কোরানের সংকলনের ইতিহাস -২

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: শনি, ২৫/০৩/২০০৬ - ১১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভাষাবৈচিত্র এবং কোরানের উচ্চারনের রকমফেরঃ
আবু জাফর মুহাম্মদ বিন জারির আল তাবারি তার রচিত তাফসির-এ একটা ঘটনা বর্ননা করেছেন, ওমরের জবানিতে-
আমি হিশাম বিন হুকায়েমের তেলাওয়াত শুনছিলাম আল ফুরকান সুরার, তার উচ্চারন আমাকে নবীর শেখানো উচ্চারনের সাথে মিলছিলো না, আমি তার প্রার্থনা শেষ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করি এবং প্রার্থনা শেষ হওয়ার পর তাকে বলি" এ উচ্চারনে কোরান পাঠ তোমাকে কে শিখিয়েছে"
এর উত্তরে সে বলে " স্বয়ং নবীর কাছে আমি শিখেছি" আমি উত্তেজিত হয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাই নবীর কাছে, তাকে এ কথা বলার পর তিনি আমাকে বলেন হিশামকে ছেড়ে দিতে এবং তাকে আবার তেলাওয়াত করতে বলেন। তার তেলাওয়াত শেষ হওয়ার পর তিনি বলেন"ঠিক আছে" এবার তুমি তেলাওয়াত করো। ওমরের তেলাওয়াত শেষ হওয়ার পর তিনি বলেন তোমারটা ঠিক আছে, আসলে কোরান 7টা ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারনের আরবিতে নাজেল হয়েছে। একই রকম আরেক ঘটনার প্রেক্ষিতে বলা হয়, নবী ওমরে বুকে আঘাত করে বলেন, শয়তান বেড়িয়ে যাও। তারপর উমর কে বলেন কোরানের সব ধরনের তেলাওয়াত বৈধ যতক্ষন না একটা আয়াতের অর্থ সম্পুর্ন বদল না হয়ে যায়।
উব্বের জবানিতেও এমন ঘটনা জানা যায়, কোনো এক দিন মসজিদে প্রবেশ করার পর উব্বে একজনে তেলাওয়াত শুনে দাবি করেন সে ভুল উচ্চারনে কোরান পাঠ করছে, এবং তাকে প্রশ্ন করলে সে বলে তার এই উচ্চারন রীতি মোহাম্মদের শেখানো।
উব্বে এটা যাচাই করার জন্য মোহাম্মদের কাছে যান। উভয়ের তেলাওয়াত শুনে মুহাম্মদ বলেন তাদের দুজনের উচ্চারনই সঠিক।
জায়েদ বিন আরক্বাম কতৃক বর্নিত, এক লোক নবীর কাছে গিয়ে অভিযোগ করলো আবদুল্লাহ বিন মাসাউদ আমাকে কোরানের নির্দিষ্ট একটা সুরা শিখিয়েছিলো, আমি পরে যায়েদ বিন থাবিতের কাছে একই সুরা শিখি এবং পরবর্তিতে উব্বায়ের কাছেও এই সুরার তালিম নেই। তাদের 3 জনের উচ্চারনরীতি 3 রকম, আমি কোনটা গ্রহন করবো। নবী নিশ্চুপ ছিলনে তবে তার পাশে দাড়ানো আলী বলেন, যে যেভাবে কোরান শিখেছে তাকে সেভাবেই পাঠ করতে হবে, সবগুলো পাঠই গ্রহনযোগ্য এবং সঠিক।
আবু হুরায়রা বলেছেন, মহানবীর ভাষ্যমতে কোরান 7টি ভিন্ন উচ্চারন রীতিতে অবতীর্ন হয়েছে এবং এই 7টি উচ্চারন রীতিই সঠিক যদি না তুমি আয়াতের অর্থ সম্পুর্ন বদলে ফেলো।
এ উচ্চারনবিভ্রাট অনেকজনের ক্ষেত্রেই ঘটেছে।
আরবে 7টা ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারন রীতি প্রচলিত ছিলো। এই 7টি ভিন্ন উচ্চারন রীতি যথাক্রমে
হুডায়েল, কিনানা, কায়েস, ডাব্বা, তায়েম আল রাবাব, আসাব বিন খুযায়মা, এবং কুরাইশ।
ইবন আব্বাসের ভাষ্যমতে সেই 7টা ভিন্ন উচ্চারনরীতিতেই কোরান অবতীর্ন হয়েছে।
(***এক্ষেত্রে আমার মতামত মুহাম্মদ এই ভাষাভিত্তিক বিভাজন এবং এই সাংস্কৃতিক বিভাজন চান নি বিধায় সবকটি আঞ্চলিক উচ্চারনই কোরান পাঠের সঠিক নিয়ম বলে স্ব ীকৃতি দিয়েছেন, ****)
বিভিন্ন বর্ননায় কোরানের 7টি আদি সংকলনের কথা জানা যায়, সাত জন এটা সম্পন্ন করেন।
আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, উব্বায়ে, আবদউল্লাহ, ইবন আব্বাস।
যায়েদ, উব্বায়, আবদুল্লাহ এবং ইবন আব্বাস হলো সেই 4 জন যাদের কোরানের উচ্চারন সঠিক বলে ঘোষনা দিয়েছিলেন নবী স্বয়ং। এই ব্যাপারে এর আগের পোষ্টে বলা হয়েছে।
উসমানের কোরান সংকলনের প্রেক্ষিত এবং অন্য সব কোরান পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশঃ
কোরানের সবগুলো আয়াতই যে কুরাইশ উচ্চারনে অবতীর্ন হয়েছে এমনটা নয়, ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারনরীতিতেও কিছু আয়াত অবতীর্ন হয়েছিলো, ওমর একদা আবদুল্লাহকে ভর্ৎসনা করেছিলেন হুদায়েল উচ্চারনে কোরান শেখানোর জন্য, কোরান কুরাইশের ভাষায় অবতীর্ন হয়েছে তাই তাকে সে উচ্চারনরীতিতেই পাঠ করা দস্তুর। কিন্তু যখন দেখা গেলো কোরানের অনেক আয়াতই কুরাইশ উচ্চারন রীতি মেনে অবতীর্ন হয় নি তখন অন্য সব উচ্চারন রীতি মেনে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেখা দেয়।
এই উচ্চারনবিভ্রাট প্রকট হয় উসমানের রাজত্বকালে, যখন ইসলামি শাসনের আওতায় বিশাল ভুখন্ড, আদেরবাইজান এবং আর্মেনিয়ার উপকণ্ঠের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে হুদায়ফা বিন আল ইয়েমানসরাসরি উসমানের কাছে আসেন, সিরিয়া এবং ইরাক এর সৈন্য সমাবেশ করার সময় তিনি লক্ষ্য করেন আঞ্চলিক উচ্চারন বিভ্রাটের কারনে তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, তারা তাদের কোরানের শ্রষ্ঠত্ব নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে, তিনি উসমানকে বলেন, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের মতো কেতাব নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হওয়ার আগেই আপনি বিষয়টার সুরাহা করেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে উসমান যে পদক্ষেপ নেন তা নিম্নরূপ।
মুসা'ব বিন সা'দের জবানিতে, উসমান জমায়েতে বলেন, নবীর প্রয়ানের মাত্র 13 বছরভয়েছে, এর মধ্যেই তোমরা কোরান নিয়ে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়েছো। কেউ বলছো উব্বায়ের উচ্চরনে কোরান পড়ার কথা কেউ বলছো আবদুল্লাহর উচ্চারনে কোরান পড়ার কথা, কেউ কেউ আবার এতদুর গিয়েছে যে তারা দাবী করছে কোদার কসম আমার উচ্চারন সঠিক তোমার উচ্চারন ভুল। আমি সমস্ত জনগনকে নির্দেশ দিচ্ছি তোমাদের যার কাছে কোরানের যা যা সংগ্রহে আছে সব আমার এখানে নিয়ে আসার জন্য,
সবাই তাদের সংগ্রহের কোরান নিয়ে আসার পর উসমান বললেন এই কেতাবের সাথে কার পরিচিতি সবচেয়ে বেশী।
সমবেত জনতা বললো, যারা মোহাম্মদের তত্বাবধানে এটার কিছুঅংশ লিখেছিলো।
তারপর তিনি বলেন কার আরবি উচ্চারন সর্বোত্তম- জনতা বললো সা'ঈদের। তিনি ঘোষনা করলেন ঠিক আছে, যায়েদ সাঈদের তেলাওয়াত শুনে শুনে কোরান লিপিবদ্ধ করবে।

এর পর তিনি হাফসার কাছে রক্ষিত কুরানের অনুলিপি আনান এবং আবদুল্লাহ বিন আল জুবায়ের এবং আব্দুল রহমান বিন আল হারিথ বিন হিশামকেও জায়েদের সঙ্গে কোরানের অনুলিপি তৈরির নির্দেশ দেন। তিনি টাদের বলেন, যেখানে যায়েদের উচ্চারনরীতির সাথে তোমার উচ্চারনরীতি মিলবে না সেক্ষেত্রে শব্দটা কুরাইশদের জবানিতে লিপিবদ্ধ করো।
এই মোতাবেক লিপিবদ্ধ কোরানের অনুলিপি অতঃপর বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হলো এবং ুসমান ঘোষনা দিলেন এটাই কোরানের প্রামান্য সংকলন, অন্য সব সংকলন পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলো। জায়েদ এ সংকলন প্রসঙ্গে বলেন, তার ছেলের কাছে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সুরা আল আযহাবের একটা আয়াত ছইলো না সেখানে আমি ওটা নবীকে বলতে শুনেছি এবং ওটাকে যথাযোগ্য স্থানে স্থাপন করেছি।

হুদায়ফার ভাষ্যমতে, কুফার জনগন বলছে এটা আবদুল্লাহর সংকলন এবং বসরার লোকজন বলছে এটা আবু মুসা 'র সংকলন, খোদার কসম আমি উসমানকে এ বিভেদের কথা বলবো এবং এসব উচ্চারন রীতি যেনো নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এটা নিশ্চিত করবো।
হুদায়ফা, আবু মুসা এবং আবদুল্লাহ বিন কায়েস, আবু মুসা র ঘরের ছাদে বসে এ নিয়ে আলোচনা করেন
হুদায়ফা বলেন, আমি লোকেদের কথা শুনছি, তার অমুসলিমদের মতো উচ্চারন বিভেদে বিবাদ করছে,
আবদুল্লাহ বিন কায়েদ আপনাকে বসরার শাসক এবং শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে, এখানের জনগন আপনার রীতিনীতি অনুসরন করছে এইং কি আপনার কোরান পাঠের অনুকরন করছে, তিনি আবু মুসা র উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাকে কুফার শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে এইং কুফাবাসী আপনার অনুকরন করছে,
এই পরিপ্রেক্ষিতে আবু মুসা বলেন, আমি তাদের ভুল পথে পরিচালিত করছি না, কোদার এই কেতাবের প্রতইটা আয়াত কেনো এবং কি প্রসঙ্গে এবং কি উদ্দেশ্যে অবতীর্ন হয়েছে এটা যদি আমার চেয়ে অন্য কেউ ভালো জানে তাহলে আমি তার কাছে যেয়ে জেনে নিতাম।
একদিন আমরা সবাই একটা মসজিদে বসে ছিলাম এবং আবদুল্লাহ কোরান পাঠ করছিলেন। এ সময় হুদায়ফা সেখানে উপস্থিত হলেন, ইরাকের জনগনের মধ্যে কোরানের আয়াত নিয়ে গোলোযোগ হচ্ছে, একদল বলছে এটা আবদুল্লাহ'র কোরানে আছে কেউ বলছে এটা আবু মুসা র কোরানে আছে, আমি উসমানের কাছে গিয়ে এ বিষয়ে সুরাহার আবেদন করবো যেনো তিনি কোরানের একটা মাত্র ভাষ্য তৈরি করেন।
আবদুল্লাহ এ কথা শুনার পর উত্তেজিত হয়ে হুদায়ফার প্রতি কটুবাক্য বর্ষন করেন। এবং হুদায়ফা চুপ হয়ে যান।

এজিদ বিন মাওয়াইয়া একটা মসজিদে বসে ছিলেন, এমন সময় মসজিদের কতৃপক্ষ এসে ঘোষনা দিল তোমরা যারা আবু মুসা র কোরান অনুসরণ করো তারা এক কোনায় যাও এবং যারা আবদুল্লাহ র কোরান অনুসরন করো তারা অন্য কোনায় যাও, এবং তাদের বাকারার 196 নং আয়াত মিলছিলো না,

' Their reading of Q 2.196 did not agree. One group read, 'Perform the pilgrimage to God.' The others read it 'Perform the pilgrimage to the Ka`ba.'
হুদায়ফা ক্ষিপ্ত হন এহেন বিভেদে, এ সম্পর্কিত বর্ননা পাওয়া যাবে

Abu Bakr `Abdullah b. abi Da'ud, "K. al Masahif
এখানে ।

উসমানের শাসনামলে বিভিন্ন শিক্ষক বিভিন্নউচ্চারনে কোরান শেখাতেন এবং এই উচ্চরনরীতি নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ লেগেই থাকতও এবং সবাই নিজ নিজ পাঠকে সঠিক গন্য করে বিবাদে লিপ্ত হতো, এ খবর উসমানের কাছে আসলে তিনি বলেন এখানে লোকজন কোরানের উচ্চারন বিভেদ নিয়ে বিভকথত যারা সদ্য বিজয়ী দেশগুলোতে আছে তাদের উচ্চারন তাদের মধ্যে বিভেদের পারিমানও বেশী। মুহাম্মদের অনুসারিরা একতাবদ্ধ হও এবং এখজন ইমাম নির্দিষ্ট করো।

উসমানের এই প্রচেষ্টা অনেক বিতর্কের জন্ম দেয়।
কথিত আছে কোরান 7টি ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারনরীতিতে অবতীর্ন হয়েছে, মুহাম্মদের মৃতু্যর আগে জিব্রাঈল এসে সম্পুর্ন কোরান তার সাথে তেলাওয়াত করেন, এখনে কি 7টা ভিন্ন উচ্চারন রীতি যাচাই করা হয়েছিলো নাকি যেকোনো একটা, যদি একটাই যাচাই করা হয় তবে সেটা কোনটা??
আহমদ তাবেরি এ দুজনই এ মত প্রকাশ করেন যে উসমানের প্রবর্তিত উচ্চারন রীতিই সর্বশেষ যাচাইকৃত উচ্চারন রীতি, আবার এমনটা কথিত যে জায়েদ বিন থাবিত সেই চুরান্ত যাচাই প্রক্রিয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি অবগত কোরানের কি কি সর্বশেষ সময় বর্জিত হয়েছে এইং নতুন কি কি সংযোজিত হয়েছে।

মুহাম্মদ ঘোষনা দিয়েছিলেন যদি কেউ কোরান পাঠ শিখতে চায় 4 জনের কাছে শিখতে পারে,
ইবন মাসউদ, উব্বায় বিন কা"ব, সালিম, মুয়াদ বিন জাবাল,
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদএর ভাষ্যঃ
শেষ রমজানে 2 বার জিব্রাঈল মুহাম্মদের সাথে সম্পুর্ন কোরান যাচাই করেন এবং এর পর আমি মুহাম্মদের কাছে কি কি সংযোজিত হলো এবং কি কি বর্জিত হলো
আমাদের মধ্যে যখনই কোনো সংশয় দেখা দিতো কোরানের বিষয়ে আমরা নবীর কাছে যেতাম এবং তার কাছ থেকে সঠিক পাঠ জেনে নিতাম, তারকাছে আমার পঠিত কোরানে কোনো সংশয় ছিলো না, তারপরও আমি যদি এমন কাউকে চিনি যে আমার চেয়ে বেশী কোরান বিষ্যে অবগত আিগ টাকে খননউজে বের করবো এবং টার সংগৃহীত জ্ঞান নিজের কাছে নিতাম। আমি খোদ নবীর কাছে 70টির মতো সুরা উচ্চারন সমেত শিখেছি, এবং আমি এও অবগত আছি যে প্রতি বছর কোরানের যাচাই করা হয়, তার মৃতু্যর বছরে 2বার যাচাই করা হয়, আমি এর পরে আমার সংগৃহীত কোরান তার সামনে পাঠ করি, এবং তিনি আমার পাঠ ভুল এমন বলেন নি,
সুতরাং যে আমার পদ্ধতি অনুযায়ি কোরান পাঠ করছে তাকে এটা বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই, এবং যারা কোরানের ভিন্ন পাঠ বাবহার করছে তাদেরও সেটা বর্জনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যেই কোরানের একটা আয়াত বর্জন করে সে সম্পুর্ন কোরানকেই বর্জন করলো। তার উচ্চারিত সবচেয়ে মজার মন্তব্য হলো।
আমি যখন নবীর কাছে এসব সুরার পাঠ শিখেছি তখন যায়েদ ইসলাম গ্রহন করে নি।
আমরা বর্তমানে কোরানের সুরার যে ক্রমিক দেখি তা উসমান সংকলিত কোরানের অনুরুপ।

উসমানের উদ্দেশ্য ছিলো একই পাঠের ভিত্তইতে সমস্ত মুসলিম উম্মাহর ঐক্য। আলি এই প্রেক্ষিতে বলেছেন, যদি আমি উসমানের জায়গায় থাকতাম তবে আমিও একই পদক্ষেপ নিতাম।

উব্বায় বিন কা'ব সরাসরি উসমানের সংকলিত কোরান বর্জন করেন, তিনি নবীর কাছে প্রাপ্ত কোরানের কোনো অংশই বর্জনের পক্ষপাতি ছিলেন না,
আবদউল্লাহ ইবন মাসউদ এর প্রতিক্রিয়াও ছিলো একই রকম, আমি কি নবীর কাছে শেখা কোরানের পাঠ বর্জন করে যায়েদ কতৃখ সম্পাদিত কোরানের পাঠ গ্রহন করবো, আমি যখন রসুলের ক াছে কোরানের শিক্ষা নিয়েছি তখনও সে ইসলাম গ্রহন করে নি।
হুদাইফা উসমানের সংকলিত কোরান নিয়ে ইবন মাসাউদের কাছে আনলে মাসাউদ তার ভিত্তিতে কোরান সংশোধনের বিরোধিতা করেন। তার বক্তব্য যেটা আমার এখানে আছে এবং উসমানের ওখানে নেই তা বর্জনের প্রশ্নই আসে না, বরং এমন কিছু যা আমার এখানে নেই অথছ উসমানেরটাতে আছএ তা গ্রহন করতে পারি।

এই পরিপ্রেক্ষিতে হুদাইফার মন্তব্য, তাহলে আমাদের এত কষ্টের উপকারিতা কি হলো?
উসমান বেশ হতাশ ছিলেন তার এই পরিশ্রমের ফলাফলে, তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন , কোরান আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে এবং আমি আমার স্রবাত্বক চেষ্টা করেছি এটাকে উচ্চারনপ্রমাদ রেখে রক্ষার জন্য। এখ তওমাদের যার যেভাবে ইচ্ছা কোরান পাঠ করো।
এর পরবর্তিতে হাফসার কাছে থাকা কোরানের সংকলনটি ধ্বংস করে ফেলা হয়। এবং এ কাজটা করেন মারওয়ান। হাফসা জীবিত থাকাকালিন সময়ে একবার তাকে তার জিম্মায় থাকা কোরান সমর্পনের নির্দেশ( অনুরোধ?) করা হয়, এবং তার মৃতু্যর পরপরই তার ভাইয়ের কাছ থেকে এটা গ্রহন করা হয় এবং নষ্ট করে ফেলা হয়।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।