আজ গতকাল গতপরশু

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: রবি, ১৫/০১/২০০৬ - ৩:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্যাস্ততা শুরু হয়ে যাবে। নিয়মিত পড়ার চাপ বাড়বে। আক্ষেপ একটাই ঋককে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন বিকেলে কোথাও রেখে আসতে হবে। সমস্যা 6 মাসের বাচ্চাকে ডে কেয়ার নেয় না। তার জন্যে বাসায় কাউকে আসতে হবে। অথবা কোন পরিবারের সাথে রেখে আসতে হবে। পরিচিত ঘনিষ্ঠ পরিবার দুইটা। শেষমেষ কুর্নিয়া পরিবার আবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো।

লিয়ানের সাথে থাকবে জশুয়ার খেলা দেখে বিকাল কাটাবে। মাত্র একদিন রেখেছি। বিকালের 3 ঘন্টা । ক্লাশ শেষে গিয়ে নিয়ে আসবো। নিজেদের গাড়ী না থাকার যন্ত্রনা টের পেলাম প্রথম দিন। বাস মিস মানে সব কিছু 40 মিনিটের জন্যে পিছিয়ে যাওয়া। মফস্বলে থাকার সমস্যা এটাই। যারা ঢাকায় থাকে তারা একটা বাসের জন্যে 40 মিনিট অপেক্ষার সুযোগ পায় না। ট্যাক্সি নিয়ে যাওয়া যেত কিন্তু ঠিকানা নিশ্চিত জানি না। নির্দিষ্ট বাসস্টপে নেমে টেলিফোনে নিশ্চিত হয়ে পৌছালাম কুর্নিয়ার বাসায়। নিশ্চিত জানি ছেলে বিকালে খেয়ে ঘুমিয়ে উঠেছে। তারপর খেয়ে খেলছে জশুয়ার সাথে। দেখা হলো। বাপজানের খুশিখুশি মুখ মুহূর্তে বেজার। কোলে এসে কান্নাকাটি করে লজ্জিত করে ফেললো।

তারপর শান্ত হয়ে খেলনা ধরতে গিয়ে আবার ধরাশায়ী। কার্পেটে পরলো। তারপর বাসায় এসে মূল সমস্যার শুরুু। তার চোখের সামনে দাড়িয়ে প্রেজেন্ট স্যার বলতে হবে।
মিষ্টির প্যাকেটের মতো বাসায় থাকি। উপর তলায় হাসলে কাশলে নিচে শুনতে পাই। শীতে জানালা বন্ধ আর ডাক্টারের নিষেধ সব মিলে ঘরে সিগারেটের সীন নাই কোনও। আগে থাকতাম বিশাল বাসায় একা আর যখন ইচ্ছা সিগারেটে টান দিতাম যেখানে ইচ্ছা ছাই ফেলতাম। সেই বাসা ছেড়ে এই মিষ্টির প্যাকেটে ঢুকে সস্থি পাইনা তেমন। কিন্তু বাইরে গিয়ে চামে এক দুই টান দেওয়ার সুযোগ পাইতেছি না। বাইরে গৈলে কচ্ছপের মতো মাথা ঘরে এনে প্রেজেন্ট স্যার বলতে হয়। এটা এই বয়েসের সমস্যা বাহারী নাম সেপারেশন সিনট্রম। লক্ষন বাবা মা পরিচিত কেউ বাইরে গেলে শিশু চঞ্চল হবে কান্নাকাটি করবে। সমাধান তাকে নিশ্চয়তা দিতে হবে কেউ যদি চোখের সামনে না থাকে তবে সে আশেপাশেই আছে যেকোন মুহূর্তে উদয় হবে। লুকাচুড়ি খেলে তাকে বুঝাতে হবে। সমস্যা হলো যদি টেবিলের পিছনে লুকিয়ে শুধু মাথা দেখাই ছেলে স্কন্ধকাটা ভুত দেখে ভয় পায় তাকে দেখাতে হয় আপাদমস্তক। পরশু টিকা দিবস ও দিন ক্লাশ গ্যাপ মারতে হবে।

জীবন মানে যন্ত্রনা। বাইরে বরফ পড়ছে। মড়ার উপর খাড়ার ঘা কনকনে বাতাস। বুক ফুলিয়ে ধুমপান করতে গিয়ে পায়ের চিপায় ল্যাজ গুটিয়ে ফেরত আসছি। তবে কম্পাউন্ডের ভেতরের ঝাউ গাছে বরফ জমেছে। তার চারপাশের বেদীতেও বরফ জমে পবিত্র পবিত্র ভাব এসেছে। এর মধ্যে কিভাবে কি করবো বুঝতেছি না।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।