সামাজিক বিবর্তন, সাংস্কৃতিক বিবর্তন, শব্দগুলো এখন সাধারনভাব প্রকাশ করে, তবে এই বিবর্তনের ক্ষেত্রে সবসময়ই যে শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতিই জয়ি হবে এমন কোনো বাধাধরা নিয়ম নেই। বরং এটা ধারাবাহিক একটা প্রক্রিয়া যেখানে সৃষ্টিশীল সত্ত্বাগুলো নিজস্বস্বর খোঁজার প্রয়োজনে অন্যদের থেকে আলাদা হওয়ার সচেতন চেষ্টা করছে। এই বিবর্তনের লক্ষ্য ইনডিভিজুয়ালিজম।মানুষকে সমাজের একক ধরা হবে নাকি পরিবারকে সমাজের একক ধরা হবে এ নিয়ে একটা বিতর্ক চলছে বিজ্ঞ মহলে, কোনো না কোনো ভাবে এই সমাজিক, সাংস্কৃতিক, মানসিক বিবর্তনকে একটা রূপরেখা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা অস্ব ীকার না করেই এর এককটাকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা। একক মানুষ গতিশীল সত্ত্বা, তার ধারন করার ক্ষমতা, তার গ্রহন করার ক্ষমতা বেশি, পরিবার এ তুলনায় ভারি একটা একক যেখানে আরও বাড়তি কিছু কড়াকড়ি আরোপ করতে হয়। তবে সময়ের প্রয়োজনে পরিবার, মানুষ সবাই বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যুথবদ্ধ মানুষের সকলের তরে সকলে আমরা ভাবনাটা এখন প্রতিষ্ঠিত কোনো ভাবনা নয় মোটেও। নারী ও সম্পদকে একক ক্ষমতায় আত্তিকরনের সাথে সাথে ওটা গোত্রের সম্পদ থেকে বিচু্যত হয়ে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিগনিত হওয়ার মাধ্যমেই মানুষের ব্যাক্তি সত্ত্বা সমাজকে কোনো না কোনো ভাবে নিজস্ব চৌহদ্দির বাইরে রেখে কিছু সচেতন গ্রহন বর্জন জাতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা আদর্শ তৈরি করছে।এসব পরিবাহিত হচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। আমরা সমাজকে উচ্ছিস্টভুক অবস্থা থেকে বিবর্তিত হতে হতে সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থায় চলে আসতে দেখছি। এবং এর পরপরই ইতিহাসের খেরোখাতায় ডেবিট-ক্রেডিটের হিসাবে গোঁজামিল দেওয়ার শুরু। পুঁজিবাদ- সমাজতান্ত্রিক মতবাদ, ভোক্তা এবং উৎপাদকের সংজ্ঞা তৈরি করে দেওয়া এবং সার্বিক পন্যায়ন ঘটে যাওয়া সমাজের ভেতরে মানুষের সচেতন গ্রহন বর্জনের ধারনাটা দিকনির্দেশক কাঁটার মতোই ব্যাক্তিসাতন্ত্রের দিকে আমাদের দৃষ্টিনিবদ্ধ করে।একটা পর্যায়ে সভ্যতার ইতিহাসে মহাকাব্যের প্রচলন ছিলো, দেবতারা ধরাধামে বিহার করিতেন, আহার করিতেন, তাদের ইর্ষা- দ্্বেষ, ক্ষোভ সবই প্রকাশিত ছিলো সেইসব মহাকাব্যে, এই ধারা, ধার্মিক আবহ, আদর্শ ভিত্তিক সাহিত্য, শেক্সপিয়ারের নাটকের চরিত্রগুলোর ভাগ্যও কোনো না কোনো ভাবে অলীক সত্ত্বার দ্্বারা নির্ধারিত হয়। প্যারাডাইস লস্ট, প্যারাডাইস রিগেইন এসব মহাকাব্যের বিপরীত ধারা, যেমন মাইকেলের মেঘনাথবধ কাব্য সমস্ত হিসেব নিকেশকে উলটে দেয়। আমাদের প্রচলিত ধর্মবোধের বিপরীতে গিয়ে নায়ককে প্রতিনায়কে রূপান্তরিত করে।এসব সচেতন নর্মান, আদর্শিক ভিত্তিও ছিলো, ছিলো প্রচলিত আদর্শকে ভিন্নার্থ দেওয়া। রাজার প্রশস্তিমূলক রচনা, এটাও আসলে সেই শিল্পঅর্থায়নের কারসাজি। শিল্পের পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন, শিল্পিকে কর্মের স্বাধীনতা দিলেও একটা অদৃশ্য দায়ভার চাপিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে যারা অর্থয়নে নিয়োজিত তারাই স্বাধীনতার সীমারেখা নির্ধারন করে দিতো। এবং এর মাঝেই একটা পর্যায়ে ভিক্টোরিয়ান মনোভাব সাহিত্যজগতকে পুরোপুরি গিলে ফেললো। এইসময়ের প্যারোডিভিত্তিক রচনাগুলো কিংবা প্রচলিত ট্রেন্ডের বিপরীতে ব্যাঙ্গাত্তবক রচনাগুলোর বিরোধিতা ছিলো বেশি, তাই অনেকেই স্বনামে এসব প্রকাশ করতো না।এই প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে লেখাগুলো প্রচারনা পায় নি তেমন, তবে গবেষকরা এসব খুঁজে খুঁজে বের করছেন, তারাও প্রচলিত সাহিত্যের বিপরীতে সামাজিক পরিবর্তনে এসবের প্রভাব নিয়েও গবেষনা করছেন, করবেন সামনে আরও। এই সময়ের শুচিতার ধারনাটা রাষ্ট্র প্রচার করা শুরু করলো। শিল্পায়নের জগতে পন্যের উৎপাদন বেড়ে যাওয়া, ইউরোপের উপনেবিশিকতার অঘ্রান মাস,শ্রমশোষন, সাধারন মানুষের দুর্ভোগ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে মার্কসবাদের সূচনা।এইসবের পেছনে একটা শক্ত ভিত্তি ডারউইনের বিবর্তনবাদ, মার্কস আশাবাদী পৃথিবীর সকল অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা একটা পর্যায়ে সামাজতান্ত্রিক আবহ পাবে। ধর্মের উর্ধে মানুষকে স্থান দেওয়া এই বিবর্তনবাদ যদিও মানুষকে সামান্য প্রানীর মর্যাদা দিয়েছে তাকে কোনো বিশিষ্ঠ স্থান দেয় নি জীবজগতে। সবাই একটা লড়াইয়ের সৈনিক, মানুষ বেশী মাত্রায় অভিযোজিত এবং প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছে বলেই মানুষ নিজেকে শ্রেষ্ঠ ঘোষনা দিয়েছে। মানুষের মাহত্বের উপরের এই আঘাত আসলে শিল্পের ভিত্তিতে বড়সর একটা আঘাত। তথাকথিত নৈতিকতাবাদী শিক্ষাপ্রচার করা শিল্পিরা আর তেমন শক্ত ভাবে ধর্মভিত্তিক চরিত্র দেবতা এদের চরিত্রাংকন করতে পারছে না, পৌরণিক যুগের সমাপ্তি শিল্পে ডারউইনের প্রধান আঘাত, তবে এই নৈতিকতাবিবর্জিত সাহিত্যকে আবারও সাজিয়ে গুছিয়ে তোলার জন্য ইশ্বরভিত্তিক ধারনা বিনির্মিত হলো। চার্চের ক্ষমতা কমে যাওয়ার পর যিশুর প্রেমময়তাকে সামনে আনার চেষ্টা করা হলো। এবং মানবতাভিত্তিক একটা সাহিত্য আন্দোলন, সাথে ভিক্টোরিয়ান যুগের শুচিতা, এবং প্লেটনিক রোামন্টিক ভাবধারার সাহিত্য। এই ধারাটা অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ইউরোপের এই আন্ডোলন বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লো, ভাবনার উপনেবিশকতা বলতে হয় এটাকে, ফ্রান্সের সাহিত্য আন্দোলন, ব্রিটেনের সাহিত্য আন্দোলন সবার ঢেউই পৌঁছাতো আমেরিকা দক্ষিন আমেরিকা, ভারতের কোনায় কোনায়। ভারতের সাহিত্যিকেরাও একই ভাবধারায় মুগ্ধ হয়ে লিখছে, বাংলা ভাষায় সাহিত্যের জন্ম এমনই একটা সময়ে, আমাদের কবিতায় শুচিতা, দেববন্দনা যেটুকু ছিলো ওটা পৌরনিকতার অবশিষ্টাংশের প্রভাব, যদিও মহাকাব্য রচিত হয় নি বাংলা সাহিত্যে, উনবিংশ শতাব্দিতে, তবে ডারউইনের মতবাদ সাহিত্যিকের চরিত্রে কি প্রভাব বিস্তার করেছে বলা শক্ত। দৈবদুর্বিপাকের চিত্রায়ন হয়েছে বিষাদসিন্ধুতে, সেখানে হাসান হোসেনের পরিনতি পূর্বনির্ধারিত। মীর মোশাররফ হোসেন শুধু মানবিক বিভিন্ন আবেগের সংমিশ্রনে তাদের এই পরিনতি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এবং এই একটা পর্যায়ে যেহেতু আমাদের সমাজে তখনও ধর্মের প্রভাব( মুসলিমরা তখনও অশিক্ষিতের পর্যায়ে ছিলো, এখন দেশে 45% শিক্ষিত হলেও প্রকৃত শিক্ষায় আলোকিত মুসলিমের সংখ্যা এখনও হাতে গোনা যাবে, মুলত বন্য পশুর মতো ধর্মের প্রেষণায় এদের গতিপথ নির্ধারিত হয়) এত বেশী ছিলো যে ওটা নিছক সাহিত্যকীর্তিতে সীমাবদ্ধ না থেকে ধর্মগ্রন্থের প্রতিস্থাপন করে ফেললো। হায় হোসেন হায় হাসান করা শিয়া সংস্কৃতিও ঢাকায় বেশি দিন হলো প্রচলিত হয় নি। তবে ইউরোপের কিছু মানুষ নিজস্বতার সন্ধানে প্রচলিত রোমান্টিক ভাবধারার সাহিত্য রচনা থেকে নিজেকে নিবৃত রাখলেন, তারাই নতুন একটা সাহিত্য আন্দোলন শুরু করলেন, পৌরনিক প্রভাব অস্ব ীকার করে, রোমান্টিক আন্দোলনের বিপরীতে আধুনিক সাহিত্য আন্দোলন। এটার চর্চা শুরু হওয়ার কারনে যৌনতার বর্ননা, ঘনিষ্ট শাররিক প্রেমের চিত্রায়নজনিত সামাজিক নির্ধারিত সীমারেখার বাইরে গিয়ে চিত্রায়নের ঝোঁক শুরু হলো, যৌনতা আক্রান্ত একেকটা উপন্যাস, একেকটা কবিতা সাহিত্যের পটভুমি বদলে দিচ্ছে, বাংলাদেশে এই শরইইরভিত্তিক কবিতার জন্মকাল 50এর দশকের শেষের দিকে, শক্তি, সুনীল এরা হাংরি আন্দোলন শুরু করার পর সেই অননৈতিকতা চর্চা শুরু হলো, আধুনিক সাহিত্য, রোমান্টিক ভাবধারার সাহিত্যের বিপরীতে গিয়ে তাদের এমন প্রচন্ড স্বর আসলে পুরাতনপন্থিদের পীড়ার কারন হলেও নতুনরা গ্রহন করলো ভালোভাবেই, ইউরোপে শুরু হওয়ার 60 বছর বাদে বাংলায় আদতে আধুনিকতার চর্চা শুরু হলো। তবে বাংলা ভাষাভাষি সাহিত্যিকরা যথারীতি খোলসটা গ্রহন করলো , আদর্শটা গ্রহন করতে ব্যার্থ হলো, কিছুসাহিত্যিক এই আদর্শটাকেও গ্রহন করতে পেরেছিলো, নিজস্ব জীবনে বাউন্ডুলে স্বভাবে সবকিছুকে ভেঙে চুড়ে দেওয়ার দাবি জানানো, সমাজ বদলের দাবি জানানো, আদর্শভিত্তিক কবিতা, অনৈতিক কবিতা, অনেক রকম নিরীক্ষা চলছে, হয়তো চলবেই, তবে আধুনিকতার একটা লক্ষন হলো আবার পিছন ফিরে দেখা,যখন যুদ্ধাক্রান্ত কবিতার চৌহদ্দি, আবুল হাসান তার সারারিয়েলিস্টিক কবিতা, তার পোস্টমর্ডান কবিতার ভুমিতে আবার নতুন করে রোমান্টিকতা আনলেন, তার রোমান্টিকতা, তার ভিন্ন স্বর, তার চিত্রায়ন আসলে আবুল হাসানিয়, মিশেলটা ভালো দিয়েছে, এই একই সময়ে সাহিত্য আধুনিকতার চর্চায় যত রকমের নিরিক্ষা করা সম্ভব চলছে, তখন সাহিত্য নিছন বানিজ্যিক পন্যে পর্যবাসিত হয় নি। শিল্পবোদ্ধাদের জগত শিল্পের কদর করা জনগনের জগত উচ্চবিত্তের জগত, তারাই শিল্পের শিল্পির মান নির্নয় করছে, তারাই বিখ্যাত- কুৎসিত শিল্পের সংজ্ঞা দিচ্ছে,এদের হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার ধারনা নিয়েই গন মানুষের জন্য সাহিত্য, গন মানুষের জন্য ছবি আঁকা শুরু হলো। এই গনতন্ত্রায়নের ধারাটাই পোস্টমর্ডান ধারার সূচনা। যেখানে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য প্রচলিত ফর্মের নিপুনতার প্রয়োজন নেই, এমন একটা ভাষায় রচনা করা যা সাধারন মানুষের ভাষা, এইসব বৈশিষ্ঠই পোস্টমডার্ন বৈশিষ্ট টা না, আধুনিকতার বৈশিষ্ঠেও এসব গুন ছিলো, আধুনিক এবং উত্তরাধুনিকতা সামান্য কিছু সাযুজ্য বহন করেই, তবে আধুনিকতার প্রধান চর্চা ছিলো রূপক, বিমুর্ততার জগতে, কথার তুলনায় কথা বলার ধাঁচটা একটা পর্যায়ে প্রধান হয়ে উঠলো। কবিগুরুর চোখের সামনে এই পালাবদল ঘটছে, ভাষার বিষয়ে তার মন্তব্যটা খুব বিষয়নিষ্ট মনে হয়েছে, কোলকাতা যেহেতু সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকদের স্থান তাই সাহিত্য শিল্পে এদের মত প্রাধান্য পাচ্ছে, সাহিত্যের প্রচলিত ভাষায় কোলকাতার আঞ্চলিক ভাষার আগ্রাসন বদলে যাবে যদি সাহিত্যপৃষ্টপোষকদের আবাস হয় ঢাকা তখন ঢাকার আঞ্চলিক ভাষা সাহিত্য চলে আসবে রীতি হিসেবে।এখন এই চলছে, 1000 পর্বের ধারাবাহিক নাটক, থেকে শুরু করে সাহিত্যপাতা সবখানেই এই আঞ্চলিকতার প্রভাব স্পষ্ট ভাবে লক্ষনীয় আজ। এটাও উত্তরাধুনিকতার একটা নিদর্শন, অন্ত্যজ জনের ভাষায় সাহিত্য হবে, অন্ত্যজ জনের রুচি বিচার করে শিল্পচর্চা হবে, ভোক্তা অন্ত্যজ জন তারা যেনো বুঝতে পারে এমন শিল্প তৈরি করতে হবে, তারা যেনো নিজেকে সম্পর্কিত করতে পারে, কোনো বিমুর্ততা নেই, কোনো রূপকের আশ্রয় নেওয়া নেই, যা বলার তা সরাসরি বলে দেওয়া, কোনো আড়াল না রেখে।পপ কালচার থেকে শুরু করে গ্রাঞ্জ মেটাল সবটাই ভোক্তাকে লক্ষ করেই আসছে, পোস্ট মডার্নের সংজ্ঞা বিচার করলে এখন এর বিপরীতে গিয়ে বোদ্ধা শ্রেনীর জন্য শিল্প চর্চা করছে লোকজন, এই গনমানুষের জন্য শিল্প এবং বোদ্ধাদের জন্য শিল্প সাধনা করা মানুষগুলো একটা কাজই করছে মানুষের কাছে নিজের ভাবনা পৌঁছানোর কাজ, তবে তাদের ক্রেতা শ্রেনীর পার্থক্য তাদের ভেতরে একটা দ্্বন্দ্ব তৈরি করছে কেনো এটা বুঝছি না, বোদ্ধা শ্রেনীরা এখন আর তেমন ক্লাসিক, মর্ডান আার্টের পৃষ্টপোষকতা করছে না, ফলে 2 ধারার শিল্পির ক্রেতা আসলে মাস পিপল, তাদের ক্রেতা এক হয়ে যাওয়া একে অপরের বিপক্ষে কূটসা রটনা করছে, তথাকথিত পোস্ট মডার্ন বলছে মডার্নরা ধান্দাবাজ, মডার্নরা বলছে পোস্টমডার্নের নামে শিল্পকে বেবুশ্যে করে দিচ্ছে, লড়াইটা অর্থনৈতিক তবে শোভনতার খাতিরে এবং যেহেতু তাদের আলাদা ভাবে গনমানুষের কণ্ঠস্বর করা হয় তাই তারা একটু শোভন ভাষায় এসব বিরোধিতা করে, এবং তারা 2 পক্ষই এক বিষয়ে ঐক্যমতে আসে, গনমানুষের ভেতরে শিল্পবোধ নেই।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন