কেয়ামত নিয়ে কেয়ামত হয়ে গেলো গতকাল ব্লগে, যাই হোক কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন মানুষ হাজির হচ্ছেন, ভালোই লাগছে দেখে, সাদিক প্রথম থেকেই বুখারির হাদিস সংকলনের বিরোধী সুতরাং সাদিকের জন্য বুখারি বা অন্য কোনো সাদিস সংকলন থেকে হাদিস তুলে দিলে সাদিক পছন্দ করবে না, বুখারির পূনরুত্থানের বয়ান নিয়ে সন্দেহ আছে এমন মানুষও কম নয় ,যারা ধর্মপ্রাণ তাদের যদি বলা হয় তারা যেই যুক্তিগুলো দিচ্ছে সেই যুক্তিগুলো ভ্রান্ত তাহলে তাদের আঁতে ঘা লাগে, ওয়ালি এই মাত্র কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ের আবশ্যকতা নিয়ে একটা পোষ্ট দিলো, সাদিক কেয়ামত সম্পর্কিত আয়াতের একটা লিংক দিয়েছে ওটাও পড়তে হবে এর আগে ঘরবাড়ী কিছু কথা বলেছে সেই বিষয়ে কিছু কথা বলা ভালো, তবে এই একটা মজার বিষয় ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন মানুষের বক্তব্য বিভিন্ন, কেউ কারো সাথে একমত নয়, কেয়ামত নিয়ে 3 জন তিনটা লেখা দিয়েছেন কিন্তু সাদিকের মতো কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে কেউ শেষ করেন নি, এই খানেই সাদিকের পোষ্টের মজা, সাদিক কখনই স্পষ্ট কিছু বলতে নারাজ, কোনো বিষয়েই তার স্পষ্ট মত নেই, সব খানেই ভাসাভাসা মন্তব্য করে একটা ধর্মের আবহ ধরে রাখা, আমার পোষ্টটাতে বক্তব্য ছিলো সীমিত, মহাপ্রলয় বলতে আমরা কি বুঝি? এটা কি মহাবিশ্বের অবসান? না কি পৃথিবীভিত্তিক সভ্যতার অবসান? কেয়ামতের হাদিস বর্ননা পড়লে এইটুকু বোধ হয় যে সূর্যের মৃতু্যর সাথে কেয়ামতের বা মহাপ্রলয়ের কোনো সম্পর্ক নেই, তাখন সূর্য টিকে থাকবে, এবং কোনো এক আশ্চর্য কারনে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসবে, মানুষ জন শেষ বিচারের জন্য যখন সারিবদ্ধ দাড়াবে, যখন সবাইকে আমলনামা দেওয়া হবে হাতে, যারা ডান হাতে আমল নামা পাবে তাদের স্বর্গের দরজায় নিয়ে যাওয়া হবে, যারা বাম হাতে পাবে তাদের নরকে নিক্ষেপ করা হবে, কিন্তু বিচারটা হবে সেই পূনরুত্থানের দিনে। আর পূনরুত্থান হবে মহাপ্রলয়ের পরে। এই পর্যন্ত কি আমার সহব্লগারগনের মেনে নিতে কোনো আপত্তি আছে? থাকলে একটা ফিরতি পোষ্ট ঝাড়েন।
যাই হোক আমার লেখা এবং ঘরবাড়ীর লেখার মধ্যে একটা ঐক্য আছে, সেটা হলো কোনো এক পথভোলা পথিক জোতিস্ক এসে পৃথিবীকে আঘাত করবে এবং এই আঘাতের ফলে মহাপ্রলয় হয়ে যাবে, সুন্দর সমাধান, মহাবিশ্ব থাকবে, সূর্য থাকবে কিন্তু মাঝখান থেকে পৃথিবী হাওয়া হয়ে যাবে। সুতরাং মহাবিশ্ব ধংস হবে না, কেয়ামতের সাথে মহাবিশ্বের ধ্বংসের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এই মতে উপনীত হয়ে এখন সাম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখি কেয়ামত বা মহাপ্রলয় যদি ঘটেই এই ঘটনা ঘটার আগে আমরা জানতে পারবো কি পারবো না? যদি আমরা জানতে পারি তাহলে আমরা অন্য কোনো সাবধানতা অবলম্বন করতে পারবো কি পারবো না। এবং এই অতিব ক্ষুদ্্র সম্ভবনার মধ্যে পৃথিবী এবং সৌরজগতের 400 কোটি বছর টিকে থাকার সম্ভবনা কতটুকু।
মহাবিশ্বে কোটি কোটি কোটি নক্ষত্র, এত নক্ষত্র, কিন্তু নক্ষত্রগুলোর মধ্যের গড় দুরত্ব কয়েক আলোক বর্ষ, পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝের গড় দূরত্ব প্রায় 9 কোটি 30 লক্ষ মাইল। পৃথিবীর কক্ষপথের ক্ষেত্রফল 271578600 কোটি বর্গমাইল, যদি একটা গোলক কল্পনা করি এর সাথে আরও 10 কোটি গুন করতে হবে, সেই হিসেবে পৃথিবী সূর্যের কক্ষপথ নিয়ে আমরা একটা গোলক কল্পনা করলে প্রায় কোটিকোটি কোটি মাইল এর একটা ঘনক আমরা পাবো, পৃথিবীর ব্যাসার্ধ এবং পৃথিবী থেকে সূর্যের ব্যাবধানের মধ্যে অনুপাত 23500 সুতরাং পৃথিবী এবং এ ঘনকের অনুপাত হবে প্রায় 1 লক্ষ কোটির বেশী। কোনো জোতিষ্ক যদি পৃথিবীকে আঘাত করতে চায় এবং এর ব্যাসার্ধ যদি পৃথিবীর সমান হয় তাহলেও এমনটা ঘটার সম্ভবনা 1 লক্ষ কোটি বারে একবার। এখন আমরা অন্য নক্ষত্রপূঞ্জ থেকে আসা জোতিষ্কের পৃথিবীকে আঘাত করার সম্ভবনা যাচাই করতে গেলে আরও 10 এর পরে 40টা শুন্য দিয়ে হিসাব করতে হবে, এত বৃহৎ ঘনকের মধ্যে পৃথিবীকে আঘাত না করে চলে যাওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশী বাস্তব। ঘটনার পরের অংহসটা আরও মজার, বেশির ভাগ ধুমকেতুর আগমন হয় যেই বেলট থেকে সেখানে খুজে এমন মারাত্বক গ্রহানু বা ধুমকেতু পাওয়া যায় নি, এমন কি সেই বেলট থেকেও যদি কোনো গ্রহানু বা ঢুমকেতু রওনা দেয় তাহলে হয় ওটা বৃহস্পতির ওখানে গোত্তা খাবে, সম্ভবনা কম তার পরও, কিংবা সূর্যের দেকে ধাবিত হবে, পৃথিবী খুব নগন্য একটা জিনিষ মহাবিশ্বের বিশালতার অনুপাতে পৃথিবী ধুলিকণার চেয়েও ক্ষুদ্্র একটা অস্তত্ব, পৃথিবীর কাছে একটা পরমানু যতটা বড়( অবশ্যই অনুপাতে, মহাবিশ্বের অনুপাতে পৃথিবী সেই পরমানুর তুলনায় খুদ্্র, হয়তো ইলেকট্রন এবং পৃথিবীর অনুপাত করলে পৃথিবী এবং মাহবিশ্বের অনুপাত ছোটো হবে, আমি ঠিক যোগ্য উপমা খুঁজে পাচ্ছি না এই ঘটনার সাম্ভাব্যতার তুল্য কি হতে পারে- খড়ের গাঁদায় সূচ খুঁজে পাওয়া এইটার তুলনায় জলভাত বিষয়, সমুদ্্রে একটা পয়সা ফেলে ঐটা খুঁজে আনাও এই ঘটনার চেয়ে বেশী সম্ভব, এমন কি এখান থেকে লাফ দিয়ে চাঁদে পৌছে যাওয়ার সম্ভবনাও ইএ ঘটনার চেয়ে বাস্তব সম্ভবনা। বলতে হয় এই ঘনটা ঘটার সম্ভবনা সমুদ্্র জমে বরফ হয়ে যাওয়ার মতোই, যখন বাইরের তাপমাত্রা 50 ডিগ্রি সেলসিয়াস এমন সময় বাংলাদেহসের সব নদি নালা পুকুর দীঘি জমে বরফ হয়ে যাওয়া সম্ভব হলে অন্য একটা গ্রহানুর আমাদের অগোচরে পৃথিবীকে আঘাত করে ফেলা সম্ভব।
সবচেয়ে বাস্তব বিষয় বিষয় হলো আমরা পথভ্রষ্ট কোনো জোতিস্কের পৃথিবীকে আঘাত করার খবর পাবো ওটা পৃথিবীর কাছাকাছি আসার কয়েক বছর আগে, সুতরাং অবিশ্বাসিদের ভীত হওয়ার কিছু নেই, আপনার মৌজ মাস্তি করতে থাকেন, ইশ্বর বিশ্বাসীদের অগোচরে মহাপ্রলয় আনতে পারেন কিন্তু যতদিন বিজ্ঞান আছে যতদিন মানুষের বিবেচনায় এই সভ্যতা টিকে থাকে, সূর্যের মৃতু্য না হওয়া পর্যন্ত কোনো বাপের বেটার সাধ্য নাই বিজ্ঞানের চোখ ফাঁকি দিয়ে একটা আস্ত গ্রহানুকে পৃথিবীতেন্নামানোর। এই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে আল্লা মিয়া দেখাক যে সে একজন কাবিল ইশ্বর যে মহাকর্ষ না মেনেই সম্পুর্ন অদৃশ্য একটা জোতিষ্ককে পৃথিবীর উপর আছরে ফেলবে।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন