একাত্তরের ঘাতক দালালদের এবং তাদের সহযোগি রাজাকারদের নিমর্ূল করলেই বাংলাদেশ সোনার বাংলা হয়ে যাবে এমন অলীকবিশ্বাস আমার নেই। এটা খুব ভালো একটা রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন, বেশ অনেক মানুষ এটাতে বিশ্বাস করে, নেতারা একাত্তরের চেতনা বলে কথার প্রাসাদ বানাতে পারে কিন্তু তেমনকোন যৌক্তিক ভিত্তি কথাটার নেই।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে, আমরা মর্যাদাসম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে পরিচিত হবো, আমরা পাকিস্তানের কাছে বকেয়া টাকা ফেরত পাবো এসব আকাংক্ষা আমারও। আমার শ্রদ্ধা ভালোবাসা সব মুক্তিযুদ্ধে প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষ্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি। যারা একাত্তরের চেতনার কথা বলছেন তারা ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালি সংস্কৃতির সহায়ক একটা দেশ দেবার প্রচেষ্টা করছেন না। তারা রাজাকারদের কথা তুলে মূল প্রসঙ্গের বাইরে তাল ঠুকছেন। রাজাকারদের প্রতিহত করলেই সব পাওয়া হয়ে যাবে এমন একটা আশা দিতে হলে অনেক বড় মাপের নির্বোধ হতে হয়।
গ্রামপর্যায় থেকে শুরু করলে সব রাজাকারদের আলাদা ভাবে বের করা সম্ভব। কিন্তু তাদের সবাইতো জামায়াতের সাথে যুক্ত নয়। সব দলেই কমবেশী রাজাকার আছে । শুধুমাত্র জামায়াতকে রাজাকার প্রমান করার চেষ্টা কেন? শীর্ষ রাজাকারদের কয়েকজন জামায়াতের প্রথমসারির নেতা, তাদের প্রতিহত করা হলো, ধরা যাক তাদের রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে অদৃশ্য করে ফেললাম। তাহলে কি ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উন্মাদনা বন্ধ হবে? যদি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে হয় আমাদের আক্রমনটা সেই লক্ষ্যে হওয়া উচিত। আমরা রাজনীতির এই ধারা বন্ধ করতে পারলে রাজাকাররা এমনিই ব্যার্থ হবে এবং আমরা একাত্তরের চেতনা বাস্তবায়িত করতে পারবো।
প্রশ্নগুলো স্বাভাবিক- জামায়াতের যেসব কর্মীর বয়স 15 থেকে 40 তারা কোন বিচারে রাজাকার হবে? এদের রাজনৈতিক আদর্শ ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা, তাদের থামানোর ব্যবস্থা কি?এসব দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না থাকাটাই প্রমান করে যারা যুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি করছে তাদের আন্তরিকতার অভাব।
আমরা ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিকাশ বন্ধ করতে চাই। আমাদের আন্দোলনের লক্ষ্য এমনটাই হওয়া উচিত। আর এই রাজনীতিতে ধর্ম একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয় হয়ে ওঠার কৃতিত্ত্ব আমাদের এই দানবকে বোঝার ব্যার্থতার।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন