প্রতিবছর এস এস সি এইচ এস সি পরীক্ষা হয়, সংবাদপত্রে কৃতিছাত্রছাত্রিদের সংবাদ ছাপানো হয়, আগে নিয়ম ছিলো বোর্ডে স্ট্যান্ড করা ছাত্র-ছাত্রিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হতো, তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে নিজেদের মন্তব্য জানাতো, এবং একটা পর্যায়ে প্রশ্ন আসতো তারা ছাত্র রাজনীতি কিভাবে দেখে?
রাজনীতি সচেতনতা থাকতেই পারে, একজন 1200 মার্কের পরীক্ষায় 1100 পেলেই তার একটা পরিচ্ছন্ন ধারনা জন্মায় না রাজনীতি সম্পর্কে এ বিষয়টা প্রশ্নকর্তা বেমালুম ভুলে যেতো, আরও মজার বিষয় হলো আমরা যখন এসএসসি দেই আমাদের সদ্য কৌশোর কাল, এই সময়ে জীবনবোধ পোক্ত হয়ে উঠে না, জীবনের সংগ্রামটার স্বরূপ বোঝাও সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে, এমন জীবন সম্পর্কে অপরিপকক মানুষ কিভাবে রাজনীতির মতো ব্যাপক একটা বিষয় সম্পর্কে বিজ্ঞ মতামত দিবে আমি বুঝি না। এবং তারা রাজনীতি বলতে পেপারে পড়া খবর বুঝলেও বিপদ( যদিও আমি নিশ্চিত না সেই সময়ে কতজন মানুষ পেপার পড়ে নিয়মিত) এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন না করেই সামনে যাই,
আমাদের সমাজে ভালো ছাত্রের কদর আছে, পরীক্ষায় ভালো মার্ক পাওয়ার একটা মূল্য আছে, এই ভালো ছাত্র হওয়ার মূলা ঝুলানো আছে সবার সামনে-
এখন গ্রেডিং পদ্ধতি হয়ে একটা সুবিধা হয়েছে, পেপারে এখন এই সব ইঁছরে পাকা পোলাপাইনদের মতামত পড়তে হয় না, শুনতে হয় না আিগ কোনো প্রািভেট টিউটরের কাছে পড়ি নি, আমি দিনে 5 ঘন্টা পড়তাম। আমার প্রিয় খাবার এই, আমার প্রিয় লেখক এই, অনেক রকম কথাবার্তা শুনতে হয় না।
দেশে থাকতে পেপারে নিয়মিত বিজ্ঞাপন দিতো, উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গমন, **** বৃত্তি পেয়েছে, এখন সময় পালটেছে, ভালোই লাগে
কদিন আগে খবরে পড়লাম একজন 5 জিপিএ পেয়েছে সে চায়ের দোকানে কাজ করে, প্রতিবেদক বেশ করুন একটা প্রতিবেদন লিখেছে, অবশ্য সেখানে অসহায়ত্বের প্রকাশটাই বেশী থাকে, একটা সংগ্রামী চরিত্রের প্রতি যেই শ্রদ্ধা প্রকাশের বিষয়টা থাকে তা সেখানে থাকে অনুপস্থিত, পরবর্তি আপডেট হলো সেখানের কোনো বিত্তবান তার কলেজের বেতন দিবেন, কোনো বিত্তবান তার কাগজ কলম কিনে দিবেন, এসব নির্দিষ্ট হয়েছে, সমস্যা হইলো এত দিনের সংগ্রামে এইসব মানুষের অস্তিত্ব ছিলো না, হুট করে এই ুটকো সাহায্য করতে চাওয়ার কারনটা কি সংবাদে স্থান পাওয়া??
মানুষের ভালো কাজকে সন্দেহের চোখে দেখতে নেই,
আমি বোঝার চেষ্টা করি সংবাদ পত্র কোন পয়েন্টটা সামনে আনতে চায়,
একটা পয়েন্ট হতে পারে সবার জন্য শিক্ষা বিষয়টাকে সামনে আনা দরকার মেধাবী মানুষ শুধু সচ্ছল পরিবারেই জন্মায় না, মেধাবী হওয়ার জন্য আর্থিক সচ্ছলতা বড় বিষয় না। তাই সরকারের দায়িত্ব 12 ক্লাশ পর্যন্ত সবার জন্য শিক্ষার ব্যাবস্থা করা রাষ্ট্রিয় ভাবে। যৌক্তিক দাবি, মেয়েদের জন্য 8ম শ্রেনী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার ব্যাবস্থাক রতে পারলে আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়ে ফেলানো সম্ভব, সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাবস্থাও হয়েছে, একটু নীতিনির্ধারকরা আন্তরিক হলে সবার জন্যই ক্ষিার ব্যাবস্থা করা সম্ভব, অবকাঠামো পরিবর্তনেরও প্রয়োজন নেই, শিফট করলেই হয়, বরং আরও কিছু মানুষকে শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত করা যাবে, একটা কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।
তবে আমার মনে হয় না সংবাপ্পত্রের কারারই এি ইচ্ছাটা বিদ্যমান, তারা কয়েকটা স্কুলকে সেরা স্কুল হিসেবে পরিচয় দিতে আগ্রহি, রেজালটের দিন সেসব স্কুলে ঘাপটি মেরে বসে থাকবে সাংবাদিকরা, এবং এসব সাংবাদিকদের সাথে অধ্যক্ষের সম্পর্ক থাকবে ভালো, তাদের ছেলে মেয়েরা হয় ইংলিশ মিডিয়াম কিংবা এইসব প্রতিষ্ঠিত স্কুল কলেজের ছাত্র হবে, তারা এই অনন্যতা রাখতে সচেষ্ট হবেই।
কিছু কিছু কলেজ ভালো হবে কিন্তু আন্তরিকতা থাকলে সব কলেজেই ভালো ছাত্র তৈরি করা সম্ভব। আর তারা কখনই কোনো সময়েই এই বিষয়টাকে ইসু্য করছে না।ভালো কলেজে পড়াটা এখন অনেকটা পারিবারিক সামর্থের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, অনেক মেধাবী ছাত্রই সেসব কলেজে ট্যাকের জোড় নেই বলে পড়তে পারে না।
তবে আজ ভালো লাগলো অন্য একটা খবর পড়ে, আরও একজন সাহসী কন্যার কথা পড়লাম, যারা শাররীক প্রতিবন্ধত্ব তার লেখাপড়া শেখার আগ্রহকে নষ্ট করতে পারে নাই, প্রায় 16 বছর ধরে সে এই প্রতিকূলতার বিরূদ্ধে সংগ্রাম করে ডিগ্রি পাশ করেছে। সেই বর্ণালী শীলের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই এত কিছুর অবতারনা।
তার জানার আগ্রহ তাকে সামনে নিয়ে গেছে, সে আরও পড়তে চায়, হয়তো এম এ পর্যন্ত পড়তে পারবে, এরপর উচ্চতর গবেষণা হয়তো করতে পারবে না। দেশে এমন সুযোগ নেই , কিংবা যে সীমিত সুযোগ আছে তার কোনোটাই ডিগ্রি পাশ করা একজনের পক্ষে নেওয়া সম্ভব না।
আমরা দরিদ্্র তবে দারিদ্্র আগাদের কল্পনাও হত্যা করেছে, আমাদের সৃষ্টিশীলতা হত্যা করে আমাদের হতদরিদ্্র করে ফেলছে, আমাদের চেতনায় কোনোমতে টিকে থাকার চেষ্টা লড়াইয়ের কোনো স্পৃহা নেই, এমন বন্ধ্যা সময়ে এমন কয়েকজন মানুষ মানুষের অদম্যতার কথা জানিয়ে দিয়ে যায়।
আমাদের জানায় আমরা মানুষ হিসেবে অসাধারন অস্তিত্ব আমরা চেষ্টা করলে শত প্রতিকূলতা জয় করে নিজেদের অভীষ্ট লক্ষে যেতে পারি।
ইসলামিক ছাত্র সংঘ মুম্বাইয়ে বোমা মেরে প্রায় 150 জনকে হত্যা করলো এবং আরও কয়েকশত জনকে আহত করলো,এটাও সেই সব অন্ধ মানুষদের অভীষ্ট লক্ষ ছিলো, তারাও সফল।
তবে একজন বর্ণালী শীলের অর্জন এই অমানবিক সংবাদটার প্রভাববলয় থেকে বের করে আমাকে প্রশান্তি দিচ্ছে এটাই আজকের বড় পাওয়া।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন