ইতিহাসের পাতা খুলে দেখা যাক আজকের জামাতে ইসলামি দল পূর্ব পাকিস্তানে 70 এর নির্বাচনে কয়টা আসন পেয়েছিলো- দেখা যাচ্ছে তাদের আসন সংখ্যা 1।
জাতিয় পরিষদ নির্বাচনে জামাতে ইসলামির আসন কয়টা ছিলো- সংখ্যা-4।
কিজন্য জামাতে ইসলামি বাংলাদেশকে সমর্থন করে নাই? কারনটা হলো জামাতে ইসলামি পাকিস্তানের জাতিয় পরিষদ নির্বাচনে 3টা আসনে বেশী পেয়েছিলো।
আজকে রাজাকারদের সন্তানেরা বহাল তবিয়তে ঘুরছে, তাদের নাতিপুতিরাও ঘুরছে, ভাই বেরাদার পূত্র স্বজন সবাই আছে- বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা শিরোমনি জিয়াউর রহমান76এ যখন জেল থেকে নিজামী আর মুজাহিদিকে মুক্তি দেন তখন তারা কিজন্য জেলে ছিলো? কিজন্য জেলে ছিলো আরও 33000 হাজার রাজাকার?
কিজন্য 1978এ অসুস্থ মাকে দেখতে আসার ছুতায় গো আজম বাংলাদেশে স্থায়ি আবাস নিলো, যে কিনা তার পাকিস্তানের পাসপোর্ট হস্তান্তর করে নাই, বাংলাদেশ তার নাগরিকত্ব বাতিল ঘোষণা করেছিলো? শুভ 'র একটা পোষ্টে বলা আছে সাধারন ক্ষমার আওতায় কারা কারা পড়বে না- সেই 18 দফার লিস্টে সুন্দর করে রাজাকারদের মধ্যে কারা অপরাধী এবং ক্ষমার অযোগ্য ঘোষনা দেওয়া আছে।
অবশ্য ইসলামি নেতা গো আজমের পারিবারিক শিক্ষা ভালো-তার ছেলে যখন তার চাচীর সাথে পরকীয়া করে তখন এটা ইসলামি আইন ও কেতাকে সমর্থন করে। যদিও পরকীয়ার বা অনৈতিক যৌনসম্পর্কের ইসলামি শাস্তি তাকে দেওয়া সম্ভব হয় নাই।
এবং এই লোকটাই তার পারিবারিক শিক্ষার বদৌলতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস রচনা করেন যেই ইতিহাসে কোনো গনহত্যা নেই। কিছু বিচ্ছিন্ন দুস্কৃতিকারী নিহত হয় 71এ
ভারত সম্পদ লুটের চেষ্টা করে এবং মেজর জলিল তাতে বাধা দিতে গিয়ে রাজাকারে পরিনত হয়- মুক্তিযোদ্ধা শব্দটা কলুষিত হয় বারবার-
কলুষিত হয় তথাকথিত কিছু বেজন্মাদের জন্য যারা আদর্শ এবং চেতনাকে পেট্রোডলারে বেচছে। খারাপ না অবশ্য- মতিউর রহমান নিজামি খুস সৎ লোক, ভালো মানুষ, তাই পাবনা শহরে জামাতে ইসলামির দখল প্রক্রিয়া চললেও প্রশাসন নিরব থাকে, সরকারী জমি দখল হয়ে যায়, বগুরায় মন্দির দখল হয় জামাতে ইসলামির সুশাসনে- অবশ্য আমাদের ইসলামি দেশে মন্দিরের প্রয়োজন কেনো? কে যাবে মসজিদে। সব মালাউন নামক 2য় শ্রেনীর নাগরিকদের ধরে ধরে সুন্নতে খাৎনা দিয়ে দিলেই তারা মুসলিম-
মুসলিম শবথদটাও কলংকিত হয় এদের দ্্বারা। আমার পিতার জন্য করূনা হয় তিনি সারা জীবনেও মুসলিম হতে পারবেন না। পারবে না আগার পরিবারের অন্য সব সদস্যরাও, কারন তারাও জামাতে ইসলামির সমর্থক নয়।
তবে সামনে ভোটের গরম উপলক্ষ্য আসছে- জামাতে ইসলামি আসন নিয়ে দলাদলি করছে- যদিও তাদের সাহস নেই জোট ছেড়ে যায়- তাই বিএনপির উচ্ছিস্ট আসন নিয়েই তাদের নির্বাচন করতে হবে। তেমনই সাহস নেই জোটভুক্ত অন্য সব ইসলামি দলের- জাকের পার্টির নেতা পীরজাদা ফয়সাল অবশ্য আওয়ামীলীগের কাছে ধর্না দিয়েছে তার একটা আসন প্রয়োজন।
সমস্যা হলো পীরজাদার সাথে আবার জামাতের বোঝাপড়া কম। তাই জামাতে ইসলামীর সাথে জোটবাধা বি এন পির কাছে পীরজাদা, বাংলাদেশের ইসলামি তীর্থের মহাঅধিশ্বর ফয়সাল বিএন পিতে অপাংক্তেয়।
বাংলাদেশের প্রধান 2 রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ এবং বি এন পির মধ্যে কে বেশী দায়ী ঐসলামিক মৌলবাদের উত্থানের জন্য এ নিয়ে গবেষণা চলতে পারে। মুজিবের দিকে আঙ্গুল তুলে বলা যায় তার প্রথম মন্ত্রিসভায় মুসলিম লীগ সমর্থক কিছু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অবস্থান প্রথম আঘাত- মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ তার রাজনৈতিক গুরু সোহওয়ার্দির আদর্শ বিশ্বাস করতো-
বাংলাদেশের অমুসলীম নাগরিকদের সমর্থন পাওয়ার জন্য 1955তে আওয়ামী লীগ তার নামের সাথে সংযুক্ত মুসলিন শব্দটার সুন্নতে খাৎনা দিয়ে দেয়- অবশ্য এটা বামধারার আন্দোলনে যে বিশাল অসামপ্রদায়িক রাজনৈতিক গোষ্ঠির জনপ্রিয়তা বাড়ছিলো তার প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
মুসলীম লীগের তীব্র পাকিস্তানপ্র ীতির প্রতিরোধে নতুন বাঙালি জাতিয়তাবাদের জন্ম হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে।
70 এ এসে হিসাব গেলো পালটে, আমেরিকা সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে- এশিয়ার রাশিয়ার প্রভাব এড়ানোর জন্য তার সমর্থন প্রয়োজন ছিলো চীনের যে কি না দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় যেই বামপন্থি আন্দোলন দানা বাধছিলো, যেই কারনে আসলে ভিয়েতমানের বর্বরতার সূচনা সেই সমাজতন্ত্রকে এড়াতে তার এখানে বলিষ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন ছিলো এবং তা দিতে পারে চীন।
চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত সংঘাত চীনের রাজনৈতিক বন্ধু হিসেবে পরিনত করে পাকিস্তানকে।
পাকিস্তান আমেরিকা ওচীনের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কের শান্তি দুত।
আমেরিকা পাকিস্তান প্রভাববলয়ে ঢুকে যাওয়ার সাথে সাথে ভারতের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে রাশিয়ার, চমৎকার সুসম্পর্ক।
এত সব বৈশ্বিক রাজেিনাতিক দ্্বন্দ্ব নিয়ে পূর্বপাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনের রাজনৈতিক মতধারা যা বিভিন্ন কুটনৈতিক পাড়ার বিভিন্ন দরজার গেট থেকে শুরু হয়েছিলো তাদের ভেতরে নৈতিক সংঘাত তৈরি করে।
চীন সমর্থন করে না বলেই চীনপন্থি বাম নেতারা প্রথম থেকেই স্বাধীনতা যুদ্ধ বিরোধি। তারা সশস্ত্র প্রতিরোধও করে এলাকাবিশেষে-
মুসলিম লীগের কিছু কর্মি জামাতে ইসলামি যা পূর্বপাকিস্তানে অতন্ত্য জনপ্রিয়!! রাজনৈতিক দল ছিলো তার কর্মিরা, নেজামে ইসলামি এরা সবাই মুক্তিযুদ্ধবিরোধি রাজনৈতিক চেতনা ধারন করে পাকিস্তানি সেনাবাহীনির তত্ত্ববধানে এবং সহায়তায় আলবদর আল শামস এবং শান্তিবাহিনী গঠন করলো। যা জুন মাসে পাকিস্তানের সেনাবাহীনির সদস্য হিসেবে পরিচিত হয়। অতএব এই দল আসলে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাধীনতাযুদ্ধবিরোধি সংগঠন।
নেজামে ইসলামি বলে দলটার অস্তিত্ব বাংলাদেশে কাগজে কলমে থাকতেও পারে, বাংলাদেশে নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দ্্বিশতাধিক, রাজাকার মনস্করা আলাদা আলাদা রাজনৈতিক দল গঠন করছে, এরশাদের সময় বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছে- এবং 96এর সময় থেকে আপা এবং ভাবীর আঁচলের ছায়ায় ভালোভাবেই লালিত পালিত হয়েছে।
একজন দাবি করেছেন বাংলাদেশের মাটিতে 2 কোটি জামাটের সমর্থক আছে- আওয়ামি লীগের সমর্থক কয়জন, বি এন পির সমর্থক কয়জন? দেশে ভোটার সেই হিসাবে 8কোটির মতো। এর মধ্যে 2 কোটি যদি জামাতের সমর্থক হয় তাহলে খারাপ না। বাংলাদেশের যদি 70% মানুষও ভোট দেয় তাহলে সেই সংখ্যা হয় 6 কোটির কাছাকাছি। এই 6 কোটি মানুষের 2 কোটি হলো জামাতের সমর্থক। বাংলাদেশের সংসদীয় নির্বাচনে জামাত তবে কেনো একক ভাবে অংশগ্রহন করে না?
কারনটা ইতিহাস। ইতিহাস দেখাচ্ছে বাংলাদেশ, পূর্বপাকিস্তানের ইতিহাসে মৌলবাদী দল কখনই ভোটের রাজনীতিতে পার পেয়ে যায় নাই।
এই 2001 এর বির্বাচনেও জামাতে ইসলামি জোটবাধার পরও আসন সংখ্যা বাড়ে নি জামাতের। তাদের প্রচারিত ইসলামে কতটা ইসলাম এই নিয়ে সন্দেহ থাকলেও কেউ কেউ ইসলাম ও জামাতকে এককরে দেখছে ,ভাবটা এমন যে ইসলাম বিপন্ন বাংলাদেশে। বাংলাদেশে ইসলাম বিপন্ন ছিলো না কখনও তবে এইসব ছদ্দ মুখোশধারী ইসলামসেবকের দল যারা শান্তির কথা বলবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলবে এবং নৈতিকতার প্রশ্নে গলা ফাঁটাবে চিৎকার করে তারা সবাই জামাতের রাজনৈতিক উত্থানে সহায়ক ভুমিকা রাখছে।
নৈতিকতা রাষ্ট্রবিরোধীতা এবং ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এই ভিন্ন ভিন্ন ভাবধারার শব্দ জুড়ে জুড়ে কখনই কোনো ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম তৈরি হয় না। এই কথাটা আমাদের সম্মানিত জামাত সেবক নেতারা বুঝতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো।
আওয়ামি লীগ জোট বানাবে- সেখানে ক্ষমতার কোন্দল থাকবে, বিএনপি জোট বানিয়েছে সেখানেও ক্ষমতার কোন্দল আছে- কিন্তু একটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম তৈরি হওয়ার সম্ভবনা নেই অদুর ভবিষ্যতে। দায়ি নীতিনির্ধরকেরা। যারা এখনও 35 বছর পরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষনার জন্য আলাদা কোনো সরকারী সংস্থা তৈরি করতে পারে নাই। অপরাধ আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার নীতিনির্ধারকদের, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ গবেষনার প্রচেষ্টা নেই।
বাংলাদেশে বেসরকারী উদ্যোগে ইতিহাস সংরক্ষণ এবং ইতিহাস খননের কাজ চলছে, এমন ব্যাক্তি উদ্যোগ মাঝে মাঝে প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে কারন ব্যাক্তির সাথে রাজনীতির সংশ্লিষ্ঠতা দেখিয়ে তাকে রাজনৈতিক বায়াসদ মত দেওয়া যায়- প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা থাকে ,সেখানে এমন রাজনৈতিক অপবাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে একটা ব্যাবস্থাগ্রহনের সুযোগ থাকে-
আমরা আশা করতে পারি কোনো একদিন, যখন জামাত লিখিত ইতিহাস বাংলাদেশে অবশ্য পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে-সেই অন্ধকার আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগের আগেই, বাংলাদেশে রাষ্ট্রিয় তত্ত্ববধানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষনের ব্যাবস্থা হবে-ব্যাবস্থা যুদ্ধঅপরাধীদের বিচারের। যারা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে এবং যারা তথাকথিত পাকিস্তানি জাতিয়তাবাদের চেতনা ধারন করে বাংলাদেশের আদলত এবং প্রশাসনে কর্মরত ছিলো তাদের হস্তক্ষেপে যতজন যুদ্ধঅপরাধী খালাস পেয়েছে সবারই নাম ঠিকানা এবং শাস্তি নির্ধারিত হবে-
আমরা অন্তত নিহতদের সামনে একটু গর্বভরে বলতে পারবো যারা তাদের উপর নৃশংসতার জন্য দায়ি তাদের আমরা বিচারের আওতায় আনতে পেরেছি,
4 লক্ষ ধর্ষিত নারীর সামনে আমরা বলতে পারবো তাদের উপর যে অনাচার হয়েছিলো তার বিচার হয়েছে।
আগে আমদের 35 বছরের ভুল শোধরাতে হবে, এবং এর সাথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
হায়েনা ওসাপের সাথে সহবাসে যেসব বকচ্ছপের জন্ম তাদের জিহবায় বিষ, থাবায় বিষাক্ত নখর, তাদের গলায়ও কণ্ঠে বিষ, এইসব রাজাকারসন্তানদের বাবাদের যথাযোগ্য শাস্তি হলে যদি তাদের উদ্ধত কণ্ঠ লজ্জায় নত হয়। বেজন্মাদের কণ্ঠস্বর সদা উদ্ধত,
আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লজ্জিত।এই হলো 35 বছরের স্বাধীনতার লজ্জাজনক উপাখ্যান।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন