অরূপের মাথা থেকে বেশ মজার একটা জিনিষ বের হয়েছে, ঘটনাচক্রে বিষয়টা রূপকে পরিনত হয়েছে, কিন্তু সারাদিন চমৎকার মৌতাতে ছিলাম, অনেকগুলো মজার লেখা পড়ে।
ঘটনার সূচনা হয় ওয়ালির একটা মন্তব্য নিয়ে, যে খানে শাররিক হেনেস্থার বিষয় তুলে ধরা হয়।
কারো কারো গোষ্ঠিবদ্ধ বিদ্্বেষ আছে মুক্তচিন্তা বিরোধী। এরা কখনই উচ্চারনের স্বাধীনতা মেনে নেয় নি, এ সকল গোষ্ঠির বিরুদ্ধে যুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে যাওয়া বৃথা, যুক্তির সিড়িঁ বেয়ে এরা চলে না, যতক্ষন যুক্তি তাদের সপক্ষে থাকে ততক্ষন এরা চুপ থাকে যৌক্তিক অবস্থান যখন তাদের অস্তিত্ব বিরোধি হয় তখন শাররিক আক্রমনের ধারায় চলে যায়,
এটার অন্ধকার বলয়ে বাংলাদেশ ঢেকে আছে, ধর্মের অনেক কিছুই যে যুগোপযোগি করে তোলা প্রয়োজন এটা কিছু কিছু মানুষ বুঝছে কিন্তু যুক্তিহীন বিশ্বাসের কাছে যৌক্তিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে কোনো ফায়দা নেই এটাও সচেতন যে কোনো মানুষ বুঝবে।
এর আগের পোষ্টে আমি যা বলেছিলাম তা থেকে বিন্দুমাত্র না সরে বলতে চাই
রাষ্ট্র এবং ধর্মের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন করতে পারাটাই সবচেয়ে বড় অর্জন হবে। সুমনের মন্তব্য এ প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের ধর্মের শরণ নেওয়ার প্রয়োজন ফুরিয়েছে কি না,
উত্তর হলো যখন ধর্মের গ্রহণ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিরোধি হয়ে যায় তখন যুগের সাঁতারে সামনে যাওয়ার জন্য ধর্মের বোঁচকা ফেলে যেতে হবে পিছে। রাষ্ট্র নাগরিক নিপীড়ক হয়ে গেলে, রাষ্ট্র নাগরিক নিরাপত্তা দইতে ব্যার্থ হলে বা রাষ্ট্র যখন শোধনের নামে ব্যাক্তিগত প্রতিরোধকে ধ্বংস করতে গিয়ে ব্যাক্তিকেই হত্যা করছে তখন সমাজে সহাবস্থান ড়ত সব কটা মতই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ধর্মকে লালন পালন করার জন্য বাংলাদেশের জন্ম হয় নি, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে বাঙালি সংস্কৃতি থেকে যেখানে ধর্মের ভুমিকা কম। যেহেতু ধর্মের মূল বানীগুলো অনেকটা সমান্তরাল তাই এখানে বড় মাপের কোনো সামপ্রদায়িক সংঘাত হয় নি, বাংলাদেশের উৎপত্তির পর থেকে এখানে ধর্মভিত্তিক যতগুলো অপকর্ম হয়েছে সবগুলোতে একেবারে সাধারন মানুষের অংশগ্রহন ছিলো কম। করেছে সেই চিহি্নত ধর্মব্যাবসায়ীরা। এবং তারা সব সময় চিন্তার স্বাধীনতা বিরোধি এবং তারা এটাকে শাররিক আক্রমন করে প্রতিহত করতে চায়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে যদি আজকের লাঠিভিত্তিক পোষ্টগুলোকে ব্যাখ্যা করা হয় তবে সেটা সবচেয়ে উপযুক্ত হবে,
এর বিপরীতে রাইসুর পোষ্ট নিয়ে ঘটলো দিনের সবচেয়ে জঘন্য ঘটনাটা। রাইসুর ব্যাক্তিগত অভিমত বা ধারনা এটা দলগত র্যাগিংএর পর্যায়ে গেছে, সবাই মিলে একজনকে হেনেস্থা করার বিরুদ্ধে এবং পশুসম্মান পুনরুদ্ধারের সপক্ষে। পশুক্লেশনিবারনি সংস্থায় রাইসুর গতায়তের বিষয় আমি জানি না, অনেকেই কোরবানীর নামে উন্মুক্ত পশুনির্যাতনের বিরোধি, অনেকে এটাকে বর্বর মনে করে, রাইসু ব্যাক্তিগত ভাবে এটাকে কি ভাবে দেখে এটা বিচার করার জন্য আমি কিছু লিখছি না, মতদৈত্বতা থাকাটাই সব সবময় সুস্থ সংস্কৃতির পরিচায়ক। তবে মতদৈত্বতাকে যুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে সেটাকে সম্মানের সাথে পালন করার প্রথাটা তৈরীর চেষ্টা চলছে এখানে, সে ক্ষেত্রে শাররিক লাঞ্ছনার হুমকিটাকে এভাবে প্রতিবাদ করার ধরনটা আমার পছন্দ হয়েছে।
কিন্তু সবাই কি এটাকে মেনে নিতে পেরেছে? মহুয়ার এর আগের পোষ্টে অমি রহমান পিয়ালের একটা মন্তব্য কে এখানে টেনে এনে মহুয়া যা করলো এটাকে শোভন বলা যায় না। যুক্তি এবং আবেগকে পৃথক রেখে আলোচনা করতে পারাটা একটা অর্জন, এটা পালন করতে ব্যার্থ মহুয়া। সে মন্তব্যের মাধ্যমে যা করলো এটা তার নিজের হীনতাকে প্রকট করলো আসলে। শালিনতার সীমা অতিক্রম করে একজনের ব্যাক্তিগত জীবনের উপর সম্পুর্ন আলোকপাত করা কোনো মতেই সমর্থন যোগ্য কোনো আচরন নয়। ধর্মবিশ্বাস মানুষের নিজস্ব, কেউ এটাকে যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করে নি। পিয়ালও এর ব্যাতিক্রম নয়, তার অনুভবে ধর্মের স্থানকে শ্রদ্ধা করাটাই কর্তব্য। আমি এখানে ধর্মবিরোধী হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছি নিজস্ব ধারনার কথা বলে তবে কারো ধর্মপালনের কিংবা ধর্ম ীয় বিশ্বসকে হেয় করে কথা বলি নি বোধ হয়, কারো ধর্ম ীয় বিশ্বাস কে হেয় করে কথা বলাটা একধরনের স্প ষ্ট সামপ্রদায়িকতা। পিয়ালের ধর্মবিশ্বাসের পক্ষে পিয়াল বলেছে, একেবারে সাধারন কিছু কথা, মহুয়ার নিজের কাছে এর বিপরীত যুক্তিপ্রমান আছে, কিন্তু পিয়াল মহুয়াকে কোথাও ব্যাক্তিগত আক্রমন করেছে এমন দেখি নি, কোনো কোনো অশোভন অশালিন কথা এসেছে এখানে, তার একটাও যে পিয়ালের উচ্চারিত নয় এটা সম্পর্কে আমার বিশ্বাসটা টলছে না। যারা এসব কথা বলেছে তারা মাসুদার পোষ্টেও একই নোংরামি করেছে,
কিন্তু পিয়ালের যেটা অর্জন সেটাকে এমনভাবে হেনেস্থা করে ফেলাটা আমার নিজের কাছে লজ্জাজনক মনে হচ্ছে, নিজের লজ্জা ঢাকবো কিভাবে, একজন বলিষ্ঠ মানুষ যে নেশার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে, যে অন্য আরও কয়েকজনের জন্য অনুপ্রেরনার দৃষ্টান্ত হতে পারতো, তার বর্তমান এবং তার ধারাবাহিক সংগ্রামের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা ছিলো না মহুয়ার কথায়। আমরা এখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধার কথা বলছি। মানুষের বিবেচনা বোধ মানুষের শালিনতা বোধের বিষয় নিয়ে কথা বলছি, আমি মডারেশনের বিপরীতে এই ভরসায় যে আমরা শিক্ষিত হলে আলোচনাকে ব্যাক্তিগত নোংরামির মধ্যে টেনে নিয়ে যাবো না, কিন্তু শিক্ষার অভাব প্রকট হচ্ছে দিনদিন, ধর্মভিত্তিক সংশোধন বাদ, সেখানে যে ভাবে ধর্মের বিরোধি লোকজনের উপর নোংরা ব্যাক্তিগত মন্তব্যের জোয়ার বইয়ে দেয় ঠিক সেভাবেই যদি ধর্মস্বাধীনতার পক্ষে কথা বলা একজন নোংরামি করে তাহলে তাদের সাথে আমাদের প্রভেদ কোথায়। আমরা যদি মুক্ত চিন্তার কথা বলি, আমরা যদি শোভনতার কথা বলি, সেটা আমাদের আচরনে অনুদিত হওয়া উচিত।
আপনি আচারিধর্ম পরকে শেখাও, এটা বলা এবং পালন করা, এবং মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলতও সোনা জাতীয় মহান বানী বলে কেউ যদি সেটাকে নষ্ট করে ফেলে সেটার দায়ভার তার নেওয়া উচিত। আমি নিজের হীনতা প্রকাশ করছি যে আমি এই কয়দিনেই বন্ধুর মতও হয়ে যাওয়া অমি রহমানের ব্যাক্তিগত লজ্জার দিনে তার পাশে দাড়াতে পারলাম না সময় মতও। তার ইজ্জত লুণ্ঠনের পর আমার এই মন্তব্য হয়তও কাটা ঘাটে নুনের ছিটার মতও মনে হতে পারে, তাই নিজের অক্ষমতা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু মহুয়ার উচিত অন্তত পিয়ালের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আমি মহুয়ার হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে পারলে করতাম। আমি আগার ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। পিয়াল আমি লজ্জিত এভাবে মুক্তচিন্তার দিনে কেু আপনার ব্যাক্তিগত অর্জনকে এভাবে ঘৃন্য একটা দৃষ্টিতে দেখলো।
আপনাকে থাকতে বলাটা কি শোভন হবে এখন? আমি নিজেও এমন কিছু নোংরামি দেখেও বেহায়ার মতো লজ্জা ভুলে থেকেছি, কারন আমার ধারনা ছিলো মানুষ দেখে শিখবে, উদাহরন স্থাপন করতে হবে, দেখাতে হবে আমরা ব্যাক্তিগত আক্রমনের পরও নিজের শোভনতা বিসর্জন না দিয়েও প্রতইবাদ করতে পারি, নিজের অবস্থানের পিছনে আমাদের অন্ধ বিশ্বাস নয় বরং শক্ত যৌক্তিক অবস্থান আছে তাই ব্যাক্তিগত হানাহানির প্রতিবাদ আমরা পালটা অশোভনতা নয় যুক্তি দিয়ে দিতে পারি, এবং এই সামান্য ব্যাক্তিগত আক্রমন দিয়ে আমাদের হারিয়ে দেওয়া যাবে না।
তাই একবার অনুরোধ করতে পারি,
এভাবে অভিমান করে নিজে হেরে যাবেন না।
আপনার অতীত জীবনের চেয়ে আপনার সংগ্রাম এবং তাতে সফল হওয়াটা সবচেয়ে বড় অর্জন। এই অর্জনের জন্য আপনি সম্মানিত এবং আপনি এখানে থাকলে অনেকেই আপনাকে দেখে মাদকাসক্তির অন্ধকার থেকে ফিরে আসার সাহস পাবে। একজন মানুষ অন্য একজনের পথপ্রদর্শক হয়ে থাকবেন। একজনকে আশা ভরসা দিতে পারবেন দইতে পারবেন উপযুক্ত পরামর্শ এসব অনেকের প্রয়োজন। এভাবে হেরে গেলে আমিও হেরে যাবো নিজের কাছে।
আমরা সবাইতো প্রকারান্তরে একই লড়াই করছি, আপনি কখনও সামনে কখনও পিছনে থেকে সহায়তা করছেন কিন্তু আপনারা পাশে আছেন এ ভরসা নিয়েই তো আমাদের পথ চলা। তাই যাবার পরও মাঝে মাঝে এসে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাবেন। আর যোগাযোগ রাখবেন যখন প্রয়োজন তখন যেনো আপনাকে পাশে পাই।
একজন দুরের বন্ধু হিসেবে এইটুকু অনুরোধ করতে পারি।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন