গত কয়েক দিন সামান্য ব্যাস্ততা ছিলো। তবে এর মধ্যেই দেখলাম হীরকের শতক, এর পর দেখলাম আড্ডার শতক। দুজনকেই অভিনন্দন আবারও।
আমার গতকাল কেটেছে খারাপ। ছেলের উথাল পাথাল জ্বর। সেও গত কাল শতকের উপরে রেখেছিলো তাপমাত্রা, না ঘুমানো ক্লান্তিতে সকালে ঘুমিয়েছে যখন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় হয়ে গেলো।
খারাপ লাগছিলো কিন্তু এখানে সময়ের হিসেবে সব চলে আর আচমকা বাইরের তাপমাত্রা কমেছে। আমার ভেতো বাঙালি শরীর এখনও জমাট বাধা জলের তাপমাত্রায় কেপ উঠে, বাইরে বরফ পড়লে ঘরের ভেতরে আমার ঠান্ডা লাগে ভীষন। এসব প্রতিকুলতার মধ্যে গেলাম হাসপাতালে।
নার্সের অহেতউক খুচাখুচিতে ছেলে আকাশ পাতাল এক করে কেঁদেছে, আমি বুক চোখ মুখ শক্ত করে ছিলাম অনেক ক্ষন, শিরা খুঁজতে গিয়ে হাতের ভেতরে সঁূচ ঢুকিয়ে গুতাগুতি হয়তো নার্সের জন্য তেমন পীড়াদায়ক না কিন্তু আমার জন্য অতীব কষ্টের দৃশ্য, বললাম খুলে নিতে, নার্সের পরবর্তি প্রচেষ্টা গোড়ালি কেটে রক্ত নিবে, 2 বার গোড়ালি কাটলো, ছেলে আমার হাপুশ হুপূশ কাঁদলো, চিকিৎসা বলে হজম করলাম। এর পর আর পারি নি, হাসপাতালের বাইরে এসে বিড়ি ফুকলাম, যখন ফিরে গেলাম তখন এসব শেষ,
এখন হালকা জ্বর নিয়ে ছেলে ঘুমাচ্ছে, কালকে সকালে আবারও যেতে হবে হাসপাতালে, কপালে ভোগান্তি থাকলে আবারও সূচিকর্ম দেখতে হবে।
সে দুঃখের উপখ্যান বাদ দেই আপাতত।
হাসপাতাল থেকে ফিরে দেখলাম আমার অবর্তমানে কি কি ঘটলো ব্লগে।
দেখে ছোটোবেলার কথা মনে পড়লো।
আমি বড় হয়েছি এমন এক পরিবেশে যেখানে সবার অর্থনৈতিক অবস্থা মোটামুটি সমান ছিলো, সবাই হতদরিদ্্রের সামান্য উপরে, দিন আনে দিন খায়, বসতভিটা আছে টাইপ, যেখানে থাকতাম তার মাঝে ছিলো ডোবা, ডোবার দুই পাশে দুই পরিবারের মধ্যে রেষারেষি ছিলো ভয়ংকর।
কোনো এক দিন সকালে শুরু হতো ঝগড়া, ঝগড়ার ম্যারাথন যাকে বলে, এক পক্ষে 2 /3টা পরিবার অন্যপক্ষে 2/3টা পরিবার। মাঝে মাঝে এরা তাদের পরিজনদের নিয়ে আসতো ঝগড়া করার জন্য, গালির বন্যা বয়ে যেতো সেসব দুপুর বিকেলে, আমরা খেলা ভুলে দরজার সামনে দাড়িয়ে দেখতাম ঝগড়াকুশীলতা। সন্ধ্যা হলে দুই পাশে দুইটা ধামা উলটে রেখে যেতো তারা,
আপাতত রাতের জন্য ঝগড়া ধামাচাপা থাকলো,
পরদিন সকালে আবারও নতুন উদ্যমে শুরু হতো। এমন সুখের ঝগড়া দেখা হয় নি বহু দিন, কিন্তু পরিবার পরিজন নিয়ে ঝগড়া দেখলাম আজ এখানে।
অন্য একটা উদাহরন মনে পড়লো, রূপক, ডিসকভারি চ্যানেলে বা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে বন্যপ্রানিদের উপর প্রামান্য চিত্রে দেখিয়েছিলো হায়েনারা কি ভাবে দল বেধে একজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। তারা সব খানেই দল বেধে ঘুরে, মাঝে মাঝে এটোঁ কাঁটা খায়, যখন জুটে না তখন নিজেরা দল বেধে শিকারে বের হয়।
পশু জগতে কাপুরুষের নমুনা হলো হায়েনা। তারা একা লড়াই করতে সক্ষম না বিধায় একজনের উপর দল বেধে ঝাপিয়ে পড়ে।
কাউকে খাটো করার জন্য বলা না, কেউ যদি গায়ে মাখতে চায় মেখে নিবে, যার মাখার আগ্রহ তাকে দমানোর চেষ্টা না করাই ভালো।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন