একসময় হঠাৎ করে জিনতত্ত্ব সম্পর্কে পড়ালেখা করতে ইচ্ছে করলো। লেখাটি সে সময়কারই। আমি বিজ্ঞানের ছাত্র নই। ফলে অনেক কিছুই বুঝতে পারি নি। বিভিন্ন বিজ্ঞান সাময়িকী, উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্র থেকে জেনে যা বুঝেছি, তাই পড়তে পড়তে লিখে ফেলেছিলাম। ভুল থাকতে পারে। লেখাটির কোনো অংশে ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য থাকলে তা জানানোর অনুরোধ করা হলো। কৃতজ্ঞতা স্বীকারসহ সংশোধন করা হবে।
রাজ...
এমন দৌড় কেউ কখনও
দেখে নি আর-
ঘুড়ি ভোকাট্টা হতেই এক বালকের পগারপাড়,
অপর বালকদের হাসিঠাট্টায়
চলে কি দৌড়ের এক দারুণ অভিসার?
উসাইন বোল্ট কি কখনও আনন্দ পেয়েছিলো দেখে এমন ঘুড়িদৌড়ের সার।
ঘাসের কণায় লেগে থাকা ভোরের শিশির
সকালবেলা নষ্ট করেই যাবে পড়ন্ত ঘুড়ির দেয়াল
পাতলা কাগজ তো হবেই মলিন, যদি পায় সে যখন-তখন ঠোটস্থ পানির খেয়াল
পৃথিবীটা খুব চালাক চতুর,
উড়ন্ত ঘুড়িকে স্পর্শ করাবেই সে মাটি...
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ
ছোটবেলায় আমার দিনের সবচেয়ে আনন্দজনক মুহূর্ত ছিলো রাত আটটা। ওই সময় বাংলাদেশ বেতার থেকে খেলার খবর প্রচার করা হতো। মাত্র পাঁচ মিনিটের খবর। ওইটুকুরই জন্য সন্ধ্যা থেকে হন্যে হয়ে বসে থাকতাম। বাসার রেডিওটা যদিও শুধু আমার কাছেই থাকতো, কিন্তু সন্ধ্যের পর রেডিওটা ধরার অধিকারটুকুও ছিলো না কারও।
এই উত্তেজনা তুঙ্গে থাকতো আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের দিন। যেদিন রে...
খোলস
সাপের খুব সুবিধে।
বছরে একেকটা সময় আসে যখন সাপ পুরনো খোলসটি ফেলে দিয়ে নতুন খোলসে চিকচিক করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পেছন ফিরে তাকায় কিনা জানি না, তবে এটুকু অনুভব করতে পারি, পুরনো জঞ্জাল বাদ দিয়ে নতুন একটি প্রাণীর সত্ত্বা নিয়ে সে বেড়ে ওঠে।
সাপের মতো মানুষেরও এই সুবিধাটা থাকলে বেশ হতো। বছরের কোনো একটা সময় প্রতিটা মানুষই হয়ে উঠতো নতুন। প্রাকৃতিক এই সুবিধে ন...
অস্পষ্ট কুয়াশাভরা রাত। যতোটা আলো না হলে হাঁটা যায় না, ঠিক ততোটুকুই আলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সবখানে। রাস্তার পাশে এক বিরাট রেইনট্রি। জালের মতো অসংখ্য বাহু গাছটার। সাধ্যের সীমা পর্যন্ত আকাশ দখলে নিয়ে সদর্পে আরো উপরের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। সেই সঙ্গে এক নিবিষ্ট মনে চাঁদের সঙ্গে মেঘেদের আসা-যাওয়ার খেলা দেখছে। মাঝে মাঝে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস আসছে। কোত্থেকে আসছে ডাল-পাতাগুলো নাড়িয়ে, তা...
শীতের রাতে কাঁপতে কাঁপতে এসে কবি একটি কলম চাইলেন;কবিতা লিখবেন তিনি।
সাদরে নরোম সোফায় বসিয়ে আমি তাকে কলমসহ কাগজ তুলে দিলাম,
তিনি লিখতে শুরু করলেন।
কবিতার ভাষা আমি বুঝি না, কিন্তু উঁকি মেরে দেখি- তিনি লিখছেন
ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে;
অক্ষরগুলো মানচিত্রের মতো বাঁকতে বাঁকতে- তবে অবশ্যই,
কিছু একটা কবিতা লিখছেন কবি।
আমি, তবে, কবিতা দেখি না, কবির কাঁপাকাঁপি দেখি
বলি- কবি, একটা গরম কাপড় দ...
কলিকালের এই পৃথিবীটা অবশেষে ছাড়তেই হলো।
হুমায়ূন আজাদের কবিতার লাইন 'মানুষের সঙ্গ ছাড়া আর সবকিছুই ভালো লাগে' ক’দিন ধরেই মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছিলো। প্রথমে মনে হয়েছিলো লাইনটি নিয়ে কিছু চিন্তাভাবনা করার একটি মহান দায়িত্ব প্রয়াত আজাদ সাহেব উপর থেকে আমার ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। চিন্তাটা ভালোই লেগেছিলো। এনজিওতে কাজ করা একজনের মাথার মধ্যে যখন এ ধরনের থিমেটিক চিন্তাভাবনার দায়িত্ব এ...
এক সহকর্মীর কাছে থেকে দুটি বই উপহার পেয়েছি। একটি তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়ের কবি। হীরকজয়ন্তী সংস্করণ হিসেবে ভীষ্মদেব চৌধুরীর ভূমিকা, সংকলন ও সম্পাদনায় অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে এটি। আরেকটি নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ঔপন্যাসিক উইলিয়ম গোল্ডিং-এর লর্ড অব দ্য ফ্লাইজ। শফি আহমেদের ভূমিকা ও সম্পাদনা এবং শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়ার রূপান্তরে এই বইটিও প্রকাশিত হয়েছে অবসর থেকে।
ব...
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে, এক শীতের দিনে, বৃদ্ধনিবাসে ভর্তি করা হলো ৮০ বছরের দেখতে শক্তসামর্থ এক বুড়োকে। ডাক্তার বৃদ্ধনিবাসের পরিচালককে পইপই করে বলে দিলেন, মানসিকভাবে ভালো রাখলে ইনি আরো বছরখানেক বাঁচবেন। শক্ত আঘাত পেলে যে কোনো সময় মারা যেতে পারেন। তার এখন খুব আনন্দদায়ক সময় কাটানো দরকার।
কিন্তু মানসিকভাবে বৃদ্ধকে কে ভালো রাখবে? এখানে সবাই-ই তো বৃদ্ধ! আর এক বৃদ্ধ আরেক বৃদ্ধকে কত...
কী মনে করিয়া রাজা দুষ্মন্ত একা একা শিকারে বাহির হইলেন কেউ বুঝিতে পারিলো না। এমনকি তিনি কোনো উষ্ট্র, অশ্ব কিংবা নিদেনপক্ষে খচ্চরও লইলেন না। সবাই বলিতে লাগিলো- দেশে শকুন্তলার অভাব পড়িয়াছে, তাই রাজা অভাবমোচনে শিকারে বাহির হইয়াছেন।
দুই.
পথিমধ্যে বিরান প্রান্তরে একা অশ্বত্থ বৃক্ষ দেখিয়া রাজা কিছুকাল থামিলেন। বিশ্রাম লইবেন কিনা ভাবিতে ভাবিতেই বৃক্ষতলে আঁচলখানি সাজাইয়া বসিলেন...