আজকে পনেরোই ডিসেম্বর। গতকাল বুদ্ধিজীবি হত্যা দিবস, আগামিকাল বিজয় দিবস।
বাংলাদেশি ফেসবুক ইউজাররা ফেসবুককে রাঙিয়ে তুলছেন আমাদের পতাকার রঙে, লাল সবুজে। একসাথে এতোজনের এই চেষ্টাটা দেখতে পাওয়াটা খুব ভালোলাগা। সাধুবাদ এই সবাইকে।
কিন্তু আমি দুঃখিত। আমি পারছি না।
মুক্তিযুদ্ধ আমি দেখি নাই। এটা আমার কাছে কিছু উপন্যাস, কিছু প্রবন্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটা রঙজ্বলা ছবি, আর ইটের পাঁজায় উল্টেপাল্টে পড়ে থাকা কয়েকটা লাশ মাত্র।
কয়েকটা লাশের ছবি। আসল সংখ্যাটা সম্ভবত ত্রিশ লাখের কাছাকাছি।
আমি আমার আশেপাশে কতজন মানুষের সাথে পরিচিত, সেই সংখ্যাটা আন্দাজ করার চেষ্টা করলাম। সেটা টেনেটুনে দু'হাজার-বাইশশ' মানুষ পর্যন্ত পৌঁছায়। আমার পরিচিত সব কটা মানুষকে যদি কেউ মেরে ফেলে, আমার বাবা-মা, বড়ো ভাই, আমার বোন, প্রিয় বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক, সামনের গেটের দারোয়ান, চায়ের দোকানি, গেটের সামনের রিকশাওয়ালা, আমাকে বেত দিয়ে পেটানো লোকটা যাকে কি না আমি দুচোখে দেখতে পারি না, ধানমন্ডির ফুচকাওয়ালা আর শাহবাগের গেঞ্জির দোকানের চালু ছোকরা; এই সবাইকে যদি কেউ মেরে ফেলে, সংখ্যাটা ঐ ত্রিশ লাখের একটা ছোটো উপাংশও হয় না।
আমার মাথায় কোনওভাবেই ঐ ত্রিশ লাখ লাশের কথা আসে না। আমি চিন্তা করতে করতে থেমে যাই। ত্রিশ লাখ লাশ মানে আসলে কটা লাশ?
একটা লাশ কাকে বলে? একটা মানুষ, নাকি একটা সংখ্যা? একটা 'মানুষ', একটা আস্ত মানুষ, যে আমার মতো করে ভাবে, কথা বলে, খায়, ঘুমায়, দিবাস্বপ্ন দেখে, হাঁটে চলে, এরকম কেউ কি? ঠিক আমার মতো একটা মানুষ?
অথবা একটা সংখ্যা?
আমি আসলে কি? একটা মানুষ, যে ষোল কি সতেরো কোটি মানুষের ভিড়ে একটা তুচ্ছ সংখ্যা? আমার কাছে তো সেটা না। আমার কাছে আমি একটা আস্ত মানুষ। 'আমি' না থাকলে কোথায় থাকতো আর সব কিছু? এই 'আমি'টা যদি লাশ হয়ে যাই, আমার কাছে আর কী বাকি থাকে?
একটা মানুষ। আমার মতো বয়েস হয়তো। পার্থক্য একটা, আমি দাঁড়িয়ে আছি ২০১১-তে, সে দাঁড়িয়ে ছিলো ১৯৭১-এ। আমি বেঁচে আছি, ঠিক আমার মতো একটা মানুষ মরে গিয়েছে।
আমি লাশের ছবিটা মাথা থেকে সরাতে পারি না। আমার ভাবনাটা শুধু ঘুরপাক খায়, আমি, আর একটা লাশ। আমি যদি একটা লাশ হতাম?
বিজয় দিবস। এই দিনে আমাদের বিজয় ঘটেছিলো। আমরা বিজয়ের আনন্দ স্মরণ করি প্রতিটা বছর। কিছু শব্দ আমাদের মাঝে দাগ কাটে.. বিজয়, স্মরণ, মুক্তিযুদ্ধ। কিছু শব্দ আমাদের সামনে গৎবাঁধা উচ্চারিত হয়। আমরা শুনি। শুনতে শুনতে অভ্যাস হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ, বিজয়, স্মরণ। স্মরণ, মুক্তিযুদ্ধ, বিজয়।
কিছুই আমার কানে ঢোকে না। আমি একটা আস্ত হতভাগা।
আমার চোখে শুধু ইটের পাঁজায় পড়ে থাকা কয়েকটা লাশের ছবি ভাসে।
আমি বিজয়ের আনন্দ কাকে বলে মনে করতে পারি না। ডিসেম্বরের তিন তারিখ টিভিতে দেখা পাকিস্তানের পতাকা, রাজাকার-জামায়াত-শিবির নেতার গাড়িতে লাগানো বাংলাদেশের পতাকা, সব একাকার হয়ে যায়।
বিজয়।
দুঃখিত, আমি বুঝতে পারছি না।
আমার মাথার ভেতর কয়েকটা কাদামাটি মাখা লাশ জেঁকে বসে আছে। এই লাশের গায়ে রক্ত ছিলো। আমি আমার হাতে রক্ত দেখতে পাই। আমি বিচার করতে পারিনি, আমি ঘৃণা করতে পারিনি, আমি শুধু দেখেছি মানুষ বিজয়ের আনন্দ করে চলেছে। আমি বিজয় মিছিলের পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছি। আমার চোখে পড়েছে সেই রাজাকার শুওরগুলো মিছিলের পেছন থেকে গাড়িতে চড়ে বেরিয়ে গেলো। গাড়ির বনেট বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে মুড়িয়ে রাখা। আমার চোখে লাশ ভেসেছে। আমি বেঁচে আছি, কারণ ঐ লোকটা মরে গিয়েছিলো।
আমি তোমাদের বিজয়ের আনন্দ দেখি, তবু পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারি না।
সামনে কয়েকটা লাশের ছবি নিয়ে আমি চুপ করে বসে থাকি।
মন্তব্য
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
চমৎকার লেখা। বহুদিন পর পড়া কোনও ভাল কবিতার মত মনে দাগ কেটে গেল। তলস্রোতবাহী আবেগের প্রকাশ এরকম কাব্যগন্ধী হওয়াই ভাল। আপনার লেখার হাত আছে, আরও লিখুন।
লেখাটা ছুঁয়ে গেল।
অসাধারণ লাগলো কথাটা ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
আসলেই কি কিছু বলার আছে আমাদের?
ব্যস্ত আমাদের সময় কোথায় যে পিঠমোড়া হয়ে প্রাণহীন পড়ে থাকা সে মানুষগুলোকে মনে করি?
পড়লাম, খারাপ লাগল, বুকে জমা বাতাসটুকু দীর্ঘশ্বাসে ছেড়ে দিলাম, এরপর?
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
_________________
[খোমাখাতা]
এরপর থেকে প্রতি বিজয় দিবসে আপনার এই লেখাটি মাথায় ঘুরঘুর করবে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
কিছু বলার নেই।
। কি বলব............... ভাষাহীন।
স্রেফ মানুষ নামক প্রাণী না, একটা মানুষ একটা আস্ত মহাবিশ্ব! একটা মানুষ কোটির ভীড়ে স্রেফ একটা 'সংখ্যামাত্র'ই নয়, সে মহাবিশ্বের সমস্ত সংখ্যার যোগফল। একটু ভেবে দেখুন - আমরা প্রত্যেকে মানুষ হিসেবে যে মহাবিশ্ব দেখি, তা অত্যন্ত ইন্ডিভিজুয়ালি দেখি। এই মহাবিশ্ব একান্তই আমাদের নিজস্ব মহাবিশ্ব। আর এর বাইরে ইন্ডিভিজুয়াল মানুষের জন্য এক অর্থে আর কোন মহাবিশ্ব নেই। একাধিক মহাবিশ্ব যখন পরস্পর ওভারল্যাপ করে তখন একটা 'সমাজ' তৈরি হয় বটে, কিন্তু সেটা পরের কথা এবং তাতে করে তার মূল ইউনিট মহাবিশ্বগুলির গুরুত্ব কোনভাবেই কমে না। একটা 'বাস্তব' মহাবিশ্বে যা-যা থাকে তার সবই এই মহাবিশ্বে থাকে - পৃথিবীর তাবৎ মানুষ থেকে শুরু করে গরু-ছাগল-গাছপালা-বাড়িঘর-চাকরিবাকরি-প্রেম-বিয়ে-সন্তান-রাগ-ক্রোধ-ভালবাসা-বন্ধুত্ব-সম্পর্ক-অসম্পর্ক-আশাআকাঙ্খা-চাওয়াপাওয়া-সুখ-দুঃখ-হাসি-কান্না-স্বপ্ন-লক্ষ্য-আদর্শ হয়ে মায় সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্র পর্যন্ত - বিশ্ব ও জীবনের সবকিছু - নিজের এবং অন্যের। এসবের সবকিছুর, সব সংখ্যার, যোগফলই হচ্ছে ঐ মহাবিশ্ব - ঐ ব্যক্তি। এর সবকিছু নিয়েই সে, সবকিছুর নীটফল। এ এক মহাকাব্য। তফাৎ শুধু - এই সমস্ত কিছুই একটা অনন্য, অতুলনীয়, অপূরণযোগ্য চেতনা-বোধ আর উপলব্ধিতে বিজড়িত হয়ে অর্থময় হয়, প্রাণ পায় একজন ব্যক্তির মধ্যেই। আর কোথাও নয়। কোথাও না!!!
তাই আমি মনে করি, একটি মানুষের যখন মৃত্যু হয় - তখন উপরে উল্লেখিত সবকিছু এবং আরো অনেক কিছু নিয়েই, একটি আস্ত মহাবিশ্বের মৃত্যু হয়। ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হলে ৩০ লক্ষ মহাবিশ্বের মৃত্যু ঘটে। তার চেয়ে এক চুলও কম নয়!
হোয়েন আ ম্যান ডাইজ - আ ইউনিভার্স ডাইজ। হোয়েন থ্রী মিলিয়ন পিপল ডাই - থ্রী মিলিয়ন ইউনিভার্স ডাই।
ও হ্যাঁ, আপনি প্রশ্ন করেছেন -
আপনার কথা থেকেই এর উত্তর হয় -
আপনি এখানে 'আপনার' সাথে এঁদের সম্পর্কোল্লেখ করতে পারছেন, এভাবে এনিউমারেট করতে পারছেন - কারন এঁরা আপনার মহাবিশ্বের গল্পের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু তাঁদেরও তো প্রত্যেকের এমনি একটা করে মহাবিশ্ব আছে - আপনার মত সেই মহাবিশ্বেরও প্রতিটির একেকটি নিজস্ব গল্প আছে। আপনি নিজেরটারই তল পান না, তাঁদেরটা পাবেন কোত্থেকে ?!
সুতরাং - "ত্রিশ লাখ লাশ মানে আসলে", আমার মতে অন্তত, স্রেফ 'ত্রিশ লাখ' নয় বরং এককালে ভরভরন্ত ত্রিশ লক্ষ অকাল-বিলুপ্ত মহাবিশ্বের অবশেষ - তার সবকিছু, সব অচরিতার্থ গল্প, কাহিনি, মানুষ, ঘটনা নিয়েই। আপনি ত্রিশ লাখ দূরে থাকুক, এর একটারও তল কোনদিন পুরোপুরি পাবেন না। যেমন পান না চর্মচক্ষে দৃশ্যমান এই একটিমাত্র বাস্তব মহাবিশ্বেরও।
সুতরাং পাকিদের শুধু ত্রিশ লাখ লাশের নয়, ত্রিশ লাখ জীবনে ভরপুর ব্রম্মান্ডকে ধ্বংস করার দাম চুকাতে হবে। তার কমে হবে না। আর তার আগে পর্যন্ত পুনর্মিত্রতা-তত্ত্বের সমর্থক/প্রবক্তা সমস্ত সারমেয়সুলভ প্রকাশ্য 'কামজ প্রয়োজন'-জাত নর্দমার কীটকে ওয়েস্ট বাস্কেট নয়, স্রেফ কমোডে ফেলে ফ্লাশ টেনে সেপ্টিক ট্যাঙ্কে পাঠিয়ে দিতে হবে।
****************************************
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
অনুভব করলাম।
...বীর বাঙ্গালী যাঁরা জীবন দিয়ে স্বাধীনতা এনেছিলেন তাঁরাই সবচেয়ে বড় হতভাগা। তাঁদের হত্যাকারীরা, হত্যার মদদ দানকারীরা সদর্পে ঘুরে বেড়ায় এদেশের মাটিতে, প্রকাশ্যে মিথ্যা বলে এখানে ওখানে স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের বিতর্কিত ভুমিকা নিয়ে।
হতভাগা আমরা সবাই। পুরো জাতীই হতভাগা। কেবল ঐ রাজারারগুলা আর তাদের দোসরগুলা ভাগ্যবান।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ওদের এই ভাগ্যবান হয়ে থাকার স্পর্ধা ভয়ঙ্করভাবে অসহনীয়। আর তার পরেই অনেক বেশি হতাশা।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
আমরা সবাই হতাভাগা
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
সত্যিই তাই। সত্যিই তাই।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
আমি বেঁচে আছি, আমার কাছের লোকটা মরে গিয়েছিল।
আপনাকে ধন্যবাদ, বিজয় দিবসে শুধুই আনন্দোচ্ছাস নয় কিছুটা দায়ভার গ্রহনের মানসিকতা প্রকাশের জন্য।
লেখাটা আগে পড়ার সৌভাগ্য হওয়ায় অপেক্ষা করছিলাম কখন প্রকাশিত হবে। উপরের লাইনগুলো অসাধারণ লেগেছে, হয়তো আমার ভাবনার সাথে মিল পেলাম বলে।
অনন্যসাধারণ অনুভব ও তীব্রতর প্রকাশ। এমনি ভাবনা আরো প্রদীপিত হোক, হোক প্রজ্জ্বলন্ত, হোক ভরপুর দ্রোহে, উচ্ছ্বাসে, চিকীর্ষায়।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ধন্যবাদ গুরু।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
কিঞ্চিৎ অসুস্থতার কারণে সচলে ঢোকা হয়নি দুদিন, এক বড় ভাই লিঙ্কটা দিলেন...
এই লেখাটা আমার অনেকদিন মনে থাকবে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
লেখাটা আমারও অনেকদিন মনে থাকবে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সচলে গত দুদিন এতগুলো ভাল লেখা এসেছে, আরেকটু হলে এই চমৎকার লেখাটা মিস হয়ে যাচ্ছিলো।
অসাধারণ কাব্যময় গদ্য। অনুভূতি এত সুন্দর করে কজন প্রকাশ করতে পারে?
আমারও হয় এই অনুভুতিটা, ত্রিশ লাখ কি একটা সংখ্যা মাত্র? প্রত্যেকটা প্রাণই কি এক একটা অমুল্য কিছু না? আমি যদি এখন না থেকে ৭১ এ থাকতাম তাহলে কি এরকম স্রেফ একটা সংখ্যা হয়ে যেতাম আমি? অথচ এত অগুরুত্বপূর্ণ আমিটা নিজের কাছে কতই না গুরুত্বপূর্ণ, এই আমিটুকু বাদ দিলে তো পুরোটুকু শুন্য।
ত্রিশ লাখের একজনও যদি হতাম আমি, তাহলে ওখানেই সমাপ্তি। এর পরে কি ঘটল না ঘটল তা কি ভীষণ অর্থহীন। কোন ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা কি ওদের ক্ষমা করার জন্য যথেষ্ট, এ যে মানুষের জীবন!
অসাধারণ।
facebook
পড়ার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন