আশ্চর্য!
মদ এসেছে, অথচ মদ খাওয়ার মানুষরা আসেনি এমন হয়। কিন্তু এমনই ঘটনা বুঝি ঘটতে চলেছে আজ। আমি, নিউটন ভাই, তানিম ভাই, রবিন ভাই, সাকিল ভাই, নাজমুল আর শুভ বসে আছি মদ নিয়ে। চারুকলার প্রিন্টিংয়ের ছাদে। আর সবাই কখন এসে পৌঁছায় তার প্রহর গুনছি। অথচ তখনো খাওয়ানেওয়ালাদের কারোরই টিকির দেখা মিলছে না। সবাই না আসায় একজন অস্থির হয়ে বলেই বসল- যা গরম পড়েছে রে, মদ তো টক হয়ে যাবে! তবে রক্ষা, মদ টক হওয়ার উপায় নাই। ব্যাটা লুই পাস্তুর নাকি মদেরও টিকা আবিস্কার করে গেছে। তারপর থেকে আর মদ টক হয় না। মদ যেহেতু টক হওয়ার সম্ভাবনা নাই, আমরা তাই সবার জন্য অপেক্ষা করছি।
আমাদের মদ খাওয়ার আয়োজন সাধারণত হঠাৎ করে হলেও আজকেরটা হঠাৎ করে নয়। কয়েকদিনের প্ল্যানের ফসল এটা। সাগর ভাই, নিউটন ভাইয়েরা নাকি প্রতিবছর এমন একদিন ঘটা করে মদ খাওয়ার উৎসবের আয়োজন করেন। চারুকলায় তাদের মদ খাওয়ার একটা গ্রুপ আছে। সেই গ্রুপেরই বার্ষিক আয়োজন এটি। তারা একখান নামই দিয়েছেন এই উৎসবের- বার্ষিক মদ্যপান উৎসব। কেউ কেউ একে চারুকলার ওরশও বলে। গতবার এই উৎসবের খবর পেয়েছিলাম সাবেক কলিগ রনি ভাই আর রাজিবের কাছে। এরকম ঘটা করে মদ খাওয়ার খবরটা উৎসবের পরে পাওয়ার কারণে আফসোস বেড়েছিল বৈকি। এবার আয়োজকদের অন্যতম সাগর ভাই আর নিউটন ভাইদের কলিগ হওয়ার কারণে উৎসবের আগাগোড়া সম্পর্কেই অবহিত ছিলাম।
আমাদের অপেক্ষা ফুরালো আর একটু পরেই। একে একে আসলেন জুয়েল ভাই, নয়ন ভাই, শিমুল ভাই, দিদার ভাই, আশরাফ ভাই, শাম্মী আপু, রাজিব ভাই, রনি ভাই। সাগর ভাইও এলেন হবু বউকে (মৈত্রী আপু) সাথে নিয়ে। সবার পেছন পেছন রিপন ভাই এলেন স্পাইট, রুচি ঝাল চানাচুর, চিপস আর ওয়ান-টাইম গ্লাস প্লেট নিয়ে। শুরু হলো মদ্যপান উৎসরের আনুষ্ঠানিকতা।
রিপন ভাই আসামাত্রই ছাদের দক্ষিণ অংশে গিয়ে বসা হলো। তানিম ভাই বোতলে অগ্নুৎপাত করে আসরের আনুষ্ঠানিকতারই ঘোষণা দিলেন। রিপন ভাই দায়িত্ব নিলেন ভাগ-বাটোয়ারা করে দিতে। জানা গেলো ভাগ-বাটোয়ারা করে দেয়ায় তার অনন্য রেকর্ডের কথা। একবার ৩ বোতল রামকে ৬০ জনের মধ্যে ভাগ করে দেয়ার অনন্য কৃতিত্বও আছে তার ঝুলিতে। সেবার নাকি একজন খেয়ে বমিও করেছিল বিস্তর। আরেক জন ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিল চাঁদের চুড়ায় যেতে। বহুত কষ্টে তাকে থামিয়ে রাখা হয়েছিল সে যাত্রায়। ভাগ্যিস, তিনি যাননি। তাতে করে নীল মহাশয়ের রেকর্ড ভেঙ্গে যেতে পারতো!
করিৎকর্মা তানিম ভাইয়ের ম্যানেজমেন্টে চানাচুরের প্লেট পৌঁছে গেলো যথাস্থানে। নাজমুল আর শুভের দায়িত্বে পানীয়ের গ্লাস সবার হাতে হাতে পৌঁছে গেলো। গ্লাসে গ্লাসে ঠোক্কর খেয়ে চিয়ার্স রব উঠলো চারুকলার প্রান্তরজুড়ে। তারপর খালি গ্লাসে আবার পানীয়ে বুঁদবুঁদ উঠল। বুদবুদ উঠলো কারো কারো চেতনায়। রবিন ভাই উঠে এসে কামনাদীপ্ত পোজ দিলেন। পাপারাজির মতো ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠলো পল মুহূর্তে। ওদিকে বন্টনে বিশেষ খেতাব প্রাপ্ত রিপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলো কারচুপির। অভিযোগকারীর তালিকায় সাগর ভাই, মৈত্রী আপু আর শাম্মী আপু। এরই মাঝে নিউটন ভাই শেষ পেগটি সবার উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন। আর সাগর ভাই ঘোষণা দিলেন আগামী মদ্যপান উৎসবের। উৎসবটি হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে।
মন্তব্য
এই ধরনের ওরশে রাষ্ট্রীয় সম্মতি আছে তো?
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
কি আর বলিব, ছবি যে দিলেন না কিছু?
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
দুইদিন আগে ডেঙ্গু জ্বর সেরে পায়েল আইলো ওরশ-এ যোগ দিতে। খাইলোও সবার চেয়ে বেশি। অথচ তার সম্মানে একটা বাক্য নিসনি, এমনকি নাম পর্যন্ত উল্লেখ নাই, বড়ই দুঃখ পাইলামরে পান্থ'র বাচ্চা!
এরাম পুস্ট ফটু ছাড়া মানায় না।
---------------------------------------------------------
ভাটির মানুষ আমি বুঝিনা উজানের গতি...
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
নতুন মন্তব্য করুন