সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি ও কাকের স্বজনপ্র ীতি

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: সোম, ০৬/১১/২০০৬ - ৩:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

াটেল রোয়ানডা ছবিটা আমার ভেতরে অন্য রকমের একটা বিষন্নতার ছোঁয়া এনেছিলো, একই ঘটনা ঘটেছে ক্রাশ ছবিটা দেখার পর, যদিও প্রেক্ষাপট সম্পুর্ন আলাদা তা সত্ত্বেও আমাদের ঘটনা পর্যালোচনার সীমাবদ্ধতা কিংবা আমাদের উদাসিনতার সুযোগে কত অন্যায় আমরা সমর্থন করে যাই তার কিছু নিদর্শন আছে এই ছবি 2টাতে।
আমাদের শুদ্ধতাবাদী প্রক্রিয়া, আমাদের আইনানুগত্য, আমাদের আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি ভালোবাসা, আমাদের সাদা-কালোর বিভাজন, এবং ধুসর প্রদেশে যেখানে অবিচার,অনাচার এবং অমানবিকতা আমাদের আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি নির্ভরতাকে শ্রদ্ধা না করেই ঘটতে থাকে এবং ঘটে যায়, সেই সব বিষয়কে প্রতিরোধের কোনো সুযোগ আমরা পাই না, আমাদের আইন মেনে অঘটন ঘটবে এমনটা আশা করি না আমরা, তবে আমাদের সব কিছু হওয়া উচিত কাগজ কলমে নিঁখুত,
অন্য 2টা যুদ্ধ বিষয়ক ছবি দেখেছিলাম, ক্যাজুয়ালিটি ওফ ওয়ার, আর নো ম্যানস ল্যান্ড, এই 2টা ছবিতেই সেনাবাহিনীর আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতি শ্লেষ বিদ্যমান ছিলো। তবে ঘটনা বিচারে আমার মনে হয় হোটেল রোয়ান্ডা আর নো ম্যানস ল্যান্ড ছবিটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছে, আমাদের তথাকথিত সভ্য বিবেকবান সমাজের আপাত নিষ্ঠুরতা কিংবা আমাদেরঅমানবিকতার জায়গাটাতে আঘাত করে এই 2টা ছবির ঘটনা। হঠাৎ ছবিগুলোর কথা মনে পড়লো সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির খবর পড়ে, সাদ্দাম হোসেনকে গনহত্যার দায়ে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হবেই এমনটাই নিশ্চিত ছিলো, তথাকথিত কমু্যনিস্ট ব্লকের ভেতরের জাতিগত সংঘাতের সূচনার পরে বেশ কিছু মানুষকে অমানবিকতার জন্য, গনহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে, আমরা সভ্যসমাজের মানুষের এসব বিচারকে স্বাগত জানিয়েছি, মন্দ লোকের শাস্তি হওয়াই উচিত, অন্তত আন্তর্জাতিক আদালত বলে একটা বিষয় আছে, আমাদের মানবাধিকার বিষয়ক একটা প্রচারনা শুরু হয়েছে বৈশ্বিক প্রচারণা, বাংলাদেশেও কিছু সামাজিক সচেতনতা আন্দোলনও শুরু হয়েছে, এবং তারা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার নিয়ে সরব, এরাই আন্তর্জাতিক আদালতের নিয়মের ভিত্তি তৈরি করেছে, তারা গনহত্যার জন্য সাদ্দামের বিচার করলো, ফাঁসীর আদেশও হলো, এই রায় কার্যকর হবে কি না কে জানে, ইরাকে আমেরিকার সার্বিক বিপর্যয়ের ভেতরে নৈতিক একটা বিজয় হিসেবে চিহি্নত হওয়া এই ব্যাবস্থায় হয়তো ত্বরিত এই রায় কার্যকর করেও ফেলতে পারে আমেরিকান সরকার, তবে বুশ লাদেনকে ধরতে গিয়ে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলো, এর পর ইরাকে মিথ্যা অভিযোগে একটা যুদ্ধ বাজিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচু্যত করলো, বেশ অনেকগুলো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা এই যুদ্ধের সাথে জড়িত, তাদের যুদ্ধাপরাধি হিসেবে বিচার করা হবে কি না আমি নিশ্চিত না, তবে আমি যতটুকু দেখেছি, এই আমলাতন্ত্রের প্রতি আমাদের আনুগত্য অনেক সময়ই প্রকৃত অপরাধিকে চিহি্নত করার বিষয়ে আমাদের ভ্রান্ত করে, ইরাকে একেবারে মিথ্যা কারনে যুদ্ধ শুরু করার জন্য এদের যুদ্ধাপরাধি হিসেবে বিচার করা হবে না কখনই, তারা সভ্য সমাজের প্রতিনিধি, আমাদের বিবেক, আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমাদের অমানবিকতাসমুহ, তবে নিজস্ব জগতে তারা পরস্পর বন্ধু আর কাক কখনও কাকের মাংস খায় না।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।