ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে যৌথ বাহিনী বেশ কিছু সাজানো মামলা করেছে- ভিত্তিহীন মামলাগুলোর পেছনে কোন অসুয়া ক্রিয়ারত ছিলো তা এখনও স্পষ্ট না।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে কথা উঠেছে- তাকে সৈদি আরব কিংবা দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হবে- খালেদা জিয়া শর্ত দিয়েছেন তিনি পরিবার পরিজনসহ নির্বাসন নিবেন-
তবে যোগাযোগ উপদেষ্টাকে এইসব প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেন- বললেন এমন কোনো প্রস্তাব আসে নি বিবেচনার জন্য-
তিনি বলেছেন " সরকার কোনো চাপ দিচ্ছে না" তাদের নির্বাসনে পাঠানোর বিষয়টা আলোচিত হয় নি কোনো সভায়-
শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হচ্ছে- এ জন্য সরকারের কোনো উস্কানি নেই এমন একটা অভয় দেওয়ার চেষ্টা থাকলেও আদতে তার বলার ভঙ্গিতে তেমন আত্মবিশ্বাস নেই-
তবে তারা অবশেষে বিভিন্ন বিষয় নিম পাতা চিবানোর মতো তেতো মুখে স্বীকার করছেন- ভালো লাগছে দেখে- এই যেমন তারা বললেন দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গঠিত হয় নি- অভিযোগ গঠিত হয় নি কোকো রহমানের বিরুদ্ধে- যদিও খবরে প্রকাশিত হচ্ছে এটা একটা বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত- কোকোর মুক্তি হচ্ছে খালেদা জিয়ার নির্বাসনের শর্তে-
যদি এই অভিযোগ সত্য হয় তবে এটা আরও একটা সামরিক বাহিনীর অপরাধ- এসব বিষয়ের বিচার হওয়া উচিত- শাস্তি পাওয়া উচিত সেই সব মানুষ কিংবা নীতিনির্ধারকদের যারা এই সিদ্ধান্ত কিংবা এই লেনদেনগুলো করছেন-
তারেক জিয়ার বিরুদ্ধের আনা চাঁদাবাজী মামলা ৬ মাসের জন্য স্থগিত- এবং হাইকোর্টের জারি করা নির্দেশনা এমনটাই সিদ্ধান্ত নিতে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এই মামলাটা হয়রানিমূলক- তাহলে যেই ব্যক্তিসকল এই কাজ করলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে?
মূলত দায়ি আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পান্ডারা- তারাই সকল অপরাধের দায় স্বীকার করবেন- ফখরুদ্দিন সাহেব তার ৯০ দিন পূর্তি ভাষণে বলেছেন তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে বেশ কিছু নিম্নবিত্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে- তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কিংবা ক্ষতিপূরণের বিষয়টা তারা বিবেচনা করবেন- তিনি মেয়েদের যৌতুক বিষয়েও উদ্বিগ্ন-
তবে তার ভাষণের চিত্তাকর্ষক বিষয়টা ছিলো তারা স্বর্ণের সিংহাসন- কদর্য লেগেছে, রুচিহীন মনে হয়েছে আমার -রাতান্ত্রিক আভিজাত্যহীন ক্ষীণ বপুর ফখরুদ্দিন তার ভাষণে অনেক দিকনির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন- লিখিত ভাষণে তার নিজস্ব কোনো আন্তরিক বাছাই ছিলো না- তিনি নিছক যন্ত্রের মতো কথা উগড়ে গেলেন শেষাবধি।
২০০৮ এর শেষে কিংবা ২০০৯ এর প্রথমে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে আশ্বাস দিলেন- ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির জন্য কালক্ষেপন- জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার-
তিনি অবশ্য বললেন ফখরুদ্দিনের ঘোষিত সময়সীমা তাদের ৩ মাস বাড়তি সময় দিচ্ছে- তারা এখনও পর্যন্ত অনুমিত- তবে ভোাটার নিবন্ধনের সময় একটা নির্দিষ্ট দিন বেধে দেওয়া হবে - সে সময়ের ভেতরে প্রাপ্ত বয়স্ক সবাই ভোটার তালিকা ভুক্ত হবে- এই সংখ্যাটা আনুমানিক ৯ কোটি- এই ৯ কোটি মানুষের ছবি সহ ভোটার তালিকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করতে ১২ মাস সময় নিবেন তবে যেহেতু বাংলাদেশের সরকার ঐকিক নিয়মে চলে না তাই অবশিষ্ট ৬ কোটি মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে সময় লাগবে আরও ৪ বছর।
তবে ভোটার তালিকা তৈরি করা শুরু হবে কবে এটাই এখনও নির্ধারিত হয় নি- নির্বাচন আইন ও আচরণবিধির খসরা তৈরি করে এ মাসে কিংবা সামনের মাসে সুশীল সমাজের সাথে আলোচনা হবে- আগামি মাসেই জরুরী অবস্থা জারীর ১২০ দিন পুরণ হওয়ার পর জরুরী অবস্থাও প্রত্যাহার করা হবে- তখন আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে-
এর পর ভোটার তালিকা তৈরি- যদিও ভোটার তালিকা তৈরির সাথে নির্বাচনী আচরণ বিধির সম্পর্কটা কি বুঝলাম না- দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে এবং রাষ্ট্রদ্রোহী না হলেই ভোটার হওয়া যায়- জনপ্রতিনিধি হতে হলে আরও কিছু যোগ্যতা লাগে- তবে এই জনপ্রতিনিধি হওয়ার জায়গাটাতে নির্বাচনী আইন আসতে পারে- জাল ভোটার হলে শাস্তি নির্ধারিত আছে- সেটা আরও কঠোর করতে হলেও সেটা ভোটার তালিকা তৈরি শুরু করে দিয়েই করা সম্ভব- তবে যেমন আঠারো মাসে বছর হিসেবে চলছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাতে আগামী জুলাইয়ের আগে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হওয়ার সম্ভবনা কম।
ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কারণ সম্ভবত জাল ভোট ঠেকানো- কিংবা এই ভোট সংক্রান্ত দূর্নীতি ঠেকানো- জাতীয় পরিচয়পত্রের কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যবহার নেই এখন সামনে এরপরও এইসব বলে সময় নষ্ট করা কিংবা অজুহাত হয়তো অন্য কোনো উদ্দেশ্য সাধনে সহায়ক।
স্বচ্ছতার বিষয়টা বারংবার সামনে আসছে- প্রশাসনের শোধন- নির্বাচনী মাঠ সবার জন্য সমান করার চেষ্টা সব কিছুই করা যায় এবং পরিকল্পনা করে করলে আসলে তেমন সময় লাগবে না- জামিনের বিষয়ে সরকার কেনো সিদ্ধান্ত নেবে এই কারণটা জানাতে বলেছে সরকারকে হাইকোর্ট- তাদের এই কাজটা আমাকে আনন্দিত করেছে- অন্তত রাজনৈতিকভাবে কলুষিত হলেও তারা এই মুহূর্তে যা করছে সেটা একটা লাগাম টানার চেষ্টা-
ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করার মতো অপ্রয়োজনীয় বিলাসিতা না করে বরং নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরিতে উদ্যোগী হওয়া- তবে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরিই ভোটার তালিকার নির্ভুলত্ব নিশ্চিত করে না- জাল ভোটার বন্ধের বিকল্প প্রস্তাবগুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন- এমন একটা প্রস্তাব ছিলো ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো- প্রতিটা ভোটকেন্দ্রে ৫০০ থেকে ১০০০ ভোটার থাকবে- সেখানের পোলিং এজেন্ট তাদের সবাইকে চিনবেন- এমন প্রত্যাশাও অসংগত নয়-সেটা আরও সহজ করবে ভোট গননা-
নির্বাচন আইনে জাল ভোটদানের শাস্তি আরও কঠোর করা যায়- প্রতিটা নির্বাচনী এলাকায় একটা মোবাইল কোর্ট তৈরি করা যায়- যারা ব্যক্তিনির্বিশেষে জাল ভোটদানের জন্য ৫ থেকে ১০ বছরের জেলদন্ড দিয়ে দিবেন- কোনো রকম বিবেচনা ছাড়াই- এমন কঠোর আইন করে ভীতি ছড়িয়ে দিতে পারলে জাল ভোটার কমে যাবে- কে সাধ করে ঝুঁকি নিয়ে জাল ভোট দিতে গিয়ে ৫ বছরের জেলের ঝুঁকি নিবে-
তবে এসব পর্বতের মুষিকপ্রসব পর্বেও আমার মনে আশা আগামি নভেম্ববের ভেতরেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- মনে হওয়ার তেমন কোনো ভিত্তি নেই আসলে- আশাবাদ বলা যায় এটাকে- প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বলছেন ২০ মাস প্রয়োজন সব কিছু ঠিক করতে ততটা সময় তিনি পাবেন না- আর আমার মনে হয় তাকে এতটা সময় দেওয়া মানে আরও আইনের অন্যায্য ব্যবহারের সম্ভবনা বাড়ানো- তাদের নিজস্ব জীবিকায় ফেরত পাঠানো দরকার- ফখরুদ্দিন সাহেব বেকার ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বেতনে তার সংসার চলে এমন না- তবে এ উপলক্ষে তিনি আরও ২০ মাস বেতন পেলে এবং কতৃত্ব করতে পারলে দুঃখিত হবেন না- তপন চৌধুরি কিংবা অবঃ মেজঃ জেনাঃরা বেতন পাচ্ছেন- সরকারী গাড়ীতে ঘুরছেন- এসব আনন্দের বিষয় ঘটলেও তাদের নিজস্ব কর্মক্ষেত্রের দায়িত্ব নিয়েছেন কে? কারা গীতি আরাসাফিয়া চৌধুরীর ব্যবসা দেখছে এখন?
তবে আমার মনে হয়
জরুরী অবস্থা অবসানের সাথে সাথে রাজনৈতিক দলগুলো মত প্রকাশের এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ডের স্বাধীনতা পেলেই বিক্ষোভের সুযোগ পেলেই অবিলম্বে নির্বাচনের দাবীতে বিক্ষোভ করবেন-
সাইড লাইনে বসে মাঠ সমান হওয়ার পর খেলতে না নেমে সে মাঠে জলপাই আগাছা জন্মানোর সুযোগ তারা দিবেন না-
অন্য একটা বিষয় মনে হচ্ছে আমার -ই ইউ র কাছে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতার আবেদন গৃহীত হবে না-সরকার আশা করছে এইসব ভোটার তালিকা তৈরির কাজে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে সহায়তা দিতে অনুরোধ করবেন- তবে সেটা ই ইউ গ্রহন করবে আমার কেনো যেনো মনে হয় না-
নিজস্ব অর্থে ভোটার তালিকা তৈরির কেরামতির সিদ্ধান্ত ইচ্ছা করলেই সরকার নিতে পারে তবে অহেতুক অর্থ ব্যয়ের এই কাজে রাজনৈতিক দলগুলো সানন্দ সম্মতি দিবে এমনটা মনে হয় না আমার।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন