথাবার্তা তো তারা বলে না। নেপথ্যে কি? আর্মি ব্যাকিং? বিএনপি বিটের সুমন মাহমুদ বললেন, ভাই নির্বাচন কাছিয়ে আনা হচ্ছে। এবারে জোট বাধার জো নেই। তাই জামাত এসব বলে নিজেদের কর্মীদের ধরে রাখছে। সিট তো পাবে না একটাও। আমি দ্বিমত জানালাম। জামাতের কর্মীরা কোথাও যাবে না। তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। জায়গামতো তাই শুধালাম। সা.. ভাই ডাইরেক্ট বেনিফিশিয়ারি। জাসদ করতেন। এখন মৌলবাদী পত্রিকায় কাজ করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জামাতের কিছু ছেড়া যাবে না- এটা পরিষ্কার করে দিলেন। -সফল না হয় হল এই আন্দোলন। তাতে কি হবে? জামাতের উপরের সারির নেতাগুলো যাবে হয়তো। কিন্ত জামাতের কিছু হবে না। আমার কথা বলি। উত্তরায় এপার্টমেন্ট পেয়েছি। চিকিৎসা ফ্রি। বুড়ো বয়সে ছেলেমেয়ে নিয়ে এত নিরাপদ জীবন দেবে কে? তুমি তো ছাত্রলীগ করতা। কি পাইছো? এই চাকুরি তোমারে কোন নেতা দিছে? বহুত তাবড় ছাত্রনেতা দেখছি স্যান্ডেল ক্ষয় কইরা লাইছে। আর জামাত? শিবিরের পোলাপাইন পাস কইরা চাকুরি পায়। তাগো জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোটা থাকে। তাদের ব্যাংক আছে, পত্রিকা আছে, টিভি আছে। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। মেট্রিক পাস করলে কলেজ নিশ্চিত, ইন্টারমিডিয়েটের পর মেধানুযায়ী ভার্সিটি, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ, বিদেশে পড়াশোনা। খুবই সিস্টেমেটিকলি তারা শিকড় গাড়ছে। অচিরেই দেখবা দেশের সব শীর্ষ বুদ্ধিজীবিরা এন্টিলিবারেশন ঘরানার। কিছুই করতারবা না।
ভয় ধরে গেলো। জাফর ইকবালের লেখাটা মনে এলো।
আমাদেরও কি মাটিলেপা গাড়ি নিয়ে ঘুরতে হবে!
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন