০১.
৯৭ কি ৯৮ সাল। হাতে কী কারণে যেন অঢেল সময় ছিল। হন্য হয়ে খুঁজতে ছিলাম মাসুদ রানা। মাঠে, আমাদের গায়ের যে লাইব্রেরিটি আছে, সেখানকার রানা সিরিজের সব বই পড়া শেষ। আর অন্যান্য পদের প্রায় সবগুলো বই-ই পড়া হয়ে গেছে। এমনই সময়ে কী করে যেন অন্যদিনের ৯৭ সালের ঈদসংখ্যা আমার হাতে এসে পড়ে। আমি গোগ্রাসে গিলি হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস। সে উপন্যাসের নাম মনে নাই আজ। এদের সাথে আরো পড়ি নাসরিন জাহানের লি। আর মঈনুল আহসান সাবেরের জ্যোতির্ময়ী তোমাকে বলি। সেই সময়ে, মঈনুল আহসান সাবেরের এই উপন্যাস আমাকে যে কী পরিমাণ মুগ্ধ করেছিল, তা আজ ভাষায় প্রকাশ করা আমার অসাধ্য। গল্পের সেই আটপৌরে বাঙালি যুবকের প্রতিনিধি আবদুল জলিল , নীল অপরাজিতা, অপরাজিতার মা কিংবা জলিলের ছাত্রীর ব্যাপারের জলিলের কৌতুহলী মা সবকিছুই আমার এতোদিনের হাজারো পাঠের ভিড়েও মাথার ভেতরে কোথাও রয়ে গিয়েছিল। সেদিন হঠাৎ-ই আবার তা ঘাই মেরে উঠলো। যেন-
মুখ নেই পেট নেই। শুধু এক আস্বাদ
জেগে আছে। আরকের মধ্যে...
০২.
জ্যোতির্ময়ী তোমাকে বলি, জেগেই ছিল মস্তিষ্কের কোথাও। মাস দুয়েক আগে নীলক্ষেত হয়ে ফিরতেছিলাম। ফুটপাতের বইয়ের দোকানির চিল্লাচিল্লি: ১০ টাকা, খালি ১০ টাকা। যেটা লন, বাইছা লন। বাইছা লওয়ার ডাকটা এড়িয়ে আসতে গিয়েই চোখ আটকে গেল জ্যোতির্ময়ী তোমাকে বলি বইটির দিকে। মুহূর্তেই মনে পড়ল অনেক আগের পড়ার আনন্দময় আস্বাদের কথা। ভাবলাম দেখি, এখনো সেই মুগ্ধতাবোধ আছে কী’না।
০৩.
নাহ্, সেই মুগ্ধতা দেখছি এখনো যায়নি। আবারো পড়ে আগের পাঠ আস্বাদেরই স্বাদ পেলাম। পড়তে পড়তে দেখি, আ রে, জলিলের মতো আমিও তো ডিসেম্বরের শীতে ঢাকায় এসেছিলাম। যেদিন ফাইনালি চলে আসি, সেদিন বাস স্টেশনে এসে জলিলের বাবার মতো আমার বাবাও চোখের জল মুছে নিয়েছিল। পড়তে পড়তে এইসব স্মৃতি এসে আবিষ্ট করে দিয়ে গেল আবার। উপন্যাসের সাথে যেন নিজেকে আরো নিবিড় করে জড়িয়ে নিল।
০৪.
তবে প্রথমবার পড়ার সময়ে জলিলের সেই চাওয়াটা, জ্যোতির্ময়ী বিয়ের ঘোষণা দিনের ভিড় বাট্টা ভেঙ্গে একবার আসবে, জলিলের কাছে এসে দাঁড়াবে, কাঁধে হাত রেখে জলিলের কথার প্রেক্ষিতে বলবে, আপনি বোঝেন না.. কেন? কিংবা কে বলেছে হয় না, হয় হয় হয়... এরকম চাওয়াটা পুরণ হয়নি বলে লেখকের প্রতি অথবা জ্যোতির্ময়ীর প্রতি একটা ক্ষোভ জন্মেছিল। আজ এখন এসে মনে হচ্ছে, আ রে এটাই তো সত্যি; এরকম হওয়াটাই উচিত। জ্যোতির্ময়ী আবদুল জলিলের জন্য দিওয়ানা হবে, বিয়ের ঘোষণার আসর ছেড়ে নিরবে এসে আবদুল জলিল যে তার গৃহশিক্ষক, তাদের বাড়িতে আশ্রিত তার পাশে দাঁড়াবে, নিজেকে সর্মপন করবে এমনটাই না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এইটুকু বাদে পুরো উপন্যাসটি পাঠে আগের সেই আস্বাদটি এখনো রয়ে গেছে।
মন্তব্য
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজু ভাই,এই ইমোটিকনটা কী খায় না পেন্দে?
এই পাঠানুভুতিগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ। পান্থ,চালিয়ে যান।
---------------------------------------------------------
আমরা যারা শিখিনি চাষবাস,ফসলের গীত
গুলালিতে পাখি হত্যা
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
চিন্তা করতেছি, নিজের ভালো লাগা বইগুলো নিয়ে লিখবো একে একে।
বইটা পড়তে হবে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
হ, দেখেন পড়ে।
সময়ের সাথে আইডিওলজী বদলে যায় মানুষের।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
হু।
------------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
" মুখ নেই পেট নেই। শুধু এক আস্বাদ
জেগে আছে। আরকের মধ্যে... "
"আজ এখন এসে মনে হচ্ছে, আ রে এটাই তো সত্যি; এরকম হওয়াটাই উচিত।"
আস্বাদের তীক্ষ্নতা বেড়েই চলুক।
চলুক। লাভ বিনে ক্ষতি তো নাই।
বইটা তাইলে পড়তে হবে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: আমার ভালো লাগছে বলে, আপনার ভালো লাগবে এমন কথা নাই।
তাইলে থাক পড়ব না হাহাহাহা
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
তাহলে আর কী, বিরাট একটা জিনিস মিসড করবেন। দেখেন তখন যেন আমারে আবার দোষায়েন না।
ঠিক আছে, তাইলে পড়ব
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
আচ্ছা যান, দেশে আইসেন, আপনারে এই বইটা গিফট দিবোনে। হাজার হোক আমার প্রিয় লেখকের বই কী'না। আবার লেখকের সাথে কিঞ্চিত ব্যক্তিগত খায়-খাতির আছে। আমাকে বেশ স্নেহ করেনও তিনি।
ওরে বাবা তাই নাকি? তাইলে কষ্টকরে ওনার অটোগ্রাফটাও নিয়েন পিলিজ
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
এইতো বিপদে ফেললেন!
সাধে কী কয়, বাঙালি বসতে দিলে শুতে চায়।
ওহ আর বইটা সুন্দর পেপারে মলাট করে দিয়েন
ওহ আর আপনি যখন বইয়ের দোকানে যাচ্ছেনই তখন আমার জন্য তাইলে আরো কয়েকটা বই কিনে ফেইলেন, পরে লিসট ইমেইল করে দিব
***ভয় পায়েন না আমি জোক করছি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
হুম...... ভাল লাগল পাঠ আলোচনা পান্থদা । আর এমন কিছু নিজের ভাল লাগা বই নিয়ে লিখে ফেলুন না ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
চেষ্টা করতেছি নিবিড় ভাইয়া।
আপনার লেখা পড়ে মনে হল আমার না পড়াই ভাল। কারণ ভাল লেখা জানার অনুভূতি পড়ার পর যদি না থাকে---------। বয়সের সাথে সাথে অনেক ভাল লেখাও সাদামাটা লাগে।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........
খুবই সত্য কথা খালাপ্পু (ক্যামেলিয়া আপু)।
অনুমতি পেলে লেখাটি এখানে রাখতে পারি
http://www.boi-mela.com/BookDet.asp?Bookid=2862
ধন্যবাদ
ফরিদ ভাই, রাখেন, সমস্যা নাই।
বাহ্, আরো আসুক এরকম পাঠানুভূতি!
আসতেছে। কমেন্ট দেয়ার জন্য রেডি থাকুন।
সুন্দর লিখসেন পান্থ'দা।
নাসরিন জাহানের 'লি'-র নাম শুনে মনে পড়ল '৯৭ এর ঈদসংখ্যা আমিও পড়সিলাম। তবে 'জ্যোতির্ময়ী তোমাকে বলি' পড়সি কি না মনে করতে পারতেসি না। বাসায় এখনো থাকার কথা সংখ্যাটা। খুঁজে দেখি, পাইলে পড়ে ফেলব।
নাসরিন জাহানের 'লি' উপন্যাসটাও ভালো লেগেছিল। এখন পড়লে কেমন লাগবে তা জানি না।
নতুন মন্তব্য করুন