আবুল হাসানের প্রথম কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতার একটা অংশ আমাকে প্রচন্ড নাড়া দিয়েছিলো, আমার কাছে বিষয়টা এরকমই মনে হয় আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের অসম্পূর্ন স্বপ্নের সমপ্রসারণ। আমাদের বাবা-মায়ের স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করতে করতে আমাদের নিজস্ব স্বপ্ন পূরণের কোনো আকাংক্ষা অবশিষ্ঠ থাকে না। আমাদের গোপন ইচ্ছার বাস্তবায়ন হোক আমরা যা করে যেতে পারে নি তা আমাদের সন্তানরা করে যাবে এমন আকাংক্ষা পিতা মাতার মনে থাকে।
এমন আশার বা আকাংক্ষার জন্য আমরা তাদের দোষারোপ করতে পারি না, কারন তারা সর্বান্তকরনে আমাদের মঙ্গল চান। তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে তারা সঠিক পথে পরিচালিত করতে চান আমাদের। আমরা মুখে বড় বড় বুলি কপচে যাচ্ছি, আমরা সবার ব্যাক্তিস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করি অভিনবত্বে বিশ্বাস করি মৌলিকত্বে, আসলেই কি আমরা যা মুখে বলি আমরা কি তাই?
আমাদের দেখানোর স্বভাব আছে, আমরা নিজেদের বড় দেখাতে ভালোবাসি, আমার কাছে মনে হয় অন্য একটা বাক্যাংশ এর জন্য খুবই প্রযোজ্য-আমরা আমাদের স্বপ্নের সমান বড়। আমরা বড়ত্বের স্বপ্ন দেখি, বড় হতে চাই কিন্তু সেই চুড়া স্পর্শ করতে পারি ক'জনায়? যেসব মানুষ আমাদের স্বপ্নের মাপে বড় হয়ে যায় আমরা যারা অভাজন তারা তাদের পূজা করে জীবনপাত করি।
আমাদের সবারই সমান যোগ্যতা ছিলো সেই চুড়াস্পর্শের কিন্তু আমরা সেই চুড়া স্পর্শ না করতে পারার লজ্জায়(!!) না কি ব্যার্থতায় মানুষপূজা শুরু করি? আমরা উচ্চারনের স্বাধীনতা ভাবনার স্বাধীনতা মেনে নেওয়ার পরও কেনো বিরুদ্ধ মতের বিরুদ্ধে দাঁড়াই? অনেক আগে আমাকে একজন বলেছিলো কেনো আমাদের আরবি শিখতে হবে, আরবি আল্লাহর ভাষা, আমার সহজ পালটা প্রশ্ন ছিলো কেনো যার এত ক্ষমতা তার সব ভাষা বোঝার ক্ষমতা নেই? কেনো আমরা বাংলায় প্রার্থনা করলে তিনি বুঝতে পারবেন না, তিনি যদি আমাদের গোপন সমস্ত ইচ্ছার কথা জানেন তবে তার সর্বভাষাবিদ হওয়াটাই সবচেয়ে সহজ বিষয়। প্রশ্ন যাকে করেছিলাম তিনি খুব বিরক্ত হয়েছিলেন আমার উপরে, ছোটোদের মুখে মুখে কথা বলার প্রথাটা তখনও চালু হয় নি, তখনও বলতে কি আমি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের মাঝামাঝি এমন বড়দের অশ্রদ্ধা করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছি, আমার শেষ অপরাধ ছিলো আমি টি টেবিলে পা উঠিয়ে বসে বসে টিভি দেখছিলাম এমন সময় আমার এক পরিচিত দাদা সেখানে উপস্থিত ছিলো, আমার নিজস্ব আয়েশের ব্যাবস্থাটা তার কাছে মনে হয়েছিলো তারপ্রতি অসম্মান, যদিও আমি তাকে বোঝাতে ব্যার্থ হয়েছিলাম এই পা উঠিয়ে বসে থাকা বা না থাকার মধ্যে কারো প্রতি সম্মান বা অসম্মান নেই, এমন কি আমি কাউকেই সালাম দেই না এই বিষয়টাও আমার পরিবারের জন্য পীড়াদায়ক একটা বিষয়, আমি যতই বলি আমি যদি মুখে উচ্চারন করি আপনার উপর শান্তিবর্ষিত হোক এবং মনে মনে তার মৃতু্য কামনা করি তাহলে এমন মুখের সালামের কোনো অর্থ নেই এটা নেহায়েত লৌকিকতা, কিন্তু আমাকে পরিবার থেকে এই লৌকিকতা শেখানোর তীব্র প্রচেষ্টা চলছে । আমার শোধন হয় নি, তাই আমি আমার পরিবারের একটা কলংকের মতো, আমি বোধ হয় আমার চৌদ্দপুরুষের একমাত্র উত্তরাধিকারি যে নামাজ রোজা করে না। আমি শেষপর্যন্ত একদিন হিসাব করে দেখলাম আমার ঘনিষ্ঠ পরিবারের এবং আমার ঘনিষ্ঠ আত্মিুদের মধ্যে যারা বালেগ তারা সবাই নামাজ পড়ে নিয়মিত, নিয়মিত রোজা রাখে, সবাই সেই হিসাবে মুসলিমের যত কাজ সব করে, নিয়মমতো যাকাত দেয়, জিহাদের কোনো স্বপ্ন দেখে না যদিও, হজ্জ্ব করার একটা গোপন বাসনা সবার ভেতরে আছে। এই হলো আমার পারিবারিক পরিমন্ডলের গল্প।
শোহাইল মতাহির চৌধুরি একবার জানতে চেয়েছিলেন আমার এই অধঃপতনের পরিমন্ডল। আসলে কোনো কারন নেই। ধর্মে অবিশ্বাসের বিষয়টা ব্যাক্তিগত এটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। তবে সেই একটা সময় কৌশোরে যেই খোঁজের সূচনা হয়েছিলো তা আমাকে এখনও টানে।
প্রশ্নের জন্ম হয় সবার মনেই, সবাই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে, কিন্তু কারও কারও প্রশ্ন করার সাহস থাকে না, আমার সাথে সেই সব ধর্মপ্রাণ মানুষের পার্থক্য এখানেই যে আমি প্রশ্ন করতে ভয় পাই না। নিজের বিবেচনায় যা মনে হয় তা নিয়েই সীমিত জ্ঞানে প্রশ্ন করি, এবং সীমিত জ্ঞানেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। এর জন্য আমাকে খাটতে হয় মাঝে মাঝেই কিন্তু নিজের খোঁজে অনেক কষ্টই সহ্য করা সম্ভব, ভেতরে তাগিদ থাকলে মানুষ খালি পায়ে হিমালয়ের চুঁড়ায় উঠে যেতে পারে।
এসব বাক্য ব্যায়ের প্রয়োজন ছিলো না কোনোই কিন্তু কালকে সংস্কৃতি নিয়ে ভাবনায় ওয়ালির বক্তব্যে সবার মন্তব্য দেখে মনে হলো আমরা বিরুদ্ধমত দমনে খুবই ঐক্যবদ্ধ। ওয়ালির ব্যাক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, এমন কি আস্তমেয়ের ব্যাক্তিগত বিশ্বাস আমার সাথে না মিললেও কোনো ক্ষতি আমি দেখি না, তার প্রশ্ন করার ক্ষমতা যেখানে শেষ তার উত্তরের তাগিদও সেখানে শেষ, সে খুশী তার উত্তর পেয়ে। ওয়ালিও একটা সিদ্ধান্তে এসেছে তার বিবেচনা নিয়ে, তার বিবেচনা আমার কাছে কতটা যৌক্তিক এই প্রশ্নটা করার চেয়ে তার সেই বিবেচনাবোধকে শ্রদ্ধা করা ভালো। আমি তার সাথে একমত নই, এমন কিআদর্শগত দিক থেকে আমি তার সম্পুর্ন বিরোধী, কিন্তু তার ব্যাক্তিগত আচরনের স্বাধীনতা হরনের আমি কে?
যদিও ওয়ালির হাস্যকর সব যুক্তি শুনে আমার অনেক কৌতুক মনে পড়ে, একটা কৌতুক ছিলো এক গন্ডগ্রামের মানুষ হজ্বে গেছে ফেরত আসার পর তার গ্রামের সবাই তার কাছে অভিজ্ঞতা জানতে চেয়েছে, তার অভিজ্ঞতার একটা অংশ ছিলো আরবে বাংলায় আজান দেয়।
এমন অন্য একজনের মন্তব্য ছিলো ইংল্যান্ডের সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো ওখানের ছোটো ছেলে মেয়েরাও চমৎকার ইংরেজি বলে। এখন মূল বিষয়ে আসি, অনেক অলিগলি ঘুরে। মৃতু্য পরবর্তি জীবনের ভাষা আরবি হবে এই সত্য কে জানিয়ে গেলো ওয়ালিকে? যদি এমন কোনো হাদিস কোথাও থাকে সেটার রেফারেন্স দেওয়া হোক যে বলা হয়েছে আরবিতে সাওয়াল জবাব হবে, আমি একটা ব্যাখ্যা শুনেছিলাম এমন, মৃতু্যর পর কবরে আরবিতে প্রশ্ন করা হবে, আমার আশ্চর্য হয়ে যাওয়া মুখ দেখে বিজ্ঞ মানুষটা বলেছিলো কোনো সমস্যা নেই মৃতু্যর পর সবাই আরবি বলতে ও বুঝতে পারবে, তাহলে আর কষ্ট করে আরবি শেখার প্রয়োজনীয়তা কি এই জন্মে, যদি মৃতু্য পরবর্তি জীবনে আমি অনায়াসে আরবিতে কথা বলতে পারি।
কিন্তু ওয়ালি যদি তার চেলেমেয়েদের আরবি শেখাতে চায় বাংলা না শিখিয়ে আমি বাধা দেওয়ার কে? আমার কাছে এটা বাংলাভাষার অপমান মনে হতে পারে কিন্তু যার এই বোধটাই নেই তাকে কিভাবে বোঝানো সম্ভব হবে এটা। মানসিক সমস্যা যাদের তাদের বিভ্রমের বিষয়টা যুক্তি দিয়ে কাটানো যায় না, ওটার জন্য চিকিৎসা লাগে, চেতনায় যাদের বিভ্রম তাদের জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, এই শিক্ষা বিষয়টা কখনই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয় শিক্ষা সব সময় নিজের অনুভবে গ্রহন করতে হয়। স্বশিক্ষিত ব্যাক্তি হতে হয়, অন্য যে জিনিষটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেখাতে পারে তা হলো সঠিক প্রশ্ন করার শিক্ষা। সঠিক প্রশ্ন করতে না পারার ব্যার্থতার জন্য অনেক কুযুক্তি দিয়ে নিজের ভাবনার আর চেতনার সীমাবদ্ধতাকে সিদ্ধ করতে চাইছে মানুষ।
আস্ত মেয়ের যুক্তি শুনতে ভালো লাগে, অনেকটা মলমের মতো সমস্যার উপরিভাগে লেপ্টে থাকা মন্তব্যগুলোতে সঠিক লক্ষভেদী প্রশ্ন না করার অক্ষমতা প্রবল। যাই হোক তার সুন্দর যুক্তি কোরান বুঝে পড়ার জন্য আরবি জানতে হবে যদিও প্রার্থনার জন্য আরবিই তার প্রথম পছন্দ। হযবরল যেসব প্রশ্ন করেছে, বাংলায় কোরান করলে সবাই বুঝে পড়তে পারবে এই বিষয়ে তারও কোনো আপত্তি নেই কিন্তু বাংলা অনুবাদে কোরানের সতীত্বহানী হবে এমন বিশ্বাস তার। এবং অন্য একটা গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে সে সেটা হলো যদি সবার নিজের ভাষায় প্রার্থনার সুযোগ সৃষ্টি হয় তাহলে এটা একটা বিশৃংখলার সৃষ্টি করবে। নিজের ভাষা বলতে নিজের অনুভবে প্রকাশ করার বিষয় যদি হয় তাহলে তাকে একটা কথাই বলবো হাদিস পড়তে ঠিকমতো। আর আমি কোরান সংকলনের ইতিহাসে ইবনে মাসুদের উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম একটা ওটার সত্যতা যাচাই না করেই কিংবা ওটা সবাই বর্জন করেছে নিজের উদ্যোগে যে কারনেই হোক ওখানের একটা অংশ আছে- কোরানকে 7টা ভাষায় নাজিল করা হয়েছে, এবং প্রতি রমজানে সেটা যাচাই করা হতো। মুহাম্মদ মারা যাওয়ার আগের রমজানে ওটা 2 বার যাচাই করা হয়।
ইবনে মাসুদের একটা উক্তি ছিলো সেটা হলো সে নিজের মতো করে লিখতো এবং এটাতে মুহাম্মদের সায় ছিলো- একটা হাদিসও আছে এই প্রেক্ষিতে সেটা হলো-তোমরা কোরানের আয়াতকে নিজের মতো লিখতে পারো যতক্ষন সেটা মূল ভাবটাকে অক্ষুন্ন রাখে, কোনো শাস্তির দাবিকে যেনো পুরস্কারের দাবি না করা হয় সেই পর্যন্ত কোরানের অনুবাদ বা বাক্যবিন্যাস বদলের অনুমতি ছিলো। আস্ত মেয়ের বক্তব্য খন্ডনের জন্য নয় শুধু এটা বলার জন্যই এই প্রসংগের অবতারনা যে মুহাম্মদ নিজেই শুধু অর্থটাকে প্রাধান্য দিয়েছে।
এবং এই রকম বিচু্যতির বিষয়ে তার কোনো সমস্যা ছিলো না। সমস্যা হলো এই সব কথা যারা লিখছে তারা কেউ পড়তে চায় না, তাদের পছন্দের বক্তা আছে, তারা তাদের পছন্দের বক্তা যা বললো সেটাকেই গ্রহন করে বসে থাকে, একটু যাচাই করার প্রয়োজন বোধ করে না। এবং এই যে প্রতঃাটা উসমান শুরু করলো যে কুরাঈশদের জবানি কোরান লেখা হবে সেটাও সম্ভব হয় নি ঠিক মতও কারন কোরাঈশদের ভাষার শব্দ চয়নে এমন কিছু শব্দ ছিলো যা মদিনার শব্দের সাথে খাপ খায় না, সংস্কৃতির পার্থক্য। তাই সেসব শব্দকে অক্ষত রেখে কোরানের অনুবাদ হয় কোরাঈশ ভাষায়। ইবনে মানুষ বা উবায়া এই উসমানের খবরদারি পছন্দ করে নি, তারা ইরাকে নিজস্ব ভাষায় লিখিত কোরানের সংস্করন চালু রাখে। এবং কয়েকবছর আগে একটা মসজিদের দেয়ালে মাঝ থেকে 1000 বছর আগে লুকিয়ে রাখা কোরানের কপি পাওয়া গেছে, ব্রিটিশ প্রত্নতাত্তিকেরা এটাকে সংরক্ষন করার চেষ্টা করছে। যাই হোক এই খবরের সত্যতা যাচাই করার জন্য আমার দারস্থ হয়ে লাভ নেই, আমি আর রেফারেন্স দিবো না কোনো। যার ইচ্ছা নিজের সত্য খোঁজার তাগিদে সত্য খুঁজবে।
এর পর আস্ত মেয়ের যেই যুক্তি তার প্রধান দূর্বলতা হলো টাইম ফ্রেমের সাথে ভাষার বিবর্তনের সমস্যা। আমাকে যদি 1500 সালের বাংলা পদ্য পড়তে দেওয়া হয় আমি তার সঠিক অর্থ বুঝতে পারবো না। কারন বাংলা ভাষা পরিবর্তিত হয়েছে গত 500 বছরে। কিছু কিছু শব্দের প্রায়োগিক অর্থও বদলে গেছে। কিছউ শব্দ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এসবের সঠিক অর্থ নিরূপনের জন্য ভাষার ধারাবাহিক ক্রমবিকাশ যাচাই করতে হয়, এটা রীতিমতো গবেষনার বিষয়, আরবি শিখলেই যে যে কেউ 1400 বছর আগের আরবি ভাষায় কেনো কোন শব্দ ব্যাবহার হয়েছিলো বুঝে যাবে তাহলে ভাষার মাহত্ব্য থাকলো কোথায়, নাকি আরবের ভাষা গত 1400 বছরে বিন্দুমাত্র বদল হয় নাই। আরবের ভাষায় কোনো যতিচিহ্নের ব্যাবহার ছিলো না এই ব্যাবহার এসেছে 1300 বছর আগে। এর মাঝে 100 বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এবং কোরানের শব্দগুলো অবিকৃত থাকলেও ভাষা বদল হয়েছে, আমরা অবিকৃত কোরানের কথা মনে রাখলেও এটা ভুলে যাই ভাষা গতিশীল একটা বিষয়, বাংলায় ফ্লার্টিংয়ের ভালো প্রতিশব্দ নেই, কিন্তু চালু প্রতিশব্দ হলো খিল্লি খাওয়া। রবি বাবুর পূর্বরাগ শব্দটা আসলে কি অর্থ ভন করে আমি নিশ্চিত নই, বিবাহপূর্ব প্রেম, কিংবা প্রেমের আগের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, ভাষা এমনই একটা বিষয় আমরা যার অর্থ নির্ধারন করি, আরবিও তেমনই ভাষা এমন মানুষের চেতনার বদলের সাথে সাথে শব্দের অর্থবদল হয়েছে। আস্তমেয়ে কিদাবি করে সাবই কে আরবিতে বুৎপত্তি অর্জন করতে হবে? শুধু একটা গ্রন্থ পড়ার জন্য এত পরিশ্রমের কি দরকার, একজন ভালো করে পড়ে তার ক্ষমতা অনুযায়ি অনুবাদ করুক, এমন অনুবাদের বিচু্যতিতে যতটা অর্থবদল হবে সেটা মুহাম্মদ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকবে বলেই আমার বিশ্বস, যদিও তাতে একটা প্রধান সমস্যা হবে এই এখন যেমন অর্থের মোচড় দিয়ে তারা যেকোনো বৈজ্ঞানিক তথ্যকে কোরানে লিখিত বলে দিতে পারে তা তারা পারবে না।
আস্ত মেয়ের অন্য একটা পোষ্ট দেখে আরও ভালো লাগলো।যারা 2য় প্রজন্মের শিশু তাদের ভাষাগত বিভ্রান্তি নিয়ে পোষ্ট, এবং ওখানে একটা সিদ্ধান্ত ঘোষইত হয়েছে সেটা হলো ওরা বাংলা বুঝবেই না কোনো ভাবেই, আমার ছোটো একটা প্রশ্ন আস্ত মেয়ের প্রতি এই যে কিছু বিদেশি বাংলা ভাষা শিখলো, তারা সংস্কৃত শিখলো, মানুষ অহরহ বিদেশি ভাষা শিখছে বাংলাদেশে এমনও আমার কিছু বন্ধু আছে যাদের ফ্রেঞ্চ ভাসায় রীতিমতো পদক আছে, এই খানেও অনেক মানুষ পাওয়া যাবে যারা বিদেশি একটা ভাষায় সমান পারদর্শি অন্তত একটা সীমা পর্যন্ত সেই সীমায় তারা সেই ভাষায় রচিত সাহিত্যের রসাস্বাদন করতে পারে। এটা কিভাবে সম্ভব হলো? ভাষা শিখায় সংস্কৃতিগত পার্থক্য এখন তেমন বড় কোনো পার্থক্য নয়। মানুষ ইচ্ছা করলেই নতুন একটা ভাষা শিখতে পারে, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অনেকগুলো ভাষায় লিখতে পড়তে পারতেন শুনেছি, তার এই ক্ষমতা তৈরি হলো কিভাবে? কেনো ইশ্বরের এই বহুভাষা বোঝার ক্ষমতা নেই। আমার শৈশবের প্রশ্নটার উত্তর এখনও পাওয়া সম্ভব হলো না আসলে।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন