বাজেটালোচনা

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৭/০৬/২০০৭ - ৭:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সমন্বয়হীনতা, পরিকল্পনাহীনতা এবং অপরিনামদর্শীতার ধারাবাহিক চর্চার স্বর্ণযুগ বর্তমান তত্ত্বাবদগায়ক কাল, সাংবিধানিক বৈধতা নেই তবুও তারা বাৎসরিক বাজেট প্রণয়ন করবেন, রাজনৈতিক এবং ছদ্ম রাজনৈতিক শাসনামলে বাজেট আলোচনার সূচনা হতো অর্থমন্ত্রীর বাগাড়ম্বরে, এবার সংসদে বাজেটালোচনা থাকছে না তবে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পেশ করবেন গণমাধ্যমের সামনে, খাতওয়ারী বরাদ্দকৃত ব্যায় এবং এসব ব্যায়ের লক্ষ্য জানাবেন সবাইকে, এরপর ১৪ই জুন পর্যন্ত বাজেট আলোচনা চলবে- এ বাজেটের একটা প্রতিলিপি পাওয়া যাবে ওয়েব সাইটে-

পরামর্শ, সংশোধনি প্রস্তাব কিংবা বাজেট বিষয়ে নানাবিধ বক্তব্য প্রদানের সুযোগ থাকলেও পরামর্শ মেনে নেওয়া কিংবা না মেনে নেওয়ার স্বাধীনতা তাদের উপরেই থাকছে- গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল মনোভাব যদিও আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে আছে এই সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীর মননে- সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা রয়েছে বলেই কাউকেই তোয়াক্কা না করার মনোভাব কিংবা যথেচ্ছাচারের অনেক উদাহরণ তৈরির পরও তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেছে এই বাজেট জনকল্যানমুখী বাজেট-

বাকস্বাধীনতাহরণের বিষয়টা এখন আর মূল বিবেচ্য বিষয় না- মানুষের উৎকণ্ঠা বাজারদর নিয়ে- নিত্য দিনের এইসব চাহিদার হিসাব মেলাতে গিয়ে সবাই এত বেশী দুঃশ্চিন্তালিপ্ত যে বড় বড় রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বিষয়ে মাথা ঘামানোর মানসিকতা নেই কারোই- মাপা আয়ের শ্রমজীবি মানুষের জোড়াতালি দিয়ে টিকে থাকা সংসার এখন কোনো ভাবেই তালি লাগিয়েও চালানো সম্ভব হচ্ছে না- প্রায় অসম্ভব একটা অসম যুদ্ধ বাজার দর আর পারিশ্রমিকের যুদ্ধ-

স্বপ্নের বাংলাদেশ, গনতন্ত্রায়ন,প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বানী নিয়মিত প্রচার করলেও সামগ্রিক উন্নয়নে লাভবান হচ্ছে এবং হতে পারে বড় বড় কয়েকটি কোম্পানি লিমিটেড পরিবার- এদের বাইরে বেশ বড় মাপের পুঁজির সরবরাহ না থাকা অধিকাংশ মানুষই ক্রমশ দরিদ্র হচ্ছে- গনতন্ত্রায়নের নামে দরিদ্রায়নের উন্মাদন উপলব্ধি করছে না বধির এবং বিবেচনাশক্তিরহিত বর্তমান সরকার-

কর্পোরেট পতাকাতলে জমায়েত শখের মানবতা ও শালীনতাবদীরা, সুশীল সমাজের মতো যাদের দৈনন্দিন সমাজ ভাবনা পরিসংখ্যান এবং সংবাদপত্র সমেত চা পানের আসরেই সমাপ্ত হয়- যাদের চাল ডাল তেল পিয়াজের মুল্য বৃদ্ধি আতংকিত করে না- ক্সসরা বাজার দরের পাগলা ঘোড়ার আঘাতে কোনো সময়ই আক্রান্ত হচ্ছেন না তারা রাজনৈতিক অপরাধীদের আটক করাটাকে সরকারের সেরা সাফল্য বলে আনন্দিত হচ্ছেন- কোন এক স্বপ্নের ঘোরে তাদের মনে হচ্ছে একটা নিয়মতান্ত্রিকতা স্থাপিত হলেই আবার বাজর মূল্য পরিস্থিতি সহনীয় হবে- বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রন- ভোগ্য পণ্যের সরবরাহ নির্বিঘ্ন এবং নিশ্চিত করার কাজটাই সব সরকারের জন্যই একটা অবশ্য পালনীয় কর্তব্য- এই একটা বিষয় সরাসরী জনজীবনকে প্রভাবিত করে তবে বর্তমাণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই কাজটাতে একেবারেই ব্যর্থ।

প্রাথমিক এই বিষয়টা কোনোভাবেই সামলাতে না পারা সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার নামে যেভাবে আইন অজ্ঞতার এবং আইন অবমাননার উদাহরণ সামনে রাখছেন যদি পরবর্তী সরকার এদের কাজকে বৈধতা না দেয় তবে এ কার্যে নিয়োজিত মাননীয় সুশীলদের বেশ বড় মাপের কারাদন্ড হবে- রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারী করে সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় তারা যা করছে তা অননুমোদিত।

বাৎসরিক বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে তারা বেশ বড় মাপের একটা ঝুঁকি নিচ্ছেন- তাদের অপরিকল্পিত যথেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন স্বীকৃত অর্থনীতিবিদেরা- তারা যদিও আশাবাদী বধির সরকার তাদের পরামর্শ শুনবেন- আমি আশাবাদী নই- স্পষ্ট মানবকল্যানমুখী ভূমিকা নেওয়ার কোনো সম্ভবনা আমি দেখছি না- উচ্ছেদকৃত বৈধ ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসায়ীরা তাদের গৃহীত সিদ্ধান্টের অমাবিকতায় ভ্রাম্যমান হয়েছে- তাদের এই পদক্ষেপ অপ্রয়োজনীয় হলেও এর প্রতিকারের কোনো পরিকল্পনা এখনও সামনে আসে নি- তারা ভাবছেন- এখনও ভাবছেন- বস্তি আর ব্যবসা উচ্ছেদের ১৬ সপ্তাহ পার হওয়ার পরও তারা ভাবছেন এখনও-

দীর্ঘসুত্রিতা দেখে মনে হচ্ছে সাম্ভাব্য দারিদ্র বিমোচনের কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের বরং তাদের রয়েছে পরিকল্পিত দারিদ্রতার চাষাবাদ মহাযজ্ঞ।দারিদ্র উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা ন্যাস্ত তাদের উপরে-

এ বাজেট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়- উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও থাকবে না এখানে- আভ্যন্তরীণ সম্পদের যোগ্য বন্টনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী দেশের মতো বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভর না করেই বাজেট প্রণয়নের দাবী অর্থনীতি পরিকল্পকেরা জানালেও যেহেতু দাতা গোষ্টি কিংবা উন্নয়ন সহযোগিদের কাছ থেকে নানাবিধ সুবিধা ভোগ করা কতিপয় ুন্মাদ শাসন ক্ষমতায় তাই আমাদের ঋণগ্রস্ততা কিংবা পরের ধনে পোদ্দারি আর ভিক্ষাবৃত্তির স্বভাব কাটিয়ে ওঠা কোনো বাজেট দেখবে না বাংলাদেশ- তেল গ্যাস আর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির চাপ আছে- বিশ্ব ব্যাংক আই এমন এফ এই চাপ প্রদান করছে- আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয়কৃত আভ্যন্তরীন বাজারমূল্য নির্ধারণের চাপটা মেনে নিতে হচ্ছিলো তবে এ বছরই মাত্র ৭৯ মিলিয়ন ডলার প্রদানের পর এই চুক্তি রদ হয়ে যাবে- নতুন কোনো চুক্তি না করলেই হয়- তবে মনে হয় না এ বিষয়ে কোনো সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বর্তমাণ সরকার- বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এখনও স্থগিত থাকলেও যেকোনো দিন এই ৭৯ মিলিয়ন ডলারের জন্য আমাদের সরকারের আর জনগনের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিবেন তারা- তাদের পরামর্শ দিলেই তারা শুনবেন না-

প্রথমেই দাতা গোষ্ঠির কাছে ঋণের জণ্য আবেদন করবো এটা ধরেই উন্নয়ন বাজেট পেশ করা হবে- বন্ধ্যা প্রতিরক্ষা দপ্তরের বরাদ্দকৃত ব্যয় বাড়বে- তারা বাজেটের আগে আগে সামগ্রিক কাঠামো বদলে ফেলেছে-পদ মর্যাদা বেড়েছে- বেড়েছে বেতন সহ অন্যান্য ভাতাগুলো- এ বাবদে অর্থের জোগান দিবে বাংলাদেশের জনগন- বাজেটে এসব ব্যয়- তাদের প্রাপ্ত অন্যান্য সুবিধার বরাদ্দ বাড়বে- বাড়ছে প্রতিবছরই-কার পরামর্শে সামগ্রিক কাঠামো বদলে ফেলা হলো- এ অনুমোদন কে দিলো- এ প্রশ্ন করা নিরর্থক।

মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় এনে সরকারী বেতন কাঠামো সংশোধনের ধারাবাহিকতার চর্চাও অব্যহত থাকবে-করের পরিমাণ বৃদ্ধি না করেও করের ব্যপ্তি বাড়ানো হয়েছে- যদিও জনকল্যানে বরাদ্দ প্রায় নেই তবুও জনগন ভোগান্তি স্বীকার কেও কর দিয়ে অকার্যকর প্রশাসন আর প্রতিরক্ষা দপ্তরের ঘানি টানবে কেনো এ প্রশ্নের উত্তর নেই আমার কাছে-


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।