বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলিয়া হয়নি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি
লিখেছেন পান্থ রহমান রেজা (তারিখ: রবি, ২৯/০৬/২০০৮ - ২:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শনিবারের ভর সন্ধ্যাবেলা। রুমেই বসে আছি। ভাবছি কী করা যায়। বাংলাদেশ ভারত ক্রিকেট ম্যাচ হচ্ছে। দেখা যেতে পারে। কিন্তু হলের টিভি রুমে যা ভিড়, আমাকে টানে না আর। তাছাড়া আমি ক্রিকেট খেলার সমঝদার ভক্তও নই। ফলে কী করা যায়, এই ভাবনা দীর্ঘতর হয়। তবে দীর্ঘতার সূত্র ছিঁড়ে ফেলে সেলফোন। মাসুদ ফোনে জানায়- আজিজে আয়, ফতুয়া কিনবো।

আজিজের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। মাসুদ পথিমধ্যে অ্যাবাউট টার্ন নেয় আরেক জরুরি ফোনে। আমি একা একা আজিজে ওমর শাহেদ ভাইয়ের চোখে পড়ি। কথায় কথায় জানি, ওমর শাহেদ ভাই এখন সমকাল ছেড়ে বিডিনিউজে।

আজিজকে আমার চিরকালই বইপাড়া মনে হয়েছে। কিন্ত এই মনে হওয়াটা মাঝে মাঝে হোঁচট খায়। আমার বেশিরভাগ বন্ধুবান্ধব আর পরিচিতজনরা আজিজকে টিশার্ট আর ফতুয়ার বাজার বলেই মনে করে। কাউকে বলতে শুনি না, চল আজিজে যাই, দেখি বই কেনা যায় কী'না। আজিজ যে বই মার্কেট, এটা প্রতিষ্ঠিত করতেই যেন আজিজে গেলে আমার হাত নিশপিশ করে বই কিনতে, নতুন বইয়ের মলাটের ঘ্রাণ নিতে। আজিজে অবশ্য কমই যাওয়া হয় আমার। কিন্তু যখনই যাই, একটি নতুন বই কিংবা কোনো ছোট পত্রিকার ঘ্রাণ আমার সঙ্গী হয়ে ঘরে ফেরে।

বই কিনতে ভেতরে পা বাড়াই। ওমর শাহেদ ভাই পরামর্শ দেন, শঙ্খ ঘোষের জার্নাল কিনতে। পাঠক হিসেবে আমি কেমন জানি না। তবে কেউ যদি বলে ওমুক বইটা পড়ো, বেশ ভালো লাগবে। আমি সে বইটি পারত পক্ষে এড়িয়ে চলি। আর মনে মনে বলি, দুরো মিয়া, তোমার ভালো লেগেছে বলে আর সবার ভালো লাগবে, এমনটি তোমাকে কে বলেছে। দুনিয়ার সবার রুচি কী তাহলে এক?

বই কিনতে গেলে আমার আগে থেকে কোনো প্রিপারেশন থাকে না। লিস্টি করেও ঢুকি না। বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারি। শেলফ খুঁজে খুঁজে বই বের করি। উল্টে পাল্টে দেখি। পছন্দ হলে কিনি। তবে আজকে ব্যতিক্রমটা ঘটলো। শঙ্খ ঘোষের জার্নালটা কিনে ফেলি। আর খুঁজে খুঁজে নিজের পরিচিত ভঙ্গিতে কিনি গাস্তঁ রোবের্জের সাইবারবানী ও নোয়াম চমস্কি'র মার্কিনি অস্ত্রশস্ত্র, মানবাধিকার ও অন্যান্য বইটি।

বই তিনটির দাম একুনে দাম ৭০৩টাকা। বিদিতার বিক্রয়কর্মী বলেন, ৭০০ টাকা দিলেই হবে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে আমি পথে নামি। তখন পকেটে আমার সম্বল ৬০ টাকা। আর সামনে পড়ে আছে মাসের বাকী আড়াই - তিনদিন।

সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলিয়া হয়নি। আমিও দেউলিয়া হয়তো হচ্ছি না, তবে মাসের বাকী আড়াই - তিনদিন কীভাবে চলবো তার ফিকির খুঁজছি।


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

র্যান্ডম হিসাবে ধরলাম ৩ দিন। মানে হইল ৭২ ঘন্টা। এর মধ্যে কোন কায়দায় ঘুমাইয়া নেন তিনআটে চব্বিশ ঘন্টা। বাইরে যাওয়ার প্ল্যানগুলা বাদ দেন। এইবার বইসা পড়েন বই নিয়া। চাবিড়ি বাদ দিয়া পড়া শুরু করেন। খিদা লাগলে ঘরে যা আছে তাই খান। শুরু করেন শঙ্খ ঘোষ দিয়া। তারপর চমস্কি। এক্কেরে টাইনা পুরা বই পড়তে থাকেন। চমস্কি শেষ হইতে হইতেই দেখবেন মাস কাবার...



ঈশ্বরাসিদ্ধে:

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

সুমনদা, তাইলে আমার অফিসের কী হইবো। আগামী মাসে বই কেনার টাকা কই থেকে জোগাড় করমু।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

সুমন চৌধুরীর সাথে একমত।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলিয়া হয়নি। আমিও দেউলিয়া হয়তো হচ্ছি না, তবে মাসের বাকী আড়াই - তিনদিন কীভাবে চলবো তার ফিকির খুঁজছি।

ওইতো
ঘটনা ওইখানেই
বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না কারণ
দেউলিয়া লোকরাই বই কেনে কিংবা কিনতে চায়

অতিথি লেখক এর ছবি

হাহাহাহা। দারুণ বলেছেন! দেঁতো হাসি

~ ফেরারী ফেরদৌস

অতিথি লেখক এর ছবি

হ্যাঁ দেউলেদেরই তো বই দরকার । হাহাহা
eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

একদম হাছা কথা।

এনকিদু এর ছবি

লীলেন ভাই এমন একএকটা লেখা লিখে নয়তো মন্তব্য করে - মনে হয় ধরে একটা স্যালুট দিয়ে দিই । সেরকম ক্ষেত্রে আমি একটা করে স্যালুট দেয়া সৈনীকের ছবি পোস্ট করি মন্তব্যে । এই মন্তব্যেও দেয়ার ইচ্ছা হচ্ছে, কিন্তু দেউলিয়া সৈনীক কেমনে আঁকব বুঝতে পারছিনা । তাই সোজা বাংলায়, বিপ্লব


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

কীর্তিনাশা এর ছবি

চিন্তা কইরেন না রেজা ভাই আল্লায় চালাইয়া নিব। চোখ বন্ধ কইরা থুক্কু চোখ খুইলা খালি বই পড়েন।

------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

পড়তে গেলি যে খালি খাওয়ার চিন্তা আইসা যায়, তার কী হইবো কীর্তিনাশা ভাই।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার সূর্যসেন হলের দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দিলেন। এমন অনেক রাত গেছে, পয়সা ছিলো না বলে খাওয়া হয়নি। বিনা পয়সায় ট্যাপের পানি ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না, দুই গ্লাস পানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার বিকল্প কিছু ছিলো না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

জুবায়ের ভাই, আমিও সূর্যসেন হলের। এখনো হলেই আছি। তবে অচিরেই ছাড়তে হবে।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আহা, সূর্যসেন হল। স্বাধীনতার আগে এই হলের নাম ছিলো জিন্নাহ হল। ৭৩-এ যখন আমি এই হলের বাসিন্দা হই, তখনো অনেকে সূর্যসেন হল বললে চিনতে পারতো না। তখন কিছুদিন মুখে মুখে চালু ছিলো জিন্নাসেন হল নামে। ক্রমে জিন্নাহ নামটা বিলুপ্ত হয়ে পুরোদস্তুর সূর্যসেন হল নামটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

আমার সর্বশেষ রুম নাম্বার ছিলো ২১৭। এখনো চোখ বুজে সেই কক্ষে চলে যেতে পারি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সবজান্তা এর ছবি

এবার বই মেলাতেই, পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম। প্ল্যান ছিলো বই কেনার পর কিছু ভালো মন্দ খাওয়া কিনে নিয়ে যাবো বাসাতে।

শেষ পর্যন্ত বইমেলা থেকে বাসায় আসার সময় একজনের থেকে ধার করে রিকশা ভাড়া দিতে হয়েছিলা।


অলমিতি বিস্তারেণ

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আমারও এমন হয়েছিল। বাজেটেরও দ্বিগুণ টাকায় বই কিনেছিলাম। তবে ভাসির্টির হলে থাকার কারণে হেঁটে হেঁটে ফিরতে পেরেছিলাম।

অনিন্দিতা এর ছবি

দেউলিয়ারা আছে বলেই বোধ হয় বই আছে
বই বিক্রী হয়।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍কিয়েভে একটা বইয়ের বাজার আছে। দৈনিক। বলা চলে, চিরস্থায়ী বইমেলা। সেখানে বেশি টাকা নিয়ে যাওয়াটা আমার জন্য বরাবরই বিপদজনক। আর অর্থাভাবের কালে ওদিকটা কখনওই মাড়াই না হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

দেওলিয়ারা বই কিনে এ কথাটা ১০০ ভাগ খাটি।
মাসের প্রথমে যখন টিউশনির টাকা পাই, তখন বই পছন্দ হয় না; আর মাসের শেষভাগে যখন হাত খালি তখন যে কোন বই দেখলেই মনে হয় অপুর্ব সৃষ্টি; না পড়লে জীবন বৃথা হয়ে যাবে।

রাফি

মামুন-উর-রশীদ এর ছবি

বই না কিনেও মালিক হওয়া যায়, পদ্ধতি গুলো বেশ কিছু দিন আগের একটা লেখায় উঠে এসেছিলো। সবাই সেগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারেন।

ইফতেখার নূর এর ছবি

সেকেন্ড ইয়ারে একবার এক বই এর দোকান বন্ধ করে দেবে বলে সস্তায় অনেক বই বিক্রি করছিল। আমি বেশকিছু বই কিনে ফেললাম কিছু চিন্তা না করেই......সেই মাস চলতে খুব কষ্ট হয়েছিল। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছিলো মাস্টার্সেও। কে বলেছে বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না? এখনো স্বপ্ন দেখি ছাত্র জীবন শেষ হবে, হাতে অনেক টাকা পয়সা থাকবে, প্রাণভরে বই কিনব।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এখনো স্বপ্ন দেখি ছাত্র জীবন শেষ হবে, হাতে অনেক টাকা পয়সা থাকবে, প্রাণভরে বই কিনব।

ওইটা স্বপ্নই
বহু পাবলিককে দেখেছি স্টুডেন্ট লাইফ শেষ করে মেসে থেকে চাকরি বাকরি করা পর্যন্ত বইগুলো নিজের সাথে রাখে
এরপরে বিয়ে করে যখন নতুন বাসা নেয় তখন সেই বাসায় নতুন অনেক ফার্নিচারই থাকে
কিন্তু পুরোনো বইয়ের সেলফটাই আর রাখা হয় না
বইগুলো হয় পুরোনো বইয়ের মার্কেটে বিক্রি করে দেয়া হয় না হলে ফেলে দেবার বদলে কাউকে দিয়ে দেয়া হয়

০২
অনেক টাকা পয়সা হলে অনেক টাকা পয়সা দিয়ে কিনবার মতো অনেক অনেক দামি জিনিস পাওয়া যাবে
কিন্তু তখন বইটাই কেনা হবে না আর
কারণ বই অতো দামি জিনিস না
(টাকাওয়ালারা কমদামি জিনিস কিনলে ইজ্জত থাকে?)

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

বহু পাবলিককে দেখেছি স্টুডেন্ট লাইফ শেষ করে মেসে থেকে চাকরি বাকরি করা পর্যন্ত বইগুলো নিজের সাথে রাখে
এরপরে বিয়ে করে যখন নতুন বাসা নেয় তখন সেই বাসায় নতুন অনেক ফার্নিচারই থাকে
কিন্তু পুরোনো বইয়ের সেলফটাই আর রাখা হয় না

লীলেন ভাই, খুবই সত্য কথা।

সবজান্তা এর ছবি

এরকম হয় দেখেই বেঁচে আছি লীলেন ভাই। এ সব বিবাহিত পুরুষ এবং নারীরা বিবাহের পর বই বিক্রি করে বলেই না নীলক্ষেতে আমরা সস্তায় বই এর চেহারা দেখতে পাই !

জয়তু মদন !


অলমিতি বিস্তারেণ

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কোনো কিছু না ভেবে সব টাকা নিঃশেষ করে দিয়ে যারা বই কিনতে জানে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

শিমুল আপা, শ্রদ্ধা জানবেন আপনিও- একজন মুগ্ধ পাঠকের।

শিমুল আপা, আজকেই বেতন পেয়েছি। মাসের পুরো টাকা এখন আমার পকেটে। আবার বই কিনতে, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে ইচ্ছে করছে। প্রার্থনা করবেন, এই ইচ্ছেটা যেন সবসময় থাকে।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

কিছুদিন আগে মাইগ্রেশনের কারণে দানসূত্রে আমি বই পাইছি এক ট্রাক।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

বই ধার নিতে কবে বাসায় আসবো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

১.
লীলেন্দার কাছ থেকে শিইখা নেন বই চুড়ির কলাকৌশল... জীবনে আর কোনো দুঃখ থাকবে না... দেউলিয়াও হইতে হইবো না... প্রথমে চুরি করবেন তার লেখা বইগুলো... শুদ্ধশ্বরে পাইবেন... তারপরে চুরি করবেন তার বাড়িতে সংরক্ষিত বইগুলা... আর এই যে পদ্ধতি শিখায়া দিলাম তার বদৌলতে আমারে পছন্দমতো কিছু বই ছদকা দিয়েন... লীলেন্দার কাছে রক্ষিত এনসাইক্লোপিডিয়াটা দিলেই চলবো।
২.
ছাত্রাবস্থায় বই কেনার অজস্র দুঃখ সুখের কথা মনে করায়ে দিলেন। একবার একটা বই খুঁজে খুঁজে হয়রান হইতে হইতে কোথাও পাইতেছিলাম না... মাসকয়েক খোঁজার পরে হুট কইরাই একটা মাত্র কপি পাইলাম... কিন্তু দাম যা তার চেয়ে আমার কাছে আছে ২ টাকা কম। দোকান্দার অপরিচিত... আমি তারে অনুরোধ করলাম ২ টাকা বাঁকী দিতে... পরদিন দিমু... সে কিছুক্ষন চায়া বললো বই কিইনা তারপরে বাড়ি যামু কেম্নে? বললাম হাঁইটা... বললো বাড়ি কই? বল্লাম গাবতলী... সে আমারে গাবতলীর বাসভাড়া দিয়া সাথে বইটা দিয়া দিলো...
৩.
আমার অসংখ্য বই হারাইছে... আর মাঝখানে গাবতলী থেকে উত্তরা হিজরত আর আলসেমির সুবাদে বই আর মিউজিকের বিশাল একটা কালেকশন আমার ধ্বংশ হইছে। ফলে আমার সংগ্রহে বর্তমানের বইগুলার প্রায় সবই গত কয় বছরে কেনা। সেই বইগুলার জন্য দুঃখ হয় খুব।
৪.
জীবনে প্রথম ক্রেডিট কার্ড পকেটে আসনের পরে এক সপ্তাহেই ১০ হাজার টাকার বই আর সিডি ডিভিডি কিনছিলাম। সাগরে গেলেই আমার ক্রেডিট কার্ড ভরে যেতো... সম্প্রতি আমার জীবন থেকে যাবতীয় ক্রেডিট কার্ড দূর করছি।
৫.
এখন প্রচুর বই কিনি... যেদিন কিনি সেদিন দুই হাত ভইরা কিনি... বিশাল দুই বান্ডিল নিয়া বাড়ি ফিরি। কিন্তু সেগুলা পড়ার সময়ের খুব অভাব। জমায়ে রাখি... একদিন না একদিন ব্যস্ততার অজুহাত শেষ হবে... সারাদিন খালি বই পড়বো মিউজিক শুনবো আর সিনেমা দেখবো। সেই স্বপ্ন বুঝি পুরণ হবার নয়!
৬.
এই কথাটা আহমেদুর রশীদ ভাইয়ের জন্য প্রযোজ্য... ভাই... আপনের পেটে কুড়ো কুষ্টি হবে... ইশ্... হায়াত মামুদ স্যার যদি মাইগ্রেট করতো আর যাওনের কালে আমারে স্মরণ করতো!!! জীবনে বোধহয় আর কোনও চাওয়া থাকতো না।
৭.
ধুর... বিরাট মন্তব্য করলাম... মাইন্ড খাইয়েন না পান্থ। আর লীলেন্দার স্টাইল চুরি করলাম বইলা কইয়াই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

ছাত্রাবস্থায় বইয়ের পয়সা জোগাড় করাটা মহা সমস্যা ছিল। ভরসা তাই ছিল নীলক্ষেতের পুরনো বইয়ের দোকান। সেখানে একবার দেখি নিকোলাই অস্ত্রোভস্কির 'ইস্পাত' বইটির দ্বিতীয় খন্ডটি। কিনে ফেললাম। তারপর প্রায় দেড় বছর পর কিনতে পারলাম প্রথম খন্ড। এত আনন্দ আমি জীবনে আর কোনদিন পাইনি (কথার কথা নয়, একদম সত্যি কথা)।
বিদেশে বসে বাংলা বই পাইনা বলে পড়া হয়না, আর ইংরেজী বই কিনতে ইচ্ছে করেনা বলে লাইব্রেরী থেকে পড়ার জন্যে নিয়ে আসি।_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

জাহিদ হোসেন, আপনি কোন স্টেটে (আমেরিকায় তো?) থাকেন জানি না, কিন্তু আপনাকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীর খোঁজ দিতে পারি। নিউইয়র্কের কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বইয়ের সংগ্রহ অসাধারন, অভূতপূর্ব, অচিন্ত্যনীয়, ... মানে আর কি কি যে বলবো জানি না, এতোই সমৃদ্ধ ছিলো তা!! তবে খুব দুঃখের কথা - বহুদিন ধরে আর কোন বাংলা বই কেনা হচ্ছে না, বিশেষত বাংলাদেশ থেকে - কি কি সব অপেশাদারী ব্যবহারের কারণে কর্ণেলের কিউরেটর খুব বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।