"৫ পণ কলা আনছিলাম, এখন এই কয়টা রইছে।"
বুড়া মিয়ার বয়স কমপক্ষে ৬০। বুড়া একমনে কলা গুনতেছে।
পণ এর অর্থ বুঝি না। বুড়া বুঝাইয়া দেয়। " ২০ হালিত এক পণ।" মনে মনে হিসাব কষি-৪০০ কলা।
বুড়ার দিকে তাকাই, ফুটপাতে বসে পড়ায় বুড়াকে দেখতে সুবিধা হয়।
নাহ, এখন যথেষ্ট শক্তসামর্থ্য, নাইলে ৪০০ কলা কেমনে আনে। বুড়া পাশ দিয়ে যাওয়া ভদ্রমহিলাদের উদ্দেশ্য করে বলে," আপা, দেশি কলা, আসেন। নিয়া যান।"
আপারা তাকায় একনজর, তারপর পাশের মিনা বাজারে ঢুঁকে যায়।
বুড়া গামছা দিয়ে ঘাম মুছে। বলে," কয়টা বাজে বাজান?"।সময় জেনে বলে ওঠে," ১১টা এরপর যামু গা।"
আশেপাশে যুবক-যুবতীদের ভীড়। রাত বাড়ন্ত তবু, কোলাহল থেমে নেই।
গাড়িটা যখন আসে তখন তার শব্দদূষণ সবাইকে বাধ্য করে সেটার দিকে তাকাতে। একদল রাস্তার মাথায় এসে থামে, ঠিক আমাদের একটু সামনে। এরপর পার্কিং করার চেষ্টা চলে। এবং হঠাৎ করেই কিছু বুঝে ওঠার আগে, রাস্তা পাড় হতে যাওয়া মেয়েটাকে চাপা দিয়ে ফেলে প্রায়।
না, কিছু হয় না। কেউ কিছু দেখে না কারণ কোন আর্তনাদ হয় না, কোন ব্রেক কষার শব্দ হয় না। আমি তাকিয়ে থাকি, বুড়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সেও তাকিয়ে আছে।মেয়েটা আগেও হয়তো এরকম ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। ছোট্ট মেয়ে, লম্বায় গাড়িটার সমান হবে।
কিছু বলে না সে। আস্তে করে ফুটপাতে উঠে পড়ে, তারপর বাড়িফেরা মানুষের ভীড়ে মিশে পড়ে।
গাড়ি চালক-যুবক পিছনে এসে দেখে তার গাড়ি গর্তে পড়েছে কিনা, সেখানে আবার একটা ম্যানহোলের ঢাকনা নাই হয়ে গিয়ে এক বিশাল গর্তের সৃষ্টি করেছে।
আমি চাচা দু'জনেই তাকিয়ে থাকি তার দিকে।
এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই কিছু একটা এসে আঘাত করে আমার মুখে। আমি ঘুরে যাই। এরপর তাকিয়ে দেখি এক টুকরা পচা আলু।
পাশেই থাকা দোকানের কর্মচারী অন্ধকারে দেখেনি যে সেখানে দু'জন মানুষ ফুটপাতে বসে আছে। পচা আলুটার ব্যবস্থা তাই না দেখা এই লোকগুলোর দিকে।
আমি উঠে পড়ি। নিচতলার এই হিসেব নিকেষ পাঁচ মিনিটে আমার বোঝা হয়ে যায়।
হয়তো এই কারণে মা কখনো নিচতলায় বাসা নেয়নি।
মন্তব্য
চমৎকার অবজারভেশন! গল্পটা আরেকটু দানা বাঁধতে পারতো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ ভাই, দানা বাঁধাইতে কেন জানি পারি না। একটা সমস্যা হইতেছে শুরু করি, কিন্তু শেষটা কেমন হবে বুঝতে পারি না। তাই যা মাথায় আসে তাই দিয়ে শেষ করি।
অলস সময়
অসাধারণ লাগলো। আরো কিছুক্ষণ চলতে পারতো!
আমার দাদা, পণ হিসাবে পান কিনতেন। আমি ভাবতাম পণ মনে হয় পানের একক!
আর সব সংখ্যা বলতেন 'কুড়ি' বেজড নাম্বার সিস্টেমে। একপণ তাই চার কুড়ি।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
প্রথমে ভাবছিলাম বুড়া মনে হয়, মণ বলতেছে। পড়ে বুঝাইয়া দিলো আসলে পণ কি জিনিস। কত কি যে জানবার আছে ভাই।
অলস সময়
আমি পণের মানে জেনেছিলাম যাত্রাবাড়ীর সবজি আরতে লেবু কিনতে গিয়ে। ব্যাটা আমারে যতবারই বলে এত পণ এত টাকা, আমার মাথায় খালি ঘুরে এক মণে কয়টা লেবু পাব!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
দারুণ লাগলো পলাশ
খুব সুন্দর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অলস সময়
অনেকদিন পরে আপনার লেখা পেলাম। তবে লেখাটা আরেকটু বড় হওয়ার দরকার ছিল।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
আটপৌরে ভাষায় বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। ভালো লাগলো ভাই।
বাস্তবতা বড়ই ...
অলস সময়
চমৎকার!!
এটা অণুগল্প থেকে থেকে ছোটগল্প অনায়াসেই হয়ে যেতে পারে! অসম্ভব সুন্দর প্লট।
ডাকঘর | ছবিঘর
অলস সময়
পর্যবেক্ষণ হইছে। গল্প করতে পারতা ... আপাতত গল্প-গুজব হইছে
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হ।
অলস সময়
দারুণ!
আপনি আরেকটু বেশি লিখলে তো পারেন...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
কে কারে কি কয়?
অলস সময়
গত দুইমাসে কয় হালি লেখা দিসি, জানেন? আবার কয়....
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
তাও ভালো বলেন নাই "কয় পণ"! হা হা হা।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
পলাশ, ভালো লাগছে গল্প। কিপিটাপ।
অলমিতি বিস্তারেণ
পলাশের এই গল্পটা ভালো হইসে। অনেক পরিণত আগেরগুলার তুলনায়
অসাধারন লেগেছে এ জায়গাটি।
পুরো গল্পটিতে মনে হয় আরো অনেক ইঙ্গিত রয়েছে; কিন্তু ধরতে পারিনি!
বেশ অনেকদিন পরে লিখলেন
আর একটু হয়তো এগোনো যেতো, তবুও অনেক অর্থ লুকোনো থাকায় ভালো লাগলো, বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পর্যবেক্ষণ ভালো লাগলো
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
তোমার কিন্তু আরও লেখালেখি করা উচিত পলাশ। ছোট ছোট অনেক পর্যবেক্ষণ সংক্ষেপে ফুটে উঠতে দেখেছি আমি আগেও তোমার লেখায়। ভালো লেগেছে। চলুক!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
চমৎকার লাগলো ভাই!!
শেষে এসে হেসে ফেললাম। চমৎকার হয়েছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
ছোট্ট ছিমছিম গল্প, অনেকদিন পর লিখলেন পলাশদা।
চমৎকার হয়েছে। হঠাৎ করেই যেন শেষ হয়ে গেল।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন