সত্যানুসন্ধানে আগ্রহী নয়, আমার গত পোষ্টে কেউ সত্যের সংজ্ঞা নিয়ে হাজির হলো না এটা বড়ই পরিতাপের বিষয়। কারো কাছে কি সত্যের সংজ্ঞা নেই?
প্রচলিত ধর্মবোধের বাইরে সত্যের ধারক কি? বিজ্ঞান অনেকটা সংশয়বাদী, পরীক্ষননির্ভর সতত্যা ছাড়া কিছুই স্ব ীকার করে না, যদি গানিতিক ধারনাকে মেনে নিয়ে সত্যযাচাই করতে হয় তাহলে অনেক গানিতিক প্রবন্ধই নির্ভুল সত্যবহন করে, গানিতিক প্রবন্ধের শুরুতে বা পশ্চাতপটে একটা পূর্বানুমান থাকে যেমন ধর্মের শুরুতে একটা পূর্বানূমান বিদ্যমান।
প্রতিবছর গবেষণানিবন্ধ প্রকাশের পরিমান নেহায়েত কম নয়, এবং যদি পরীক্ষনকে সত্যনির্ণয়ের মাপকাঠি ধরা হয় তাহলে প্রতিবছর অনেক সত্য গানিতিক এবং তাত্তি্বক এবং পরীক্ষণকে নীর্ভুল প্রমান করে প্রকাশিত হচ্ছে।এরকম প্রকাশিত নিবন্ধ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই, সেসব কে নিদ্্বর্িধায় সত্য মেনে নিতে আপত্তি নেই। যেমন আপত্তি নেই মেনে নিতে তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্বের বিষয়গুলো, আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং সাধারন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়েও কেউ সন্দেহ প্রকাশ করে না। পরীক্ষণনির্ভুলতার একটা সীমা নির্ণয় করেছে কোয়ান্টাম তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্ব। আমরা এ কয়েকটা তত্ত্বকে সত্য প্রমানের হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করতে পারি।
আমাদের অনুভবের চেতনার এবং অনুভূতির সবটাই বিভিন্ন মাত্রার তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। আমাদের দেহকে যদি আমরা একটা বিশাল রাসায়নিক পরীক্ষাগর ধরে নেই তাহলে এখান অদ্ভুত সব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটছে নিয়মিত, যেসব রাসায়নিক বিক্রিয়ার সবটা ব্যাখ্যা আমরা জানি না এখনও কিন্তু এখানে তথাকথিত অধিভৌতিক কিছু নেই, যা ঘটছে সবটাই বিজ্ঞানের সূত্র মেনে ঘটছে।
ক্লোনিং এর বর্ণনা পড়ে আমার ধারনা হলো জীবন আসলে খুব ছোটো মাপের একটা বিদু্যতের ধাককা। সঠিক পরিমানটা মনে পড়ছে না তবে সেটা 1 ভোলটের10 কোটি ভাগের একভাগের মতো। অর্থ্যাৎ আমরা জীবনের সূচনা বলতে যা বুঝি তা এই ক্ষুদ্্র পরিমান বিদু্যতের একটা ধাককা। যদি কোনো ডিম্বানুর ভিতরের অংশ পরিস্কার করে সেখানে একটা পূর্নবয়স্ক কোষ রেখে এই মাত্রার এক বিদু্যতের পালস দেওয়া হয় সেই ডিম্বানু বিভাজিত হয়ে নতুন জীবন সৃষ্টি করবে। আমরা একটা জীবন্ত প্রাণী পাবো ফলশ্রুতিতে। এই বিভাজনের প্রক্রিয়া এবং এই বিভাজনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলো এবং কিভাবে এই সদ্যবিভাজনরত কোষগুলো বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এই বিষয়ে তেমন তথ্য হয়তো বর্তমানে পাওয়া সম্ভব হয় নি কিন্তু একটা সময় ভবিষ্যতে এই সব জানা সম্ভব হবে, চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা একটা শিশুর জন্য এক মা'কে কৃত্রিম ভাবে বাচিয়ে রেখেছিলেন, সেই শিশু জন্মানোর পর বেঁচে ছিলো পরবর্তিতে মারা যায়। এই একটা ঘটনায় আমার মনে হয় পরবর্তিতে কোনো এক সময় মানুষ গর্ভধারনের ঝামেলায় যাবে না, বরং বিভিন্ন কোম্পানি মানুষের হয়ে এইসব শিশুর বৃদ্ধি তত্তাবধান করবে, যন্ত্রে এসব শিশু বৃদ্ধি প্রাপ্ত হবে এবং একটা পর্যায়ে তাদের মা;কে সম্পুর্ন শিশুটা দেওয়া হবে। এইভাবে হয়তো কোনো দিন সৈনিকদের জন্ম দেওয়া হবে, প্রযুক্তি বড় নিনর্মম জিনিষ এর কোনো ন্যায় নীতিবোধ নেই।
কি রকম হতে পারে সেই কৃত্রিম গর্ভধারন প্রযুক্তি? একটা ধারনা আছে আমার ভবিষ্যতের কোনো বৈজ্ঞানিক হয়তো এই ধারনাগুলো কাজে লাগিয়ে মাতাবিহীন সন্তানের জন্ম দিতে পারে। এটা নিখাদ তত্ত্বকথা, বাঙালিদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই, ব্যাপকমাত্রায় উৎপাদনের আশু কোনো সম্ভবনা নেই এটার।
আমরা পরীক্ষাগারে কৃত্রিম ভাবে নিষিক্ত করতে পারি ডিম্বানু, টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশেও। এমন একটা নিষিক্ত ডিম্বানু দরকার প্রাথমিক ভাবে। এই ডিম্বানু নিজ উদ্যোগে অনুকূল পরিবেশে বিভাজিত হয়ে। এর একটা পর্যায়ে মায়ের দেহের সাথে এর একটা সম্পর্ক তৈরি হয়, আমরা নাড়ীর টান বলতে যে জিনিষটা বুঝি, সেই নাড়ী মায়ের দেহ থাকে পুষ্টি বহন করে নিয়ে যায় এই সন্তানের দেহে, এই একটা বিষয় কৃত্রিম ভাবে তৈরি করতে হবে।পুষ্টি গমনের ধারা হলো রক্তবাহিত, রক্তের কোনো অভাব নেই, কয়েকদিন আগে জাপানের বিজ্ঞানিরা কৃত্রিম রক্ত উৎপাদনে সফল হয়েছে। যদি এমন সিনথেটিক রক্ত পাওয়া না যায় তাহলে ব্লাডব্যাংক থেকে রক্ত পাওয়া যাবেই যাবে।
এই রক্তে বিভিন্ন রাসায়নিক উৎসেচক এবং পুষ্টিগুন দেওয়াটাও অসম্ভব কিছু না। আমরা অনেকগুলো রাসায়নিক উৎসেচকের গঠন জানি, একেবারে প্রাথমিক উপযোগ থেকে কোষদেহ নিজের স্বার্থে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে নিজের প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি করবে, এই বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারলেই আমাদের প্রক্রিয়া সফল। এমন ভাবে রাখতে হবে প্রায় 270 থেকে 280 দিন। এর পর প্যাকেট খুলে নতুন একটা সন্তান নিয়ে বাসা চলে আসা।
আমাদের মা বাবারা মিথ্যাবাদী, তারা কেউই সন্তানকে সঠিক জন্মানোর বিষয়টা জানান না, বরং তাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে নিয়ে আসেন। আমরা সাথে আমার বোনের প্রায়ই ঝগড়া লাগতো এটা নিয়ে কাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসছে আর কাকে কুড়িয়ে পেয়েছে। কিন্তু আমাদের সেদিন দুরে নয় যখন লোকজন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গিয়ে সন্তান কিনে নিয়ে আসবে, কিংবা কেউ কেউ আরও ভালো ভাবে পছন্দসই ডিম্বানু নিয়ে এবং পছন্দসই শুক্রানু দিয়ে নিজের সন্তানের জন্ম দিবে, পৃথিবী ক্রমশ একটা আদর্শ নাগরিক বসতি হয়ে যাবে, যদি তখন পৃথিবী আর্য শাসিত হয় তবে অনার্য সবাইকে শোধনের মাধ্যমে নিকেশ করে সম্পুর্ন আদর্শ আর্যসমাজ তৈরি হবে। ভয়ংকর একটা ভবিষ্যতচিত্র কিন্তু এমন একটা ভবিষ্যত আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে হয়তো।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন