বৈচিত্র্যহীন জীবন নিয়ে নাটক লেখা যায় না

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি
লিখেছেন পান্থ রহমান রেজা (তারিখ: রবি, ৩০/১১/২০০৮ - ৪:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইশ! জীবনটা যদি ফাহিম ভাইয়ের মতো হতো!

পাঠক ফাহিম ভাই কে, তার পরিচয় দেয়ার আগে আমার আফসোসের কথাটাই একবার বিস্তারিত বলতে চাই। কারণ এই না হতে পারার আফসোসটা আমাকে মাঝে মধ্যেই তাড়িয়ে বেড়ায়। এই যেমন আজকেও উথলে উঠলো আবার।

নাটকের কোর্সে ভর্তি হয়েছি অঁলিয়সে। নারায়ণ স্যারের ক্লাস করছিলাম। নাটকের ব্যাকরণ শিখাতে গিয়ে স্যার আমাদের ক্রিয়েটিভ রাইটিং শিখাচ্ছেন। সেদিন ক্লাসে স্যার বলছিলেন, লেখালিখিতে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাই আসল। আর লেখকরা নিজের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে, তার সঙ্গে কয়েক আঁচলা কল্পনা মিশিয়ে কাহিনী বলেন। তোমার যেদিন অভিজ্ঞতার সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলো, সেদিন থেকে তোমার লেখালেখিও শেষ। মানে তোমার লেখক সত্ত্বার মৃত্যু ঘটল। তাই বলি, বাছারা চারদিকে নজরদারি বাড়াও, বৈচিত্র্যময় জীবনাভিজ্ঞতার ভাণ্ডার তৈরি করো, তবেই দেখবে লেখালিখিতে তুমি ভালো করছো।

স্যারের কথা শুনে সেদিন আমি খুবই হতাশ হয়েছিলাম। নিজের চোখের সামনেই নিজের দীনতার স্পষ্ট ছবি দেখতেছিলাম যেন। আসলে আমার জীবন খুবই বৈচিত্র্যহীন। বলতে গেলে বৈচিত্র্যপূর্ণ কোনো ঘটনাই নাই। অথচ আমাদের ফাহিম ভাই যেন ভয়ংকর অভিজ্ঞতার ডিপো নিয়ে বসে আছেন। পত্রিকার শিরোনাম পর্যন্ত হয়েছেন। নিউজ বের হয়েছে, তিন সন্ত্রাসীকে ছাড়িয়ে নিতে শীর্ষ অভিনেত্রী আদালতে।

সে যাই হোক, ফাহিম ভাই সম্পর্কে একটু বলি। পাঠক অবশ্য এতোক্ষণে তাকে চিনে নিতে শুরু করেছেন, একজন বিখ্যাত নাট্যকার হিসেবে। ফাহিম ভাইয়ের সাথে পরিচয় গোল্ডেন ড্রাগনে। গোল্ডেন ড্রাগন মিডিয়ার লোকদের সান্ধ্যকালীন জমজমাট আড্ডার জায়গা। আমরা লোক মুখে এটাই শুনি শুধু। কিন্তু সিনিয়রদের আখড়া বলে আমাদের যেতে সাহস হয় না। যদিও ততদিনে মিডিয়ায় আমাদের হাঁটিহাঁটি পা পা শুরু হয়েছে। একদিন সাহসে ভর করে কয়েক বন্ধু মিলে ঢুকে পড়ি গোল্ডেন ড্রাগনে। ভয়ে ভয়ে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছি। এদিক-ওদিকও তেমন তাকাচ্ছি না কারও চোখে পড়ে যেতে পারি বলে। কিন্তু পাশের টেবিলে একদিন উজ্জ্বল চেহারার তরুণ ঠিকই নজর কাড়লো। বারটেন্ডার তাকে একটু বেশিই পাত্তা দিচ্ছিল। এই পাত্তা দেয়াটাই আমাদের নজর কাড়ে। আর আলো-আধাঁরি পেরিয়ে আমাদের ইকবাল ঠিকই চিনে নাটাক্যর ফাহিম ভাইকে।

আরেক গ্লাস অর্ডার দেবো কী'না ভাবছি। হঠাৎ-ই দেখি রনি ভাই। আমরা টেবিলে আরো মাথা নিচু করে বসি। রনি ভাই ওদিকে পিলারের আড়াল হলেই বারটেন্ডারকে ডেকে বিল ধরিয়ে বের হয়ে যেতে নিতেই ফাহিম ভাই আমাদের ডাকেন। নিশ্চিত কপালে বকা আছে, এটা ধরে নিয়েই তার টেবিলের সামনে যাই। 'তোমরা মনে হয় নতুন, সাবধানে বাসায় যেও' বলে বাসায় কিভাবে রক্ষা পাওয়া যাবেসহ আরো কিছু উপদেশ দেন।

পরের দিন বেইলি রোডে আড্ডায় ফাহিম ভাইকে দেখি। তিনিই আমাদের ডেকে কাছে নিয়ে আলাপ-সালাপ জুড়ে দেন। আমরা দেখি, ফাহিম ভাই খুবই মিশুক লোক। অল্পতেই আমাদের আপন হয়ে যান। আমাদের সাথে তিনি তার জীবনের নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ, ভয়ংকর সব অভিজ্ঞতার গল্প শেয়ার করেন। আমরা তার গল্পে কখনো শিহরিত হই, কখনো হেসে গড়াগড়ি দিই।

ফাহিম ভাই গল্প করেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে বিনে পয়সায় ঢাকা ফেরার গল্প, ময়মনসিংহে বুনো হাতির তাড়া খাওয়ার গল্প। কিংবা কোনো জোসনা রাতে বাসায় ফিরতে আলস্য লাগছে বলে ফুটপাতে শুয়ে রাত কাবাব করার গল্প। অথবা নেশায় বুঁদ হয়ে গোল্ডেন ড্রাগনের সোফায় রাত্রি পার করে দেয়ার গল্প। সুন্দরবনে পথ হারিয়ে যাওয়া, কক্সবাজারে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রের পাড়ে বসে সারারাত কাটানোর গল্পও থাকে তার গল্পগাছায়। আবার তার বিয়ের গল্প শুনে আমরা সেলুলয়েডের ফিতাবন্দি দৃশ্যই যেন দেখি।

তার সব গল্পই আমাদের শিহরিত করে। মুগ্ধতা যে ইর্ষাও জাগায় আমরা টের পাই ফাহিম ভাইয়ের মতো অভিজ্ঞতা নাই বলে। নারায়ণ স্যারের ক্লাস আমাদের আরো বিমর্ষ করে দেয়।

নারায়ণ স্যার হোমওয়ার্ক দিয়েছেন। জীবনের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতার বয়ান লিখে নিয়ে যেতে হবে। এখন স্টোরিলাইন লিখলেও চলবে। পরে এটাকে কিভাবে নাটকের স্ক্রিপ্টে রূপ দিতে হয় তাই তিনি শেখাবেন।

ঘড়ির কাঁটা রাত একটার জানান দেয়। গেল দু'রাত হলো ভাবতেছি জীবনের বৈচিত্র্যপূর্ণ ঘটনা নিয়া। কিন্তু কোনো ঘটনাই মনে আসতেছে না। কিংবা যে কয়টি ঘটনা আছে, তাকে মোটেই আকর্ষণীয় বলে মনে হচ্ছে না নিজের কাছে। মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবি, ফাহিম ভাইয়ের কোনো অভিজ্ঞতা চালিয়ে দেবো নিজের বলে। মন সায় দেয় না তাতে।

রাত বাড়ে। হঠাৎ-ই পাড়ার বুড়ো দারোয়ান আজাদ মিয়া হাঁক ছাড়ে, ওই কে যাইইইইইইই...। মনে পড়ে, এরকম এক রাতে পুলিশ আমাদের এভাবেই ডেকেছিল। ঘটনাটা ঘটেছিল রোমানদের বাসার পাশের গলিতে। আমি আর মিজান মদ কিনে ফিরতেছিলাম। হঠাৎ-ই কোথা থেকে আসে টহল পুলিশের গাড়ি। পুলিশ আমাদের কেন জানি সন্দেহ করে বসে। আমাদের ডাক দিতেই ভোঁ দৌঁড় দিই দু'জনে। পুলিশও ছোটে আমাদের পেছনে। সামনের একটি লেক দেখেই আমি তাতে লাফিয়ে পড়ি। আর মিজান একবার আমাকে লাফিয়ে পড়তে দেখে সোজা দৌঁড়াতে থাকে। পুলিশও ওর পেছনে দৌঁড়ায়। পুকুরে ঘন্টাখানেক থেকে নিরাপদ মনে করায় উঠে আসি। একটু হেঁটে বড়ো রাস্তায় এসে রিক্সাওয়ালাকে বলি, অ্যাই সামনে যাবি। রিক্সাওয়ালা আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। রাগ মাথায় চড়ে যায়।
অ্যাই কি দেখছিস, আমি রুক্ষভাবে বলি
স্যার, আপনার মাথায় ব্যাঙ
ঝাঁকড়া চুল আমার। মাথায় হাত দিতেই একটি ব্যাঙ লাফিয়ে মাটিতে পড়ে।

ব্যাঙের মতো তুচ্ছ প্রাণী নিয়ে গল্প হয় না। এমন বৈচিত্র্যহীন জীবন নিয়ে আমারও হোমওয়ার্ক লেখা হয় না। নাটক তো নয়ই।


মন্তব্য

কীর্তিনাশা এর ছবি

পুলিশের দৌড় একবার আমিও খাইসিলাম। যাউকগা সেই কাহিনী পরে হবে আরেকদিন। আপনার লেখা দুর্দান্ত হইসে।

তা ভাই ব্যাঙটা কি জাতের ছিল? কোলা না কুনো? পুঙলিঙ্গ নামি স্ত্রী লিঙ্গ? দেঁতো হাসি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

রাত ছিল। আকাশে জোসনাও ছিল না। তাই দেখতে পারি নাই পুং না স্ত্রীং ছিলো।
আপনার দৌড়ানির কাহিনী শুনতে চাই। জলদি পোস্টান।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

যারা বলে যে লেখক তার নিজের অভিজ্ঞতা নিয়েই লেখে
আমার ধারণা তারা লেখাও বোঝে না- অভিজ্ঞতাও না

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

লীলেন্দা, সেজন্য তো আমি ফাহিম ভাইয়ের অভিজ্ঞতার স্মরণাপন্ন হয়েছি।

আলমগীর এর ছবি

কেবল অভিজ্ঞতা দিয়ে লিখতে গেলে তো লেখক হবার আগে খুন, হত্যা, রাহাজানি, প্রেম পরকীয়া, আজে বাজে আবজাব যা আছে সব করতে হবে।

এই লেখাটাই নাটক হয় না?

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

নাটক হয় কী'না মহামান্য নাট্যকার নজু দ্য গ্রেটকে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে।
হে নজু ভাই, এই মন্তব্য যদি আপনার দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে তাহলে আপনার মূল্যবান মন্তব্য জানিয়ে আমাদের বাধিত করবেন।

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনার জন্য সমবেদনা।

আমি কোন দলে বুঝলাম না। ফাহিম ভাইয়ের দলে না আপনার দলে...

বুইজ্জা কাম নাই, লেখা ভালো হইছে এইটাই আসল কথা।

=============================

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আমার একটা দল আছে। আপনার তো তাও নাই দেখছি। সমবেদনা কিংবা চিয়ারআপ যে জানাবো সে উপায়ও রাখেন নি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি বড় হইয়া ফাহিম ভাই হইতে চাই।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আর আমি বড়ো হইয়া নজু ভাই হইতে চাই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তুলিরেখা [অতিথি] এর ছবি

আরে এত ভেদবুদ্ধি নিয়া কাম চলবো? হাসি
অভিজ্ঞতা হইলো গিয়া অভিজ্ঞতা! তার আবার নিজের আর পরের কি? চোখ টিপি
বানাইয়া-ছানাইয়া যদি না কইতে পারলেন তয় কি করলেন? হাসি
কবি কি বলিয়াছেন? বলিয়াছেন-পরের সকল কিছুরে আমি আপন করিয়া লই! দেঁতো হাসি
(কোন্‌ কবি বলিয়াছেন তাহা অবান্তর )

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

দেইখেন তুলিপা, পরের অভিজ্ঞতায় টান দিয়া কপিরাইট মামলা খান না যেন! হাসি

তানবীরা এর ছবি

(কোন্‌ কবি বলিয়াছেন তাহা অবান্তর )

হাহাহাহাহা, হাসতে হাসতে গড়াগড়ি। এই মন্তব্য তুলিকে জাঝা

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নির্জর প্রজ্ঞা এর ছবি

অভিজ্ঞতার কিন্তু দুইটা দিক আছে একটা হচ্ছে প্রত্যক্ষ; অন্যটি পরোক্ষ।

যেমন আমি নিজে বিষ খাইনি, কিন্তু কারো মুখে সেটা শোনার অভিঞ্জতা আছে- সেখান থেকেই সে হয়তো লেখলোঃ
বিষের বিস্তার আমার শরীরে; প্রতি অনুভবে
এই আত্নহনন কেন কেউ কি জানবে?
জমা রাখা কষ্ট আজ সব বিলালাম
জীবন দিয়ে এক, অন্য জীবন নিলাম... ইত্যাদি...ইত্যাদি

নিজের জীবনে না থাকলে -আশেপাশে শত-শত জীবন আছে সেখান থেকেও অভিজ্ঞতা নেয়া যায়। যাই হোক পান্থদা, অভিজ্ঞতার বর্ননা বেশ হয়েছে।

ব্যক্ত হোক তোমা-মাঝে অনন্তের অক্লান্ত বিস্ময়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আপনার কয়খানা অভিজ্ঞতা আপনার মেইলে চালান কইরা দিয়েন। আম্রিকান জীবন নিয়া একখানা গল্প ফাঁদার খুব শখ।

সবজান্তা এর ছবি

ফাহিম ভাই ? হুমম...চেনা চেনা লাগে দেঁতো হাসি


অলমিতি বিস্তারেণ

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হ ভাই, আপনেও নাটক ফাটক লেখেন, চিনবে নি তো। হাসি
ফাহিম ভাইকে চেনে না, এমন লোক আমাদের মিডিয়া পাড়ায় কমই আছে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কথাটা খুব সত্য। যে-লেখকের জীবনে কোন বৈচিত্র্য নেই, তার লেখার মধ্যে এক ধরণের শূন্যতা কাজ করে। যেই গল্প/নাটকগুলো জীবন থেকে লেখা নয়, সেগুলোয় অলংকার অনেক বেশি থাকে, কিন্তু জীবন থেকে লেখা গল্প/নাটকে অন্য রকম একটা ঝংকার থাকে। সেই লেখায় গতি আসে গল্পের ছলে বলার ধরণটা থেকে। সাথে অন্য রকম একটা গভীরতাও এসে পড়ে জীবনের বৈচিত্র্য থেকে। প্রতিটি লেখক তাঁর শ্রেষ্ঠ লেখাটি লেখেন গতিময় থাকা অবস্থায়।

তবে আফসোস করেন না। কিছুদিন আমাদের এখান থেকে ঘুরে যান। কোন নাটকের চেয়ে কম ঘটনাবহুল না। আর শর্ট-টার্ম সমাধান চাইলে আজমীরের সাথে যোগাযোগ করেন। নাটকীয় জীবন কাকে বলে বুঝে যাবেন। অফুরাণ স্টক।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হ ইশতি ভাই, সুন্দর কথা কইছেন, আপনার ওখান থেকে একবার ঘুরে আসতে পারলে হয়! তাড়াতাড়ি স্পন্সর পাঠান। আমি আম্রিকা যাইতে চাই।
আপনারা তো ফোবানা টাইপে বিভিন্ন প্রোগ্রামে মাঝে মাঝে দেশ থেকে বিভিন্ন কবি লেখকদের দাওয়াত দিয়া নিয়া যান। আমাকে একবার দাওয়াত দেয়া যায় না একজন সেলিব্রেটি সচল ব্লগার হিসেবে। হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পান্থ'দা, আফসোস কইরেন না, আপনার ঘটনাবহুল জীবনে তাও তো ব্যাঙের কাহিনী আছে, আমার জীবনে সেটাও নাই। পঙ্গুকে দেখে জুতা হারানোর শোক ভোলেন হাসি


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ছোটবেলায় ট্রেন চড়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার মজার সব অভিজ্ঞতা আছে আপনার। আমার তো তা নাই। আমি ট্রেনে চড়েছি বড়ো বেলায় এসে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হায় রে পান্থ'দা, কই আপনার রূপালী জগতের সব অভিজ্ঞতা আর কই আমার ট্রেনে চড়ার অভিজ্ঞতা! চিন্তা করেন- মাথায় ব্যাঙের কাহিনী নিয়া তাও নাটক লিখতে পারবেন, কিন্তু ট্রেনে চড়ার কাহিনী নিয়ে নাটক লিখলে বাইরের মানুষ তো দূরে থাকুক, আপনি নিজে বা নিজের ঘরের মানুষও দেখবে না বলে দিলাম চোখ টিপি


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বাজারে একটা ম্যাশিন পাওয়া যায়, নাম হইলো "গল্প প্লট যন্তর"। ঐটা কিনেন, তারপর ঐটার মধ্যে ট্রেন ভ্রমন কেন ঠেলাগাড়ি ভ্রমনের টুকরা কাহিনী ছেড়ে দিলেও বিশাল এক প্লট হয়ে বের হবে। তাতে নায়ক থাকবে, নাইকা থাকবে, নাইকার ছোট বোন থাকবে, ভিলেন থাকবে, চামভুম চামভুম নাচ থাকবে, বৃষ্টি সীন থাকবে, ভিলেনের দুষ্টামি থাকবে, তারপর ইয়া ঢিশুম ঢাশুমও থাকবে।

প্লট বানানি আগে সমস্যা আছিলো, এখনকার যুগে এইটা কোনো পিরোবলেম হইলো?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনি কি এই "গল্প প্লট যন্তর" বেচার জন্য কমিশন পাবেন নাকি? চিন্তিত

তবে এইরকম যন্তর থাকলে মন্দ হইত না। সবার আগে আমি কিনতাম। তাইলে আর প্লটের অভাবে ভুগতে হইত না মন খারাপ

আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, রায়হানকে যেটা বলসিলাম (বিয়া করলে প্লটের অভাবে লেখা বন্ধ হবে- এমনটা আর হবে না), আপনার বেলায় কাজে দিসে সেইটা চোখ টিপি


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মহামান্য ধূগোদা চিন্তায় আছেন। তার চিন্তা দূরীকরণে কারো শালী নাজিল হোক। আমিন।

তানবীরা এর ছবি

একটা সগীরউদ্দিনের সাথে পান্থের পার্থক্য হইলো সগীরউদ্দিন মাথায় ব্যাঙ পড়াতেই ক্ষ্যান্ত থাকে আর পান্থ সেটা কোথা থেকে আসলো, জোসনা রাতে কেনো আমার মাথায় পড়ল, কেনো স্যার আইজাক নিউটনের মাথায় পড়লো না, সেদিন আমি কোন কোম্পানীর শ্যাম্পু কন্ডিশনার ইউজ করেছিলাম, সেইজন্যই ব্যাঙ আমার মস্তিকে ঝম্ফ দিলো ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে একটি ব্লগ লিখে চোখ টিপি চোখ টিপি

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হাহাহাহা।
আমি ব্লগ লেখার জন্য বেঁচে থাকতে চাই। হাসি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

রকমারি অভিজ্ঞতা ছাড়া ভালো কিছু লেখা যায় না, বিশ্বাসই করি না। বেশুমার উদাহরণ দেয়া যেতে পারে এই প্রসঙ্গে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আমিও বিশ্বাস করি সব অভিজ্ঞতা নিজের হতে হবে এমন কোনো কথা নাই। তবে আমার ধারণা অভিজ্ঞতার একটা আলাদা জোর নিশ্চয় আছে।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হুম। আমার তো ধারণা, এই লেখাটাই আসলে পান্থ'র অভিজ্ঞতা থেকে না। এটাও ভাবনাতেই বানানো। তাই না পান্থ? হাসি
জবাব দিও আমার সরল জিজ্ঞাসার।
আর, লেখা অনেক ভালো হইসে। দেঁতো হাসি

------------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

কী কমু। এইসব অভিজ্ঞতা নাই বলেই তো ব্লগে এসে কান্নাকাটি করতেছি।
অন্যের অভিজ্ঞতার কথা শুনে আমার ভাবনা মিলিয়ে লেখাটা দাঁড় করিয়েছি।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

রেস্টৃক্টেড কমেন্ট ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হ... অপচয়ের কোনো মানে নাই... আমারে দিয়া যাবি... আরিফ ভাইরেও দিস...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

আমি আবার ওইসব খাই না চোখ টিপি

-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ল্যাও ঠ্যালা! এইখানে আবার আমারে নিয়া টানাটানি ক্যান? অ্যাঁ
কী যে অপরাধ করসিলাম "মদ খাওয়ার তরিকা" লেইখা! চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

এইবার বস্ "ইমো দেওয়ার তরিকা" নিয়ে সেই খেলাপী পোস্ট-টা লেখেন! দেঁতো হাসি


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।