সভ্যতায় প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মাগমনের বিষয়টা নিয়ে লিখবো ভাবছিলাম, অনেক আগে থেকেই, আরও কিছু দিন সময় লাগবে বিভিন্ন উপকথার জন্ম এবং বিবর্তন কিভাবে হলো এটা বোঝার জন্য। গত কোনো এক লেখায় উৎসের মন্তব্য ছিলো মিশরের পুরোহিত তন্ত্রের অনুমান কেনো, অন্য কোনো সমসাময়িক সভ্যতায় কি পুরোহিত তন্ত্র ছিলো না? সমসাময়িক এবং কাছাকাছি সভ্যতা বলতে ব্যাবিলনের সভ্যতা এবং এসিরিয় সভ্যতা, মিশরের সভ্যতার আচমকা বিবর্তনে এদের ভূমিকা আছে, এমন কি প্যালেস্টাইনের সভ্যতাও মিশরের মাটিতে প্রবাহিত হয়েছে, পারস্পরিক বিনিময়ের সবটা হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না, মানুষ নির্মম, যখনই কোনো শহর দখল করেছে সেই শহরের সবকিছু পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে, এবং মানুষ ফিনিক্সের মতো সেই পোড়া শহরেই আবার নতুন বসতি গড়েছে, নতুন করে সভ্যতা শুরু করেছে,এর মাঝে লিখিত যেসব ইতিহাস ছিলো তা হয়তো ধংস হয়ে গেছে সেই দহনে কিংবা ইচ্ছাকৃত ধংস করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ইতিহাস এমনই সংস্কৃতি বলতে আমরা যেসব চেতনা বা অবকাঠামো চিন্তা করি যেসব ঐক্য এবং চিহ্নের উপর এইসব সংস্কৃতি দাড়িয়ে থাকে শহর দখলের সাথে সেই সব চিহ্ন ধংস করে ফেলানো মানেই সাংস্কৃতিক আধিপত্য, এই একই মানসিকতায় রমনা বটমূলে বর্ষবরণ উৎসবে হামলা হয়, এটা বাঙালি জাতির সংস্কৃতির রূপক, এমন সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেই পূর্ব পাকিস্তানে রবিন্দ্রনাথে গান এবং সাহিত্য নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয় এবং সানজিদা খাতুন সহ আরও অনেক সাংস্কৃতিক কর্মি তখন ছায়ানট প্রতিষ্ঠা করে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাড়ান, আধুনিক সময়ে এটা সহজ, প্রকাশনা শিল্প এবং সভ্যতার কাছা কাছি থাকা এবং সংস্কৃতির উত্তরাধিকারি জনগোষ্ঠির সংখ্যাধিক্য, সব মিলে একেবারে সংস্কৃতির শেকড় উপড়ে ফেলানো সম্ভব হয় না। তবে ধারাবাহিক প্রচারনা মানসে পরিবর্তন আনতে পারে, এই একই প্রচারনা চলছে ইসলামি বাঙালি জাতিয়তাবাদ নিয়ে, আবুল মনসুর সাহেব বেশ ভালো লেখক, তার লেখা পাঠ্য ছিলো, তার মস্তিস্কজাত এই বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদ যার ভিত্তি এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠি হয়তো আচমকা কোনো বিষয় নয়, পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি হওয়ার পিছনেও হয়তো এই মুসলিম জাতিয়তা বাদ ছিলো, এই মুসলিম জাতিয়তাবাদের সমপ্রসারিত সংস্করন বাংলাদেশি মুসলিম জাতিয়তাবাদ-
এসব নিয়ে গবেষনা এবং লেখা মানুষ অনেক, আমি যেই সময়ের কথা বলবো সেটা অনেক অতিতের বিষয়, কিন্তু পন্থা আপোষ সব একই রকম। কৌটিল্যের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা যেমন এখনো গুরুত্বপূর্ন তেমন আর্ট ওফ ওয়ারের সার্বজনিনতা, মানুষের ভেতরের অনুভবগুলো মোটা দাগে একই রকম, এবং এই কারনেই এসব বইয়ের এবং এসব পন্থার ব্যাবহার সব সময়েই হচ্ছে। হালে মানুষ এই প্রচেষ্টা বিরূদ্ধে দাড়াচ্ছে যদিও কিন্তু তারপরও অপরাধিদের সাংগঠনিক ভিত্তি ভালো বলে তারা জিতে যাচ্ছে।
মিশরের সভ্যতায় একটা ব্যাপক প্রচারনার মাধ্যমে রাজাকে ইশ্বর পদাসীন করনো হয়, কিন্তু সমসাময়িক ব্যাবিলনিয় সভ্যতা এবং এসিরিয় সভ্যতায় বিষয়টা তেমন নয়, সেখানে ইশ্বর নিযুক্ত প্রতিনিধি হিসেবে রাজা রাজ্য শাসন করছে,মিশরিয় সভ্যতার তুলনায় ব্যাবিলনিয় সভ্যতার একটা ধনাত্বক বিষয় হলো এদের লিখিত ভাষার ইতিহাস প্রাচীন, এবংতাই লিপিবদ্ধ ইতিহাস পাওয়া যায়, এবং এই লিখিত ইতইহাসের সময়কাল প্রায় 6000 থেকে 7000 বছর পুরোনো।
ভাষা তার শরীরে ইতিহাস ধরে রাখে, ধরে রাখে সভ্যতার বিবর্তনের চিহ্ন। এবং অনেক প্রথাও আমরা শব্দের অধ্যয়নে জানতে পারি। চমৎকার এবং কৌতুহলউদ্দিপক বিষয় এটা।
যেমন ব্যাবিলনের ভাষায় ইলা মানে প্রভু, সেখান থেকই ইলাহ শব্দের উৎপত্তি, ইনা ইললা ছিলো ভূগর্ভস্থ জগতের অধিকারি দেবি, সেখান থেকেই আমরা মৃতের জগতের শব্দরূপের উৎস পাই, এখান থেকেই আমরা পরবর্তিতে ইন্না লিললাহে ইনাইলাহে রাজেউন শব্দটাকে বিচর করলে বুঝতে পারবো কিভাবে এই লোকবিশ্বস বা লোকগাঁথা শব্দবাহিত হয়ে আমাদের এই বাংলাদেশে এসেছে।
লোক গাঁথার বিশ্লেষনেই আমরা অনেক প্রত্নতাত্তিক বিষয়কে খুঁজে পেতে পারি। আমরা বুঝতে পারি কিছু কিছু কথা, যেমন সেমিটিকদের সাথে ব্যাবিলনিয়দের সংঘাতের বিষয়টা, নমরুদ বলে একজনের গল্প আমরা জানি, ইশ্বরের প্রতিদন্ডি ছিলো সে, গল্পটা মনে নেই, কিন্তু সেমিটিক উপকথায় সে ইশ্বরের বিরোধি এবং ব্যাবিলনের উপকথায় সে ইশ্বরের সপক্ষ শক্তি, বিজয়ি এবং বিজিতের ইতিহাস ঘৃনা এবং সংস্কৃতির উপর আধিপত্যের বিষয় এখানে আছে, যদিও একেশ্বরবাদের ধারনা প্রায় 4000 বছর পুরোনো, ইব্রাহিমের সমসাময়িক, কিংবা আরও একটু আগুপিছু করে ভাবলে 4500 বছর পুরোনো ইতিহাসের কথা বলছি, কিন্তু এই একেশ্বরবাদী ধারনা আসতে সভ্যতাকে প্রায় 5000 বছরের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অন্য একটা লেখায় এই বিষয়টা তুলে ধরার ইচ্ছা আছে, এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে বলি কিভাবে প্রাচীন ধর্মের উদ্ভব,
প্রকৃতি পূজা সবচেয়ে প্রাচিন ধর্মাচারন, এখান থেকেই মানুষের গ্রামের জীবন শুরু, এখানেই লিখিত এই তথ্য যে মানুষ তখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পুর্ন, একটা রাজ্য গড়ে উঠার সবগুলো নিয়ামক তখনও উপস্থিত নয়, এই প্রকৃতিপূজার একটা পর্যায়ে এসেছে বিভিন্ন রূপের বা শক্তির উপাসনা, এই শক্তিপূজার সাথে সাথে কিছু সার্বজনীন দেবতার কথা জানা যায়- সূর্যদেব শামস, যারা শামস শব্দটা তেমন ভাবে পছন্দ করছেন তাদের জন্য বলা শামসের অর্থ আলোর আধার, সংক্ষেপে সূর্য, এবং ব্যাবিলনের মানুষ বেশ উন্নত ছিলো, তাদের ধারনা ছিলো আলো রশ্মি মানুষের চোখ পর্যন্ত পৌছালেই মানুষ দেখতে পায়, আলো যে রশ্মি হিসাবে বাহিত হয় এই সত্য থেকে তারা একটা দেবতার বার্তাবাহক কল্পনা করে, তার নাম জিবিল, সে আলো নির্মিত দেবতা, যার কাজ আলো বহন করা, এবং তার সাহায্য ছাড়া শামস দেব অচল। আমার অনুমান এই বার্তাবাহকের ধারনাটা পরে আরও উন্নত হয়ে জিব্রাঈলের সূচনা করেছে, তেমন ভাবেই বার্তাবাহকদের আলোকনির্মিত দেহের ধারনা।
অন্য একজন সর্বজনপ্রিয় দেবী ইশতার, ফসলের দেবি, এবং এইটার সার্বজনীনতা এই কথাই প্রমান করে যে মূলত সভ্যতা কৃষিভিত্তিক ছিলো।
মৃতের কোনো দেবি ছিলো না, সমূদ্্রদেব, পবন দেব, বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির রূপক দেবতার কল্পনা ছিলো তবে ইশরাত এবং শামস সব সময় গুরুত্বপূর্ন দেবতা।
এর পর মানুষ নগর জীবনে প্রবেশ করলো। এটা একেবারেই ব্যাবিলনীয় সভ্যতার গল্প, কাছাকাছি সময়ে আরব উপদ্্বিপে সভ্যতার শুরু হয়েছে, এবং আরবের প্রাকৃতিক বিরুপতায় তাদের অনেক বসতিই পরিত্যাক্ত হয়েছে, এবং তারা যাযাবরের মতোই পানিয় জলের কাছাকাছি চারনভুমিতে নিজেদের আবাস গড়েছে, এবং এভাবেই আরব উপদ্্ব ীপে সভ্যতা ছড়িয়ে পড়েছে, এরাই পরবর্তিতে সেমিটিক ভাষার জন্ম দিবে, আমরা এখন যাদের সেমিটিক হিসাবে চিহি্নত করি তারা মূলত আদিম আরবি ভাষাভাষিগোষ্ঠি, সিরিয়ার কাছাকাছি উর্বরা ভূমিতে তাদের বিকাশ য়েছিলো, তাদের বিকাশ হয়েছিলো প্যালেস্টাইনের কাছাকাছি জায়গায়, এই 2 জায়গায়ই প্রাকৃতিক সুবিধা ছিলো ছিলো উর্বর ভূমি, ছিলো পানিয় জলের সংস্থান, এবং কৃষিভিত্তিক সভ্যতা গড়ে উঠার গুরুত্বপূর্ন নিয়ামক হলো এই দুইটা।
ব্যাবিলনের নগর পত্তন হয়েছে এবং নগরের সাথেই নগরের অধিকারি দেবতার উপাসনাস্থল তৈরি হয়েছে, অনুমান করা শক্ত হবে না যে নগরের দেবতা আসলে সেই নগর পত্তনের জন্য যেই বীর তাকেই করা হয়েছে। সেই বীর একটা সময় নগরের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে, এবং এদের কোনো একটা নগরের সৈনিকেরা পরবর্তিতে ভিন্ন ভিন্ন নগরে হামলা শুরু করে, এবং অনেকগুলো নগরের উপর আধিপত্য বিস্তার করে, এবং এই নগরের অধিকর্তা দেবতাই পরবর্তিতে সমস্ত রাজ্যের মূল দেবতা হয়ে উঠে।
এসব এক দিন দুই দিনের গল্প নয়,এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা হয়তো হাজার বছর ধরে চলছে, এবং বিভিন্ন লোকগাঁথা এবং লোকের প্রত্যাশা পূরন করতে গিয়ে কল্পনার ডালপালা ছড়িয়ে একটা সময় বিশাল এক ব্যাক্তিত্বে পরিনত হয়েছে সে বীর,
একটা সাধারন মানুষ এভাবেই মিথিক্যাল ফিগারে পরিনত হয়, এবং এর পর তার বিভিন্ন অলৌকিকত্ব আমরা জানতে পারি, মানুষের কল্পনায় আরও অনেক উপসর্গ যূক্ত হয়, একটা পর্যায়ে সত্য চরিত্রটাকেআর খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং তার নামে ছড়ানো সে স্বর্গ মর্ত্য পাতালের অধিকারি ছিলো, মহাবীর, রাবনও স্বর্গ দখল করেছিলো, অনুমান করতে কষ্ট হয় না যে বিপূল লোকবল ক্ষয় করে কোন এক সম্রাটকে পরাজিত করতে হয়েছিলো এই খানে অধিগ্রহন করা বৈদিক মানুষদের, এবং এই কাজে সহায়তা করেছিলো এখানের আদিম মানুষেরা, তাই লংকা বিজয়ে আমরা বাঁদর এবং দেবতার মিলমিশ দেখতে পাই। এখানে আদিবাসিদের গায়ের রং ছিলো কালো, এটাও একটা অনুমান, মিথের মধ্যে সমাজের বিবর্তন দেখার চেষ্টা, এবং সেই রাজা পরাজিত হওয়ার পর তার নামে কলংক লেপন, দ্্রাবিড়দের ভেতরের শক্তিশালী বীর বর্তমান ছিলো, কৃষ্ণ এমনই এক বীর, তাই রাশি রাশি ক্ষত্রিয়ের ভীড়েও আমরা কৃষ্ণের জয়গাথা শুনতে পাই। প্রাচীন ভারতের বিভন্ন উপকথা ঘেটে সেসব পুরোনো শহরের ধংসাবশেষ পাওয়া সম্ভব। প্রাচীন সভ্যতার পরিত্যাক্ত শহরের পরিমান অনেক বেশী, অনেক শহর পরিত্যাক্ত হয়েছে কারন সেখানে জীবন ধারনের জন্য পর্যাপ্ত উপকরন ছিলো না আর অনেক শহর ধংস হয়েছে রোগে। এবং এই সব ধংস হওয়া শহরে রগল্প পাওয়া যাবে বাইবেলে যেখানে ইশ্বরের অভিশাপে শহরের পর শহর পরিত্যাক্ত হয়েছে। একটু খুঁড়লে হয়তো সেইসব শবাবশেষ পাওয়া সম্ভব যা আধুনিক পরীক্ষনে হয়তো আমাদের জানাতে পারবে কোন মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিলো সেসব শহরে,
এবং দেবতার শ্রেনি বিন্যাসের পর আসে তাদের উপর ক্ষমতা অর্পন, যুদ্ধের দেবতা ছিলো অগনিত, যারা শত্রুপক্ষকে ছারাখার করে দিতো। কোনো এক আশ্চর্য কারনে সব যুদ্ধ দেবতার অধিকারি গ্রহ ছিলো মঙ্গল। এখান থেকেই পরবর্তিতে আসে মেষ রাশির কথা, এবং মেষ রাশির বৈশিষ্ঠ হলো এরা যুদ্ধংদেহি এবং এরা অভিযাত্রি সব দুর্ধর্ষ সব গুনাবলি যুক্ত। কিন্তু রাশির ধারনা আরও পরে এসেছে সভ্যতায়।
মোটামুটি এই হলো প্রধা প্রধান দেবতার লিষ্ট। শস্য দেবী, যা পৃথবীর রূপক, সূর্যদেব যা পৌরুষের রূপক, কখনও সভ্যতার রূপক, কখনও জ্ঞানের রূপক, এবং যুদ্ধের দেবতা। অন্য একটা দেবতা শ্রেনীর প্রাধান্য পাওয়া যায়, নাবু, যেখান থেকে হিব্রু ভাষায় নবী শব্দের উদ্ভব, যার গুনাবলির মধ্যে অনেক গুলো শব্দ বিদ্যমান সে গ্রহন করে, সে প্রতিপালন করে, সে বহন করে, সে প্রকাশ করে, এবং নবীর ধারনাও সমার্থক অনেকটাই, এরা ইশ্বরের আদেশ বহন করে, এরা বিজ্ঞ ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত, এরা প্রজাপালন করে, এরা ইশ্বরের আদেশ ব হন করে নিয়ে যায় মানুষের কাছে, কিন্তু এরা ততটা শক্তিশালী পুরুষ না যারা আইন প্রনয়ন করতে পারে, যেমন মুসা আইন প্রনয়ন করেছিলো, ইব্রাহিম যেমন করে বলতে পেরেছিলো একেশ্বরবাদের কথা,
ব্যাবিলনীয় প্রথার উত্তরাধিকারি আমরা সবাই, বিশেষত মুসলিমদের চন্দ্রমাস গননার ধারনা। চন্দ্রদিবস শুরু হয় সন্ধ্যার পর, আমরা চাঁদ দেখার পর মাস গননা শুরু করি এবং চাঁদ হারিয়ে যাওয়ার পর মাসের শেষ। এই প্রথার পেছনে উপকথা হলো, চন্দ্র দেবী শিন এর পূত্র হলো সূর্যদেব, তাই চাঁদ সব সময় সূর্যের অগ্রগামি, চাঁদের হিসাবে দিন শুরু হয় সন্ধ্যায় যেমন মাতা জন্ম দেয় নতুন দিবসের, নতুন দিবসের সূর্যদেবের মাতা চাঁদ। যারা ভাবছে আমি নিতান্ত চাপা পিটাচ্ছি তারা নিজে পড়াশোনা করে এই তথ্যের সত্যতা নিরূপন করতে পারে।
সম্রাজ্য গঠিত হওয়ার পরেই বিভিন্ন সৃষ্টিতত্ত নিয়ে ঘাটাঘাটি। এই সৃষ্টি তত্ত্ব বলে একটা সময় সমুদ্্রদেবের সাথে স্রষ্টার ভীষন যুদ্ধ হয়, এবং স্রষ্টা সমুদ্্র দেবতাকে পরাজিত করে, তার শিরা কেটে ফেলার পর সেখান থেকে নদীর জন্ম, এবং তার রক্ত জমা হয়ে লোহিত সগরের সৃষ্টি।
বিভিন্ন দেবতার পর আসে দেবতার উপসনাস্থল। দেবতার উপসনার জন্য উঁচু উঁচু বেদি তৈরি করা হতো, কোনোটা সপ্তস্তর বিশিষ্ঠ, ছোটো নগরের ক্ষমতা কম ছিলো তাই সেখানে 2 /3 স্তরের উপাসনালয় পাওয়া যায়, এই সব উপসনালয়ের উপরের বেদিতে পশু উৎসর্গ করা হতো। এবং শস্য দেবীর অধিষ্ঠান ছিলো, ছিলো স্বর্গাধিপতির আবাস, স্বর্গাধিপতির নিবাস ছিলো বৃহঃস্পতই গ্রহ, প্রাচীন মানুষেরা সব সময়ই বৃহঃস্পতিকে মহাদেবতার আবাসস্থল কল্পনা করেছে, বৃহঃস্পতির চার ছেলে, সম্ভবত পৃথিবী থেকে দেখতে পাওয়া যায় এমন চারটা উপগ্রহের কথা বলা হয়েছে এখানে, চাঁদের যমজ সন্তানের ধারনার উৎপত্তিও চাঁদের শুল্ক পক্ষ এবং চাঁদের কৃষ্ণ পক্ষ। দিবসের বিভিন্ন ভাগের অধিকর্তা দেবতা ছিলো ভিন্ন ভিন্ন।
এসিরিয় সভ্যতার প্রধান দেবতা আসুর, যা এই সভ্যতার রাজধানীর অধিকর্তা দেবতা। এমন কি ফিনিশিয় দ্্বারা বাহিত হয়ে বেশ কিছু উপকথা যায় গ্র ীসে এবং সেখানে দেবতার রাজা হয় জিউস, যার সমার্থক এইখানে মেরোডাক,
উপকথায় আছে গিলগামেশের গল্প, যার সময়ে বিশাল জগতপ্লাবী বন্যা হয়েছিলো, যেখান থেকে সেমিটিক ধর্মে নোয়ার বন্যার উৎপত্তি।
আরও অনেক কিছুই হয়তো বলা যেতো, কিন্তু দৈর্ঘ বাড়ছে, তাই উৎসের প্রশ্নের উত্তরটা এখানেই দিয়ে ফেলি, আসলে ব্যাবিলনিয় সভ্যতার ধারায় এবং এসিরিয় সভ্যতার ধারায় বিভিন্ন নগরের অধিকর্তা দেবতারা স্থানীয় ভাবে পূজনীয় তাই সামগ্রিক কোনো ইশ্বর ধারনা প্রমানের জন্য ব্যাপক প্রচারনার প্রয়োজন হয় নি, রাজা ইশ্বরের অধিনে এবং তার দ্্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে রাজ্য শাসন করেন, তার সহায়ক দেবতারা তাকে রাজ্য জয় সাহায্য করে, এই সব বোধ সব নগরেই ছিলো তাই রাজনৈতিক মতবাদ শোধনের জন্য কোনো সংগঠিত পুরোহিত তন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা ছিলো না এই সভ্যতায়, মিশরের ভৌগলিক বিচ্ছিন্ন 2টা জনগোষ্ঠি শাসনের জন্য সেখানে এই প্রচারনার প্রয়োজন ছিলো,
পুরোহিত সব সভ্যতার একটা অপরিহার্য অংশ, ধর্ম প্রাতিষ্ঠানিক হয়ে উঠছে, ধর্ম ক্রমশ বিমুর্তবোধের দ্্বারা প্রতিস্থাপিত হচ্ছে এবং ধর্মের এই পালাবদল একটা আকর্ষনীয় উপাখ্যান। ব্যাবিলন এই অর্থে অনেকটাই প্রকৃতিবাদি সভ্যতার মতোই, একটা দেবতার রাজ্য যেখানে অনেক অনেক দেবতা এবং তাদের ক্ষমতাধীন অঞ্চল আলাদা আলাদা, এবং তাদের ধর্মাচারন মানেই শস্যদেবির উপাসনা করা, এবং ক্ষেত্র বিশেষে শামস দেবের উপাসনা করা।
যাই হোক এর পর সবচেয়ে মজার বিষয়টা, রাশিচকড়ের ধারনা, বিভিন্ন নক্ষত্রদলকে বিভিন্ন মাসের পরিচায়ক করা হয়েছে,
তখন পর্যন্ত জানা 7টা জোতিষ্কে 7 প্রধান দেবতার আবাস,
চাঁদ, বসবাস করে শিন
সূর্য শামস
বৃহঃস্পতির অধিকর্তা দেবরাজ
এবং এই দেবরাজের অবস্থান মাসের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নক্ষত্র মন্ডলের কাছে
মাসের নাম সময়কাল চিহ্ন
নিশান- মার্চ এপ্রিল ভেড়া/মেষ
ইয়য়ার এপ্রিল মে বৃষ।ষাঁড়
সিবান
তামুজ
আব সিংহ
এলুল
তিসরি তুল্যদন্ড
এবং এর পরে আছে, বৃশ্চিক, ধনু, কুম্ভ, মীন,
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন