গ্যাসের বর্তমান পরিস্থিতি
পেট্রোবাংলা বলছে দেশে দৈনিক মোট উৎপাদন ২১৮৯ মিলিয়ন ঘনফুট(এখানে আছে)। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছেন দেশে জ্বালানির ঘাটতি ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট(MCF)। তিনি বলেছেন,দেশে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ প্রায় ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।
ঘাটতিটা চাপ ফেলে প্রধানত সার এবং বিদ্যুৎ খাতে। বাসাবাড়িতে দেওয়ার ক্ষেত্রেও।
গ্যাসের ভবিষ্যৎ হিসাব
দেশে উৎপাদন দৈনিক ২২০০ মিলিয়ন ঘনফুট।(পেট্রোবাংলা বলে ২১৮৯, রাউণ্ড ধরি)।
দেশে মজুদ আছে প্রায় ১০ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।
ক্যালকুলেটর নেই। ২২০০ মিলিয়ন গুণ দিন ৩৬৫
৮০৩ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এক বছরে পাওয়া যায়।
ভাগ করলে পাওয়া যায়ঃ ১৩ দশমিক ৪৪...অর্থাৎ আর কোন নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হলে এই দিয়ে ১৩ বছর চলতে পারবো। প্রতিবছর গ্যাসের ডিমান্ড বাড়ে। সেই হিসাব মাথায় রাখতে হবে।
এখন, কোন ব্যবস্থা না নিলে আজ থেকে দশ বছর পর এমনিতেই গ্যাস কিনে চলতে হবে।
যারা বাজার সম্পর্কে অবহিত তারা একটু খেয়াল করবেন। গ্যাসের দাম কমছে না বরং, বাড়ছে। একই সাথে অন্যান্য জিনিসের দাম। ১০ বছরের মধ্যে আমাদের ভালো একটি উৎস দরকার গ্যাসের।
পিএসসি
পিএসসি হল, একটা আদর্শ(মডেল) চুক্তি বাংলা ‘উৎপাদন বন্টন চুক্তি’ (production sharing contract)। তেল বা গ্যাস উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত কোম্পানিগুলোকে এই ধরনের চুক্তি করতে হয়।
৩ টি ডকুমেন্ট থেকে পাওয়া তথ্য থেকে উপস্থাপনাঃ
ক্ষেত্র থেকে পাওয়া গ্যাসের যে অংশ কস্ট রিকোভারি হিসেবে কোম্পানি নিবে, তার একটা অংশ যাবে যন্ত্রপাতি স্থাপন এবং পাইপলাইনে। এইসব যন্ত্রপাতির দাম যখনই কস্ট রিকোভারিতে আসবে, সাথে সাথে তা হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
এক্ষেত্রে পাইপ লাইনও। কোম্পানি রিগ থেকে যে পর্যন্ত পাইপ টানবে সেই পাইপও আমাদের। ওরা যদি ২ কিলোমিটার পাইপ টানে আমরা সেটার জন্য কস্ট রিকোভারি গ্যাস দিব, ১০০ কিলোমিটার টানলেও তাই। পাইপলাইন নিজে বসালেও এই টাকা দিতে হত।কস্ট রিকোভারির আরও কিছু বিষয় ব্লগার নৈষাদের লেখার মন্তব্যে উঠে এসেছে । (১৯ নম্বর মন্তব্যের ১-৩ নম্বর পয়েন্টগুলো)
আদর্শ মডেল পিএসসি অনুযায়ী, কস্ট রিকোভারির জন্য কোম্পানি বছরে উত্তোলিত গ্যাসের সর্বোচ্চ ৫৫%(a maximum of 55% per calender year of all available oil/natural gas/ condensate/NGL from the contract area) নিতে পারবে। এর বেশি নয়। ততদিন পর্যন্ত নিবে, যতক্ষণ না কস্ট রিকোভার হয়।
ধরুন গ্যাস পাওয়া গিয়েছে। আরও ধরুন ৫৫ টাকা খরচ হয়েছে সার্ভে এবং রিগের পেছনে (৫৫০ টাকাও ধরি)। দশ বছরের জন্য।যদি সর্বোচ্চ ৫৫% ভাগ করে কস্ট রিকোভারি করে দশ বছরে, তাহলে:
৫৫ টাকার ক্ষেত্রে(এক বছরে মোট উৎপাদন ১০০ টাকার গ্যাস হলে ৫৫ টাকা কস্ট রিকোভারি)
৫৫ ২০ ২০ ২০ ২০ ২০ ২০ ২০ ২০ ২০ কস্ট রিকোভারি
৪৫ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ ৮০ প্রফিট গ্যাস
৫৫০ টাকার ক্ষেত্রে(প্রতি বছর ৫৫ % কস্ট রিকোভারি ধরে, দশ বছরে সর্বোচ্চ কস্ট রিকোভারি ৫৫০টাকা, মোট উৎপাদন যেখানে ১০০০ টাকার গ্যাস)
৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ ৫৫ কস্ট রিকোভারি
৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ ৪৫ প্রফিট গ্যাস
প্রথম ক্ষেত্রে,কস্ট রিকোভারি এক বছরে হয়ে যায়। (দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ১০ বছরে।)
বাকী ৯ বছরে ২০% মেইনটেনেন্স কস্ট ধরে কোম্পানির মোট ১০ বছরে আসে ২০ গুণ ৯+৫৫=২৩৫ টাকা। মানে বছরে গড়ে ২৩ দশমিক ৫ টাকার গ্যাস সে কস্ট রিকোভারি বাবদ পাবে, ১০০ টাকার গ্যাস উঠলে।
বাকীটা প্রফিট গ্যাস। মানে ৭৬ দশমিক ৫ টাকা বা আমরা বলতে পারি ১০০ ভাগ গ্যাস তুললে ৭৬ দশমিক ৫ ভাগ প্রফিট গ্যাস থাকবে। (৫৫০ টাকার ক্ষেত্রে হিসাবটা ৪৫ ভাগ প্রফিট গ্যাস। )
এবার আসুন বিডিং ফরমের ১৪ নাম্বার পৃষ্ঠায়। প্রফিট গ্যাস সর্বনিম্ন বাংলাদেশ কত পাবে?
স্পষ্ট লেখা “not less than 55%”। আর যত গ্যাস বেশি পাওয়া যাবে তত প্রফিট গ্যাস বেশি পাবে বাংলাদেশ।তার হিসেবও সেখানে দেওয়া আছে। কস্ট রিকোভারিতে যে খরচ তা বাংলাদেশ নিজে সার্ভে বা রিগ বসালেও হবে। রিস্কটা এখানে ফ্যাক্টর। গ্যাস না পেলে সার্ভের টাকাটা পুরোই জলে, যদি বাংলাদেশ নিজে সার্ভে করে।
যা বলছিলাম, ৭৬ দশমিক ৫ এর ৫৫%=৪২(৫৫০ এর জন্য ৪৫ এর ৫৫%=২৪ দশমিক ৭৫)। ৩৪ ভাগ দিয়ে দিতে হবে প্রফিট গ্যাস হিসেবে ( ৫৫০ এর জন্য ২০ দশমিক ২৫ ভাগ গ্যাস)
এটাই সর্বোচ্চ। রিগ বাংলাদেশ বানালে বা সার্ভে করলে যা খরচ হত, কস্ট রিকোভারি হিসেবে কোম্পানি তাই নিয়ে নিবে। আর উপরের হিসেব অনুযায়ী কোম্পানিকে লাভ হিসেবে সর্বোচ্চ আমরা দিব ৩৪ ভাগ (৫৫০ এর জন্য ২০ দশমিক ২৫ ভাগ গ্যাস)।
আমাদের মূলধন বা বিনিয়োগ কিন্তু শূন্য।
যত গ্যাস বাড়বে তত বাংলাদেশের ভাগ বাড়বে।বিডিং এর ফরমের ১৪ নাম্বার পৃষ্ঠায় বিস্তারিত আছে। দৈনিক উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, বাংলাদেশ বেশি অংশ পাবে।
লোকবল
গ্যাস উত্তোলনে কোম্পানিকে আমাদের দেশীয় লোক সর্বনিম্ন ৬০ ভাগ নিতে হবে (গ্যাস উত্তোলনের শুরু থেকে প্রথম ৫ বছরে)। পরবর্তীতে তা বাড়বে এবং ১০ বছরে গিয়ে ৯০% হতে হবে। ক্মপানি যথাযথ ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করবে। বাইরে থেকে লোক (এক্সপার্ট) আনার ক্ষেত্রে, ওদের দেখাতে হবে যে আমাদের দেশে সেই দক্ষতার লোক নাই। এই লোকদের বেতন কস্ট রিকোভারিতে যাবে।
কোম্পানির অংশের গ্যাস
এরপর কোম্পানি তার অংশের ন্যাচারাল গ্যাস বাংলাদেশকে প্রথম বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে (তার প্রফিট গ্যাস+ কস্ট রিকোভারি গ্যাস)। বাংলাদেশ যদি কিনতে পারে, কিনবে।না হলে রিফিউজ করবে। বাংলাদেশ সরকারকে প্রথম গ্যাস কেনার জন্য অফার দিতে হবে। সে রিফিউজ করলেই তৃতীয় পক্ষের কাছে কোম্পানি যেতে পারবে।
ধরুন বাংলাদেশ বললো, গ্যাস কিনবো। যে কারণে পিএসসিতে লেখা রইল না রপ্তানির কথা। কিন্তু পরে বাংলাদেশ কিনলো না গ্যাস, সেক্ষেত্রে কোম্পানি কি করবে?
তাকে গ্যাস বিক্রি করতে হবে লোকাল মার্কেটে। এক্ষেত্রে লাগবে পাইপলাইন। এবং পাইপলাইন বাংলাদেশের হওয়ায় কোম্পানি যদি তার গ্যাস পাইপলাইন ব্যবহার করে নিতে চায়, তাহলে বাংলাদেশ সরকারকে মোট গ্যাস মুল্যের ১% পাইপ লাইন ব্যবহারের জন্য দিতে হবে। তবে কস্ট রিকোভারি যতদিন না উঠে আসবে তাকে এই ১% দিতে হবে না।
কিন্তু সেখানেও যদি ক্রেতা না থাকে, মানে দেশের মধ্যে? এই কারণে কোম্পানিগুলো রপ্তানির সুযোগ চায়।
আর কোম্পানি গ্যাস রপ্তানি নিরুৎসাহিত করার জন্যই এলএনজি অংশ জুড়ে দেওয়া।
বিষয় এলএনজি
এলএনজি হলো লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস।
তাপমাত্রা কমিয়ে আয়তন সংকুচিত করে এলএনজি পাওয়া যায়।
৫২ দশমিক ৩ স্ট্যাণ্ডার্ড ঘনফুটে এক কিলোগ্রাম এলএনজি হয়।
নাইজেরিয়ার একটি এলএনজি প্ল্যান্ট বানানোর খরচ। ওদের মোট ৫ টা ট্রেইন আছে। এদের মধ্যে ২টির খরচ দেওয়া আছে।
এলএনজি এর জন্য দরকার এক, পর্যাপ্ত গ্যাস। অনেক জায়গায় প্ল্যান্ট কাজ করছে না পর্যাপ্ত গ্যাসের অভাবে ।
দুই খরচ।
মোদ্দা কথা ফিসিবিলিটি। ফিসিবল হবে কিনা সেটা ভেবে দেখবে কোম্পানি।
এখন আসি আসল কথায়, আমাদেরকে ওরা দিবে এলএনজি করার পর ২০ ভাগ, সর্বোচ্চ। এই % আসলে কত হবে তা কখনও জানানো হয় না। কারণ ধরুন কোম্পানি ৫৫% রেটে বাংলাদেশের কাছ থেকে কস্ট রিকোভারি গ্যাস নিল। এবং এটা প্রকাশ করা হল। পরবর্তী বিডিং এর সময় অন্য কোম্পানি বলবে আমরা ৫৫% এর নিচে যাব না। আমরা এই রেটেই কস্ট রিকোভারি চাই।একই কথা অন্যান্য বন্টনের ক্ষেত্রেও। এটা করা হয়েছে মূলত উভয়ের স্বার্থ রক্ষার্থে।
বাংলাদেশ যদি আগে রিফিউস করে থাকে, তাহলে ঐ (২৩ দশমিক ৫ + ৩৪)= ৬৭ দশমিক ৫ ভাগ গ্যাস কোম্পানি এলএনজি করতে পারবে।( ৫৫০ এর ক্ষেত্রে ৭৫ দশমিক ২৫, দশ বছরে ৫৫% কস্ট রিকোভারি নিয়ে এর চেয়ে বেশি কোম্পানি পাবে না ) করার উদ্দেশ্য হবে বাণিজ্যিক।
এক্ষেত্রে থেকে যায় ঝামেলা, কারণ বাংলাদেশ পাবে ২০% এলএনজি। এখন বাংলাদেশ যদি ৬৭-৭৫ ভাগ গ্যাস না কিনতে পারে, কিভাবে ৫০-১০০% এলএনজি কিনবে সে প্রশ্নটিও থেকে যায়।
১০ বছর পর এই ২০% হয়ে যাবে ৩০, তা করা হয়েছে দেশের চাহিদার কথা চিন্তা করে।
আর এলএনজি প্ল্যান্ট করা হলে এর মালিকানা বাংলাদেশ পাবে। এর জন্য অনুমতি নিতে হবে বাংলাদেশ সরকারের। বাংলাদেশের মাটিতে তাকে এই প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে।
দিন শেষে দেখা যাচ্ছে (দশ বছরের হিসেব) সর্বনিম্ন ২৪ দশমিক ২৫ ভাগ গ্যাস, এবং ১৫ ভাগ (৭৪ দশমিক ২৫ ভাগ এলএনজি এর ২০%) এলএনজি পাবে বাংলাদেশ। মোট গ্যাসের যা ৪০%। this is the worst case scenario. সময় দশ বছরের চেয়ে বেশি হলেও একই রেটে প্রতি বছর কস্ট রিকোভারি চললে সর্বনিম্ন ৪০% গ্যাস বাংলাদেশ পাবে।
মন্তব্য
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ পলাশ।
পড়লাম।
যে অংক দিয়েছেন, আরও কয়েকবার পড়ে বুঝতে হবে।
ভাই, অংকটা মূলত কস্ট রিকোভারি কেন্দ্রিক। ১) হতে পারে ১ বছরে কস্ট রিকোভারি ৫৫% উঠে আসলে কস্ট রিকোভার হয়ে যাবে(মেইনটেনেন্স ছাড়া) । ২) হতে পারে সারাজীবন কস্ট রিকোভারী ৫৫%(সর্বোচ্চ) তুলবে। এখন আমি ধরেছি ১০ বছর কাজ চললো। তাহলে সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন কত অংশ কস্ট রিকোভারিতে যেতে পারে যেটাই বের করেছি। সর্বোচ্চটা ধ্রুবক কারণ কোন বছরে ৫৫% এর বেশি এই খাতে যাবে না।
অলস সময়
পিএসসি এর ১৫ এর উপধারার যে অংশে বলা আছে, পেট্রোবাংলা মোট মার্কেটেবল গ্যাসের ২০% এর বেশি কখনোই নিতে পারবে না, সেটার সাথে প্রফিট গ্যাসের নট লেস দ্যান ৫৫% এর উপর বাংলাদেশের মালিকানার বিষয়টি কি বিরোধপূর্ণ নয়?
এই কনফ্লিক্টিং পার্সেন্টেজের ব্যাপারটা কোম্পানি সহজেই রিকন্সিল করে ফেলতে পারে, যদি তারা কস্ট রিকভারি অংশে কোনরকম কারচুপি করে। আমরা কিভাবে নিশ্চিত হবো যে, কোম্পানি কস্ট রিকভারি অংশে ইনফ্ল্যাটেড ভ্যালু দেখাচ্ছে না?
কস্ট রিকভারি অংশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সাথে সাথে কোম্পানির বসানো মেশিনারিজ ও পাইপলাইনের মালিকানা আমাদের হয়ে যাবে, ঠিক আছে। কিন্তু এই সম্পূর্ণ গ্যাস উত্তোলিত হয়ে যাবার পর এই মেশিনারিজ আমরা কিভাবে পুনর্ব্যবহার করবো? আর যন্ত্রপাতি যদি আমাদেরই হয়ে যায়, তাহলে পাইপলাইনের সাথে সাথে এই যন্ত্রপাতির উপর ধার্য করা ট্যারিফও কি আমাদের পাওয়া উচিত না?
কোম্পানির বসানো পাইপলাইনের মালিকানা আমাদের, ভালো কথা। কিন্তু কোম্পানি কি গভীর সমুদ্রবক্ষ থেকে আমাদের জাতীয় গ্রিড পর্যন্ত পাইপলাইন টানবে? যদি না হয়, তাইলে পাইপলাইন দিয়েই আমি করবোটা কি?
একটা সিনারিও চিন্তা করা যাক। কোম্পানি গ্যাস উত্তোলনের পর আমাদের বললো, যাও, নিজের ভাগ নিজেরা নিয়ে যাও। কেম্নে নিবা, তোমাদের মাথাব্যথা। আর যদি বাকি গ্যাস কিনতে চাও, সেটা পরিবহনের দায়ও তোমাদের। তখন আমরা কিভাবে পাইপলাইন বসাবো?
কোম্পানি যদি পাইপলাইন ইন্সটলেশান খরচ তাদের কস্ট রিকভারি অংশে যোগ না করে, তাহলে তো তার মালিকানাও আমরা পাব না। এক্ষেত্রে প্রফিট গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাবার সম্ভাবনা নেই, কেননা কস্ট রিকভারিতে তো ইচ্ছেমত রিগিং করার সুযোগ থাকছেই।
চুক্তির মূল সমস্যা গুলো হল জ্বালানী নিরাপত্তা নিয়ে, পেট্রবাংলার অতীতের কাজ কারবার বলে যে তারা তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে দিবে না এই জিনিস টা নিজেরাই মানে নাই।
আমাদের বক্তব্য হল চুক্তিতে এমন সুযোগ আছে যে কোম্পানীর পক্ষে ১০০% গ্যাসই রপ্তানী করে দেওয়া সম্ভব। এই জিনিস টা কেন সরকারি বিশেষজ্ঞরা দেখলেন না। (ফ্লোটিং LNG প্ল্যান্ট চাইলে ইন্টারনেটে দেখে নিতে পারেন)
কনকো ফিলিপস যদি বাংলাদেশের কাছে গ্যাস বেচে তাহলে পাবে প্রতি ইউনিট ৪.৫ ডলার করে , আর যদি বিদেশে বেচে তাহলে পাবে ১৭.৫ ডলার করে, এর থেকে বোঝা যায় তাদের মূল লক্ষ্যই থাকবে গ্যাস রপ্তানী (যে কোন মুনাফালোভী কোম্পানীরই তাই থাকবে)। কাজেই চুক্তিতে এই বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে এবং যা অনেকটা ইচ্ছাকৃত ভাবেই করা হয়েছে বলে আমার মনে হয় ।
আর LNG করার পর ২০ ভাগ টা বুঝলাম না , চুক্তির কথা টা হল যে বাংলাদেশ মোট উৎপাদিত গ্যাসের ২০% এর মালিক হবে , তাও যেসব জায়গায় পেট্রোবাংলা নিজে পাইপলাইন বসাবে সেক্ষেত্রেই এই গ্যাস নিতে পারবে। (স্পষ্ট ভবে ১৫.৫.৪) বাকি ৮০% গ্যাসের মালিক কনকো ফিলিপস , এর মধ্যে তারা প্রথমে পেট্রোবাংলাকে অফার দিবে , যদি পেট্রবাংলা না কিনে তখন তারা LNG করে রপ্তানী করতে পারবে । ঐ LNG এর মধ্যে ২০% কোথাথেকে আসল পরিষ্কার করে বললে ভাল হত ।
আর সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় যে LNG কিনার জন্য চায়না,ভারত,আমেরিকা তিনটা দেশই প্রস্তুত, সেইক্ষেত্রে কনকো ফিলিপস ও উৎসাহী হবে ৭.৫ % গ্যাস উত্তোলনের সীমারেখা ভাঙ্গার যে সুযোগ চুক্তিতে রাখা হয়েছে সেইটা কাজে লাগাতে।
আমার মতে ১০ বছরের পরিকল্পনা করলে বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় (প্রয়োজনে বিদেশি কন্ট্রাক্টর নিয়োগ করে) গ্যাস উত্তোলন সম্ভব যাতে করে গ্যাসের মালিকানাটা নিজেদেরই থাকে । জ্বালানী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
স্থল-ভাগে সম্ভাবনাময় একাধিক গ্যাস ক্ষেত্র থাকার পরও , প্রাথমিক সার্ভে ছাড়াই যখন গভীর সমুদ্রের গ্যাস বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তখন সন্দেহ জাগাটাই স্বাভাবিক ।
মোট উৎপাদিত নয়, total marketable gas এর ২০%। এখানেই এলএনজি আসে
অলস সময়
দরকার ছিল। ধন্যবাদ পলাশ ভাই।
অ.ট: সময় পাইলা কেমনে? কালই পরীক্ষা না?
অট: সময় নাই রে ভাই। কিন্তু কোন কিছু ঠিকমত না পড়ে আমি কিছু বলতে চাই নাই।কাল কি হবে জানি না দেখা যাক। একটু আগে পড়তে বসলাম
কিন্তু এই বিষয়টা মনে খচখচ করছিল।
অলস সময়
একেবারে ঠিক বলেছ। জেনে বুঝেই স্ট্যান্ড নেওয়া উচিৎ- হুজুগে নয়।
পড় ভাই। শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ। কিছু কথা।
১। গ্যাসের দাম কি আসলেই বাড়ছে?
২। কস্টরিকভারির বিষয়ে আপনি যেভাবে দেখালেন, পি এস সির ১৪ ধারার পুরোটা (১৪, ২ এর এবিসি ইত্যআদি পড়আর পরেও কি সেটা এভাবে দেখবেন? বিশেষত যখন পি এস সি প্রতি তিন মাস অন্তর নগদ খরচ ও বাতসরিক ২৫% হারে অনুসন্ধান খরচের হিসাবপত্র পরিস্কারের কথা বলছে, সেখানে বছরের পর বছর ধরে কস্ট রিকভারির উপায় থাকছে কি? আরেকটা কথা ভাবুন যেখান বাংলাদেশ সরকার কস্ট রিকভারির ওপর কোন মার্জিন দিচ্ছে না - তার ওপর নগদ খরচের সব হিসাব আপনি সরকার ও তার অডিটরের হাতে তুলে দিচ্ছেন - তাহলে কি আগ্রহে ঠিকাদার কোম্পানি একবছরে করা খরচ আরেকবছরে রিকভার করবে?
৩। এল এন জি বিষয়টি কি এই পি এস সি'র এখতিয়ার ভুক্তকিছু, নাকি সেটা একটি নতুন চুক্তির বিষয়?
দেখুন যদি বছরের পর বছর কস্ট রিকোভারির সুযোগ থাকে সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ঐ ২৪ দশমিক ৭৫ অংশ পাবে। আমার উদ্দেশ্য ছিল পুরো কস্ট রিকোভারি কেমন হতে পারে তার একটা অংশ তুলে ধরা। এক সর্বোচ্চ পুরো উত্তোলন সময় ধরে কস্ট রিকোভারি হতে পারে ৫৫%, দুই সর্বনিম্ন এক বছর হতে পারে ৫৫%। আমি এই লিমিটের মধ্যে দেখাতে চেষ্টা করেছি। একটা সময় সীমা ধরেছি ১০ বছর। দেখুন ৫৫% কস্ট রিকোভারি যদি ১০০০০ বছর ধরে হলেও এই ২৪ দশমিক ৭৫ অংশ গ্যাস বাংলাদেশ পাবে। স্বাভাবিক হিসাব তাই বলে।
অলস সময়
এল এন জি পিএসসি এর এখতিভুক্ত। মডেলে আছে।
অলস সময়
১৫-৫-১ ধারায় বলছে "Where Contractor intends to export the Natural Gas as LNG, the related LNG facilities shall be constructed and operated on the basis of a special LNG export agreement between Contractor and Petrobangla. Such agreement shall allow, if appropriate, for the use of facilities by third parties."
এখান থেকে আমার ধারনা হয় যে ঠিকাদার এল এন জি রপ্তানি করার আগে এল এন জি কারখানা/বন্দর ইত্যআদির জন্য আলাদা চুক্তি করতে হবে। কোথাও বলা নেই যে সেই নতুন চুক্তি এই উতপাদন বন্টন চুক্তির আওতাভুক্ত হবে।
দিচ্ছে তো...Subject to the Accounting Procedure and the auditing provisions of this Contract, Contractor shall recover all costs and expenses not excluded by the provisions of this
Contract and the Accounting Procedure in respect of all the Exploration, Appraisal,
Development and related operations hereunder with respect to the Contract Area to the
extent of and out of a maximum of fifty-five percent (55%)per Calendar Year of all
Available Oil / Natural Gas/ Condensate/
মোদ্দাকথা, দেশ লাভবান হবে?
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
লেখাটির কয়েকটি বক্তব্য নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করছি:
১) কস্ট রিকভারি ও প্রফিট গ্যাসের হিসাব করার সময় ধরে নেয়া হয়েছে “কস্ট রিকভারিতে যে খরচ তা বাংলাদেশ নিজে সার্ভে বা রিগ বসালেও হবে”। বাস্তবে তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো নানান ভাবে খরচ বাড়িয়ে দেখিয়ে কস্ট রিকভারি পর্যায়কে দীর্ঘায়িত করে | তারা বিনিয়োগকৃত অর্থ পরিমাণ অতিমাত্রায় বাড়িয়ে দেখায় এবং স্থাপিত যন্ত্রপাতি ও মেশিনপত্রের দাম বেশি দেখায়। পুরাতন মেশিনকে নতুন মেশিন হিসেবে চালিয়ে দেয়। নানান অপ্রয়োজনীয় খরচের হিসাব দাখিল করে। বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেখিয়ে খরচ বাড়ায় আর এসকল খরচ নিয়ন্ত্রণ, সঠিক খরচের হিসাব বের করা বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পক্ষে করা সম্ভব হয় না; তারা আমলা-এজেন্ট-রাজনীতিবিদদের ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বাজেট দফায় দফায় পাশ করিয়ে নেয়। এধরনের খরচ দেখিয়ে কস্ট রিকভারি পর্যায় দীর্ঘায়িত করার বিভিন্ন নজির আছে যা চুক্তির গোপনীয়তা রক্ষার নামে সাধারণত অপ্রকাশিতই থেকে যায়|এখানে দুইটি নজির উল্লেখ করা যায়:
ক) মাগুরছড়ায় অক্সিডেন্টাল ১৯৯৫ সালে সিসমিক সার্ভে এবং তিনটি কূপ খননের জন্য প্রথমে এক কোটি ৮৮ লাখ ডলারের হিসাব দিলেও ১৯৯৭ সাল নাগাদ চারবার সংশোধনের মাধ্যমে তা চার কোটি ৯১ লাখ ৪০ হাজার ডলারে পরিণত হয়। এবং এই খরচের হিসাব কূপ খননের খরচের হিসাব ছাড়াই।
খ) অগভীর সমুদ্রের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রে কেয়ার্নের কস্ট রিকভারির হিসাবটা দেখা যাক। বিডিংয়ের সময় ১০.৮১ মিলিয়ন ডলার প্রকল্প ব্যয় দেখানো হলেও একের পর এক সংশোধনী বাজেট দিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়ায় ৬৬০ মিলিয়ন ডলার। ফলে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে বাংলাদেশ মাত্র ২০ শতাংশ গ্যাস পায়।
বিদেশী কোম্পানির বাড়তি খরচের আরেকটা হিসেব দেই। হিসেবটা বাপেক্সের ফাস্ট ট্র্যাক প্রোগ্রাম প্রোপোজাল থেকে নেয়া। বিদেশী কোম্পানিকে দিয়ে সিসমিক সার্ভে করালে প্রতি লাইন কিমি সার্ভের খরচ পড়ে ৬ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা করে । কিন্ত বাপেক্স যখন বিদেশী কোম্পানি টাল্লোকে লালমাই-ভাঙ্গুরায় সিসমিক সার্ভে করে দিয়েছে তখন বাপেক্স প্রতি কি.মি খরচ নিয়েছে ৩ লক্ষ টাকা করে।আর বাপেক্স নিজের জন্য করলে খরচ পড়ে প্রতি কি.মি এ ১ লক্ষ টাকা করে অর্থাত কেবল সার্ভের ক্ষেত্রেই বিদেশী কোম্পানির দেশীয় কোম্পানির তুলনায় ৬ গুণ বেশি খরচ দাবী করে। ফলে আসলে খরচের গ্যাস বলে সে যেটুকু গ্যাস নেয়, তার মধ্যেও তার বিপুল লাভ থাকে।
২) worst case scenario হিসেবে বলা হয়েছে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন ৪০% গ্যাস পাবে। এর মধ্যে ২৪.২৫ ভাগ হলো গ্যাস আকারে(বোধ হয় লেখক ২৪.৭৫ ভাগ লিখতে চেয়েছেন কারণ ৪৫% লাভের গ্যাসের ৫৫% এর মানে হলো ২৪.৭৫, ভুলে ২৪.২৫ হয়ে গিয়েছে) এবং বাকি ১৫ ভাগ এলএনজি। ১৫ ভাগ এলএনজির হিসেবটি করা হয়েছে এভাবে: ৭৪.২৫ ভাগ এলএনজি’র ২০% = ১৫%।
এখানে একটি প্রশ্ন আসে: ২৪.৭৫ ভাগ গ্যাস হলো বাংলাদেশের প্রফিট গ্যাস। ফলে এটি বাংলাদেশ বিনামূল্যে পেতে পারে। কিন্ত ৭৪.২৫ ভাগ গ্যাসের ২০% কি বাংলাদেশ বিনামূল্যে পাবে? ৭৪.২৫ ভাগ এর হিসেবটাই বা কোথা থেকে আসলো? ৫৫% গ্যাস কস্ট রিকভারি হিসেবে নেয়ার পর বাকি ৪৫% লাভের গ্যাসের ৫৫% যদি বাংলাদেশ পায় তাহলে কোম্পানি পাবে ৪৫% এর ৪৫% অর্থাত ২০.২৫%।ফলে কোম্পানির ভাগে যাবে কস্টরিকভারি হিসেবে ৫৫%+ লাভ হিসেবে ২০.২৫% = ৫৫%+২০.২৫%= ৭৫.২৫%। কোম্পানির ৭৫.২৫% + বাংলাদেশের ২৪.৭৫% = মোট ১০০% গ্যাস।
কিন্তু বাংলাদেশ কি বিনামূল্যে কোম্পানির ৭৫.২৫% গ্যাসের ২০% এলএনজি আকারে পাবে? তাহলে লেখক কেন এবং কিভাবে worst case scenario হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্য গ্যাসের হিসেবে(২৪.৭৫%) এই অংশটুকু জুড়ে দিয়ে ৪০% এর হিসেব দিলেন?
৩) ৭৪.২৫% গ্যাসের(আসলে হবে ৭৫.২৫%) ২০% হিসেব করা থেকে বোঝা যায় লেখক চুক্তির টোটাল মার্কেটেবল গ্যাসের ডেফিনেশনটি সঠিক ভাবে খেয়াল করেন নি। লেখকের কমেন্ট(কমেন্ট ৬) থেকে ও বিভ্রান্তিটি বোঝা যায়: “মোট উৎপাদিত নয়, total marketable gas এর ২০%। এখানেই এলএনজি আসে” । ২০% গ্যাসের হিসেবটি যে জায়গায় দেয়া আছে(আর্টিক্যাল ১৫.৫.৪) সেখানে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ১ম ১০ বছর সর্বোচ্চ টোটাল মার্কেটবল গ্যাসের ২০% নিজের কাছ রাখতে পারবে যদি তার ব্যাবহার করার ক্ষমতা থাকে এবং বহন করার পাইপ লাইন বা অবকাঠামো থাকে।
এখন টোটাল মার্কেটেবল গ্যাস কি? চুক্তির আর্টিক্যাল ১৫.৫.২ এ পরিস্কার বলা আছে:
15.5.2 The volumes of Marketable Natural Gas shall be the volumes of Natural Gas
produced, less
a) the Natural Gas used for Petroleum Operations;
b) the Natural Gas used for increasing recovery of oil, and
c) any shrinkage as a result of processing such Natural G
অর্থাত তেল-গ্যাস উত্তোলণের কাজে ব্যাবহার্য গ্যাসটুকু ছাড়া বাকি সবটুকু গ্যাসই হলো টোটাল মার্কেটেবল গ্যাস বা বাজার জাত যোগ্য গ্যাস। ফলে টোটাল মার্কেটেবল গ্যাস আর মোট উতপাদিত গ্যামের পরিমাণ প্রায় একই। লেখক এই বিষয়টি খেয়াল না করায় কোম্পানির প্রাপ্য গ্যাসের ২০% হিসেব করেছেন। আসলে তা (প্রায়) মোট উতপাদিত গ্যাসের ২০% হবে।
৪) আবার আর্টিক্যাল ১৫.৫.৪ এ এই যে বলা আছে বাংলাদেশ টোটাল মার্কেটেবল(অর্থাত মোট উতপাদিত গ্যাসের প্রায় পুরোটাই)গ্যাসের ২০% এর বেশি রাখতে পারবে না, এই বাক্যটির অর্থ নিয়েও কিন্তু বিতর্ক আছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এর মানে হলো, যখন এলএনজি আকারে গ্যাস রপ্তানি হবে, তখন বাংলাদেশ টোটাল মার্কেটেবল গ্যাসের ২০% এর বেশি দেশে রাখতে পারবে না। এ হিসেবে বাংলাদেশ যদি ২৪.৭৫% গ্যাসের মালিকানা পায়, এলএনজি আকারে রপ্তানি শুরু হলে, বাংলাদেশ টোটাল মার্কেটেবল গ্যাসের (অর্থাত প্রায় পুরো উতপাদিত গ্যাসের) সর্বোচ্চ ২০% গ্যাস দেশে রাখতে পারবে। অর্থাত সরকারের বক্তব্য অনুসারে এটি মালিকানার প্রশ্ন নয়, এটি হলো দেশে কি পরিমাণ গ্যাস বাংলাদেশ রাখতে পারবে বা পারবে না তার হিসেব। কিন্তু ১৫.৫.৪ এর এই বাক্যটি পড়লে এই ব্যাখ্যা মানতে একটু কষ্ট হয়:
15.5.4 Where Petrobangla has installed necessary facilities to transport and use gas to
meet domestic requirements, Petrobangla shall be entitled at its option to retain in
kind any Natural Gas produced up to Petrobangla's share of Profit Natural Gas, but
in no event more than twenty percent (20%) of the total Marketable Natural Gas.
এখানে entitled শব্দটি থেকে তো মালিকানাই বোঝা যায়, তাই না? এখান থেকে কি বোঝা যায় যে এই বাক্যে মালিকানার গ্যাসের কথা নয়, রপ্তানির সময় দেশে কি সর্বোচ্চ কি পরিমাণ গ্যাস রাখতে পারবে সে কথা বলা হয়েছে? যদি এই বাক্যটি দিয়ে উত্তোলিত গ্যাসে(টোটাল মার্কেটেবল আর উত্তোলিত গ্যাস প্রায় একই পরিমাণ) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মালিকানার(entitled) কথা বলা হয়ে থাকে, তাহলে লাভের গ্যাসের হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্য ২৪.৭৫% বা ৩৬% যাই হোক না কেন, বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ২০% গ্যাসের মালিকানা পাবে।
আর যদি সরকারের বক্তব্য সঠিক ধরে নেই, তাহলে বাংলাদেশ উত্তোলিত গ্যাসের(টোটাল মার্কেটেবল আর উত্তোলিত গ্যাস প্রায় একই পরিমাণ)২৪.৭৫% মালিকানা পেলেও তার মালিকানার গ্যাসের সর্বোচ্চ ২০% দেশে রাখতে পারবে বাকি ৪.৭৫% গ্যাস এলএনজি আকারে রপ্তানির অনুমতি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন করা যায়, এ কেমন মালিকানা যে মালিকানা নিজের গ্যাস নিজের কাছে রাখার ক্ষমতা দেয় না?
এখানে যে ব্যাখ্যাটিই প্রযোজ্য হোক না কেন, কেবল, বাংলাদেশ কোন অবস্থাতেই ২০% এর বেশি পাবেনা এই ধরণের বাক্যের জন্যই চুক্তিটিকে ছিড়ে ফেলে দেয়া দরকার। এই ধরণের বাক্য থেকে কি কোন ভাবে বোঝা যায় যে এই গ্যাসের মালিক বাংলাদেশ? মালিক তো প্রথমে নিজের নূন্যতম মালিকানা টুকু নিশ্চিত করে নেয়। বলিভিয়ার চুক্তিতে তো প্রথমেই বলিভিয়ার জন্য গ্যাসের অন্তত ৫০% মালিকানা নিশ্চিত করা হয়েছে।১৮% রয়্যালিটি + ৩২% ট্যাক্স অর্থাত মোট গ্যাসের ৫০% বলিভিয়াকে বুঝিয়ে দেয়ার পর বাকি গ্যাস কস্ট রিকভারি ও প্রফিট গ্যাস হিসেবে ভাগাভাগি হয়। তাহলে বাংলাদেশের চুক্তিতে কেন বাংলাদেশ ৫০% এর কম পাবে না কথাটি নিশ্চিত করা হলো না? কেন বাংলাদেশ ২০% এর বেশি পাবে না জাতীয় কথাবার্তা লেখা থাকবে? এই গ্যাসের মালিক কি বিদেশী কোম্পানির না বাংলাদেশের?
সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকলে একটা কথা বলি : সচলায়তনে গ্যাস নিয়ে এত এত এত ত্যানা প্যাচাপেচির উদ্দেশ্য কি? চুক্তির পক্ষে মনোভাব এভাবে লুকিয়ে না রেখে , খোলাখুলি বলার সৎসাহসের অভাব কেন ?
ত্যানা প্যাচাপেচি ব্যাপারটা বুঝলাম না। আমার তো মনে হয় এই লেখাগুলিতে চুক্তির মূল বিষয়গুলি জানবার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনার কাছে তথ্য থাকলে সেগুলি আপলোড করুন। ঠিক কোন কোন কারণে তেলগ্যাস বিক্রি গণবিরোধী তার শক্তিশালী ডেটাবেজ তৈরীর প্রয়োজন যদি বোধ না করেন তাহলে আপনার সাথে আর কথা না বাড়ালেও চলবে।
অজ্ঞাতবাস
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন