জনাব আশার আলোর মাদ্্রাসা শিক্ষা নিয়ে করা পোষ্টটা পড়ে বেশ আমোদিত হলাম, তার লাখ লাখ হাজার হাজার সংখ্যা দেখে প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম আমি, বাংলাদেশের বয়েস 35 বছর, প্রতিবছর একটা করে হলে 35টা ব্যাচ বের হয়েছে, বুয়েটে এখন ছাত্র সংখ্যা প্রতি বছরে 1000 এর মতো, এমন 5টা প্রতিষ্ঠান আছে। অতীতে এদের ধারন ক্ষমতা আরও কম ছিলো, তাই ধরে নিলাম 700 একটা গড় সংখ্যা- 35 বছরে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়েছে 3500* 35 =122500 জন ছাত্র, ঢাকা, রাজশাহী, চিটাগাং, সিলেট, জাহাঙ্গির নগর, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, এই 6টা থেকে যদি গত 35 বছরে গড়ে 5000 করে ছাত্র বের হয় তাহলে 10 লক্ষ 50 হাজার হয়, , এবং প্রতিবছর চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র নেওয়ার গড় হচ্ছে 1000, এই হিসাবে 35 হাজার, মোট 12 লক্ষ ছাত্রের মধ্যে লাখ লাখ ছাত্র যদি মাদ্্রাসার হয় তাহলে কি মাদ্্রাসা থেকে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়?
রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া সহজ, মানুষ আবেগে অনেক কিছুই বলে ফেলে।
আশার আলো ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট ছাত্র সংখ্যা কত সে সম্পর্কে আপনার কোনো ধারনা আছে? রাজনৈতিকদের মতো বললেই হবে না কথা, কথার একটা ভিত্তি থাকতে হবে, মাদ্্রাসা থেকে সব অশিক্ষিত বের হয় এমনটা হয়তও সত্য না, কিন্তু মাদ্্রাসা না থাকলে আরও বেশী পরিমান আপনার উল্লেখিত ছাত্ররা আসতো বোধ হয়। মাদ্্রাসার সংখ্যা কিন্তু কম নয়, বরং যেমন মায়া কান্না দেখছি ব্লগে তাতে যে কেউ অনুমান করতে পারে বাংলাদেশের এতিমদের সুবিধার্থেই মাদ্্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থা তৈরি হয়েছে।
আমার মনে হয় আগে এ বিষয়টা সম্পর্কে জানেন মাদ্্রাসা শিক্ষাব্যাবস্থা কোথায় শুরুখলো, কি কারনে শুরু হলো, এবং অতপর একটু যাচাই করে দেখলে হবে এখন যারা মাদ্্রাসা থেকে বের হচ্ছে তাদের ঠিক কতজন ভালো অবদান রাখতে পারছে, এবং কতজন অপচয় হচ্ছে, বিষয়টা জনসংখ্যার সুষ্ঠ ব্যাবহারের। মাদ্্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত কিছউ ভালো উজ্জল ছাত্র বাদ দিলে সামগ্রিক ভাবে মাদ্্রাসার অবদান কতো?
2003 সালে 47000 জন আলিম পরীক্ষা দিয়েছিলো, পাশ করেছে 65%, এদের কত জন পরবর্তিতে বিশ্বাবিদ্যালয় এবং জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের কলেজ গুলোতে ভর্তি হয়েছে,
যাই হোক একই বছরে ফাজিল পরীক্ষায় অবতীর্ন হয় 19000 জন ছাত্র, যদি শুধু পাশ করা মানুষের কথা বিবেচনা করি তবে 30000 থেকে প্রায় 20000 জাহর ফাজিলে ভর্তি হয়েছে, বাকি 10000 সবাই সাধারন শিক্ষা ব্যাবস্থায় যোগ দিয়েছে এমনটা হওয়ার কথা নয়, যদি অর্ধেকও হয় ধরলাম 5000 এখন প্রতিবছর হিসাবে 6 বছরে 30000 হাজার ছাত্র সাধারন শিক্ষা ব্যাবস্থায় আসছে, (অনুমান) দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা বিচার করে বলা যায়, এদের 1000 হয়তো 14টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চর্তি হয়েছে, কারন মাদ্্রাসা থেকে পাশ করে যদি 30000 ছাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যেতো তাহলে আমরা প্রচুর পরিচিত ছেলে পেতাম যারা মাদ্্রাসা থেকে আসা, আমি আমরা 7 বছরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একজনের সাথেও পরিচিত হই নাই যার অতীত মাদ্্রাসায়, আমি হয়তো পাই নাই, কপাল খারাপ, এখানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পরূয়া ছাত্র আছে, তাদের কত জন মাদ্্রাসাপরূয়া ছাত্রদের পেয়েছে।
এর পরও মেনে নিলাম আপনার দাবি- ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে যদি হাজার হাজার মাদ্্রাসা ছাত্র পড়তো তাহলে 28000 ছাত্রের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যাতাত্তি্বক হিসাবে প্রতই 15 জনে এক জন মাদ্্রাসা ছাত্র হওয়ার কথা, যদি সংখ্যাটা 2000 হয় তবে এই অবস্থা হবে, আমি চিনি প্রায় 500 ছেলেকে, সংখ্যাটা আরও বেশী হবে, কিন্তু 500 জন দঃরলাম হিসাবের সুবিধার্থে, 500 জনের অন্তত 40 জন মাদ্্রাসা থেকে আসতে পারতো, আমার খাঁচায় একটাও ধরা পড়ে নাই।
যাই হোক আমরা সংখ্যার খেলা বাদ দেই, আপনি অযৌক্তিক একটা কথা আবেগি হয়ে লিখে ফেলেছেন, ওটা আবেগের দোষ, কিন্তু আপনার আবেগটা যদি সঠিক জায়গায় থাকতো তাহলে আরও ভালো হতো,
যারা মাদ্্রাসা শিক্ষা বিলুপ্তের দাবী করছে তারা কিন্তু বলছে না কখনই ওদের অশিক্ষিত রাখা হোক, বরং বলছে তাদের একটু মানসম্মত শিক্ষা দেওয়া হোক, প্রথম আলোতে বেশ কদিন আগে মাদ্্রাসা শিক্ষায় ব্যাবহৃত বিভিন্ন পুস্তকের কথা ধারাবাহিক ভাবে লেখা হয়েছিলো, কষ্ট করে একটু পড়ে নিলে ভালো হয়, যারা অন্য মাধ্যমে পড়ছে তারা কি পড়ছে আর যারা মাদ্্রাসা থেকে বের হচ্ছে তারা ঠিক কি পড়ে বের হচ্ছে।
অনেক লিখে ফেললাম, আসলে সমস্যা হলো এই সব যুক্তির বিবেচনার কথা না শুনে ধর্মের নামেরধর্ম শিক্ষা প্রচলনের নামে মাদ্্রাসা চালু হয়েছে এই প্রোটোটাইপ ভাবনা থেকে বের না হয়ে আসতে পারলে কখনই মাদ্্রাসা শিক্ষার জন্য কোনো কাজ করতে পারবেন না, বরং গলগ্রহের মতো সবার ঘাড়ে ঝুলে থাকবে মাদ্্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থা এবং আপনার এই সব বস্তাপচা কাল্পনিক হিসাব দিয়ে কিছু অর্বাচীন বালকের মনোরঞ্জন করতে পারবেন।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন