চাটুকার চাই- তৈলমর্দনের অভিজ্ঞতা যোগ্যতা বিবেচিত হবে-

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: সোম, ০৫/০২/২০০৭ - ৩:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের সামপ্রতিক অবস্থা আমাকে বিমর্ষ করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতিটা পদক্ষেপে পরিকল্পনাহীনতার ছাপ স্পষ্ট। তারা ভালো পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী তবে তাদের জীবনযাপনের অভ্যাস তাদের যেভাবে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশের 95% মানুষের জীবনযাপনের অভ্যাস তেমন নয়। হয়তো অতিজ্ঞানী মুর্খতা তাদের বিবেচনাহীন করেছে।
তাদের পরিকল্পনার ভেতরে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ীমহলকে তুষ্ট করার স্বভাবটাও স্পষ্ট। অবশ্য তাদের নিজস্ব পেশার প্রতি বিন্দুমাত্র অশ্রদ্ধা প্রকাশ না করেই বলি- " বার্ডস ওফ সেম ফেদার ফ্লকস টুগেদার"- আমাদের সিশীল সমাজীয় স্তরায়নে যেহেতু উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেনীটাই প্রধান নির্ণায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ তাই তাদের নিজস্ব জীবনযাপনের সত্যকে তারা সবার জন্য সঠিক মেনে নিয়েছেন।
তাদের দায়িত্ব নেওয়ার 4র্থ সপ্তাহ শুরু হয়েছে- তারা এখনও তবলার টুকটাক করছেন। তাদের গদাই লস্করি চাল দেখে মনে হচ্ছে না মাত্র 3 মাস পরেই তাদের নির্বাচন তফশীল ঘোষনার দায়িত্ব নিতে হবে।
সঠিক ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করার আগে নির্বাচন কমিশন সংস্কারের সাধু উদ্যোগ তারা নিবেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 2 সপ্তা নির্বাচনের সবচেয়ে প্রধান অংশটা কার্যত অচল। তারা যোগ্য লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। হয়তো নির্বাচন কমিশন প্রধান হওয়ার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তারা দৈনিকে দিবেন। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো মেনে চলার বদাভ্যাস থাকলে এমনটাই ঘটতে পারে। তবে পৃথিবীতে কোথাও এখনও নির্বাচন পরিচালনা নামক উচ্চতর ডিগ্রি দেওয়া হয় না তাই প্রার্থ ীর যোগ্যতা তারা ঠিক কি নির্দিষ্ট করবেন এই বিষয়ক মতদৈত্বতায় তারা শুরু করতে পারছেন না কাজটা।
অকারন একটা জরুরী অবস্থা চলছে দেশব্যাপী। সংবাদপত্রের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমি যেমন পুর্বানুমান করেছিলাম দুর্ন ীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার গনমাধ্যম। নিয়মিত দুর্ন ীতির হোতাদের খবর ছাপছে সংবাদপত্র। প্রতিটা বড় ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সীমিত মাত্রায় নীতিহীনতা বিদ্যমান। আবুল খায়ের গ্রুপের সামপ্রতিক অপতৎপরতায় আমি বিস্মিত। বিস্মিত এটা জেনেও যে পুরো 24 ঘন্টা সংবাদ মাধ্যমগুলো মুখে কুলুপ এঁটে ছিলো। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে যেনো এই অপকর্মের সাথে না জড়ানো হয় এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ঘুষ দিতে গিয়ে যে 2 কর্মকর্তা হাজতে গেলেন, তাদের থলের বেড়াল বাঘ হয়ে বের হলো, তবে তেমন ভাবে প্রতিক্রিয়া চোখে পড়লো না।
বোধ হয় আবুল খায়ের গ্রুপের কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নেই বাজারে। শেয়ার বাজারে যেসব প্রতিষ্ঠান আসে তাদের সুনামের উপর নির্ভর করে শেয়ার বাজারে তাদের অবস্থান। যেহেতু জনস্বাস্থের প্রতি হুমকি আসে এমন একটা ঘটনা তারা ঘটিয়েছে- গনসাধারন বিনিযোগ ফিরে পেতে চাইবে। তারা সচেতন ভাবে এই কুটিল প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্রব মুছে ফেলানোর চেষ্টা করবে।
বাংলাদেশের জনগনের স্বার্থ চিন্তা ততটা প্রবল না হয়তো। সচেতনতার মাত্রায় এরা নু্যন তাও নিশ্চিত। যদিও আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি এদের বিরুদ্ধে পুলিশ কি অভিযোগ আনে তা দেখার জন্য।যদি পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে জনস্বাস্থহানী করার দুরঅভিসন্ধির মামলা দায়ের করে- যদি রাষ্ট্র ক্ষতিপুরণ চায়, যদি রাষ্ট্র তারা নাগরিককে বিকল্প হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে এই প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করে-জানি না এমন মামলা হয়েছে কি না বাংলাদেশে, হলে আদালত কত জরিমানাক রবেন তাদের এবং কত ক্ষতিপুরণ দিতে বাধ্য করেন এটাও আগ্রহ নিয়েই দেখবো। অবশ্য শিল্পপতিটা সাধারন মানুষকে পোকামাকড়ের তুলনায় বড় কিছু ভাবেন না তা স্পষ্ট হয়েছিলো রোকনউদ্দিন সাহেবের প্রচেষ্টায়।
আমাদের জাতিসত্ত্বার অহংকার ভূলুণ্ঠিত। বড় আশ্চর্য লাগে আমাদের সম্মিলিত পদলেহনে উদগ্র ীব প্রশাসন দেখলে। গীতি আরা সাফিয়া পরীক্ষক নিযুক্ত করেছিলেন বেচারী বিউটেনিস ও যুক্তরাষ্ট্রকে। বিউটেনিস বলেছেন ভালো, কোনো সমস্যা নেই- গীতি আরা সাফিয়া ভদ্্রমহিলা তাই অশোভন কিছু বলছি না- তার এই মুক্তকচ্ছা উল্লার দেখে নিজেকে বড় দরিদ্্র মনে হলো।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা- আইন উপদেষ্টা- অর্থ উপদেষ্টা- সবাই দাতা দেশগুলোকে পীর দরবেশ মেনেছেন- নিজস্ব জনগনের উন্নতির কথা যদি দাতাদেশ গুলো বলেন তবে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় তাদের- ই ইউ, ইউ এস এ বলেছেন তাদের পদক্ষেপ ঠিক আছে, কিছু উন্নতির অবকাশ সবসময়ই থাকে- তবে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন- এই পাশ মার্ক পাওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বৈতরণি পার হলো।

সরকারী খাস জমিতে যদি দুঃস্থ নাগরিক বসবাস করে তবে তাদের প্রতি মানবিক আচরণ করার নির্দেশনা আছে। আমাদের সম্মানিত কোনো বিচারকের এই মানবিক সিদ্ধান্তের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হয়েছে। তবে সরকারী খাস জমি দখলদারিত্ব থেকে উদ্ধার করার প্রবল প্রচেষ্টারত বর্তমান প্রশাসন এ বিষয়ে উদাসীন। আমার প্রিয় একজন মানুষ এসব দুঃস্থ মানুষদের দুষ্কর্মের সহচর ভেবেছেন। কথাটা সাময়িক সত্য-খাস জমি দখল করে বসতি নির্মানের কিংবা ব্যাবসা স্থাপনের দুঃসাহস প্রান্তিক মানুষের নেই। কোনো না কোনো দুর্বৃত্ত চক্র এখানে নিয়মিত মাসোহারার বিনিময়ে তাদের নিাপদ আশ্রয় আর ব্যাবসার সুযোগ দেয়। তারা অর্থনৈতিক ভাবে এদের শক্তিশালী করছে- এ বিচারে তারাও দুর্ন ীতির মদদদাতা। এই যুক্তির প্যাঁচটা আমার মনঃপুত হলেও পরিকল্পনাহীন এই উচ্ছেদ সমর্থন করতে পারছি না।
ঢাকা শহরে লক্ষাধিক হকারের ব্যাবসা নষ্ট,ফুটপাত শোভা বর্ধন করার নামে এদের একে বারে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টার নিন্দা জানাই আমি। প্রায় 25 লক্ষাধিক মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ঢাকার শোভাবর্ধনের কাজটা করছে 11 জন উপদেষ্টার নির্দেশে যৌথবাহীনি। এটা নিন্দনীয় কাজ এবং এই কাজের সাম্ভাব্য ভবিষ্যত সম্পর্কে তাদের উদাসীনতা পীড়াদায়ক, ঢাকা শহরে ছোটোখাটো চুরির পরিমান বেড়েছে- এটা আরও বাড়বে যদি এদের পুনর্বাসনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া না হয়।
তারা হলি ডে মার্কেট বলে একটা প্রকল্প সামনে এনেছেন বিকল্প হিসেবে। এই বেহুদা আচরনের জন্য এই প্রকল্পের সাথে জড়িত সকল মানুষকে জনাকীর্ণ রাস্তয় এনে চপোটাঘাতের ব্যাবস্থা নেওয়া দরকার। সপ্তাহে 1 দিন তারা ব্যাবসা করব মাসের 25 দিন কি সরকার বাহাদুর তাদের পেটে অন্ন জোগাবেন? তাদের উপার্জনের উপায় ছিনিয়ে নিয়ে, তাদের আবাসস্থল গুড়িয়ে দিয়ে সরকার বাহাদুর যে আইনকে উর্ধে তুলে ধরেছেন সেটা ঘৃন্য একটা আইন, এটারো সংশোধন প্রয়োজন।
উঠলো বাই তো কটক যাই এমন সমন্বয়হীন- পরিকল্পনাহীন উন্মাদদের সবার নাকি উচ্চতর বিদেশী ডিগ্রি আছে। ডিগ্রি সোহাগী বাঙ্গালী বাবুরা অবশ্য আনন্দিত। তাদের পেটে এখনও লাথি পড়ে নি- পড়বার কোনো সম্ভবনা নেই- তারা খবরের কাগজে এসব আইন শৃংখলার উন্নতির সংবাদে উল্লসিত হয়ে চায়ের কাপের ঝড় তুলবেন। তারা দেশের সর্বাঙ্গিন উন্নতি কামনায় চাইবেন এই 11 জন উন্মাদ দেশের শাসনভার গরহন করুক।
তবে 25 লক্ষ মানুষ যাদের অন্তত 5 লক্ষ কর্মক্ষম এবং এদের উপার্জনের কোনো বিকল্প ব্যাবস্থা নেই, তাদের অপরাধপ্রবন হয়ে উঠার সম্ভবনা তারা ভুলে যাচ্ছেন। সরকার আসলে দেশের মাত্র 15% মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন- তাদের মধ্যবিত্ত সীমানায় থাকা এই 15 % মানুষের জীবনযাপনের উন্নতির কথা ভাবলেই আসলে চলে- এখন এরাই সব নীতি নির্দিষ্ট করছে- এরাই শ্রনীঘৃনা বজায় রাখে-
অবশ্য যখন লেখাটা শুরু করেছিলাম তখন থেকে এখন পরিস্থিতি সামান্য ভিন্ন- নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে- কালো টাকার প্রভাবে যাদের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার ক্ষমতা আছে- টাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে- এবং দ্্রুত বিচার হবে তাদের- আগামি 2 মাসের ভেতরে তাদের সাজাও হয়ে যাবে- বোধ হয় এদের পরবর্তি নির্বাচন করার কোনো সুযোগ থাকবে না- এবং তারা অন্তত এ পর্যায়ে সফল হচ্ছেন- এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। আমি এটাকে সমর্থন করছি- এসব অপরাধীর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন- এই একটা সঠিক কাজ ছাড়া আসলে আনন্দিত হওয়ার মতো কোনো কাজ তারা করেন নি।
এখন যদি যোটার আই ডির কাজ শুরু হয় তাহলে এই কাজ শেষ হতে হতে আরও কিছু ভোটার তৈরি হবে- এদের আই ডি দেওয়ার প্রচেষ্টা হবে- এর মধ্যে আরও কিছু ভোটার তৈরি হবে- প্রতি দিনই কিছু না কিছু মানুষের বয়েস 18 হয়- এই দাবীতে কি তারা অনন্ত কাল এই নির্বাচন স্থগিত রাখবেন?
তবে আমার আশংকা বাংলাদেশের ভেতরে কোথাও মার্কিন ঘাঁটি স্থাপিত হবে। তারা প্রায় 100 বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে যাবেন এ দেশ থেকে- বাংলাদেশের সৈকট এলাকায়- সিলেটের বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রে- সব খানেই যেসব কোম্পানী কাজ করছে তারা মার্কিন প্রতিষ্ঠান। তবে অন্য একটা কথা মনে হলো আসলে এ প্রসঙ্গে- বাংলাদেশের গ্যাস রপ্তানীর সিদ্ধান্তটা আসলে একটা বিশাল সিদ্ধান্ত- জনগনের সম্পদ তারা বিদেশে রপ্তানী করবে কি না এটা জনগন কিংবা জনগনের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে এমন রাজনৈতিক দলগুলোই নিতে পারে= এই 11 উন্মাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই- আর খনিজ সম্পদ যতক্ষন মাটির নীচে থাকবে ততক্ষন এটা সমপদ- যদি একবার তা ুত্তোলন করা হয় তাহলে সেটা দায়ের পর্যায়ে চলে যাবে- তখন আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে আমাদের অবশ্যই রপ্তানী করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে কারন 60 মিলিয়ন সি এফ টি দৈনিক গ্যাস ব্যাবহার করার কোনো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই- এটা আরও বেশী উত্তোলন করতে পারে তাই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই দ্্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর জরূরি। কোম্পানী কতটুকু গ্যাস উত্তোলন করবে- তাদের উপর আইনগত প্রভাব ফেলানোর জন্যই সুষ্ঠ নীতিমালা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে সরকারকে- আমরা গ্যাস তুলে নিজেদের ক্ষতি করবো কি করবো না এসব বড় মাপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কোনো ভাবেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের থাকা উচিত নয়।
এর পরও আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামল দীর্ঘস্থায়ী হয় দাবি করছেন- তারা হয় বুদ্ধি কিংবা চিন্তা প্রতিবন্ধি অথবা তারা কোনো না কোনো ভাবে কর্তাভজা মানুষ-
এইসব মানুষদের কিংবা আরও পরিস্কার করে এই সব চাটুকারদের জন্য কোনো সম্পদের ভাগ নিশ্চয়ই রাখা আছে- নইলে তারা এমনটা চাইবেন কেনো?


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।