আমার অভিজ্ঞতা বলে যে লিনাক্স শব্দটার সাথে চার ধরনের মানুষ জড়িত থাকে - যারা কখনো লিনাক্সের নাম শুনেননি, যারা লিনাক্সকে ভয়াবহ ভালবাসেন, যারা লিনাক্স ব্যবহার করতে ভয় পান এবং যারা লিনাক্স নিয়ে উল্টোপাল্টা অমূলক কথা বলে বেড়ান। পয়লা দু'দলকে নিয়ে কোন সমস্যা হয়না। কিন্তু শেষের দু'দল একটির সাথে আরেকটি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। লিনাক্স নিয়ে বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণার উৎপত্তি সাধারণত শেষের এ দু'দল থেকেই ঘটে থাকে। এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেকে লিনাক্স শব্দটি শুনলেই উল্টোদিকে দৌড় দেবার ধান্দায় থাকেন। তাই ভাবলাম এসব ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে একহাত দেখে নেবার জন্য ধাপে ধাপে একটা সিরিজ বের করা দরকার। সেই ভাবনারই একটি ছোটখাট ফসল "লিনাক্সভ্রান্তি" সিরিজ। আমি চেষ্টা করব "লিনাক্সভ্রান্তি" সিরিজটিতে লিনাক্স নিয়ে প্রচলিত বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে দূর করতে, যাতে করে লোকজন উল্টোদিকে না দৌড়ে অন্তত ঠিক দিকে দৌড়তে পারে। আর এ সিরিজটিতে "লিনাক্স" বলতে সামগ্রিকভাবে "উবুন্টু"কেই ধরা হচ্ছে/হবে।
সিরিজের পুরনো লেখাগুলো পড়তে চাইলে এখানে অথবা এখানে দেখুন।
আমি মোটামুটি বাজি রেখে বলতে পারি যে 'লিনাক্স' - শব্দটা শুনলেই বেশিরভাগ মানুষজনের মাথায় বাই ডিফল্ট যেই দৃশ্যটা খেলা করে সেটা হল - কুচকুচে কালো স্ক্রিনের সামনে একজন উশকোখুষকো চুল-দাঁড়িওয়ালা লোক বিরস বদনে বসে কিবোর্ডে খটর-মটর করে টাইপ করে যাচ্ছে আর সাথে সাথে সেই কালো স্ক্রিনে বিভিন্ন দুর্বোধ্য কমান্ড লেখা হয়ে যাচ্ছে। স্ক্রিনে কোন আইকন নেই, কেবল কঠিন কঠিন কমান্ড - রসকষহীন এই দৃশ্যটা চিন্তা করলেই যে কারো গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে (অন্যদের দোষ দেইনা, আমার নিজেরও গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে)। 'এই দৃশ্য'টা লিনাক্সের সাথে এমনভাবে খাপেখাপে আটকে গেছে যে হলিউডের মুভিগুলোতেও যখন হ্যাকিং-ফ্যাকিং টাইপের উচ্চমার্গীয় জিনিস দেখায়, তখন সেখানেও কালো স্ক্রিনে গাদা গাদা লিনাক্সের কমান্ডের খেলা দেখানো হয়। এসব দেখে যে কারো মনে গেঁথে যাওয়াটাই স্বাভাবিক যে খটর-মটর খোমার লিনাক্সের সাথে কমান্ড-টমান্ড আর কালো স্ক্রিনের মধুর সম্পর্ক! এখন আমি যদি বলি যে লিনাক্সের চেহারা শুধু কালো না বরং সে দুনিয়ার আপামর রং নিয়ে সাজুগুজু করতে পারে, আর লিনাক্সের বদনসুরৎ যে শুধু রসেকষেই টইটম্বুর তা-ই নয় বরং এমনভাবে রসালো যা কী না আপনি কল্পনাও করতে পারবেননা - তাহলে কী বলবেন? ভড়কে গেলেন? হে হে হে ... আপাতত কিছু বলার দরকার নেই, শুধু এই লেখাটা পড়তে থাকুন।
এককালে আসলেই লিনাক্সের চেহারা বেশ খটমটে ছিল - কিন্তু জন্মের বিশ বছর পর কোটি কোটি ডেভেলপারের হাতে মেকআপ খেতে খেতে লিনাক্সের চেহারা সুরৎ এখন অতিশয় কমনীয় (এমনকি রমনীয়ও বলা যায়)! এখন অনায়াসেই মাউস দিয়ে টেপাটেপি করে কাজ করা যায়, রয়েছে চমৎকার সব থিম, দারুণ দারুণ সব ইফেক্টের ছড়াছড়ি। মোদ্দাকথা লিনাক্সের এই নজরকাড়া রূপে যে কেউ বারবার ফিরে তাকাতে বাধ্য। প্রশ্ন করতেই পারেন যে 'নজরকাড়া'টা কতটুকু নজরকাড়া? তাহলে নীচে উবুন্টুর নতুন রিলিজের (১১.০৪ - ন্যাটি নারহোয়াল) কয়েকটি স্ক্রিনশট দেখুনঃ (ছবিগুলো বড় করে দেখতে ছবিগুলোতে ক্লিক করুন)
মন ভরেনি? তাহলে আসুন আমরা আরো সুন্দর আরো রূপের আঁধার কুবুন্টুর নতুন রিলিজের (১১.০৪ - ন্যাটি নারহোয়াল) কয়েকটা স্ক্রিনশট দেখিঃ (ছবিগুলো বড় করে দেখতে ছবিগুলোতে ক্লিক করুন)
মন ভরেছে? এতো গেল ডিফল্ট চেহারা সুরৎ। ইচ্ছা করলে এই চেহারাকেও পাল্টে ফেলা যায়। কতটুকু পাল্টে ফেলা যায়? এটাই ভাবছেন তাইনা? ব্যবহারকারীরা নিজেদের উবুন্টু/কুবুন্টু ডেস্কটপের চেহারা কেমন করতে পারে তার একটা ছোটখাট শোডাউন দিলাম নীচে। নীচে নেট থেকে সংগৃহীত কয়েকজন কুবুন্টু ব্যবহারকারীর ডেস্কটপের কিছু নমুনা দেখুন। (ছবিগুলো বড় করে দেখতে ছবিগুলোতে ক্লিক করুন)
এবার উবুন্টুর পালা। চলুন দেখি তাহলে একেকজন উবুন্টু ব্যবহারকারী তাদের ডেস্কটপকে কী রূপে সাজিয়েছেন।
কী! চমকে গেলেন? ভাবছেন লিনাক্সের এমন চেহারা হয় নাকি? তাহলে এবার আসল গুমড় ফাঁক করে দেই - এইগুলা কিছুই না। আমি বর্তমানে ব্যবহার করছি ল্যুসিড লিংক্স (উবুন্টু ১০.০৪)। আমি নিজে সাদাসিধা মানুষ, কম্পিউটারটাও তাই সেরকম সাদাসিধা - যেকারণে উবুন্টুতে উড়াধুড়া ইফেক্ট খুব একটা পছন্দও করিনা ব্যবহারও করা হয়না। তো আমার সাদাসিধা কম্পিউটারের কয়েকটা স্ক্রিনশট দেখুনঃ (ছবিগুলো বড় করে দেখতে ছবিগুলোতে ক্লিক করুন)
আপনার এতদিনের শুনে আসা খটর-মটর লিনাক্সের চেহারার সাথে তো উপরের ছবিগুলোর কোনও মিল নেই - তাইনা! আসলে অপারেটিং সিস্টেমের চেহারা সুরতের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম। কমান্ড-টমান্ড দিয়ে কম্পিউটার চালানোর প্রক্রিয়া বেশিরভাগ মানুষকে ভয় পাইয়ে দিলেও অনেকেই কিন্তু ওটাতেই সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আবার ঝাকানাকা গ্রাফিকাল ইন্টাফেস সিংহভাগ ব্যবহারকারীকে মুগ্ধ করলেও রিসোর্স বেশি লাগে বলে অনেকেই ওসবকে পছন্দ করেনা। লিনাক্স এই দু'ধরনের ব্যবহারকারীকেই সুবিধা দেয়। কমান্ডলাইন থেকে শুরু করে উড়াধুড়া বাক্স ইফেক্ট, সিলিন্ডার ইফেক্ট, মায় ডেস্কটপে আগুন, বরফ, বৃষ্টি, পানি - সব কিছুই সম্ভব এখানে। বছর দুয়েক আগে যখন জন্টি জ্যাকলোপ (উবুন্টু ৯.০৪) ব্যবহার করতাম তখন ডেস্কটপের একটা ভিডিওশট নিয়েছিলাম, ওটা দিয়ে দিলাম নীচে, দেখুন কত কী করা সম্ভব!
মনে আছে আমি বলেছিলাম যে আমার কম্পিউটার খুব সাদাসিধা? জন্টি জ্যাকলোপ যখন ব্যবহার করতাম তখনও একই রকম সাদাসিধাই ছিল। উপরের ভিডিওতে তাই সাদাসিধে চেহারাটাই ধরা পড়েছে। যদি হার্ডকোর ইফেক্টওয়ালা উবুন্টু কম্পিউটারের বদন সুরৎ দেখতে চান তাহলে নিচের ভিডিও লিংক তিনটাতে একটু ঢুঁ মারুন। অবশ্য ইউটিউব বা গুগলে সার্চ করলে এরকম ভুরি ভুরি নজির দেখবেন।
২ | লিখেছেন অভ্রনীল (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ১০:০৫পূর্বাহ্ন)
অমিক্রনল্যাব কেবলমাত্র উবুন্টুর জন্যই .deb প্যাকেজ রিলিজ করেছে, ফিডোরার জন্য .rpm এখনো করেনি। তবে অভ্র ওপেনসোর্স বলে আপনি ইচ্ছা করলে অভ্র'র সোর্স কম্পাইল করে ফিডোরাতে ইন্সটল করতে পারেন। স্কিম-অভ্র'র সাইটে গিয়ে দেখলাম যে উবুন্টুতে সোর্স কম্পাইলেশনের ধাপগুলো লেখা থাকলেও, ফিডোরাতে কিভাবে করতে হবে সেই পৃষ্ঠাটি আপাতত খালি। তবে আপনি যদি কিছুটা অ্যাডভান্সড ইউজার হয়ে থাকেন (যেহেতু উবুন্টু ব্যবহার না করে ফিডোরা ব্যবহার করছেন, তাই ধরেই নিচ্ছি যে আপনি কিছুটা অ্যাডভান্সড ইউজার) তবে উবুন্টুর দেখানো ধাপগুলো দেখেই ফিডোরাতে কাজগুলো করতে পারার কথা। তারপরও সমস্যা হলে অমিক্রনল্যাবের ফোরামে বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন।
আসলে অনেক দিনের কম্পিউটার ব্যবহারের পর এবং সফটওয়্যার শ্রমিক হিসেবে শ্রম দেবার পর যেটা রিলাইজ করেছি সেটা হোলো উইন্ডোজকে সরানো কঠিনই হবে। যত যাই বলুন দিন শেষে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ উইন্ডোজ বেছে নিচ্ছে এবং আগামী আরও কয়েক বছর সেরকমটাই হবে আন্দাজ করা যায়।
লিনাক্সকে উইন্ডোজের কিংবা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানোর জন্য যেসমস্ত আর্গুমেন্টগুলো ব্যবহার করা হয় তার অনেক গুলোই এখন আর ততটা রেলেভেন্ট নয়। সিকিউরিটির ব্যপার এখন উইন্ডোজ ৭ এর অনেক ভালো, যথেষ্ট ব্যবহার বান্ধব, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৯ যথেষ্ট মর্ডান। তারউপর প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের দক্ষতা, উইন্ডোজ কেন্দ্রিক ইকোসিস্টেম - সব মিলিয়ে লিনাক্সের শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়ানো দুরূহ বটে। সেটা পয়সা দিয়ে কিনতে হলেও বেশীরভাগ লোকে এটাকে ভালো বিনিয়োগ বলেই মেনে নেবে।
তবে লিনাক্সের একটা প্রয়োজনীয় অবস্থান আছে। কিন্তু সেটা মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে নয়। বরং অলটারনেট ওএস, কিংবা রিসার্চ ওএস হিসেবেই বেশী উপযুক্ত।
(চরম লিনাক্স এনথুজিয়াস্টিক আমি আর পাঁচ বছর আগে এই মন্তব্য পড়লে নিজেকেই গালি দিতাম হয়ত। সময়ে মানুষ বদলে যায় বৈকি!)
৭ | লিখেছেন শামীম (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ১:১২অপরাহ্ন)
উইন্ডোজের বিরূদ্ধে কমপ্লেইন আছে -- আমি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারি না বলে। অবশ্য পয়সা দিয়ে কেনা এক্স পি দুইটা ফেলে আবার পয়সা খরচ করে উইন্ডোজ-৭ কিনলে নিরাপত্তা হয়তো একটু বাড়বে, কিন্তু এগুলো আবার আমার আগের ল্যাপটপে চলবেই না।
উইন্ডোজের সুরত খারাপ বা অন্য হিসেবে খারাপ এই বিষয়টা আমাদের টার্গেট না সেটা তো জানেনই। নিজে পাইরেসী না করেও (সফটওয়্যার ছাড়াও গান, ভিডিও-ও না) যখন এই লজ্জ্বার ভাগ নিতে হয় তখন খারাপ লাগে বৈকি। যেটার সমাধান লিনাক্স -- অন্তত বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা বিচার করে।
শুধু বাংলাদেশ কেন, দুনিয়ার অনেক জায়গাতেই সরকারী কাজকর্ম লিনাক্সে করছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের খবরগুলো সবচেয়ে অবাক করেছিলো আমাকে। কর্পোরেটরা লিনাক্সে চলছে। হলিউডের মুভিতে স্পেশাল ইফেক্ট দিচ্ছে। তাই এটা শুধু ওএস রিসার্চ বা অল্টার্নেট ওএস -- এই ধারা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে। আপনি যদি এই প্রবন্ধটা না পড়ে থাকেন তাহলে পড়ে নির্ঘাৎ চমকে উঠবেন: উইকিপিডিয়া: লিনাক্স পরিগ্রহণ। (ভুল জায়গায় বইলা ফেললাম নাকিরে বাবা! বস্ কিছু মনে নিয়েন না )
আর আমি ওএস নিয়ে রিসার্চ করি না, অল্টারনেট নয় বরং মূল ওএস হিসেবেই এটা সার্বক্ষনিক ব্যবহার করি -- অবশ্যই এই ব্যাপারটা ব্যবহারকারীর কাজের ধরণের উপর নির্ভরশীল, এর পাশাপাশি, অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারী প্রোপাইটারী সফটওয়্যারের উপর কতটুকু নির্ভরশীল হয়ে গেছে তার উপরও নির্ভর করে --- অনেকই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ছাড়া লিখতে পারে না -- আবার এমন কোন এক্সক্লুসিভ জিনিষও করে না যেটা শুধু মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে করা যায় অথচ লিব্রে অফিসে করা যায় না --- শুধুমাত্র নিকোটিনে আসক্ত ও আক্রান্তের মত এটাতেও নির্ভরশীল হয়ে পড়াই দায়ী। আর ভাল পলিটিক্সের মত এখানেও সফটওয়্যার নির্মাতা -- আমিই সেভিয়র, আমার সফট ছাড়া চলবেই না -- এমন ফাডও ছড়ায়।
৮ | লিখেছেন অভ্রনীল (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ৩:২১অপরাহ্ন)
আপনে না অফিসে লিনাক্স ব্যবহার করেন? ছেড়ে দিয়ে বিবাগী হয়ে গেলেন নাকি? দিন শেষে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ উইন্ডোজ বেছে নিচ্ছে সেটা অবশ্য ঠিক। বছর কয়েক আগে আমিও তাই করতাম। কিন্তু বছর কয়েক ব্যবধানে সেই আমিই এখন অনেক পাল্টে গেছি মনে হচ্ছে! সময়ে মানুষ পাল্টে যায় বৈকি!
বিশ্বের কোটি কোটি সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মত আমিও একজন অতিশয় সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারী। সাধারণ ব্যবহারকারীরা যা করেন আমিও সেসব কাজ করি - লেখালেখি করি, অডিও শুনি, ভিডিও দেখি, ব্রাউজ করি, গেম খেলি, আমার ক্যামেরার ছবিগুলো নিয়ে গুঁতাগুঁতি করি, মাঝে মাঝে একটা দুইটা ব্যাকাত্যাড়া ছবি রংচং মেরে সোজা করি - এইতো! আমার ধারণা বাংলাদেশের শতকরা ৯৫ ভাগ কম্পিউটার ব্যবহারকারীই তাদের কম্পিউটারে এইসব কাজ কর্ম করে। এসব কাজ করার জন্য আমার কাছে উবুন্টুই শ্রেয়। লাভের মধ্যে লাভ হচ্ছে, উইন্ডোজ নিয়ে যে কম্প্লেইনগুলো ছিল সেগুলোতে পড়তে হয়না আর টাকা খরচ হয়না। ফলে আমার কম্পিউটারে কেবলমাত্র উবুন্টুই আছে, অন্য কোন দ্বিতীয় অপারেটিং সিস্টেম নেই। তাই উবুন্টু আমার কম্পিউটারে অল্টারনেট না বরং ওয়ান-অ্যান্ড-অনলি মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্সের না, আমি ওএস নিয়ে রিসার্চও করিনা। সার্ভার-টার্ভারও চালাইনা (ঐ সব বুঝিওনা)। কিন্তু আমার সকল কাজ কিন্তু উবুন্টু দিয়েই হয়ে যাচ্ছে, আসলে বলা উচিত খুব পরিপাটি করে ঠিকঠাক মত হচ্ছে। তাই আমার মনে হয় অসাধারন ব্যবহারকারী না হলে উবুন্টু নিয়ে কোন ঝামেলা হবার কথা না।
বড়সর ক্যানভাসে এখনো উইন্ডোজ ডমিনেন্ট। তবে গত কয়েক বছরে লিনাক্সের প্রচার ও প্রসার কিন্তু বেশ জোরেশোরে বেড়েছে। লিনাক্স এখন অনেক ব্যবহারবান্ধব (থ্যাংক্স টু উবুন্টু)। এমনকি গত চার/পাঁচ বছরে লিনাক্স বিশেষ করে উবুন্টু কেন্দ্রীক ডেভেলপমেন্ট কিন্তু অনেক বেড়েছে। হার্ডওয়্যার ভেন্ডররাও লিনাক্সকে গোনায় ধরছে, লিনাক্সের জন্য ড্রাইভার বানাচ্ছে। লিনাক্সের ড্রাইভার সাপোর্ট কেমন বেড়েছে সেটা আমি নিজেই টের পেয়েছি। একসময় ফ্ল্যাশ চালাতে হলে এডোব ফ্ল্যাশের বিকল্প কিছু লাগতো, আর এখন এডোব নিজেই লিনাক্সের জন্য ফ্ল্যাশ, এডোব এয়ার, পিডিএফ রিডার বানাচ্ছে। সোজা হিসেব হচ্ছে লিনাক্স এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্ত অবস্থানে।
অফিসে আমি দুটা ডেস্কটপ ব্যবহার করি। দুইটাই উইন্ডোজ। আরো দুটো লিনাক্স মেশিনে সময় সময় কাজ করি। যদিও এখন ভার্চুয়াল মেশিন দিয়ে লিনাক্স ব্যবহার করি। লিনাক্স বিষয়ক বাগ ফিক্সিং করি এগুলোতে।
১০ | লিখেছেন হাসিব (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ৪:৩০অপরাহ্ন)
লিনাক্স এখন মূলধারায় চলার যোগ্যতা রাখে। উইন্ডোজের যেসব জিনিসের অনুপস্থিতি/সমস্যার কারণে আমি যেকারণে ব্যবহার করি সেটা বলি -
১. উইন্ডোজে এজিং ইফেক্ট কাজ করে। রিগোরাসলি ৬ মাস ব্যবহার করলেই ওএস স্লো হয়ে পড়ে। আর রিইনস্টল করতে হয় সবকিছু। ফিক্স করার কোন উপায় নেই। লিনাক্সে এজিং সমস্যা নেই।
২. লিনাক্স সিকিউরড ওএস। উইন্ডোজ না। আমার কম্পিউটার মুর্খ বন্ধু যে না জেনে না বুঝে বিভিন্ন লিংকে ক্লিক করে তাদের থেকে এই ওএস নিরাপদ। নবিশ ইউজার (যাদের সংখ্যাই বেশি) কয়েকদিন পরপরই উইন্ডোজকে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার দিয়ে বোঝাই করে ফেলে। তাদেরকে একটা লিনাক্স পিসি সেট করে দিলে এই ঝামেলায় পড়তে হয় না।
৩. ফন্ট রেন্ডারিং। উইন্ডোজের ফন্ট রেন্ডারিং একদমই ভালো না। লিনাক্সে এটা অনেক ভালো।
৪. মেমরি লিক। এটা উইন্ডোজের অনেক এ্যাপ্লিকেশনে হয়। (আমার ধারণা এটা) পিসি বন্ধ করে রিস্টার্ট দিলে তারপর সব আগের মতো হয়। লিনাক্সে এই সমস্যা নেই।
৫. সফটওয়্যার। অনেকে ফটোশপ, এমএসঅফিসের কারণে লিনাক্সে সুইচ করেন না। আমি জানি কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলো ধারেকাছের রিপ্লেসমেন্টও লিনাক্সে নেই। উল্টোটাও সত্য। লিনাক্সের অনেক সফটওয়্যারের বিকল্প উইন্ডোজে আছে হয়তো কিন্তু এতোটা সহজলভ্য নয়। লিনাক্সে সফটওয়্যার সেন্টার যেরকম সাপোর্ট দেয় সেরকম সাপোর্ট উইন্ডোজে নেই। আমার কাজের জন্য লিনাক্সের সফটওয়্যার সেন্টার যথেষ্টেরও বেশি।
৬. পুরনো হার্ডওয়্যারে চালোনোর সুবিধে। এটাও আমার জন্য গুরুত্বপূর্ন। আমার ৫ বছর বয়সি ল্যাপটপ দিয়ে আমি সুন্দরমতো লিনাক্স চালাতে পারি। এটা উইন্ডোজের ক্ষেত্রে সম্ভব না।
আমি যদি গত ৫ বছর আগের কথা চিন্তা করি তাহলে আমি লিনাক্সের এই অগ্রগতি অসাধারণ বলবো। আগামি ৫ বছরে এটা আরোও আগাবে।
১৫ | লিখেছেন হাসিব (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ১১:৩৭অপরাহ্ন)
সার্ভার আর পিসি ওএস অনেক আলাদা। কয়েকদিন আগে লিনাসের একটা ইন্টারভিউ পড়ছিলাম। তাঁর মতে পিসি ওএস একটা সার্ভারের জন্য ডিজাইন করা ওএস থেকে অনেক জটিল। এর কারণ সার্ভার খুব কম সংখ্যক কাজ রিপিটেডলি করে যায় দিনের পর দিন। পিসির ওএসকে সংখ্যার হিসেবে অনেক বেশি কাজ করতে হয়। দুটোর তুলনা করাটা আসলে ঠিক না।
১৬ | লিখেছেন ফারুক হাসান (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১১ - ৫:০৪অপরাহ্ন)
১.
আমি লিনাক্সে সুইচ করতে ইচ্ছুক।
২.
অভ্রনীল আর শামীম ভাইকে ধন্যবাদ লিনাক্সের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে দেবার জন্য। কিন্তু...
উইন্ডোজ থেকে লিনাক্সের ঘাড়ে চেপে বসার প্রক্রিয়া এবং পরবর্তী ঝামেলাগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা পরিষ্কার না। এমন তো না যে, উইন্ডোজকে ঝেটিয়ে বিদায় করে দিলাম আর লিনাক্স ইনস্টল করে নিলেই সব চুকে গেল। নিত্যদিনের ব্যবহার্য সফটওয়ারগুলির কম্পেটিবিলিটি একটা বড় ইস্যু। তার উপর নতুন পরিবেশজনিত খাপখাইয়ে নেয়া একটা বিশাল কষ্টকর ব্যাপার।
যতদিন পর্যন্ত এই শিফটিং কীভাবে অপ্টিমাইজডভাবে করবো, সেটা কত সহজে করা যায়- এই ব্যাপারগুলো পরিষ্কার না হচ্ছে ততদিন হয়তো ভয়েই লিনাক্সে যাওয়া হবে না।
৩.
যেহেতু বর্তমানে লিনাক্স ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই প্রথমে উইন্ডোজ ব্যবহার করেছেন, তাই তাদের কেউ যদি পর্যায়ক্রমে লিনাক্সে শিফট করার প্রক্রিয়াটা নিয়ে সিরিজ কিংবা পোস্ট আকারে লিখতেন তাহলে ভরসা পেতাম।
উইন্ডোজের ঘাড়ে যেভাবে চেপে বসে আছেন সেভাবেই লিনাক্সের ঘাড়ে চেপে বসতে হবে, অর্থাৎ ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার না করে তো আর চেপে বসা যায়না, তাইনা! আর 'পরবর্তী ঝামেলা'গুলো ব্যবহারকারী হিসেবে পুরোপুরি আপনার উপর নির্ভর করবে। একেকজনের কাছে ঝামেলা একেক রকম। কারো কাছে 'এটা উইন্ডোজ না' ব্যাপারটাই একটা ঝামেলার আবার কারো কাছে 'এটা লিনাক্স' ব্যাপারটাই ঝামেলার। তাই বলছিলাম যে এটা ব্যবহার না করলে বোঝা যাবেনা যে এটা কিভাবে আপনার জন্য 'ঝামেলা' সৃষ্টি করতে পারে। আমার নিজের ক্ষেত্রে এই ঝামেলার পরিমান ছিল শূন্য।
সফটওয়্যার কম্প্যাটিবিলিটির জন্য প্রথমেই একটি লিস্টি করুন যে আপনার কী কী সফটওয়্যার লাগে। অনেক সফটওয়্যারই আছে যেগুলো মাল্টিপ্লাটফর্ম সাপোর্ট করে; যেমন- ফায়ারফক্স, স্কাইপ, ভিএলসিপ্লেয়ার, এডোব পিডিএফ রিডার ইত্যাদি। অর্থাৎ উবুন্টুতেও এসব সফটওয়্যার চালাতে পারবেন। এছাড়া অনেক উইন্ডোজ সফটওয়্যারের লিনাক্স বিকল্প আছে। এটা ছাড়াও বেশ কিছু উইন্ডোজ সফটওয়্যার লিনাক্সেই চালানো যায়। তাই সফটওয়্যারের পূর্ণ তালিকা না দেখে বলা যাচ্ছেনা যে এটা আপনার জন্য কতটা কম্প্যাটিবল হবে।
নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর ব্যাপারটা পুরোপুরি আপেক্ষিক। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় উইন্ডোজ ইউজারদের প্রথমবার উবুন্টুর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য যে সময় রেঞ্জ দেখেছি সেটা ঘন্টাখানেক থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত ছিল। এই উইন্ডোজ ইউজারদের মাঝে ১২ বছরের মেয়ে থেকে ৫০ বছরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার পর্যন্ত গোটা দশেক লোক ছিল। তাদের কিন্তু খুব একটা কষ্ট হয়নি, তাই খাপ খাওয়ানোটা যে মোটেও 'বিশাল' কষ্টের ব্যাপার নয়, এ ব্যাপারে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
'শিফটিং অপ্টিমাইজেশন' - ব্যাপারটা আমি বুঝিনি। আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন যে আপনি উইন্ডোজের মত পরিচিত চেহারার লিনাক্স ব্যবহার করতে চান? যেখানে বামপাশে নীচে 'স্টার্ট' বাটন থাকবে, ঐখানে সকল প্রোগ্রামের মেনু থাকবে? তাহলে আপনার জন্য কার্যকরী হবে 'কুবুন্টু'। এটা দেখতে প্রায় উইন্ডোজের মতই।
৩।
পর্যায়ক্রমে লিনাক্স শিফটের জন্য আমি বলব নীচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ
লিনাক্সে কিউবির ছোট মডেম ব্যবহার করা যায় না... অথচ আমার পিসি যতক্ষণ খোলা থাকে ততক্ষণ ইন্টারনেট চলে... আর আমার মডেম কিউবির ছোটটা...
এই জন্য লিনাক্স ব্যবহার করা যাচ্ছে না আপাতত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রথমে দেখতে হবে আপনি কি কাজ করবেন আপনার পিসিতে, যদি এমন কোন কাজ করেন যেটা উইন্ডোজ ছাড়া সম্ভব নয়, তাহলে কোন কিছু করার নাই।
আর এরকম কিছু না হলে লিনাক্স ডিস্ট্রো এর ক্ষেত্রে আমার প্রথম পছন্দ উবুন্টু ১০.০৪ বা মিন্ট ৯।
প্রথমেই ইনস্টল না করে উইন্ডোসের ভিতর ভইবক্স দিয়ে ইনস্টল করে দেখুন কেমন কাজ করা যায়। ভাল হলে লাইভ চালান কয়েক দিন। তাও ভাল লাগলে ডুয়েল বুট করে ইনস্টল করে নিন। ধীরে ধীরে উইন্ডোস বাদ দিয়ে দিন।
উইন্ডোস থেকে লিনাক্সে আসা পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করবে আপনি কিভাবে পরিবর্তন কে মানিয়ে নিতে পারবেন। আপনি যদি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে নির্দিধায় লিনাক্স চালাতে পারেন।
আর সমস্যা হলে আমরা তো আছিই সাধ্যমত সাহায্য করতে।
আশা করি সীঘ্রই লিনাক্স চালান শুরু করবেন।
ঠিক একমত না। শুধু চেহারার জন্য Windows ব্যবহারকারী বেশি না, যেকোন দরকারী Software এর সহজলভ্যতা একটা বড় কারণ।
১। আমরা যেকোন কমার্শিয়াল Software ধূপ করে টরেন্ট থেকে নামিয়ে ব্যবহার করি, যেগুলোর লিনাক্স ভার্শন পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। তাই OS হতে free পারে, কিন্তু ঐ OS দিয়ে টাইপ করা আর মুভি দেখার বেশি কিছু করতে গেলে আর ফ্রি থাকবে না।
২। যদি Software পাওয়াও যায়, ঐ ডেবিয়ান প্যাকেজ খোলা, আর ইনস্টল করা কয়জন সাধারণ ব্যবহারকারীর পক্ষে সম্ভব, তা দেখার ব্যাপার। শুধু চেহারা user friendly হলেই তো হবে না।
৩। যেকোন লিনাক্স এর Software রিপোসিটরী ইন্টারনেট ভিত্তিক, কয়েকটা করা থাকে, বাকিগুলা নেটে কানেক্ট করে করে নিতে হয়। আমাদের দেশে ইন্টারনেটের যে অবস্হা, তাতে এটা খুব সুখকর না।
৪। Hardware compatibility একটা বড় ব্যাপার।
৫। কোন ভালো গেম খেলার উপায় নেই, টাক্স রেসার ছাড়া কোন ভালো গেমও নেই।
৬। মোটকথা এটা আসলে কিভাবে free? দেশে থাকলে ৫০ টাকায় os dvd কেনা যায়, বিদেশে থাকলে ৫/৬ ঘন্টা কাজ করে os দাম তুলে নেয়া যায়। কিন্তু আপনি যে ঘন্টার পর ঘন্টা শিখতে আর প্রবলেম সলভ করতে ব্যয় করবেন ওটার দাম কে দিবে?
ফুটনোট: আমার unix এ কমান্ড খুবই পছন্দের। মেয়েদের সামনে টেকি গুরু হিসেবে ভাব মারতে এর জুড়ি নেই।
১। "কমার্শিয়াল" সফটওয়্যার ধুপ করে টরেন্ট দিয়ে "বিনা পয়সায়" নামিয়ে ফেলাটা কারো কাছে "অন্যায়" আবার কারো কাছে "অধিকার"। তাই এই ব্যাপারটা নিয়ে আপাতত কিছু বলছিনা। তবে "সাধারণ" ব্যবহারকারীরা টাইপ করা আর গান-মুভি দেখা ছাড়া গন্ডায়-গন্ডায় কমার্শিয়াল সফটওয়্যার ইন্সটল করে তাতে বুঁদ হয়ে থাকেননা। তাই সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটা ঠিকই আছে, এবং ফ্রিই (উভয় অর্থেই) আছে। আর এখানে FREE মানে 'বিনাপয়সা' না বরং 'স্বাধীনতা' (সোর্সকোড নিয়ে গুঁতোগুঁতি করার স্বাধীনতা)। রেডহ্যাট বা স্যুযে ব্যবহার করতে টাকা গুনতে হয়।
২। উবুন্টুতে সাধারণ ব্যবহারকারীর দরকারী সবকিছুই দেয়া থাকে, তাই তাদের আলাদা ডেবিয়ান প্যাকেজ ইনস্টল করতে হয়না। অসাধারণ ব্যবহারাকারীদের যেহেতু হাজার হাজার সফটওয়্যার-গেম লাগে সেহেতু সমস্যাটা তাদের হয়, সাধারণ ব্যবহারকারীদের নয়। আর ডেবিয়ান প্যাকেজ (.deb) খোলাখুলি করার দরকার পড়েনা, ডাবল ক্লিক করলেই ইন্সটলেশন শুরু হয়।
৩। সবাই যদি গণহারে উবুন্টু ব্যবহার করত তবে দোকানে দোকানে উবুন্টুর সফটওয়্যার কিনতে পাওয়া যেত। সেটা হয়না দেখেই ইন্টারনেট থেকে সফটওয়্যার সংগ্রহ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আর রিপো জিনিসটা আছে দেখেই নিশ্চিন্তে যেকোন আপডেট বা সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারি। অফিসিয়াল রিপো না হলে হয়তো বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম আমার পিসিতে ঢুকে যেতে পারে, যেটা খুবই খারাপ জিনিস।
৪। দেখে হার্ডওয়্যার কিনলে কোন সমস্যা হবে কেন? যে ডিভাইস [url=http://www.ubuntu.com/certification/ ]উবুন্টু সাপোর্ট করে[/url] সেটা কিনলেই তো হল। একসময় তো উইন্ডোজ পাওয়ারপিসি বা এআরএম সাপোর্ট করত না। তখন যদি কেউ ওসব কিনে উইন্ডোজের সাপোর্ট আশা করত তাহলে তো সমস্যায় পড়ত!
৫। উপায় নেই কারণ গেমওয়ালারা উবুন্টুর কথা মাথায় রেখে গেম বানায় না। তারপরও উইন্ডোজের বেশ কিছু গেম ওয়াইন দিয়ে খেলা যায়। আমি আগেই বলেছি, অসাধারণ ব্যবহারকারীদের (হার্ডকোর গেমার যারা পিসি কিনে গেম খেলার জন্য তারা কিন্তু সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে পড়েনা) জন্য সমস্যার অন্ত নেই।
৬। আগেই বলেছি যে FREE মানে 'মাগনা' নয় বরং 'স্বাধীনতা', মাগনা মাগনা অপারেটিং সিস্টেম বিলিয়ে দেবার জন্য free তকমাটা আসেনি। ৫০ টাকায় 'পাইরেটেড' (চোরাই) ডিভিডি কেনার ব্যাপারের সাথে বেশ কিছু নৈতিকতা কাজ করে বলে, ঐ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিশাল বড় আলোচনা শুরু হবে। তাই আপাতত সেই দিকে যাচ্ছিনা। আপনি অসাধারণ ইউজার (যেহেতু ইউনিক্স কমান্ড জানেন, অনেক সফটওয়্যার ব্যবহার করেন আর অনলাইনে কাজ করেন, তাই আপনাকে অ্যাডভান্সড ইউজার হিসেবেই ধরে নিচ্ছি), বিদেশে থেকে কয়েক ঘন্টা কাজ করে অপারেটিং সিস্টেমের দাম তুলে ফেলতে হয়তো পারেন। কিন্তু আমি সাধারণ ব্যবহারকারী, উইন্ডোজ ও আনুষঙ্গিক সফটওয়্যারের (এমএস অফিস, অ্যান্টি ভাইরাস ইত্যাদি) মিলিত দাম হিসেব করলে আমার মাসের বেতনেও কুলোয়না। তাই অনেকের জন্য ওএসের দাম তুলে আনাটা বেশ কষ্টসাধ্যই বইকি! উবুন্টু শিখতে খুব একটা সময় লাগেনা - সেটা যে কেউ ব্যবহার করেই বলবে। আমার মত সাধারণ ব্যবহারকরীর শিখতে লেগেছে সর্বসাকুল্যে একদিন। আমার উইন্ডোজ ব্যবহারকারী ১৪ বছর বয়সী খালাতো ভাইয়ের লেগেছে কয়েক ঘন্টা! আমার প্রতিবেশী ৫০ বছর বয়স্ক এক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের লেগেছে টেনেটুনে তিন দিন। তাই বুঝতেই পারছেন, উবুন্টু শিখতে ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম আর টাকার শ্রাদ্ধ করতে হয়না।
মজার কথা হচ্ছে আপনি যতগুলো সমস্যা উল্লেখ করলেন আমি এগোলোর কোনটার মধ্যেই কখনো পড়িনি। এর একটা কারণ হয়তো আমি সাধারণ ব্যবহারকারী।
ঠিক একমত না। শুধু চেহারার জন্য Windows ব্যবহারকারী বেশি না, যেকোন দরকারী Software এর সহজলভ্যতা একটা বড় কারণ।
পোস্টের কোথাও এই কথাটা উল্লেখ করেছি বলে চোখে পড়লোনা। উইন্ডোজের ব্যবহারকারী বেশি হবার প্রধান কারণ হচ্ছে- কম্পিউটার কিনলে সেটাতে উইন্ডোজ ভরে দেয়া হয়, ব্যবহারকারীর অন্য অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানার কোন উপায়ই থাকেনা। তা-ও যারা অন্য ওএস সম্পর্কে যা জানে তাদের বেশিরভাগই FUD এ আক্রান্ত থাকে। বলতে গেলে বিশাল পোস্ট হয়ে যাবে, তাই ওদিকে যাচ্ছিন।
ফুটনোটঃ অতিশয় সাধারণ ব্যবহারকারী বলে ইউনিক্সের কমান্ড-টমান্ড জানিনা, আমি যখন বড় হব তখন শিখে নিব।
স্ক্রীনশট দেখে মন ভরল না।
আসলে ওপেনজিএলের সাথে ডিরেক্টএক্স গেমের কোন তুলনাই চলে না। যতদিন পর্যন্ত গেম মার্কেটের জায়ান্টদের সুনজর এইদিকে না পড়ে ততদিন playonlinux নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
এই টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপার আমার ব্রেনের আওতা বহির্ভূত । তবে সনির প্লেস্টেশন-২ ও ৩ লিনাক্স পাওয়ার্ড দেইখা ভাবলাম লিনাক্সে গেমিং কোনো ব্যাপারই না .... (রেফারেন্স: উইকি)
আমি অবশ্য ছয়মাস পর পর উবুন্টু পাল্টাইনা, একেবারে দুই বছর পর পর পাল্টাই। আমি এখনো ল্যুসিডে আছি, ওটাতে অভ্র ভালোই চলছে। তবে আমি বছর দুয়েক ধরে পুরোদমে প্রভাত ব্যবহার করি, অভ্র ব্যবহারই ভুলে গেছি!
প্রথমবারের মত উবুন্টু ( ল্যুসিড) ব্যবহার করছি সিডি থেকে। ইন্টার্নেটে ঢুকতে পারছি কিন্তু এখনো বুঝে উঠতে পারিনি ভার্সিটির নেটওয়ার্ক ড্রাইভে কিভাবে ঢুকবো। অবশ্য সেটা খুব জরুরী না। বাসার ডেস্কটপে ব্যবহার করতে পারলেই আমি খুশী। শামীম ভাই বা অভ্রনীল ভাই কি বলবেন, উবুন্টু ইন্স্টলের জন্য পার্টিশন সাইজ কত লাগবে।
অনেক ধন্যবাদ, শামীম ভাই এবং অভ্রনীল ভাই। আমার যদিও ইচ্ছে ছিল মিন্ট ব্যবহার করার, কিন্তু ডিভিডি রাইট করতে পারলাম না। তাই বন্টুকে দিয়েই শুরু করলাম।
৩৬ | লিখেছেন jak (যাচাই করা হয়নি) (তারিখ: সোম, ০৬/০৬/২০১১ - ১১:৩৭অপরাহ্ন)
আমি ফেডোরা -১২ install করেছি অনেক আগেই। কিন্তু ইন্টারনেট চালনা করতে না পারায় এখনো এক্সপিতেই আছি। এক বন্ধুকে, বলেছিলাম ফেডোরাতে Zoom install করে দিতে, যে কিনা ফেডোরা use করে। কিন্তু কয়েকদিন চেষ্টা করেও সে তা করে দিতে পারে নি। ফেডোরাতে কিভাবে Zoom install করব এ বিষয়ে সাহায্য করলে উপকৃত হবো ।
মন্তব্য
fedora তে কিভাবে অভ্র ব্যবহার করব...দয়া করে যদি জানাতেন
অমিক্রনল্যাব কেবলমাত্র উবুন্টুর জন্যই .deb প্যাকেজ রিলিজ করেছে, ফিডোরার জন্য .rpm এখনো করেনি। তবে অভ্র ওপেনসোর্স বলে আপনি ইচ্ছা করলে অভ্র'র সোর্স কম্পাইল করে ফিডোরাতে ইন্সটল করতে পারেন। স্কিম-অভ্র'র সাইটে গিয়ে দেখলাম যে উবুন্টুতে সোর্স কম্পাইলেশনের ধাপগুলো লেখা থাকলেও, ফিডোরাতে কিভাবে করতে হবে সেই পৃষ্ঠাটি আপাতত খালি। তবে আপনি যদি কিছুটা অ্যাডভান্সড ইউজার হয়ে থাকেন (যেহেতু উবুন্টু ব্যবহার না করে ফিডোরা ব্যবহার করছেন, তাই ধরেই নিচ্ছি যে আপনি কিছুটা অ্যাডভান্সড ইউজার) তবে উবুন্টুর দেখানো ধাপগুলো দেখেই ফিডোরাতে কাজগুলো করতে পারার কথা। তারপরও সমস্যা হলে অমিক্রনল্যাবের ফোরামে বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
অভ্র ওপেনসোর্স ,আপনি ইচ্ছা করলে অভ্র'র সোর্স কম্পাইল করে ফিডোরাতে ইন্সটল করতে পারেন | আপনি
Install Avro In Fedora পড়তে পারেন|
খেলুম না ...
আমি পুলাপাইনরে বৃষ্টির ইফেক্ট দেখাই, আগুনের ইফেক্ট দেখাই, আর রোটেটিং কিউবতো আছেই --- তাদের বলি "এই সব আকাইম্যা জিনিষ, কিন্তু মানুষজন এগুলা দেখলেই কেন জানি খুশি হয়" ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ইসসস... আমি যখন উবুন্টুতে আসি তার আগে আমাকে কেউ এইগুলা দেখায়নাই, দেখাইলে আরো আগেই উবুন্টু শুরু করতাম।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
আসলে অনেক দিনের কম্পিউটার ব্যবহারের পর এবং সফটওয়্যার শ্রমিক হিসেবে শ্রম দেবার পর যেটা রিলাইজ করেছি সেটা হোলো উইন্ডোজকে সরানো কঠিনই হবে। যত যাই বলুন দিন শেষে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ উইন্ডোজ বেছে নিচ্ছে এবং আগামী আরও কয়েক বছর সেরকমটাই হবে আন্দাজ করা যায়।
লিনাক্সকে উইন্ডোজের কিংবা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানোর জন্য যেসমস্ত আর্গুমেন্টগুলো ব্যবহার করা হয় তার অনেক গুলোই এখন আর ততটা রেলেভেন্ট নয়। সিকিউরিটির ব্যপার এখন উইন্ডোজ ৭ এর অনেক ভালো, যথেষ্ট ব্যবহার বান্ধব, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৯ যথেষ্ট মর্ডান। তারউপর প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের দক্ষতা, উইন্ডোজ কেন্দ্রিক ইকোসিস্টেম - সব মিলিয়ে লিনাক্সের শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়ানো দুরূহ বটে। সেটা পয়সা দিয়ে কিনতে হলেও বেশীরভাগ লোকে এটাকে ভালো বিনিয়োগ বলেই মেনে নেবে।
তবে লিনাক্সের একটা প্রয়োজনীয় অবস্থান আছে। কিন্তু সেটা মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে নয়। বরং অলটারনেট ওএস, কিংবা রিসার্চ ওএস হিসেবেই বেশী উপযুক্ত।
(চরম লিনাক্স এনথুজিয়াস্টিক আমি আর পাঁচ বছর আগে এই মন্তব্য পড়লে নিজেকেই গালি দিতাম হয়ত। সময়ে মানুষ বদলে যায় বৈকি!)
উইন্ডোজের বিরূদ্ধে কমপ্লেইন আছে -- আমি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারি না বলে। অবশ্য পয়সা দিয়ে কেনা এক্স পি দুইটা ফেলে আবার পয়সা খরচ করে উইন্ডোজ-৭ কিনলে নিরাপত্তা হয়তো একটু বাড়বে, কিন্তু এগুলো আবার আমার আগের ল্যাপটপে চলবেই না।
উইন্ডোজের সুরত খারাপ বা অন্য হিসেবে খারাপ এই বিষয়টা আমাদের টার্গেট না সেটা তো জানেনই। নিজে পাইরেসী না করেও (সফটওয়্যার ছাড়াও গান, ভিডিও-ও না) যখন এই লজ্জ্বার ভাগ নিতে হয় তখন খারাপ লাগে বৈকি। যেটার সমাধান লিনাক্স -- অন্তত বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা বিচার করে।
শুধু বাংলাদেশ কেন, দুনিয়ার অনেক জায়গাতেই সরকারী কাজকর্ম লিনাক্সে করছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের খবরগুলো সবচেয়ে অবাক করেছিলো আমাকে। কর্পোরেটরা লিনাক্সে চলছে। হলিউডের মুভিতে স্পেশাল ইফেক্ট দিচ্ছে। তাই এটা শুধু ওএস রিসার্চ বা অল্টার্নেট ওএস -- এই ধারা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে। আপনি যদি এই প্রবন্ধটা না পড়ে থাকেন তাহলে পড়ে নির্ঘাৎ চমকে উঠবেন: উইকিপিডিয়া: লিনাক্স পরিগ্রহণ। (ভুল জায়গায় বইলা ফেললাম নাকিরে বাবা! বস্ কিছু মনে নিয়েন না )
আর আমি ওএস নিয়ে রিসার্চ করি না, অল্টারনেট নয় বরং মূল ওএস হিসেবেই এটা সার্বক্ষনিক ব্যবহার করি -- অবশ্যই এই ব্যাপারটা ব্যবহারকারীর কাজের ধরণের উপর নির্ভরশীল, এর পাশাপাশি, অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারী প্রোপাইটারী সফটওয়্যারের উপর কতটুকু নির্ভরশীল হয়ে গেছে তার উপরও নির্ভর করে --- অনেকই মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ছাড়া লিখতে পারে না -- আবার এমন কোন এক্সক্লুসিভ জিনিষও করে না যেটা শুধু মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে করা যায় অথচ লিব্রে অফিসে করা যায় না --- শুধুমাত্র নিকোটিনে আসক্ত ও আক্রান্তের মত এটাতেও নির্ভরশীল হয়ে পড়াই দায়ী। আর ভাল পলিটিক্সের মত এখানেও সফটওয়্যার নির্মাতা -- আমিই সেভিয়র, আমার সফট ছাড়া চলবেই না -- এমন ফাডও ছড়ায়।
লিনাক্সের চেয়ে ওপেনসোর্সটাকেই আমি টার্গেট করা উচিত বলে মনে করি। ইদানিং একটা মজার নিউজ পড়লাম - এ্যানড্রয়েড ফোন থেকে মাইক্রোসফটের আয় নিজের মোবাইল থেকে আয়ের চেয়ে বেশি!!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আপনে না অফিসে লিনাক্স ব্যবহার করেন? ছেড়ে দিয়ে বিবাগী হয়ে গেলেন নাকি? দিন শেষে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ উইন্ডোজ বেছে নিচ্ছে সেটা অবশ্য ঠিক। বছর কয়েক আগে আমিও তাই করতাম। কিন্তু বছর কয়েক ব্যবধানে সেই আমিই এখন অনেক পাল্টে গেছি মনে হচ্ছে! সময়ে মানুষ পাল্টে যায় বৈকি!
বিশ্বের কোটি কোটি সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মত আমিও একজন অতিশয় সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারী। সাধারণ ব্যবহারকারীরা যা করেন আমিও সেসব কাজ করি - লেখালেখি করি, অডিও শুনি, ভিডিও দেখি, ব্রাউজ করি, গেম খেলি, আমার ক্যামেরার ছবিগুলো নিয়ে গুঁতাগুঁতি করি, মাঝে মাঝে একটা দুইটা ব্যাকাত্যাড়া ছবি রংচং মেরে সোজা করি - এইতো! আমার ধারণা বাংলাদেশের শতকরা ৯৫ ভাগ কম্পিউটার ব্যবহারকারীই তাদের কম্পিউটারে এইসব কাজ কর্ম করে। এসব কাজ করার জন্য আমার কাছে উবুন্টুই শ্রেয়। লাভের মধ্যে লাভ হচ্ছে, উইন্ডোজ নিয়ে যে কম্প্লেইনগুলো ছিল সেগুলোতে পড়তে হয়না আর টাকা খরচ হয়না। ফলে আমার কম্পিউটারে কেবলমাত্র উবুন্টুই আছে, অন্য কোন দ্বিতীয় অপারেটিং সিস্টেম নেই। তাই উবুন্টু আমার কম্পিউটারে অল্টারনেট না বরং ওয়ান-অ্যান্ড-অনলি মূলধারার অপারেটিং সিস্টেম। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্সের না, আমি ওএস নিয়ে রিসার্চও করিনা। সার্ভার-টার্ভারও চালাইনা (ঐ সব বুঝিওনা)। কিন্তু আমার সকল কাজ কিন্তু উবুন্টু দিয়েই হয়ে যাচ্ছে, আসলে বলা উচিত খুব পরিপাটি করে ঠিকঠাক মত হচ্ছে। তাই আমার মনে হয় অসাধারন ব্যবহারকারী না হলে উবুন্টু নিয়ে কোন ঝামেলা হবার কথা না।
বড়সর ক্যানভাসে এখনো উইন্ডোজ ডমিনেন্ট। তবে গত কয়েক বছরে লিনাক্সের প্রচার ও প্রসার কিন্তু বেশ জোরেশোরে বেড়েছে। লিনাক্স এখন অনেক ব্যবহারবান্ধব (থ্যাংক্স টু উবুন্টু)। এমনকি গত চার/পাঁচ বছরে লিনাক্স বিশেষ করে উবুন্টু কেন্দ্রীক ডেভেলপমেন্ট কিন্তু অনেক বেড়েছে। হার্ডওয়্যার ভেন্ডররাও লিনাক্সকে গোনায় ধরছে, লিনাক্সের জন্য ড্রাইভার বানাচ্ছে। লিনাক্সের ড্রাইভার সাপোর্ট কেমন বেড়েছে সেটা আমি নিজেই টের পেয়েছি। একসময় ফ্ল্যাশ চালাতে হলে এডোব ফ্ল্যাশের বিকল্প কিছু লাগতো, আর এখন এডোব নিজেই লিনাক্সের জন্য ফ্ল্যাশ, এডোব এয়ার, পিডিএফ রিডার বানাচ্ছে। সোজা হিসেব হচ্ছে লিনাক্স এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্ত অবস্থানে।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
অফিসে আমি দুটা ডেস্কটপ ব্যবহার করি। দুইটাই উইন্ডোজ। আরো দুটো লিনাক্স মেশিনে সময় সময় কাজ করি। যদিও এখন ভার্চুয়াল মেশিন দিয়ে লিনাক্স ব্যবহার করি। লিনাক্স বিষয়ক বাগ ফিক্সিং করি এগুলোতে।
লিনাক্স এখন মূলধারায় চলার যোগ্যতা রাখে। উইন্ডোজের যেসব জিনিসের অনুপস্থিতি/সমস্যার কারণে আমি যেকারণে ব্যবহার করি সেটা বলি -
১. উইন্ডোজে এজিং ইফেক্ট কাজ করে। রিগোরাসলি ৬ মাস ব্যবহার করলেই ওএস স্লো হয়ে পড়ে। আর রিইনস্টল করতে হয় সবকিছু। ফিক্স করার কোন উপায় নেই। লিনাক্সে এজিং সমস্যা নেই।
২. লিনাক্স সিকিউরড ওএস। উইন্ডোজ না। আমার কম্পিউটার মুর্খ বন্ধু যে না জেনে না বুঝে বিভিন্ন লিংকে ক্লিক করে তাদের থেকে এই ওএস নিরাপদ। নবিশ ইউজার (যাদের সংখ্যাই বেশি) কয়েকদিন পরপরই উইন্ডোজকে ভাইরাস, ম্যালওয়্যার দিয়ে বোঝাই করে ফেলে। তাদেরকে একটা লিনাক্স পিসি সেট করে দিলে এই ঝামেলায় পড়তে হয় না।
৩. ফন্ট রেন্ডারিং। উইন্ডোজের ফন্ট রেন্ডারিং একদমই ভালো না। লিনাক্সে এটা অনেক ভালো।
৪. মেমরি লিক। এটা উইন্ডোজের অনেক এ্যাপ্লিকেশনে হয়। (আমার ধারণা এটা) পিসি বন্ধ করে রিস্টার্ট দিলে তারপর সব আগের মতো হয়। লিনাক্সে এই সমস্যা নেই।
৫. সফটওয়্যার। অনেকে ফটোশপ, এমএসঅফিসের কারণে লিনাক্সে সুইচ করেন না। আমি জানি কিছু সফটওয়্যার আছে যেগুলো ধারেকাছের রিপ্লেসমেন্টও লিনাক্সে নেই। উল্টোটাও সত্য। লিনাক্সের অনেক সফটওয়্যারের বিকল্প উইন্ডোজে আছে হয়তো কিন্তু এতোটা সহজলভ্য নয়। লিনাক্সে সফটওয়্যার সেন্টার যেরকম সাপোর্ট দেয় সেরকম সাপোর্ট উইন্ডোজে নেই। আমার কাজের জন্য লিনাক্সের সফটওয়্যার সেন্টার যথেষ্টেরও বেশি।
৬. পুরনো হার্ডওয়্যারে চালোনোর সুবিধে। এটাও আমার জন্য গুরুত্বপূর্ন। আমার ৫ বছর বয়সি ল্যাপটপ দিয়ে আমি সুন্দরমতো লিনাক্স চালাতে পারি। এটা উইন্ডোজের ক্ষেত্রে সম্ভব না।
আমি যদি গত ৫ বছর আগের কথা চিন্তা করি তাহলে আমি লিনাক্সের এই অগ্রগতি অসাধারণ বলবো। আগামি ৫ বছরে এটা আরোও আগাবে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
১। আমি তো লিনাক্সেও একই রকম এজিং এফেক্ট দেখেছি। দু'দিন আগেই আমার তৃতীয় ল্যাপটপটার লিনাক্স ফেলে দিতে হোলো গতির কারনে।
২। মানছি। তবে লিনাক্স মেইনস্ট্রিম না বলে সিকিউরিটির আক্রমন অতটা বেশী নয় যতটা উইন্ডোজে আছে।
৩। ভুল। উইন্ডোজ ৭ এর রেন্ডারিং খুব ভালো।
৪। এটা ইনডিভিজ্যুয়াল এপ্লিকেশনের সমস্যা। লিনাক্সে অনেক সফটওয়্যারই বাগ সমৃদ্ধ।
৫। ঠিকাছে।
৬। ঠিকাছে।
একমত।
একটা টেস্ট করা যায়। আজ থেকে ৬মাস পরে উইন্ডোজ ৭ আর উবুন্টু ১০+। কে কতোটা রেম নেয় সেটা দেখা যেতে পারে। সিপিইউ ইউসেজও মাপা যেতে পারে
বাংলা ফন্টগুলো একেবারে যাচ্ছেতাই দেখায় উইন্ডোজ ৭এ। স্কৃনশট কম্প্যায়ার করে দেখাতে পারি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সাইট অর্থাৎ http://www.sachalayatan.com/ কিন্তু চলছে লিনাক্সে ... মাইক্রসফটের কোন অপারেটিং সিস্টেমে নয়।
হুঁ। সার্ভারটার অপারেটিং সিস্টেম আমিই বেছে নিয়েছি। আমিই পুরোটা কনফিগার করেছি। কিন্তু কথা হচ্ছে ইউজার সেন্ট্রিক ওএস নিয়ে। সার্ভার সিস্টেম নিয়ে নয়।
সার্ভার আর পিসি ওএস অনেক আলাদা। কয়েকদিন আগে লিনাসের একটা ইন্টারভিউ পড়ছিলাম। তাঁর মতে পিসি ওএস একটা সার্ভারের জন্য ডিজাইন করা ওএস থেকে অনেক জটিল। এর কারণ সার্ভার খুব কম সংখ্যক কাজ রিপিটেডলি করে যায় দিনের পর দিন। পিসির ওএসকে সংখ্যার হিসেবে অনেক বেশি কাজ করতে হয়। দুটোর তুলনা করাটা আসলে ঠিক না।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
১.
আমি লিনাক্সে সুইচ করতে ইচ্ছুক।
২.
অভ্রনীল আর শামীম ভাইকে ধন্যবাদ লিনাক্সের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়ে দেবার জন্য। কিন্তু...
উইন্ডোজ থেকে লিনাক্সের ঘাড়ে চেপে বসার প্রক্রিয়া এবং পরবর্তী ঝামেলাগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা পরিষ্কার না। এমন তো না যে, উইন্ডোজকে ঝেটিয়ে বিদায় করে দিলাম আর লিনাক্স ইনস্টল করে নিলেই সব চুকে গেল। নিত্যদিনের ব্যবহার্য সফটওয়ারগুলির কম্পেটিবিলিটি একটা বড় ইস্যু। তার উপর নতুন পরিবেশজনিত খাপখাইয়ে নেয়া একটা বিশাল কষ্টকর ব্যাপার।
যতদিন পর্যন্ত এই শিফটিং কীভাবে অপ্টিমাইজডভাবে করবো, সেটা কত সহজে করা যায়- এই ব্যাপারগুলো পরিষ্কার না হচ্ছে ততদিন হয়তো ভয়েই লিনাক্সে যাওয়া হবে না।
৩.
যেহেতু বর্তমানে লিনাক্স ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই প্রথমে উইন্ডোজ ব্যবহার করেছেন, তাই তাদের কেউ যদি পর্যায়ক্রমে লিনাক্সে শিফট করার প্রক্রিয়াটা নিয়ে সিরিজ কিংবা পোস্ট আকারে লিখতেন তাহলে ভরসা পেতাম।
১।
খুবই দারুণ কথা! 'ইচ্ছুকদের দল' এ স্বাগতম!
২।
উইন্ডোজের ঘাড়ে যেভাবে চেপে বসে আছেন সেভাবেই লিনাক্সের ঘাড়ে চেপে বসতে হবে, অর্থাৎ ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার না করে তো আর চেপে বসা যায়না, তাইনা! আর 'পরবর্তী ঝামেলা'গুলো ব্যবহারকারী হিসেবে পুরোপুরি আপনার উপর নির্ভর করবে। একেকজনের কাছে ঝামেলা একেক রকম। কারো কাছে 'এটা উইন্ডোজ না' ব্যাপারটাই একটা ঝামেলার আবার কারো কাছে 'এটা লিনাক্স' ব্যাপারটাই ঝামেলার। তাই বলছিলাম যে এটা ব্যবহার না করলে বোঝা যাবেনা যে এটা কিভাবে আপনার জন্য 'ঝামেলা' সৃষ্টি করতে পারে। আমার নিজের ক্ষেত্রে এই ঝামেলার পরিমান ছিল শূন্য।
সফটওয়্যার কম্প্যাটিবিলিটির জন্য প্রথমেই একটি লিস্টি করুন যে আপনার কী কী সফটওয়্যার লাগে। অনেক সফটওয়্যারই আছে যেগুলো মাল্টিপ্লাটফর্ম সাপোর্ট করে; যেমন- ফায়ারফক্স, স্কাইপ, ভিএলসিপ্লেয়ার, এডোব পিডিএফ রিডার ইত্যাদি। অর্থাৎ উবুন্টুতেও এসব সফটওয়্যার চালাতে পারবেন। এছাড়া অনেক উইন্ডোজ সফটওয়্যারের লিনাক্স বিকল্প আছে। এটা ছাড়াও বেশ কিছু উইন্ডোজ সফটওয়্যার লিনাক্সেই চালানো যায়। তাই সফটওয়্যারের পূর্ণ তালিকা না দেখে বলা যাচ্ছেনা যে এটা আপনার জন্য কতটা কম্প্যাটিবল হবে।
নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর ব্যাপারটা পুরোপুরি আপেক্ষিক। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় উইন্ডোজ ইউজারদের প্রথমবার উবুন্টুর সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য যে সময় রেঞ্জ দেখেছি সেটা ঘন্টাখানেক থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত ছিল। এই উইন্ডোজ ইউজারদের মাঝে ১২ বছরের মেয়ে থেকে ৫০ বছরের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার পর্যন্ত গোটা দশেক লোক ছিল। তাদের কিন্তু খুব একটা কষ্ট হয়নি, তাই খাপ খাওয়ানোটা যে মোটেও 'বিশাল' কষ্টের ব্যাপার নয়, এ ব্যাপারে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
'শিফটিং অপ্টিমাইজেশন' - ব্যাপারটা আমি বুঝিনি। আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন যে আপনি উইন্ডোজের মত পরিচিত চেহারার লিনাক্স ব্যবহার করতে চান? যেখানে বামপাশে নীচে 'স্টার্ট' বাটন থাকবে, ঐখানে সকল প্রোগ্রামের মেনু থাকবে? তাহলে আপনার জন্য কার্যকরী হবে 'কুবুন্টু'। এটা দেখতে প্রায় উইন্ডোজের মতই।
৩।
পর্যায়ক্রমে লিনাক্স শিফটের জন্য আমি বলব নীচের ধাপগুলো অনুসরণ করুনঃ
এভাবে আগে শুরু করুন। আর সেই সাথে এই অধমের সহজ উবুন্টু শিক্ষা পড়তে পারেন, কিছুটা হলেও কাজে দেবে।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
অশেষ ধন্যবাদ। বিশেষ করে ৩ নম্বর পয়েন্টটার জন্য।
আপনি আমাদের মেইলিং লিস্টে যোগ দিয়ে ফেলুন, তারপর মনের ভেতর যত প্রশ্ন থাকে এক্কেবারে মন খালি করে ঝেড়ে ফেলুন সেখানে।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
লিনাক্সের জয় হোক!
মেঘরং
.
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
লিনাক্সে কিউবির ছোট মডেম ব্যবহার করা যায় না... অথচ আমার পিসি যতক্ষণ খোলা থাকে ততক্ষণ ইন্টারনেট চলে... আর আমার মডেম কিউবির ছোটটা...
এই জন্য লিনাক্স ব্যবহার করা যাচ্ছে না আপাতত
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এগুলাকে বানানোই হয় উইন্ডোজের জন্য। ড্রাইবার লেখার সময় লিনাক্স সাপোর্ট চিন্তা করা হয়না, সেজন্য এসব ডিভাইসের ড্রাইভার লিনাক্স সাপোর্ট করেনা।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
mathtype sw-এর কোন লিনাক্স ভার্সন আছে কি?
লিব্রে অফিসের ইক্যুয়েশন এডিটর ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এর থেকে জটিল কিছু লিখতে হবে লাটেখ দিয়ে লেখাই ভালো।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
@ফারুক হাসান ভাই
প্রথমে দেখতে হবে আপনি কি কাজ করবেন আপনার পিসিতে, যদি এমন কোন কাজ করেন যেটা উইন্ডোজ ছাড়া সম্ভব নয়, তাহলে কোন কিছু করার নাই।
আর এরকম কিছু না হলে লিনাক্স ডিস্ট্রো এর ক্ষেত্রে আমার প্রথম পছন্দ উবুন্টু ১০.০৪ বা মিন্ট ৯।
প্রথমেই ইনস্টল না করে উইন্ডোসের ভিতর ভইবক্স দিয়ে ইনস্টল করে দেখুন কেমন কাজ করা যায়। ভাল হলে লাইভ চালান কয়েক দিন। তাও ভাল লাগলে ডুয়েল বুট করে ইনস্টল করে নিন। ধীরে ধীরে উইন্ডোস বাদ দিয়ে দিন।
উইন্ডোস থেকে লিনাক্সে আসা পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করবে আপনি কিভাবে পরিবর্তন কে মানিয়ে নিতে পারবেন। আপনি যদি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে নির্দিধায় লিনাক্স চালাতে পারেন।
আর সমস্যা হলে আমরা তো আছিই সাধ্যমত সাহায্য করতে।
আশা করি সীঘ্রই লিনাক্স চালান শুরু করবেন।
ভরসা পাইলাম।
ঠিক একমত না। শুধু চেহারার জন্য Windows ব্যবহারকারী বেশি না, যেকোন দরকারী Software এর সহজলভ্যতা একটা বড় কারণ।
১। আমরা যেকোন কমার্শিয়াল Software ধূপ করে টরেন্ট থেকে নামিয়ে ব্যবহার করি, যেগুলোর লিনাক্স ভার্শন পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। তাই OS হতে free পারে, কিন্তু ঐ OS দিয়ে টাইপ করা আর মুভি দেখার বেশি কিছু করতে গেলে আর ফ্রি থাকবে না।
২। যদি Software পাওয়াও যায়, ঐ ডেবিয়ান প্যাকেজ খোলা, আর ইনস্টল করা কয়জন সাধারণ ব্যবহারকারীর পক্ষে সম্ভব, তা দেখার ব্যাপার। শুধু চেহারা user friendly হলেই তো হবে না।
৩। যেকোন লিনাক্স এর Software রিপোসিটরী ইন্টারনেট ভিত্তিক, কয়েকটা করা থাকে, বাকিগুলা নেটে কানেক্ট করে করে নিতে হয়। আমাদের দেশে ইন্টারনেটের যে অবস্হা, তাতে এটা খুব সুখকর না।
৪। Hardware compatibility একটা বড় ব্যাপার।
৫। কোন ভালো গেম খেলার উপায় নেই, টাক্স রেসার ছাড়া কোন ভালো গেমও নেই।
৬। মোটকথা এটা আসলে কিভাবে free? দেশে থাকলে ৫০ টাকায় os dvd কেনা যায়, বিদেশে থাকলে ৫/৬ ঘন্টা কাজ করে os দাম তুলে নেয়া যায়। কিন্তু আপনি যে ঘন্টার পর ঘন্টা শিখতে আর প্রবলেম সলভ করতে ব্যয় করবেন ওটার দাম কে দিবে?
ফুটনোট: আমার unix এ কমান্ড খুবই পছন্দের। মেয়েদের সামনে টেকি গুরু হিসেবে ভাব মারতে এর জুড়ি নেই।
১। "কমার্শিয়াল" সফটওয়্যার ধুপ করে টরেন্ট দিয়ে "বিনা পয়সায়" নামিয়ে ফেলাটা কারো কাছে "অন্যায়" আবার কারো কাছে "অধিকার"। তাই এই ব্যাপারটা নিয়ে আপাতত কিছু বলছিনা। তবে "সাধারণ" ব্যবহারকারীরা টাইপ করা আর গান-মুভি দেখা ছাড়া গন্ডায়-গন্ডায় কমার্শিয়াল সফটওয়্যার ইন্সটল করে তাতে বুঁদ হয়ে থাকেননা। তাই সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটা ঠিকই আছে, এবং ফ্রিই (উভয় অর্থেই) আছে। আর এখানে FREE মানে 'বিনাপয়সা' না বরং 'স্বাধীনতা' (সোর্সকোড নিয়ে গুঁতোগুঁতি করার স্বাধীনতা)। রেডহ্যাট বা স্যুযে ব্যবহার করতে টাকা গুনতে হয়।
২। উবুন্টুতে সাধারণ ব্যবহারকারীর দরকারী সবকিছুই দেয়া থাকে, তাই তাদের আলাদা ডেবিয়ান প্যাকেজ ইনস্টল করতে হয়না। অসাধারণ ব্যবহারাকারীদের যেহেতু হাজার হাজার সফটওয়্যার-গেম লাগে সেহেতু সমস্যাটা তাদের হয়, সাধারণ ব্যবহারকারীদের নয়। আর ডেবিয়ান প্যাকেজ (.deb) খোলাখুলি করার দরকার পড়েনা, ডাবল ক্লিক করলেই ইন্সটলেশন শুরু হয়।
৩। সবাই যদি গণহারে উবুন্টু ব্যবহার করত তবে দোকানে দোকানে উবুন্টুর সফটওয়্যার কিনতে পাওয়া যেত। সেটা হয়না দেখেই ইন্টারনেট থেকে সফটওয়্যার সংগ্রহ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আর রিপো জিনিসটা আছে দেখেই নিশ্চিন্তে যেকোন আপডেট বা সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারি। অফিসিয়াল রিপো না হলে হয়তো বিভিন্ন ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম আমার পিসিতে ঢুকে যেতে পারে, যেটা খুবই খারাপ জিনিস।
৪। দেখে হার্ডওয়্যার কিনলে কোন সমস্যা হবে কেন? যে ডিভাইস [url=http://www.ubuntu.com/certification/ ]উবুন্টু সাপোর্ট করে[/url] সেটা কিনলেই তো হল। একসময় তো উইন্ডোজ পাওয়ারপিসি বা এআরএম সাপোর্ট করত না। তখন যদি কেউ ওসব কিনে উইন্ডোজের সাপোর্ট আশা করত তাহলে তো সমস্যায় পড়ত!
৫। উপায় নেই কারণ গেমওয়ালারা উবুন্টুর কথা মাথায় রেখে গেম বানায় না। তারপরও উইন্ডোজের বেশ কিছু গেম ওয়াইন দিয়ে খেলা যায়। আমি আগেই বলেছি, অসাধারণ ব্যবহারকারীদের (হার্ডকোর গেমার যারা পিসি কিনে গেম খেলার জন্য তারা কিন্তু সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে পড়েনা) জন্য সমস্যার অন্ত নেই।
৬। আগেই বলেছি যে FREE মানে 'মাগনা' নয় বরং 'স্বাধীনতা', মাগনা মাগনা অপারেটিং সিস্টেম বিলিয়ে দেবার জন্য free তকমাটা আসেনি। ৫০ টাকায় 'পাইরেটেড' (চোরাই) ডিভিডি কেনার ব্যাপারের সাথে বেশ কিছু নৈতিকতা কাজ করে বলে, ঐ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিশাল বড় আলোচনা শুরু হবে। তাই আপাতত সেই দিকে যাচ্ছিনা। আপনি অসাধারণ ইউজার (যেহেতু ইউনিক্স কমান্ড জানেন, অনেক সফটওয়্যার ব্যবহার করেন আর অনলাইনে কাজ করেন, তাই আপনাকে অ্যাডভান্সড ইউজার হিসেবেই ধরে নিচ্ছি), বিদেশে থেকে কয়েক ঘন্টা কাজ করে অপারেটিং সিস্টেমের দাম তুলে ফেলতে হয়তো পারেন। কিন্তু আমি সাধারণ ব্যবহারকারী, উইন্ডোজ ও আনুষঙ্গিক সফটওয়্যারের (এমএস অফিস, অ্যান্টি ভাইরাস ইত্যাদি) মিলিত দাম হিসেব করলে আমার মাসের বেতনেও কুলোয়না। তাই অনেকের জন্য ওএসের দাম তুলে আনাটা বেশ কষ্টসাধ্যই বইকি! উবুন্টু শিখতে খুব একটা সময় লাগেনা - সেটা যে কেউ ব্যবহার করেই বলবে। আমার মত সাধারণ ব্যবহারকরীর শিখতে লেগেছে সর্বসাকুল্যে একদিন। আমার উইন্ডোজ ব্যবহারকারী ১৪ বছর বয়সী খালাতো ভাইয়ের লেগেছে কয়েক ঘন্টা! আমার প্রতিবেশী ৫০ বছর বয়স্ক এক ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের লেগেছে টেনেটুনে তিন দিন। তাই বুঝতেই পারছেন, উবুন্টু শিখতে ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম আর টাকার শ্রাদ্ধ করতে হয়না।
মজার কথা হচ্ছে আপনি যতগুলো সমস্যা উল্লেখ করলেন আমি এগোলোর কোনটার মধ্যেই কখনো পড়িনি। এর একটা কারণ হয়তো আমি সাধারণ ব্যবহারকারী।
পোস্টের কোথাও এই কথাটা উল্লেখ করেছি বলে চোখে পড়লোনা। উইন্ডোজের ব্যবহারকারী বেশি হবার প্রধান কারণ হচ্ছে- কম্পিউটার কিনলে সেটাতে উইন্ডোজ ভরে দেয়া হয়, ব্যবহারকারীর অন্য অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানার কোন উপায়ই থাকেনা। তা-ও যারা অন্য ওএস সম্পর্কে যা জানে তাদের বেশিরভাগই FUD এ আক্রান্ত থাকে। বলতে গেলে বিশাল পোস্ট হয়ে যাবে, তাই ওদিকে যাচ্ছিন।
ফুটনোটঃ অতিশয় সাধারণ ব্যবহারকারী বলে ইউনিক্সের কমান্ড-টমান্ড জানিনা, আমি যখন বড় হব তখন শিখে নিব।
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
৫। এই মিছা কথাটা আপনাকে বলেছে কে!!!
লিনাক্সে ভাল গেম তো আছেই (একটু ঘুরে আসেন এইখানে) + উইন্ডোজের প্রায় সব গেমই চলে। (তয় পাইরেসী করা যাবে না ... ... উইন্ডোজ গেমের লিস্টিটা দেখে নেন এখানে)
উইকিতে দেয়া লিস্টিটাও দেখতে পারেন।
আমি তেমন গেমার না। আমার পছন্দের দুইটা গেমের স্ক্রিনশট:
এই যা ... ... ভাল গেমের সংজ্ঞাটাই তো জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেলাম!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
স্ক্রীনশট দেখে মন ভরল না।
আসলে ওপেনজিএলের সাথে ডিরেক্টএক্স গেমের কোন তুলনাই চলে না। যতদিন পর্যন্ত গেম মার্কেটের জায়ান্টদের সুনজর এইদিকে না পড়ে ততদিন playonlinux নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
এই টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপার আমার ব্রেনের আওতা বহির্ভূত । তবে সনির প্লেস্টেশন-২ ও ৩ লিনাক্স পাওয়ার্ড দেইখা ভাবলাম লিনাক্সে গেমিং কোনো ব্যাপারই না .... (রেফারেন্স: উইকি)
এদিকে সব নামকরা হলিউড মুভির এনিমেশন লিনাক্সে করে দেইখা দুইয়ে দুইয়ে চাইর মিলায়া ফেলছিলাম ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
অভ্র ফোনেটিক উবুন্টু ভার্সন রিলিজ করার পর উবুন্টুতে চলে গেছিলাম। বর্তমান ভার্সনটায় ফোনেটিক কাজ করেনা, তাই আবার ব্যাক টু উইন্ডোজ!
আমি অবশ্য ছয়মাস পর পর উবুন্টু পাল্টাইনা, একেবারে দুই বছর পর পর পাল্টাই। আমি এখনো ল্যুসিডে আছি, ওটাতে অভ্র ভালোই চলছে। তবে আমি বছর দুয়েক ধরে পুরোদমে প্রভাত ব্যবহার করি, অভ্র ব্যবহারই ভুলে গেছি!
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
প্রথমবারের মত উবুন্টু ( ল্যুসিড) ব্যবহার করছি সিডি থেকে। ইন্টার্নেটে ঢুকতে পারছি কিন্তু এখনো বুঝে উঠতে পারিনি ভার্সিটির নেটওয়ার্ক ড্রাইভে কিভাবে ঢুকবো। অবশ্য সেটা খুব জরুরী না। বাসার ডেস্কটপে ব্যবহার করতে পারলেই আমি খুশী। শামীম ভাই বা অভ্রনীল ভাই কি বলবেন, উবুন্টু ইন্স্টলের জন্য পার্টিশন সাইজ কত লাগবে।
অনেক ধন্যবাদ, শামীম ভাই এবং অভ্রনীল ভাই। আমার যদিও ইচ্ছে ছিল মিন্ট ব্যবহার করার, কিন্তু ডিভিডি রাইট করতে পারলাম না। তাই বন্টুকে দিয়েই শুরু করলাম।
আমি ফেডোরা -১২ install করেছি অনেক আগেই। কিন্তু ইন্টারনেট চালনা করতে না পারায় এখনো এক্সপিতেই আছি। এক বন্ধুকে, বলেছিলাম ফেডোরাতে Zoom install করে দিতে, যে কিনা ফেডোরা use করে। কিন্তু কয়েকদিন চেষ্টা করেও সে তা করে দিতে পারে নি। ফেডোরাতে কিভাবে Zoom install করব এ বিষয়ে সাহায্য করলে উপকৃত হবো ।
নতুন মন্তব্য করুন