কোন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশায় যুদ্ধকরেন নি মুক্তিযোদ্ধারা তবে একদল লোভী মানুষ মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কে পূজি করে সম্পদ আহরন করেছে এটা আমাদের জাতিয় লজ্জা। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একটা আবেগী অবস্থান আছে যাদের তারা এই পরিচয় ব্যাবহার করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নষ্ট করলো সবার শ্রদ্ধা।
যেহেতু কিছু পাওয়ার আশায় যুদ্ধ করেন নি তাই মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের গর্ব ছাড়া অন্য কিছু না পেয়ে অনেকেই তাদের পূর্বপেশায় ফিরে গেছেন -ছাত্ররা শিক্ষাঙ্গনে শ্রমিকরা তাদের পেশায়। কিন্তু কিছু কুলাঙ্গার এসেছে রাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধের পারিশ্রমিক বুঝে নিতে। তাদের প্রতি আবেগীদূর্বলতা হয়তো সেনাবাহিনীবিহীন বাংলাদেশ তৈরী করার একটা বাধা ছিলো। আমার অনুমান এমনটাই। হয়তো বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ইতিহাস ঘাটলে এর সত্যতা হিসেবে পাওয়া যাবে এমন কিছু মানুষ যারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলোনা কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সেনাবাীহনীর অফিসার পদমর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের সচিবালয় আর সরকারী দপ্তরে এমন অনেক অযোগ্য নিয়োগ উদাহরন আছে। এই বানিজ্য ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের নিজের নিজেকে পন্য করা। 1984র পর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নতুন ধারার বানিজ্য শুরু হয়েছে। এরশাদের সমর্থনে প্রথম এগিয়ে আসে জামায়াত-তাদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রথম ক্ষমতার কাছাকাছি আসা। এর পর 87র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহন এর পর 90 গন আন্দোলন স্বৈরাচার পতন। যদিও এরশাদ নির্বাচিত গনপ্রতিনিধি তারপরও কেন এটা আমার বুঝতে সমস্যা হয়।
এর পর মজার ঘটনা মুক্তিযুদ্ধকে পুজি করে দূই দলের সংসদ দখলের চেষ্টা। আবেগ পূজি করে এই রাজনীতির লড়াই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কোন উপকারে আসে নি, রিকশাচালক মুক্তিযোদ্ধা অনাহারে মৃত মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। 96 জামায়াতকে সঙ্গী করে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষশক্তি লীগের আন্দোলন। যেই ধর্মনিরপেক্ষতার লড়াই 71 তাকে অবজ্ঞা করে ইসলামি মূল্যবোধের বাহকের ল্যাজ ধরা আর তার চেয়ে হাস্যকর অধপতন হাসিনার ইসলামি লেবাস ধরা। হিজাব মাথায় হাতে তসবি নিয়ে হাসিনার সংসদ জয়। মুক্তিযোদ্ধার হাল যেই লাউ সেই কদু। অনাহারে মরে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ শিরোনাম। 2000 জামায়াতকে সাথে নিয়ে খালেদার সংসদ জয়। মুক্তিযোদ্ধার হাল যেই লাউ সেই কদু। অনাহারে মরে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ শিরোনাম। মজা হলো এই আবেগপুজি করে সংবাদ পত্রের ব্যাবসা শুরু। বিনা চিকিৎসায় মুক্তিযোদ্ধার মৃতু্য--যেন বিনা চিকিৎসায় অমুক্তিযোদ্ধার মৃতু্য কোন সংবাদ নয়। বাংলাদেশের বাস্তবতা এমন যে বিনা চিকিৎসায় অনাহারে অনেক মানুষ মরছে যাদের কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়টাকে হাইলাইট করার অর্থ সেটাকে পুজি করা আর অন্য যারা এমন গালভরা বিশেষন ব্যাবহার করতে পারে না তাদের অপমান।
এখন বাংলাদেশে সেরা ব্যাবসা বিশুদ্ধ পানির-- অপেক্ষায় আছি কবে মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতিক মিনারেল ওয়াটার আসবে বাজারে।
14ই ডিসেম্বর বা 15ই ডিসেম্বর সকালে দূই প্রয়াত বুদিধজীবির সন্তানদের নিয়ে বাবুর উপস্থাপনায় একটা অনুষ্ঠান হলো এন টিভিতে। বাবুর বাচনিকদক্ষতা শব্দচয়ন ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধকরলো আবারও তবে সেলিনা হোসেনের ছেলের মতো বলতে হয় তাদের অবদানের কথা প্রতিদিন স্বরণযোগ্য আর তাদের আদর্শের চর্চা করতে হবে সব দিন। যেই ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের স্বপ্ন নিয়ে এতজন যুদ্ধ করলেন সেখানে কেন ইসলামি শাসনতন্ত্রের দাবীতে বোমায় নিহত -আহত হবে জনগন।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন