তখন স্কুলে পড়ি। হাইস্কুলে। আমাদের এক বন্ধু মনিরা হঠাৎ করেই মোটা হয়ে যাচ্ছিল। বেচারী মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে ডায়েট করতে শুরু করে। কী করে যেন কথাটি সামাদ স্যারের কানে যায়। স্যার একধারে হুজুর এবং কবিরাজী চিকিৎসক। রেগেমেগে বলেন, ‘না খেয়ে স্বাস্থ্য ফেরাতে চাও, যাও মর গিয়ে।’ সেই কবে স্যার বলেছিলেন, ‘স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাস তো পরিমিত খা’। স্যারের কথাটি ভুলেই গিয়েছিলাম। কারিনা কাপুরের জিরো সাইজ প্রসঙ্গ স্যারের কথাটি আমার মনে করিয়ে দিলো।
বলিউডের খুল্লাম খুল্লা নায়িকা কারিনাকে আপনারা কেমন পান, তা বলবার পারি না। তয় আমি মোটেই ভালা পাই না। দেখলেই কেমন গা জ্বলে, পিত্তি জ্বলে। আমার পিত্তি জ্বলে গেলে কী হবে অনেকেই তাকে আবার পছন্দ করেন। আদর্শ মানেন। তার হাবভাব ফলো করার চেষ্টা করেন। কিছুদিন হলো তিনি তাশান ছবিতে তার ফিগার নিয়ে আলোচনায় এসেছেন। এই ফিগারটির আবার বাহারি একখানা নাম আছে- সাইজ জিরো। ভক্ত অনেক তরুণীই এখন এই ফিগারের আশায় ছুটছেন। কারিনার এই সাইজ জিরো ফিগারের পেছনে অনুপ্রেরণা হিসেবে আছেন আরেক সেলিব্রিটি ভিক্টোরিয়া বেকহাম। আর এখনকার তরুণীদের পেছনে আছেন কারিনা। তাশান রিলিজড হওয়ার পরপরই এক বন্ধু বলেছিল, তাশানে কারিনার ফিগারটি দেখেছিস। বলি, না দেখিনি। জিজ্ঞেসও করিনি কেমন। পরে পত্রিকায় দেখি, বেচারি এই ফিগার নিয়ে ডাক্তারদের তোপের মুখে পড়েছেন। ডাক্তাররা বলছেন, এই ফিগার স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। কারিনাকে ফলো করতে গিয়ে অনেকে এই স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বেন। ঝুঁকিটা কেমন তা আমরা ভালো করেই দেখেছি মডেল লুইসেল র্যামোসের বেলায়।
লুইসেল র্যামোসের বয়স কত হয়েছিল? মাত্র ২২। টগবগে তরুণী। ফ্যাশনের প্রতি ছিল অপরিসীম আগ্রহ। ছিল এ লাইনের খ্যাতি ও যশ পাওয়ার চেষ্টা। এই চেষ্টাই তাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল জিরো সাইজ ফিগারের দিকে। এজন্য ৩ মাস ধরে সবুজ শাক আর ডায়েট কোক ছাড়া কিছুই খান নি। একদিন হার্ট অ্যাটাকে মারা তিনি। ডাক্তার জানায়, খাবার-দাবারে ডিসঅর্ডারের কারণেই এমনটি হয়েছে।
কারিনাও দিনরাত জিমে দৌড়িয়ে আর ফলের রস খেয়ে এমন ফিগার পেয়েছেন। মেদহীন এমন ফিগারে সাইফ আলী খানও উৎফুল্ল। এই উৎফুল্লতার কারণেই হয়তো আরো অনেক অনেক তরুণীই ছুটবে এ পথে। কিন্তু শেষ পরিণতি কী তা কে জানে! তবে কারো পরিণতি যেন র্যামোসের মতো না হয়।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন