ভর্তি পরীক্ষা কি সংস্কার করা সম্ভব??

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বুধ, ১৮/১০/২০০৬ - ১:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এইচ এস সির রেজালট হয়েছে বেশ অনেক দিন হলো, এবার একে একে ভর্তিপরীক্ষার যুদ্ধ শুরু হবে, বাংলাদেশের সবকটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভর্তি পরীক্ষা, প্রকৌশল মহাবিড্যালয়গুলোর জন্য ভর্তি পরীক্ষা, বাংলাদেশে বেশ কিছু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ওসবের জন্য ভর্তি পরীক্ষা, এভাবে চলতে চলতে অবশেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত কলেজগুলোর ভর্তি পরীক্ষা।যদিও সব ছাত্রেরই ইচ্ছা বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা বুয়েট মেডিক্যালে পড়ার তবে এই ভর্তি পরীক্ষা নামক বাছাইয়ের খেলায় অনেকেই পিছিয়ে পড়বে। আমার পছন্দ না হলেও এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সত্য যে খুব কম মানুষই তার পছন্দের বিষয়ে পড়ার সুযোগ পায়, হয় যেখানে এই বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে সেখানে সীটের সংখ্যা কম, কিংবা ঐ একই সাবজেক্টে ভর্তি হওয়ার দাবিদার অনেক।বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সমস্ত কলেজের মান একই রকম না, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য বলা যায়, অনেক মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকের মান খারাপ, শিক্ষক সংকটের সাথে পর্যাপ্ত শিক্ষা উপরকনের সংকট, ক্লাশরুম সংকট, এর সাথে রাজনৈতিক সংঘাতের কারনে যেটুকু ক্লাশ চলে তাও ঠিক মতো হয় না।অনেক রকম সংকটের ভেতরে দিয়ে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা চলছে, তবে অধিকাংশক্ষেত্রে যারা পড়তে আসছে তারা সামান্য সচ্ছল পরিবারের সন্তান। এতগুলো ভর্তিযুদ্ধে সামিল হওয়ার মতো পকেটের জোড় সবার থাকে না, মেধা থাকলেই হবে না মেধার পৃষ্ঠপোষকতা লাগে, আমাদের অন্ত্যজ জনের ভেতর থেকে যে কয়জন ছাত্র গতবার গিপিএ 5 পেয়েছে তারা আগামী বার এইচ এস সি দিবে, কিন্তু এই দেশভ্রমনের খরচ দেবে কে তাদের, তাদের মেধার বিষয়ে কোনো সংশয় নেই, কিন্তু বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা আলাদা ভর্তি পরীক্ষা, এমন কি বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে আলাদা আলাদা পরীক্ষা দিতে হয়, জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা অনুষদের জন্য আলাদা করে পরীক্ষা দিতে হয়।এত সব পরীক্ষার ফর্মের টাকাও কম না, নুন্যতম 150 থেকে শুরু করে 250 এবং এর বেশী লাগে।একজন যদি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চায় তার ভ্রমন খরচ বাদ দিয়ে শুধু ফর্মের পেছনে 4000 টাকার বেশী ব্যায় হবে। এই পরিমান টাকা জোগাড় করা সম্ভব হবে না বলে অনেক মেধাবী ছাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ পর্যন্ত আসতে পারবে।এদের সে সুযোগ দেওয়া যায় যদি সামান্য সংশোধন করা যায় ভর্তি পদ্ধতি, দেশজুড়ে একটা পরীক্ষার ব্যাবস্থা করা হোক, সবাই সেখানে অংশগ্রহন করবে, মেধার ভিত্তিতে এবং নিজস্ব পছন্দের ভিত্তিতে সেখানে ছাত্র ভর্তি করানো হবে, এবং এই পরীক্ষার ফর্মের দামও নির্দিষ্ট থাকবে, সব জেলা শহরে এই পরীক্ষার জন্য আসন বরাদ্দ হবে, একটা ভর্তি ফর্মের টাকা জোগাড় করা সম্ভব। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা অন্তত সবাইকে নুন্যতম সেই সুযোগটা দিতে পারবো।সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদেরা মিলে একটা নিয়মতন্ত্র নির্দিষ্ট করে দিতে পারে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে পারেন। একটু উদ্যোগ নিলেই এটা করা সম্ভব।এমন কি এই ভর্তি পরীক্ষার রেজালটের ভিত্তিতে তাদের বিভিন্ন স্কলারশীপের ব্যাবস্থা করে দেওয়া সম্ভব। অনেক কিছুই করা যায় , যদি আমরা দেশের সকল মেধাবী ছাত্রকে বিশ্ববিড্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় দেখতে চাই, মেধা বাছাইয়ে কাজটা আমাদেরই করতে হবে, শুধুমাত্র পর্যাপ্ত টাকার অভাবে একজন মেধাবি ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে না পারলে এটা শুধু তার ক্ষতি না এটা আমাদের দেশের ক্ষতি।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।