১৩ পৃষ্ঠার ঝড়

নীলকান্ত এর ছবি
লিখেছেন নীলকান্ত (তারিখ: মঙ্গল, ৩০/১১/২০১০ - ৪:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঝড় উঠেছে, ঝড়। ১৩ পৃষ্ঠার ঝড়।

অনেক বছর পর, হিসেব করলে…

নাহ, হিসেব করতে পারছি না।

লক্ষণ, পূর্বাভাস কিছুই দেয়নি সে। হঠাৎ করে প্রবল ঘূর্ণিপাকে সে আমায় কাঁপিয়ে দেয়। প্রতি পাতায় পাতায় জানিয়ে দেয় “তোমাকে ছিন্নভিন্ন করে তবেই আমি যাব”।

রাস্তাটা পুরনো, তার চেয়েও পুরনো তার প্রতিবেশীরা। ১৯ বছর ধরে এই রাস্তার প্রতি কোণা অজস্রবার মাড়িয়েছি। সূর্যকে বুকে নিয়ে তাকে ঘুমিয়ে যেতেও দেখেছি। বেলা শেষে ক্লান্ত দেহে এ পথেই আবার নীড়ে ফিরেছি।

তবু আজ কেন জানি একটু ভিন্ন সে, একটু ভিন্ন। সেই ১৯ বছর আগের।

ল্যাম্পপোস্টগুলো আজ আলো করছে না। হঠাৎ হঠাৎ বিজলির চমক আলো করে দিচ্ছে আমার চারপাশ। প্রতি চমকে চমকে তার নতুন রূপ। সেও জানে এ ঝড় থামবার না।

আজ আমি যেখানেই থাকি স্বর্গ মত্য পাতাল সে আমাকে নিয়ে খেলবেই।

আজ আমাকে সে খেতে দেবে না, ঘুমাতে দেবে না। দেবে না মায়ের ছেলে হতে। দেবে না স্বপ্ন দেখতে। দেবে না জানালা দিয়ে দূর আকাশে তারা গুনতে।

হাতড়ে ফিরি নিজের মাঝে। উত্তর চাই, উত্তর।

এ কেমন ঝড়?কি আমার দোষ, কেন এ শাস্তি?কেন আমিই?

কেন আমায় স্বপ্ন দেখতে দিবে না, দিবে না মায়ের ছেলে হতে?

কিছু বলে না ঝড়, ১৩ পৃষ্ঠার ঝড় সে।

রাত বাড়ে, বাড়ে অকারণ ভীড়। দাঁড়কাকেরা সব ঘুমিয়ে গেছে, তবু ময়লাগুলো সব জমেই আছে।

চোখ যায় সেদিকে।

কিন্তু না। এত সহজে সে ছাড়বার নয়। আমায় জানিয়ে দেয় সে আছে, সে আছে এবং সে থাকবে।

রাস্তার পাশে চুপ করে বসে থাকা নিঝু পাগলার হঠাৎ খেঁকিয়ে ওঠা কিংবা পাড়ার বাঘার রাত বিরেতে হেঁকে ওঠা কোন কিছুই দাঁড়কাকেদের জাগাতে পারে না। পারে না আমার ঝড়টাকে থামাতে।

সে আমার শেষ দেখেই ছাড়বে।

আমার রিক্তহস্তে তার চিহ্ন দেখে তবেই সে থামবে। চলে যাবে নতুন কোন স্বপ্নবাজের কাছে।

আমায় একাকিত্বে রেখে, আমায় একাকিত্বের সম্পত্তি করে।

তখন আবার ও পথে ফিরে যাব। যাবো সূর্যাস্ত দেখতে। সাথে -একাকিত্ব। তখন আমি একাদের ভীড়ে, একাদের দলে।

কখনও পূর্ণিমা দেখা হয়নি, হয়তো তখন হবে। হয়তো তখন নুরূর দোকানের ঝলসানো রুটিটাকে মেলে ধরবো তার পাশে। কিংবা চায়ের দোকানে এককাপ ধোঁয়া ওঠা চায়ের মাঝে চাঁদটাকে দেখবো। হয়তো…

ঝড়টা পাশেই আছে- ১৩ পৃষ্ঠার ঝড়, আমার দিকে তাকিয়ে।

আরো কিছুদিন সে থাকবে, আমায় শূন্য করতে।


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ফোকাস কী? লাস্টের ৪ প্যারা অপ্রয়োজনীয় লাগল।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

মত্য>মর্ত্য
ঝড়?কি> ঝড়? কি
শাস্তি?কেন> শান্তি? কেন
ভীড়>ভিড়

টাইপো। একটু ঠিক করে দিলেই হবে।

আর এই লেখাটাকে ঠিক 'গল্প' না বলে 'পদ্য' বলা যায় কিনা সেটা ভাববার বিষয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বুঝি নাই মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মাথার উপ্রে দিয়া গেলো।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

গল্পের থলে থেকে কাব্যসুন্দরী চোখ মারছে যে!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।