প্রন্ততত্ত্বের উপর একটা আকর্ষন তৈরী করার পেছনে ছিলো দানিকেন। তার ভিনগ্রহের মানুষ খোজার অন্তবিহীন যাত্রার শেষ কোথায় জানা হয় নি। প্রাচীন উপকথার সাথে পরিচয় তার লেখায়। গ্রীক আর হিন্দু পুরানের গল্প পড়া। মানবিক ইশ্বরের সাথে পরিচয়। ইশ্বরের ভিতরের মানবিক আবেগ একটা সময় প্রায় অনিবার্য মনে হয়।
সেমিটিক উপকথার সবটুকু পড়া হলো না। বাংলায় তেমন অনুবাদ নেই। তবে প্রথম ঝাকি খাওয়ার মতো পড়া বই বারমুদা ট্রায়াঙ্গল। উদ্ভট ব্যাখ্যাবিহীন ঘটনা বিশ্বাস করেছিলাম। সে যেভাবেই অন্তে আসা যাক না কেন পরবর্তীতে নৃতত্ত্বের উপর একটু টান। শেষ পর্যন্ত কোনটাই পড়া হয় নি আনুষ্ঠানিক ভাবে। আক্ষেপ নেই । কিন্তু সময়ের অভাব বা পর্যাপ্ত আগ্রহের অভাবে এখন প্রত্নতত্ত্ব বা নৃতত্ত্ব পড়া হয় না। আমরা নিজেদের কল্পনায় কেমন ইশ্বর কল্পনা করি এটা নিয়ে একটা বিকাল আড্ডা দিয়েছি।
সবচেয়ে বৈপ্লবিক ধারনা ছিলো জাকির নামের এক বন্ধুর। তার ভাষ্যটা এমন ছোট বেলায় আল্লার নাম শুনলেই আমার যে ছবিটা মাথায় আসতো সেটা এরকম,এক বৃদ্ধ দাড়িওয়ালা লোক হাতে তসবি নিয়ে আল্লা আল্লা করতেছে।
বেশীরভাগের ভোটে যে ছবিটার কাছাকাছি ছবি পাওয়া গেল। সবাই মোটামুটি বৃদ্ধ একজনএর কল্পনা করে। তার স্বভাব হবে দাদা নানার মতো। স্নেহশীল ইশ্বর ধারনাটা বেশ জনপ্রিয়। আর স্নেহশীল বলেই আবদার জানানো যায়। নিরাপত্তার সাথে শ্রদ্ধার মিশ্রন দাদা নানা।
অবশ্য বেশীর ভাগ বন্ধুর এমন চেহারা কল্পনার বিপরীতে কিছু কল্পনা ছিলো। ভীষন বদরাগী একজন এর ছবি আছে যে পান থেকে চুন খসলেও নরকের আগুনে ভাজা ভাজা করে ফেলবে। এমন ইশ্বর কল্পনা করলে আমা র রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়। আমার নিজের এখন মনে হয় ইশ্বরের যে ছবি মানুষ কল্পনা করে সেই রুপের উপাসনা করে। প্রত্যেকের কল্পনায় যে ইশ্বর তা তার নিজস্ব ইশ্বর। সেই ছবির সাথে অন্য ছবির মিল নেই। ইশ্বরের সাথে মানুষের সম্পর্ক ব্যাক্তিগত পর্যায়ের। ভীষন বদরাগী উগ্র একরোখা ইশ্বরের সামনে প্রণত হওয়া আমার কাছে অসম্ভব মনে হয়। ইশ্বরের সাথে সম্পর্ক বাবা ছেলের মতো কতৃত্বপরায়ন হবে না বরং কতৃত্ব শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয় আর আদরের হবে। যার কাছে আশ্রয় চাওয়া যায়। যার কাছে যাওয়া যায় যাকে আপন মনে হয় তেমন একজন পুরুষ। সমস্যা হলো ইশ্বর ভাবনায় পুরুষ রূপ প্রধান নয় তো আমার কল্পনার ইশ্বর হতো মায়ের মতো শাসন আদর আবদার পাওয়া না পাওয়ার হিসাবের বাইরের আপন ।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন