দাড়ি টুপির জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া জনপদ- আজকের বাংলাদেশ

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: শনি, ০৫/০৪/২০০৮ - ২:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশে পরিসংখ্যান বিবেচনায় সংখ্যালঘু হওয়ার অপরাধে পীড়িত ধর্মভিত্তিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। আমাদের রাষ্ট্র এবং প্রশাসন শোভনতার আড়াল ছেড়েই তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের উপরে হামলাউদ্যত। তাদের ক্ষোভ আর বঞ্চনার বোধটা আমার অলীক মনে হয় না। আমাদের সাম্প্রতিক ইশ্বরবিশ্বাসের পথপরিক্রমা এবং আমাদের শাসকগনের বক্তব্যেই তারা ঐসলামিম পরিচয়টা ক্রমবর্ধমান হারে প্রকাশিত হচ্ছে।
এখানে ধর্মীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক নিশ্চয়তা নেই- হিন্দুদের মালাউন বলে, তারা ভারতে অর্থ পাচার করছে- সেখানে সম্পদের সিংহভাগ রেখে আসছে। তারা অধিকতর ভারতপ্রেমী এইসব অভিযোগের ভিত্তি তৈরি করছে আমাদের নিজেদের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা।

ইশ্বরে তাদের অগাধ আস্থা। আমাদের সেনাবাহিনী ক্রমশ একটা ধর্মবাদী যোদ্ধা সংগঠন হয়ে উঠছে। কিংবা তাদের ক্ষমতার চর্চার নিরাপদ পদ্ধতি হলো মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিকে কোমল পরিচর্যা। তাই আমাদের সেনাপ্রধানেরা ক্ষমতার কাছাকাছি আসলেই মসজিদের চত্তরে গিয়ে মৃদু হেসে বসেন।
মসজিদ হয়তো ক্ষমতা চর্চার কেন্দ্র হতে পারে, আমাদের সেনাপ্রধানদের সাথে ধর্মব্যবসায়ীদের দহরম-মহরমের প্রথা পুরোনো। সবাই এই জোব্বা সংস্কৃতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বর্তমানের ছায়াসরকারের প্রধান মইন উ আহমেদও এটার বাইরে যেতে পারেন নি। তিনি মানুষের ধর্মীয় অনুভুতির তারে আঙ্গুল রেখে বাজাতে চাইছেন। বগুড়ায় তার চাষী বাজার উদ্বোধনের বক্তব্যে এটার প্রমাণ ছিলো।
তবে গত কাল জুম্মার পর পর যা হলো সরকারি নির্দেশে সেটাকে কি বলা যাবে। সরকার আসন্ন বোরো মৌসুমে নিরাপদ ফসলের কামনায় বিশেষ মোনাজাট পরিচালনা করেছে। এ মর্মে সরকারি নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছে সরকারের কোন অধিদপ্তর? এটা কি কোনো সামরিক সিদ্ধান্ত- মানে জলপাই কোনো উর্দিধারীর পবিত্র মস্তক থেকে নির্গত সিদ্ধান্ত এটা? না কি আমাদের সচিবালয়ের বিশিষ্ট আলেমদের প্ররোচনা।
বস্তুত ইশ্বরের অনুগ্রহের চেয়ে আমাদের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হওয়াটা ভালো হতো। বিশেষত যখন আমরা জানি তাপমাত্রা এবং চাপমানের তারতম্য এবং এ জনিত প্রতিক্রিয়ায় আমাদের কালবৈশাখী হয়, আমাদের অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি, টর্নেডো আর সাইক্লোন- সবই আসলে প্রাকৃতিক কারণেই ঘটে। এখানে ইশ্বরের মন্দ অভিপ্রায়-ক্ষোভ কিংবা বিরাগের অনুভুতির প্রকাশ নেই। ইশ্বর কুপিত হয়েছেন এমন সিদ্ধান্ত টেনে তাকে তুষ্ট করবার প্রক্রিয়াটাকে আদিবাসি সংস্কার বলা চলে বড়জোর। এর বেশী কিছু বলা যাচ্ছে না এই আচরণকে।
নারীরা একটা সময়ে বিশেষ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত ছিলো, তারাই কৃষিজমিতে বীজ বপন করতো, কুমারি মেয়েরা নেচে গেয়ে পৃথিবীর মনোরঞ্জনের চেষ্টা করতো- এমন কি মদীনায় দেশি ইশতারের ক্ষমতা ছিলো প্রবল। এই যে কুমারী নারীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব, ফসলের লোভে কুমারীর যোনীর রক্ত জমিতে প্রদান, এই সব কুসংস্কারের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায় নি। এমন কি কলের লাঙল দিয়ে চাষ করলে অধিক ফসল ফলে, জেনেটিক্যালি মডিফাইড বীজ ফসলের উৎপাদন বাড়ায়- ইশ্বরের অনুগ্রহ লাভের নানাবিধ তরিকা অবলম্বন না করেও অনেক দেশেই চালের উৎপাদন বেড়েছে।
আমাদের ইশ্বরবিশ্বাসী কিংবা অবিশ্বাসী কৃষি গবেষকেরা এমন ধানের গাছ উদ্ভাবন করেছেন যারা পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে- বন্যায় তাদের কোনো ক্ষতি হয় না।
এইসব বোজ্ঞানিক প্রথাগত গবেষণার ফসল। কোনো অলৌকিকত্ব নেই এখানে।
তবে সরকার এমন একটা ইঙ্গিত দিলো এই আচরণে যে সব কিছুই সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাইরে এখন. অতিলৌকিক কোনো ঘটনাই আমাদের উদ্ধার হতে পারে।
নিয়মিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রচারে নতুন মাত্রা যোগ করছে নিয়মিতই স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো। ইসলামি টিভি আগমনের পরে এই নতুন উন্মাদনার সাথে পাল্লা দিতে ইসলামী অনুষ্ঠানের সময় বাড়ানো হয়েছে-
এমনই এক অনুষ্ঠানে আমার প্রাক্তন শিক্ষক শমসের আলী বলেছেন পহেলা বৈশাখ আসলে একটা ব্যঙ্গ- দরিদ্র মানুষের দারিদ্র নিয়ে ব্যঙ্গ- আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যে এটা নেই- সেখানে মানুষ প্রতিদিন পান্তা খায়, বছরে একদিন পান্তা খেয়ে আমরা বাঙ্গালী হয়ে যাবো না। তার এই কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। একদিন ইলিশ মাছ ভাজা দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে আমরা বাঙ্গালি হয়ে যাবো না। আমাদের এই শেকড়ে ফেরবার টানটাকে অপমান করলো যে বক্তব্য সেটাকে মানতে আপত্তি আছে আমার।
মানুষ সংস্কৃতি নির্মাণ করে। সাংস্কৃতিক উৎসবে নিত্যনতুনত্ব- অভিনবত্ব আনবার প্রয়াসটা নিন্দনীয় নয় মোটেও।
এই একটা আনন্দ উৎসবে সবাই নিজের সংস্কৃতিকে স্মরণ করছে এটাতে দোষের কি আছে।
হালখাতার মতো পূঁজিবাদী কিংবা সামন্ততান্ত্রিক উৎসব তার কাছে ঐতিহ্যসংলগ্ন মনে হয়। শমসের আলীর ভাবনার জগতে প্রবেশ করবো কি না এটা নিয়ে ভাববার অবকাশ আসলে ভাববো। তবে এই একটা মানুষ বাজারের মলম বিক্রেতার মতো খুবই আকর্ষনীয় বাচনিক যোগ্যতার অধিকারি, এটা মেনে নিতেই হবে। তাই তিনি যখন বললেন-হালখাতার ভেতরে একটা হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে উঠে মহাজন আর খাতকের ভেতরে- মানুষের দেনা- পাওনার হিসাব নতুন বছরের খাতায় তুলে রাখা, মানুষের দারিদ্রের চিহ্ন তুলে রাখা ভালো অনুষ্ঠান- এটা ঋণদাতা এবং ঋণগ্রহীতার ভেতরে আত্মার বন্ধন তৈরি করে সেটা মানতেই হবে।
তুমি গত বছর আমার কাছে ৫০০ টাকা ঋণী ছিলে, এ বছর শুধেছো ২০০- হাল নাগাদ করে নতুন বছরের খাতায় তোমার নামে ৩০০ টাকা লিপিবদ্ধ হলো। এ বছরের খন্দের জন্য কত লাগবে- আসো মিস্টিমুখ করো- দুপুরে খেয়ে যাও।
এই পদ্ধতিতে অনেক সুবিধা আছে। এটা প্রতিষ্ঠানিক প্রয়োজন, বছরের প্রথম দিনেই নিজের অশোধিত ঋণের অঙ্ক জেনে নেওয়া ভালো।
তবে প্রতিদিন আমাদের কৃষকেরা পান্তা ভাত খায়- এই সহজ তথ্য বলে দিয়ে আমাকে রীতিমতো বিষন্ন করে ফেললেন শমসের আলী। চাষীরা পান্তা খাওয়ার সুযোগ পায়? মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলে গেছে, এখন সকালে মুড়ি- গুড়- আটার রুটি গুড়, চিড়া কোঁচরে বেধে যাওয়া কৃষকেরা সবাই পান্তাজীবি হয়ে গেছে।
বিজ্ঞ মানুষেরা যাহাই বলেন সেটাই সঠিক।
এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শহুরে মানুষের নির্মমতার দলিল তুলে ধরে শমসের আলী আমাকেও ঋণী করে ফেললেন। যদি সুযোগ পাই এ বছর হালখাতায় এই ঋণের কথা তুলে আসবো আমি।
অন্য এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের কথা শুনে আরও ভালো লাগলো। তিনি হাসানুজ্জামান।
আমার প্রিয় এক ছোটো ভাই জগন্নাথ হল থেকে ফোন করে জানালো সেখানে বিক্ষোভ মিছিল চলছে এখন। তারা হাসানুজ্জামনের পদত্যাগ দাবি করছে-
তার বক্তব্যে অন্য রকম কিছুর সুর ছিলো। আমাদের নিয়মিত কথোপকথনে মাঝে মাঝেই এই ধর্মীয় সহিংসতা এবং তাদের নিষ্পেষণের বক্তব্য চলে আসে। সে আক্রান্ত বোধ করে। আমাদের সংস্কৃতিতে ইসলাম ভিন্ন অন্য কিছুর অস্তিত্ব তেমন প্রকট না। এই জায়গাটাতে আমি মাঝে মাঝে একমত হতে পারি, মাঝে মাঝে তাক ধমক দিয়ে বলি- তুই বেশির ভাগ সময় এই ধর্মপরিচয়টাকে সামনে নিয়ে আসিস। এইটা ঠিক না, আমরা আলোচনার ভেতরে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আনতে চাচ্ছি না।
তবে তার ক্ষোভের কারণও আছে- তোমরা এই দেশে থাইক্যা কি করবা, তোমাগোর দেশ ঐ ইন্ডিয়া- সেইখানেই তো বাসাবাড়ী তৈরি করছো তোমরা- ঐখানের ব্যাঙ্কেই টাকা জমাও- এইখানে থাকো আর ঐখানের গুনগান গাও-
যদিও এসব অশোভন কথার কোনোটাই আমি উচ্চারণ করি নি কোনো দিনও এর পরেও মাঝে মাঝে আমারও বিরক্ত লাগতো এই সাম্প্রদায়িক ভীতটা-
তবে এখন মনে হচ্ছে তারা আক্রান্ত বোধ করে কারণ আমরা সংখ্যাগুরু হিসেবে তাদের সেই নিরাপত্তা কিংবা সাংস্কৃতিক নিশ্চয়তা দিতে পারি নি, তাদের ধর্ম পালন এবং জীবন যাপনের নিরপাদ পরিবেশ তৈরি করতে আমরা ব্যর্থ। আমরা ব্যর্থ একটা ধর্ম পরিচয় বিহীন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংস্কৃতি নির্মানে।
তাই যতই তার পরিচিত জন ৭১এ করিম, মোসাদ্দেক সালেদদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করুক না কেনো- শেষ পর্যন্ত তারা সেই মালাউন থেকে গেলো। আমার এক শিক্ষক একবার বলেছিলো- আত্মসম্মানহীন একদল কাপুরুষের সম্মিলিত নামবিশেষ্য মালাউন- এদের নিজস্ব সম্মান বলে কিছু নেই- তার কথায় লজ্জিত বোধ করেছিলাম, শৈশবে আমরাও একই রকম ভাবে অনেক সময়ই আমাদের হিন্দু সহপাঠীদের মালাউন বলে হেনেস্তা করেছি, হিন্দু হিন্দু তুলসী পাতা- হিন্দু খায় গরুর মাথা- এইসব শ্লোগানে তাদের ভেতরে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়েছি- এই পরিণত বয়েসে এসে মনে হয়েছে এসব মোটেও সঠিক কোনো আচরণ ছিলো না। তবে এই আচরণ যে সঠিক নয় তা আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংস্কৃতি থেকে শিখতে পারি নি,এই সংস্কৃতির শিক্ষা নেই হাসানুজ্জামানেরও।

হাসানুজ্জামান একজন দ্বীনে ইসলামের সেবক। তিনি পড়ান রাজনৈতিক সংস্কৃতি- প্রথম আলোর আজকের শেষ পাতায় তার কীর্তি বর্নিত হয়েছে-
মানুষের ধর্মপালনের স্বাধীনতা- ধর্ম বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা এবং ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতার ভেতরে কোনটাকে নিয়ন্ত্রন করা উচিত - এই প্রশ্নের উত্তরে আমার বক্তব্য হবে। মানুষের অতিরিক্ত ধর্ম পরিচয়কে নিজের ঢাল করে তোলার প্রক্রিয়াটাকে নিষিদ্ধ করা উচিত। মানুষের ধর্ম প্রচারের বাতিক, এবং ধর্মীয় বিধি চাপিয়ে দেওয়ার বাতিককে নিয়ন্ত্রন করা উচিত।

হাসানুজ্জামামনের নিজস্ব ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে আমার প্রশ্ন নেই- তার যা ইচ্ছা তিনি বিশ্বাস করতে পারেন। তার যদি মনে হয় মেয়েদের ঢেকে আব্রু মেনে পোশাক পড়া উচিত- সেটা তার নিজস্ব বিশ্বাসের স্বাধীনতা- এখানে আমি কোনো খবরদারির পক্ষপাতি নই- কিন্তু ক্লাশরুমে যখন তিনি শিক্ষক তখন পাঠ্যসূচিকে সম্মান করা তার পেশাগত দায়িত্ব। পেশাগত দায়িত্ব পালনে অনীহা কিংবা ছাত্রদের জিম্মি করে তাদের মনের বিরুদ্ধে কিছু করতে বাধ্য করাটা রীতিমতো অন্যায়।
তিনি ক্লাশে ধর্ম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। অনুশোচনাবিহীন ভাবে বলছেন চাইলে বিধর্মীরা তার ক্লাশ নাও করতে পারে- তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সকল ছাত্রকে ধর্মীয় পরিচয়ে চিহ্নিত করছেন। তিনি বলেই দিচ্ছেন- ক্লাশে ঢুকবার প্রথম এবং অন্যতম যোগ্যতা তার ধর্ম পরিচয়। এই যে ধর্মবোধকে সামনে নিয়ে আসা -এটা শিক্ষক হিসেবে তার নির্দিষ্ট দায়িত্বের প্রতি অবহেলা প্রদর্শনের পর্যায়ে পরবে কি না?
বাংলাদেশের দন্ডবিধির ২৯৫ থেকে ২৯৮ ধারায় যে ফৌজদারি অপরাধ তিনি করলেন সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সংবাদের বিস্তারিত এখানে
http://www.prothom-alo.com/mcat.news.details.php?nid=OTIyMTY=&mid=Mg==

তবে এটাতে আমার শুধুমাত্র বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিবর্তন নজরে আসলো। আমরা পুনরায় ধর্মীয় বিদ্বেষের নোংরা পথে চলাচল শুরু করেছি। আমাদের সাংস্কৃতিক নির্মাণের জায়গাটাতে এখন শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয় মুখ্য হয়ে উঠছে। এই আত্মবিধ্বংসী পথ থেকে আমরা ফিরে আসবো কবে? আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও এই প্রথার চর্চা চলছে এবং সাম্প্রতিক সময়ের খবরের কাগজে এবং আমাদের সরকারের বিভিন্ন আচরণ এবং উক্তিতেও এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আমরা সবাই দাড়ি- টুপির জঙ্গলে পথ হারাচ্ছি।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এক কথায় চলুক

তীরন্দাজ এর ছবি

"মানুষের অতিরিক্ত ধর্ম পরিচয়কে নিজের ঢাল করে তোলার প্রক্রিয়াটাকে নিষিদ্ধ করা উচিত। মানুষের ধর্ম প্রচারের বাতিক, এবং ধর্মীয় বিধি চাপিয়ে দেওয়ার বাতিককে নিয়ন্ত্রন করা উচিত।"

১০০ ভাগ সহমত। না হলে ধর্ম আর ধর্ম থাকে না, চাপিয়ে দেয়া এক অনুশাসনে পরিনত হয়।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

এম. এম. আর. জালাল এর ছবি

ভালো লাগলো। সংবাদের লিংক
আরো পড়ুন "Pakistan: Between Mosque and Military"-- Husain Haqqani
====
এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"


এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"

দিগন্ত এর ছবি

আঃ, এই লেখাটাও দারুন।

আমার তো মনে হয়না গত ১৫ বছরে এ নিয়ে ভারতের চেয়ে বেশী কোনো দেশে সমস্যা হয়েছে। বাররি মসজিদের ঘটনার পর থেকে দুদিকে হিন্দু আর মুসলিম মৌলবাদের যেরকম প্রসার ঘটছে তার ওপর এসে মৌলবাদী শক্তি সরকারেও স্থান করে নিল। কিছুই বলার নেই, আসলে সবটাই পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে ... সমাজের পিছিয়ে পড়াদের ভুলিয়ে রাখারা জন্য আফিম তো চাই !!
---------------------------------
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

দাড়ি টুপির জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া জনপদ- আজকের বাংলাদেশ
‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍

শিরোনামেই (বিপ্লব) আর জাঝা

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
A clean house is a sign of a misspent life

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এটা ঢাকা ইউনিভার্সিটির বিষয় বলে আমরা জানতে পারছি
কিন্তু এরকম ঘটনা দেশের অনেক জায়গায় ঘটে
বিশেষ করে একেবারে প্রাইমারি লেভেলেও ঘটছে

বিশ্ববিদ্যালযের স্টুডেন্টরা প্রতিবাদ করতে পারে। কিন্তু প্রাইমারি স্কুলের স্টুডেন্টরা লজ্জায় স্কুল ছেড়ে দেয়। আর যারা থাকে তারা টিচারদের ওই দৃষ্টিভঙ্গিকেই সত্য বলে ধরে নেয়

আমার মনে হয় ধর্মীয় বিষয়টার প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের দৃষ্টিভঙ্গিকে নিয়মিত মনিটর করার একটা ব্যবস্থা থাকা উচিত
না হলে এদের এই বিষাক্ত দৃষ্টিভঙ্গি খুব দ্রুতই ছড়িয়ে যাবে সারা দেশে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ইশ্বর কুপিত হয়েছেন এমন সিদ্ধান্ত টেনে তাকে তুষ্ট করবার প্রক্রিয়াটাকে আদিবাসি সংস্কার বলা চলে বড়জোর।

এই ধরনের বোধের জাগরণ খুব জরুরি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন মানুষেরই ধর্মীয় পরিচয় তার ভালমন্দ পরিমাপের মাপকাঠি হতে পারে না। কিন্তু যখন আমি নিজেকে পরিচয় দেই একজন খ্রীষ্টান হিসাবে এবং তারপর শুনতে পাই "তুমি তো ভাই বুশের দেশের লোক আমেরিকা যাও গা বা আপনি খেরেস্তান ফিরিংগী ,আপনি হারাম জিনিষ খান , আপনি কাফের " তখন মনের ভিতরে প্রচন্ড আঘাত পাই। আমার ধর্মীয় পরিচয় তখন মূখ্য হয়ে যায়, আমি যে প্রথমে একজন মানুষ তা মিথ্যে হয়ে যায়। বুশ ইরাক আক্রমন করার সময় আমাদের এলাকায় মিছিল হয়েছিল মসজিদের ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে তখন শ্লোগান ছিল - "একটা একটা খ্রীষ্টান ধর সকাল বিকাল নাস্তা কর" তখন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে ভীষন সংশয়ে ছিলাম। আমি নিজে ধার্মিক না , জন্ম সূত্রে প্রাপ্ত আমার এ পরিচয়, এতে তো আমার কোন হাত নাই । কিন্তু তার জন্য আমাকে মাঝে মাঝে এইরকম চিন্তায় থাকতে হয় যা আমাকে পিড়ীত করে। আসলে সব দেশের চিত্রই মনে হয় একই রকম। ধর্মীয় পরিচয় বিহীন কোন সমাজ যদি থাকতো তবে সেখানে চলে যেতাম আর নিজেকে পরিচয় দিতাম একজন মানুষ হিসাবে। তারপরও আশার কথা আমাদের দেশের বেশীরভাগ মানুষ ভাল ।তারা জানে ধর্মীয় লেবাসে গুটিকয়েক লোক নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। আর এইটাই আমাদের আশা জাগায়, নতুন স্বপ্ন দেখায় সুন্দর একটা সমাজের।
রবিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।