ইসলাম বাংলাদেশি মুসলিম

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বুধ, ২৭/০৬/২০০৭ - ১:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইসলাম নামক একটা ধর্ম আরবে জন্ম নিয়েছিলো, এরপর সেটা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ব, প্রাথমিক প্রসারটা ইসলামী সুলতানাত গঠনের স্বপ্নে ছড়িয়ে পড়া তরবারীর মাধ্যমে- ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হওয়ার পরও আসলে ইসলাম তেমন ভাবে সবাইক আকৃষ্ট করতে পারে নি-
ইরাণ কিংবা ইরাক কিংবা সিরিয়া কিংবা আর্মেনিয়া কিংবা এরপরের ইউরোপের উপকূলে- ইসলাম এসেছে- কোনো কোনো ঐতিহাসিক দৃঢ় ভাবে ঘোষণা করেছেন এমনকি ইংল্যান্ডের উপকূলেও ইসলাম এসেছিলো- তারা ইংল্যান্ডে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলো এমন কথা এখনও প্রমাণের অপেক্ষায়।

তবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলেই একটা স্থানে ইসলামের শিখা প্রজ্জ্বলিত হয় না- সেটা সাধারন মানুষের ভেতরে প্রবেশ করতে হলেও রাষ্ট্রীয় কিংবা অন্য কোনো উৎস থেকে সেটাকে প্রসারিত করতে হয়।

জানি না তাবলিগ জামাতের দাওয়াতের সাথে এই বিষয়টা কিভাবে সম্পর্কিত তবে কাউকে না কাউকে এর ভালো দিকগুলোর বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হয়েছে- যারা ই বাণিজ্যিক প্রচারণায় মুগ্ধ হয়েছেন, যাদের কাছে এটাকে গ্রহনযোগ্য মনে হয়েছে তারা ইসলামের শান্তির ছায়াতলে অবগাহন করেছেন-

জোর জবরদস্তির কোনো ইতিহাস এর সাথে গোপনে চলতেই পারে-হয়তো চলেছেও- সেটা শাসকগোষ্ঠির বিবেচনার উপর নির্ভর করে- তবে যখন সেটা সাধারণের দরবারে প্রবেশ করেছে তখন সেটা লৌকিক ইসলামে পরিনত হয়েছে-

বিশ্বের সব এলাকার ইসলামে নিজস্ব সংস্কৃতির ছোঁয়া আছে- ইরানের ইসলামের সাথে আলবেনিয়ার ইসলামের মিল নেই- মিল নেই বাংলাদেশের ইসলামের- এখানে ধর্ম- সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে এক অদ্ভুত উপায়ে- যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে তাল মিলিয়ে ইসলামী উপখ্যানের জন্ম হয়- অদ্ভুত হলেও সত্য এই অকারণ বর্ণসংকর ইসলামের প্রভাবেই শাহনামার রুস্তম বাংলাদেশী একটা আবহ পায়- এই শিল্পীত ইসলামের জায়গাটা অদ্ভুত-

এই সব সাংস্কৃতিক কর্মী ইসলামকে তার স্থানীয় সাংস্কৃতিক আবহ দেয়- একই কারণে এটাও সত্য যে পাকিস্তানের ইসলামের সাথে আমাদের দেশীয় ইসলামের একটা বিশাল সাংস্কৃতিক পার্থক্য ছিলো- তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে মিলে যাওয়া ইসলাম কিংবা আফগানিস্তানের ইসলামের সাথে আমাদের সাংস্কৃতিক ইসলামের ভিন্নতা অনেক সময়ই মতপার্থক্যের সৃষ্টি করেছে-

এক একটা মানুষ- এক একটা পরিবার ভিন্ন লোকালয়ে বসতি গড়েছে- সেখানে তারা নিজেদের সাংস্কৃতিক কৌম গড়ে তুলেছে- সেখানে তারা একটা সাংস্কৃতিক ভিন্নতার স্বাদ পেয়ে নিজস্ব সংস্কৃতিই আসলে মৌলিক এমন একটা ধারণা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখবার কাজে মনোযোগী হয়েছে- একটা সময়ে সেটা কয়েক প্রজন্মের ব্যবধানেই সম্ভব- আরও কিছু সাংস্কৃতিক উপাদান যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশী ইসলামে-

আমার ভাববার জায়গাটা এইখানেই- বাংলাদেশর লৌকিক ইসলামের জায়গাটাতে কাজ করবার যথেষ্ট অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয়- এটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে মানুষ- তারা তেমন ভাবে সক্রিয় না হলেও একটা ভাবধারা গড়ে উঠেছে-

১৯৭১এ মুসলিম কতৃক মুসলিম হত্যার জঘন্য ঘটনাটাতেও এই সাংস্কৃতিক ভিন্নতা একটা কারণ- যারা বাংলাদেশে জন্মেও মনে প্রাণে পাকিস্তানের ইসলামকে আসল ইসলাম বিবেচনা করতে পেরেছিলো তারা এদেশীয় ইসলামী সংস্কৃতিকে গ্রহন করতে পারে নি- পারে নি এর রণটা আমার কাছে অনেক কিছুর সমন্বয় মনে হয়- তবে মূলত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যটাতে আমি মনোযোগ দিতে চাই-

উপমহাদেশে বৈদিক সভ্যতার আগ্রাসন ৪০০০ বছরের পুরোনো ইতিহাস- এইসময়ে যেভাবে বৈদিক সংস্কৃতি আমাদের স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে যুক্ত হয়েছে সেই একই প্রভাবে এবং ইরানের প্রচলিত বৈদিক সংস্কৃতির সাথে ঐক্যটা আমলে আনলে আমার মনে হয় একটা বিষয় প্রকাশিত হবে-

বাংলাদেশের ইসলামে অর্থনৈতিক শ্রেনীঘৃনার প্রকোপটা যখন আশরাফ আতরাফ দ্বন্দ্বের জন্ম দিচ্ছে একই ঘটনা পাকিস্তানে উপজাতীয় এবং স্থানীয় অধিবাসীদের ভেতরের আত্মপরিচয়ের দ্বন্দ্বকে উস্কে দিচ্ছে- আপন গোত্র সবার শ্রেষ্ঠ এই বোধ থেকে গোত্রীয় ঐক্য কিছুটা কম্যুনাল হলেও সেখানে ক্রিয়ারত দ্বন্দ্বগুলো আবার বাংলাদেশর দ্বন্দ্বের তুলনায় পৃথক-

বাংলাদেশের মানুষের পীরভক্তি- পানি পড়া আর মানতে জন্য দরগায় ধর্না দেওয়ার বিষয়টাতে যারা উৎপীড়িত বোধ করে তাদের ইসলামে এটা হয়তো বৈধ্য একটা অনাচার তবে বাংলাদেশের বিচারে এটাই স্বাভাবিক-
বাংলাদেশের সামাজিক অবকাঠামো এই একটা বিষয়কে সমর্থন করে- এটার প্রসারের জন্য কাজ করে-
ভুমিকাটা প্রয়োজনীয় পরবর্তী লেখাটা বুঝতে-


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।