• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

মৃত সব ক্ষুদ্র পূঁজিপতিদের জন্য সমবেদনা।

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: শুক্র, ২৩/০৫/২০০৮ - ৭:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে ছোটো কারখানাগুলো?

বাজার উন্মুক্ত করে দিয়ে আমরা ভয় পাচ্ছি আমাদের দেশীয় কারখানাগুলো হারিয়ে যাবে বিদেশী কোম্পানীগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে। তবে আমাদের দেশীয় পুঁজিপতিদের দৈরাত্বেও একই ঘটনা ঘটছে। বাজারে আধিপত্য বিস্তার করা, নিজের ভোক্তা শ্রেণী বাড়ানো- এই নিয়মিত প্রতিযোগিতায় হয়তো দেশের পূঁজিবাজারের পালে হাওয়া লাগছে, তবে নিঃস্ব হয়ে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়া ব্যর্থ প্রতিযোগীর সংখ্যা কম নয়।

চীন কিংবা ভারতের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকবার জন্য আমাদের শুল্ক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবার কথা ভাবছি, ভারত বিনা শুল্কে পণ্যের প্রবেশাধিকার চাইছে। বাংলাদেশও এমন বিনা শুল্কে ভারতের বাজারে পণ্যের প্রবেশাধিকার চাইছে। এমন নির্দিষ্ট করা পণ্যের সংখ্যা প্রায় ১০০০। তাই সার্কের সম্মিলিত উন্মুক্ত বাজার করবার প্রক্রিয়াটা স্তব্ধ হয়ে আছে। নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক- ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হচ্ছে নীতিনির্ধারণী মহলে।

এটা বিদেশী পণ্যের সাথে দেশী পণ্যের প্রতিযোগিতা তৈরির চেষ্টা। তবে বাংলাদেশের ভেতরে যেসব প্রতিষ্ঠান পণ্য উৎপাদন এবং বাজার ধরবার প্রতিযোগিতা করছে তাদের ভেতরেও এই মারাত্মক মনোপলি তৈরির প্রবণতা বিদ্যমান।
বাংলাদেশের বিশাল পূঁজিপতি এবং উদ্যোক্তা হিসেবে যে কয়েকটা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ রয়েছে তারা পরস্পরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে।

বাংলাদেশের সরকারী কারখানায় উৎপাদিত চিনি বিক্রী করা সম্ভব হচ্ছে না তবে এর ভেতরেই ৩টা কোম্পানী চিনি কল খুলেছে। তাদের একটা ফ্রেশ চিনি, এরা বাংলাদেশ থেকে কিছুই কিনছে না, এদের প্রায় ফিনিশড প্রোডাক্ট আসছে জাহাজে, চিটাগাং বন্দর থেকে কন্টেইনার ভর্তি চিনির আরক পৌঁছে যাচ্ছে কারখানায়, সেখানে নিয়মিত উত্তাপে শুকিয়ে প্যাকেটে ভরে বাজারে চলে আসছে ফ্রেশ চিনি,

বাংলাদেশের ইক্ষু উৎপাদক চাষীরা ইক্ষু উৎপাদন ছেড়ে দিয়েছে। সেটা মোটেও এখন অর্থকরী ফসল নয়।

ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার কারণেই সম্ভবত এই সব বড় বড় পূঁজিপতিদের ভেতরের লড়াইটা অনেক বেশী প্রকট ভাবে নিম্ন কিংবা স্বপ্ল পূঁজির উদ্যোক্তাদের আহত করছে।
সরকারের উৎপাদন ব্যবস্থা বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই। বাংলাদেশ সরকার স্ববলম্বী নয়, জনগনের ট্যাক্সের টাকায় কর্মকর্তাদের মজুরি দেওয়া বিভিন্ন পর্যায়ের রাষ্ট্রীয় খরচের হ্যাপা সামলানো কঠিন কাজ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানাগুলো দিন দিন লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিনত হচ্ছে। তাদের জনবলের মজুরি প্রদান করতেও ব্যর্থ হচ্ছে এইসব প্রতিষ্ঠান। তাই সরকারকেই এগিয়ে আসতে হচ্ছে অনুদান কিংবা সহায়তার জন্য।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিবেশ বিনিয়োগ বান্ধব, বাংলাদেশের অর্থনীতি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে-এই সব আশাবাদী কথা আমরা বিশ্বব্যাংক আর এডিবির কাছে শুনছি বছরের পর বছর। কখনও এই বিনিয়োগের বাধ হয়ে দাঁড়ায় আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি- তাই আমাদের সুশীল সমাজ বেঁকে বসেন হরতালের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
কখনও এই উন্নয়ন ও মধ্য আয়ের দেশে রুপান্তরিত হওয়ার বাধা হয়ে দাঁড়ায় আমাদের অবকাঠামোগত দুর্বলতা- তাই বিশ্ব ব্যাংক আর এডিবি আমাদের অবকাঠামো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করে।

আমাদের ইপিযেডগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। তেমন কোনো নীতিমালা নেই যে এইখানে কারখানা স্থাপন করলে এই দেশের পূঁজিবাজারে অংশগ্রহন করতে হবে। তাই তারা এখানের সস্তা শ্রমে উৎপাদন করছে রপ্তানীযোগ্য পণ্য। তবে তাদের এই শিল্পে অংশীদারিত্ব নেই আমাদের পূঁজিপতিদের।

বাংলাদেশে আগামী ৩ বছর রডের উৎপাদন বাড়বে বাৎসরিক প্রায় ২০ লক্ষ টন- বর্তমানে যারা এই উৎপাদনের সাথে যুক্ত তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছে আকিজ গ্রুপ- বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ৮ লক্ষ টন- মেঘনা গ্রুপ- বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ৪ লক্ষ টন- এবং বর্তমানে যারা উৎপাদন করছে তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানোর প্রচেষ্টা করছে তারা।
টাটাও একই রকম প্রকল্পে বিনিয়োগের চেষ্টা করছে বাংলাদেশে। তবে আমার প্রশ্ন বাংলাদেশে বাৎসরিক রডের চাহিদা কতো? কতদিন এই চাহিদা থাকবে? প্রকল্প স্থাপন নয় বরং বড় কথা হলো এর জন্য জ্বালানী সরবরাহ নিয়মিত রাখা।
মেঘনা গ্রুপ নতুন চিনির প্রকল্প হাতে নিয়েছে- আরও বেশি বিনিয়োগ হবে এই খাতে- তাদের এই লোকসানী খাতকে লোকসান কমিয়ে লাভের ধারায় আনতে হবে তাদের ব্যবসার মনোপলী তৈরি করতে হবে। তারা এই কাজটাতেই মনোযোগ দিয়েছে এখন। বাজারে প্রতিযোগী হঠানোর একটা প্রতিযোগিতা হয়েছিলো অনেক আগে- দ্বরকানাথ ঠাকুরের ছেলের জাহাজ কোম্পানি আর ব্রিটিশ জাহাজ কোম্পানির ভেতরে- অবশ্য দ্বারকানাথ ঠাকুরের ছেলে এই প্রতিযোগিতার পরাজিত হয়েছিলো।

মনোপলি সৃষ্টির প্রতিযোগিতার বড় শর্ত হলো উৎপাদন খরচকে অগ্রাহ্য করে এমন একটা পণ্যমূল্য নির্ধারণ করা যার তুলনায় কম দামে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য সরবরাহ করতে পারবে না। বাজারে পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করা যেনো প্রতিদন্ডী প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসান গুনে বাধ্য হয় এই প্রকল্প থেকে সরে আসতে।
এই প্রতিযোগিতা পূঁজিবাদের প্রতিযোগীতা- এখানে নিয়ম বলে কিছু নেই, বাজার দখলে রাখা এবং বাজারে প্রতিদন্ডী সীমিত রাখবার প্রচেষ্টাকে দোষনীয় ভাববার কিছু নেই।

কথা হলো এই পূঁজিপতিদের লড়াইয়ে বাংলাদেশের ৩৫টার মতো ছোটো ছোটো ভোজ্য তেলের কারখানা উঠে গেছে কিংবা বাধ্য হয়েছে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে। এই একই প্রতিযোগিতায় আটা ময়দা সুজি তৈরির ৫০টার মতো কারখানা এখন বন্ধ। বাজারে খুব বেশী হলে ৮টা কোম্পানী এখন বিজ্ঞাপন এবং পূঁজির জোরে ব্যবসা করছে-

এদের হঠানোর জন্য কোনো বিদেশী পণ্যের অনুপ্রবেশ প্রয়োজন হয় নি। এরা অযোগ্য প্রতিযোগী হিসেবেই রেস থেকে ছিটকে পড়েছে।

পূঁজিবাদের জোয়ারে এভাবেই হারিয়ে যাবে ছোটো ছোটো উদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ একটা সময় ১৫টা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের করদ প্রতিষ্ঠান হয়ে যাবে। আমাদের কাজ হবে মুদির দোকান আর মনিহারী দোকান খুলে এদের পণ্যের বাজার নিশ্চিত করা। আমাদের ভেতরে বোধ হয় নতুন করে কোনো শিল্প উদ্যোক্তা গড়ে উঠবে না। ব্যবসায়িক এবং পূঁজির প্রভাবে আরও কমে যাবে প্রতিদন্ডী কোম্পানির সংখ্যা। এরাই একটা বিশাল শ্রেনীবলয় তৈরি করবে, রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করবে তারা। আমরা এপিটাফে লিখে রাখি,

আমাদের জন্য বরাদ্দ লটারিতে ৪০ লক্ষ টাকা, আমাদের জন্য বরাদ্দ লটারিতে প্রাপ্ত রিটার্ন টিকেট আর যাবতীয় উপহার- তবে আমাদের কোথাও কোনো ক্ষুদ্র মাপের উদ্যোক্তার বেড়ে উঠবার গল্প নেই- বিদায় তোমাদের।

মৃত সব ক্ষুদ্র পূঁজিপতিদের জন্য সমবেদনা।


মন্তব্য

আলমগীর এর ছবি

পাঁচ তারা। অসাধারণ একটা লেখা।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ যারা আছে তাদের কর্মকান্ড আদতে কতটা শিল্পায়নমুখী এটাও একটা প্রশ্ন। এমনিতে পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে মাৎসন্যায় তেমন খারাপ কিছু না, বরং একটা প্রিন্সিপল। কিন্তু সেই মাছ কোথায় ডিম পাড়ছে, কোথায় বেড়ে উঠছে আর কার পোনা ধরে খাচ্ছে সেটাই প্রশ্ন। দেশের বড় মাছগুলি গুড়োমাছের ডিমশুদ্ধ খেয়ে পুষ্টি বাড়াচ্ছে যাতে তারা অদুর ভবিষ্যতে বৈশ্বিক হাঙরের তৃপ্তির ঢেঁকুরের কারণ হতে পারে। কথা হলো যে পবীত্র সফেদ বিনিয়োগ, ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে গলাধ:করণ করছে তা কি প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট পাইকারী বেকারত্ব আর আত্মজ লুম্পেনাইজেশনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে? গণিতের বিচারে দাঁড়াবে না। আমরা ওয়্যাস্টল্যান্ড হিসেবেই পঞ্চত্ব প্রাপ্তি পর্যন্ত ধুঁকতে থাকবো। বাকি থাকে নীতিদর্শন। সেখানে আমরা বরং কেঁদে কেটে সাহেবদের বলতে পারি, এভাবে গোয়া মারা ঠিক না।



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

রাতুল এর ছবি

তাদের একটা ফ্রেশ চিনি, এরা বাংলাদেশ থেকে কিছুই কিনছে না, এদের প্রায় ফিনিশড প্রোডাক্ট আসছে জাহাজে, চিটাগাং বন্দর থেকে কন্টেইনার ভর্তি চিনির আরক পৌঁছে যাচ্ছে কারখানায়, সেখানে নিয়মিত উত্তাপে শুকিয়ে প্যাকেটে ভরে বাজারে চলে আসছে ফ্রেশ চিনি,

রেফারেন্স দিলে পারলে আরো ভাল হত।

আমি নিজেও কয়েক মাস ধরে বিজ্ঞাপন দেখার পর থেকে ফ্রেশ চিনি কিনি। "আমি চিনি চিনি" বিজ্ঞাপন।
আপনার কথা শুনে ফ্রেশ চিনি কেনা বাদ দিব ভাবছি।
আমি বাদ দিলেও বা কি আসে যায়। মার্কেটে খোলা চিনির যে দাম তার চেয়ে প্যাকেট চিনির দাম খুব বেশী না। লোকে কেন খোলা চিনি কিনবে??

নুশেরা তাজরীন এর ছবি

অসাধারণ বিশ্লেষনী লেখা। সত্যতা নিঃসন্দেহ, তবে এধরনের লেখায় তথ্যসূত্র অপরিহার্য।

চিনির অনেক আগে থেকে সিমেন্ট আর লবণের পলিপ্যাক এভাবে "উৎপাদিত" হয়ে আসছে; ভৈরবের মেঘনা কি পতেঙ্গার কর্ণফুলীর পারে জেটির ওপর বসানো গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের স্থাপনাগুলো টিভি-বিজ্ঞাপনেও দেখা যায়। এরাই টিকছে এবং টিকবে, কারণ সারভাইভ্যাল অব দ্য ফিটেস্ট। ডব্লুটিও'র কাছে দাসখত দিয়েছি, এদের ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। কৃষিভর্তুকি, ফুঃ!!!
আমরা বরং জেলায় জেলায় ক্যাডেট কলেজ করব।

অপ বাক এর ছবি

তথ্যসূত্র উল্লেখ করাটা অনুচিত হবে, অন্তত বর্তমানে যখন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পেপারে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের সিস্টার্স কনসার্ন বিষয়ে কিছু প্রকাশ করে নি। প্রকাশ করলে পরবর্তীতে এই বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব।

ইপিজেডের বর্তমান নীতিমালায় দেশের পূঁজিবাজারে সরাসরি অংশগ্রহনের বাধ্যবাধকতা নেই- এটা ঐচ্ছিক একটা বিষয়। তবে নতুন নীতিমালা প্রস্তাব করা হয়েছে- সেখানে একটা শর্ত রাখবার কথা চিন্তা করছে কতৃপক্ষ- যেনো এরা শুধুমাত্র দেশের সস্তা শ্রমিককে টার্গেট করে বাংলাদেশে নিজেদের পণ্যের উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য না আসে।

এখনও চুড়ান্ত অনুমোদন পায় নি এই নীতিমালা।
বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ঠিকানা দেওয়া সম্ভব না। তবে ভোজ্য তেলের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটা প্রতিবেদন অনেক দিন আগে পত্রকায় প্রকাশিত হয়েছে। আটা ময়দা সূজি প্রতিষ্ঠান নিয়ে তেমন প্রতিবেদন চোখে পড়ে নি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।