সংঘবদ্ধতা মানুষের স্বভাবে। যদিও পশু সমাজে দলবদ্ধতার উদাহরন আছে মানুষের প্রকৃতিকে জয় করার লড়াই মানুষকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশ নিয়ে লিখবো --
বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনায় 1 লক্ষ বছর আগেও প্রায় মানুষ জাতিয় প্রনীর উপস্থিতি জানা যায়। তবে আধুনিক মানুষের চেতনার উদ্ভব 10হাজার বছরের কাছাকাছি। তুলনামুলক ধর্মতত্ত্ব নামের এক বিষয় আছে যার পরিধি ধর্মভাবনার সুচনা থেকে পর্যায়ক্রমিক বিকাশ ধর্মাচারের ধর্মদর্শনের ভিন্নতা। বিশাল ব্যাপকতা, আমি অল্প কয়েকটা বিষয় জানি কেন সপ্তাহে সাত দিন কেন আসমানের সংখ্যা সাত কিভাবে পৃথিবীকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারনা আর ধর্মগ্রন্থের পাতায় থাকা ভুল তথ্য । যদিও অনুমান নির্ভর সম্পূর্নটাই ,কিন্তু কে 5000 বছর আগের জীবনযাত্রার খবর রাখে। লিখিত তথ্য পাওয়ার আগে নিশ্চিত বলা যাবে না ঘটনার ব্যাখ্যা একমাত্র এটাই।
প্রাচীন মানব প্রথম যখন আকাশ দেখতে শিখলো সীমিত জীবনে 7টা ভ্রাম্যমান জোতিষ্কর খবর জানতো। সূর্য্য চন্দ্র শুক্র মঙ্গল বুধ বৃহস্পতি শনি। আর এর বাইরে থাকলো ধুমকেতু যার আগমন প্রাচীন সমাজে অমঙ্গলসূচক। সেই 7 জোতিষ্কের সাথে 7 দেবতার সম্পর্ককরে তাদের শ্রদ্ধা জানানোর প্রচেষ্টা। সাত দিনের নাম যে ভাষায় হোক এই 7 জোতিষ্কের সম্পর্ক রয়েছে তার সাথে। সাত আসমানের বিষয়টা ব্যাখ্যা করা দরকার। কোন বৃত্তাকার পথে কোন বস্তু চললে কেন্দ্র থেকে তার দুরত্ব বাড়লে তার কৌনিক সরণ কমবে। রাতের আকাশে এই সাত জোতিষ্কের কৌনিক সরনের উপর ভিত্তি করে প্রাচীন মানুষের সিদ্ধান্ত সাতটা ভিন্ন কক্ষপথে এই সাত জোতিষ্ক চলাচল করে। সবার কাছে সূর্য্য আর সবার দুরে শনি। ধর্মীয় উপকথা- ইবলিস নামের এক ধার্মিক জ্বীন ইশ্বরের প্রার্থনায় মগ্ন ছিলো। পৃথিবীপৃষ্টের সমস্ত ভূমিতে তার সেজদা পড়েছিলো।তার প্রার্থনায় প্রসন্ন ইশ্বর তাকে প্রথম আসমানে স্থান দেন। প্রথম আসমানের সম্পূর্ন তার সেজদাসিক্ত হওয়ার পর প্রার্থনার ধারাবাহিকতায় তাকে সপ্তম আসমানে নেওয়া হয়। এর পর সে ফেরেশতাসর্দার হয়ে ভালোই সুখে ছিলো সমস্যা হলো আদমের সৃষ্টি--মাটির নশ্বর আদমকে সেজদা না করার জেদ তার স্বর্গচু্যতির কারন।
ইবলিশের অহমিকার কারনে সে ইশ্বরবিরোধী হয়ে গেল এটা ধর্মের গুরুত্ত্বপূর্ন বিষয় হতে পারে আমার কাছে যেটা অবাক লাগে ইবলিশের শেষ অবস্থান শনি অমঙ্গলসূচক এক জোতিস্ক।
পৃথিবীকেন্দ্রীক দর্শন প্রতিটা ধর্মের প্রান। মুসা ইসা মোহাম্মদ যেই ধর্ম অনুসারী হোক না কেন পৃথিবীকেন্দ্রিক ধারনা এর প্রাণ। পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র আর এখানেজন্ম নেওয়া মানুষ মহাবিশ্ব তৈরির কারন। শুধুমাত্র মোহাম্মদ আসবে বলে ইশ্বর মহাবিশ্ব তৈরি করেছেন এমন বিশ্বাস সব মুসীলমের। জীবনযাপনের বিধান ধর্ম তার সামাজিক অর্থনৈতিক প্রয়োজন আমি স্বীকার করলেও মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্বে ধর্মের মাতবরি পছন্দ করি না। প্রশ্নের সুযোগ নেই প্রশ্ন করলেই কাফের হওয়ার আশংকা ধর্মের আওতায় বিজ্ঞান চর্চার সুযোগ কমিয়ে দিয়েছে।
পৃথিবীকেন্দ্রকতার বিকাশ ভুল পর্যবেক্ষনের। লক্ষ কোটি মাইল দুরের জোতিস্কের কক্ষপথ খালি চোখে দেখলে ভ্রম স্বাভাবিক যে তারা পৃথিবীকে কেন্দ্রকরে ঘুরছে। পঞ্চদশ শতাব্দীতে সুন্দর ব্যাখ্যা পাওয়া গেল পৃথিবী নয় গ্রহগুলো ঘুরছে সুর্যের চারপাশে। মহাবিশ্বের কেন্দ্র সূর্য্য । চার্চ এ ধারনা মানতে পারে নি । মানতে পারেনি গ্যালিলিওর পর্যবেক্ষন। পৃথিবীকেন্দ্রীক দর্শনের মৃতু্য তার হাতে। টেলিস্কোপে তার দেখা বৃহষ্পতির উপগ্রহ এবং সেই উপগ্রহ ঘুরছে বৃহষ্পতিকে কেন্দ্র করে। মহাবিশ্বের অন্তত গুটিকয়েক বস্তু অন্য কিছুকে কেন্দ্রকরে ঘুরে। চার্চের বিচারে গ্যালিলিও শাস্তি। এর পর অবশ্য আরো কিছু অবস্থানে পর্যবেক্ষন আর পৃথিবীকেন্দ্রীক দর্শনের মৃতু্য। ধর্মেবর্নিত সৃষ্টিতত্ত্বে মৃতু্য। কোরানের সৃষ্টিতত্ত্ব বাইবেলের অনুরূপ। বিস্তৃর্ন আরব উপদ্্বীপ আর নীল নদের দুপাশে যে সভ্যতার বিকাশ তার সৃষ্টিতত্ত্বে মিল থাকাটা একটা বিষয় স্পষ্ট করে তিন প্রধান ধর্মের শেকড় একটাই। এটা নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন ছিলো না। 16 শতকেই সব পর্যবেক্ষনে ধর্মের দুর্বলতা প্রকট হয়েছে। কিন্তু ধর্মপ্রচারকদের বাকচাতুর্য তাদের অন্ধত্ব বা স্বার্থজ্ঞান পরবর্তীতে নতুন ধারা পেয়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা বদলেছে। এখন বাইবেল কোরান গীতা সব ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যায় ব্লাকহোলের প্রকৃতি বৈশিষ্ঠ্য আসছে। যদিও তাত্তি্বকভিত্তিতে সবাই এর অস্তিত্ব মেনে নিয়েছেন এখনও এবিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত আসে নি। তবে বাংলাদেশে ধার্মিকবৈজ্ঞানিক মহলে জনপ্রিয়বই বাইবেল কোরান ও বিজ্ঞানে র আলোকে যারা আলোচনা করে নিজেদের সান্তনা দেন কোরান আধুনিক বিজ্ঞানের সব আবিস্কার সমর্থন করে তাদের জন্যে এটুকুই বলা যায় বাকচাতুর্যতা দিয়ে ধর্মকে বৈজ্ঞানিক করা যায় না তবে কিছু মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন