সকালবেলা একটি বিশ্রী বিপদে পড়ে গেলাম। অবশ্য একে ঠিক বিপদ বলা যায় না। উটকো ঝামেলা বলাই শ্রেয়। বিপদ হোক কিংবা উটকো ঝামেলা হোক, এ ধরনের ঝামেলা পারতপক্ষে আমি এড়িয়ে চলি।
ছুটির দিনের সকাল বলে অন্যদিনের মতো অতোটা তাড়া নাই। নাকে মুখে গুঁজে দৌঁড়ানো নাই। নাস্তা করে একটু বের হয়েছি চা পান করবো বলে। মোড়ের পরিচিত চায়ের দোকান। ছুটির দিনেই আসা হয় শুধু। সে সময়টা চা খেতে খেতে নানা জনের নানা বিষয়ে দেয়া মতামত উপভোগ করি। আজকেও তাই করছিলাম। কিন্তু অনুরোধটা আমার কাছে আসবে ভাবিনি। চায়ের দোকানদার চাচা হঠাৎ-ই বলে উঠলেন, 'ভাতিজা তুমি না পত্রিকায় গল্প-কবিতা লিখো, জসিমের গল্পটা তুমিই না হয় লিখে দাও।'
নিজের গল্পই লিখতে পারি না। আবার জসিমের গল্প! তবে দোকানদার চাচার অনুরোধ ফেলা গেলো না কিছুতেই। অনুরোধের ঢেঁকি গিলে গাঁট মেরে শুনতে লাগলাম জসিমের গল্পটি।
এ ধরনের গল্প কিংবা কবিতা লিখে দেয়ার ফরমায়েশ জীবনে অনেক পেয়েছি। বন্ধুদের কেউ হয়তো ছ্যাঁকা খেয়েছে। নে, লেখ এইবার ওকে পচানোর গল্প। স্কুলে প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে কবিতা লিখে দেয়ার বিনিময়ে কত যে গিফট পেয়েছি, কতজনকে দিয়ে যে বাবার পকেট মারিং করিয়েছি! এসব গল্প থাক। বরং জসিমের গল্প শুনি।
জসিমের বয়স কত, তা চেহারা দেখে আন্দাজ করা মুশকিল। তবে বয়সের আড়ালে একটা অন্য ধরনের সারল্য লুকিয়ে আছে। এখন সেখানে বিষাদে ভরা। দেখতে অবশ্য একটা ফটোগ্রাফিক মজা আছে। আমি নিশ্চিত, মুস্তাফিজ ভাইয়ের মতো ফটোগ্রাফার এরকম বিষাদমাখা মুখ দেখলে সাথে সাথে ক্লিক করবেন। ছবির ক্যাপশন দিবেন, বিষন্ন বালক। জসিমের দিকে আমি আগ্রহ নিয়ে তাকাই। সে কিছুটা আড়ষ্ট হয়। গল্পটি বলতে সে আসলে অনীহা বোধ করছে, বুঝি। কিন্তু দোকানদার চাচার ধমক খেয়ে বলতে শুরু করে।
জসিম চাকরি করতো গার্মেন্টস-এ। মিরপুরে। ওয়ার্কার পদে। বেতন মাসে ১৭০০ টাকা। একই গার্মেন্টসে চাকরি করতো জোহরা। জোহরাও ওয়ার্কার পদে কাজ করতো। সেখানেই জোহরাকে পছন্দ হয়। জোহরাকে আমি দেখেনি। জসিমের ভাষ্যমতে, নায়িকা শাবনুরের মতো জোহরার চেহারা। টানা চোখ। দুধে আলতা গতরের রঙ। জসিম বলে, আপনেরা সর্ষে ক্ষেত দেখেছেন, মাঠের পর মাঠ সর্ষে ফুল যেমন দেখায়, তেমন রূপের বাহার জোহরার অঙ্গজুড়ে। এ সবই জসিমের কথা- জোহরার রূপ নিয়ে। তবে জোহরার ভরা যৌবনের কথাটা অবশ্য জসিম এড়িয়ে যায়। দোকানদার চাচা এ সময়ে ফোঁড়ন কাটেন, 'কীরে জসিম, জোহরার ভরা যৌবনের কথা যে কিছুই বললি না। ওকে দেখলে যে তোর কামনা বেড়ে যেতো, কাজ ফাঁকি দিয়ে বাথরুমে যেতে হতো, এসব বাদ দিচ্ছিস ক্যান। এগুলোও তো গল্পে লাগবো।'
জসিম অবশ্য দোকানদার চাচার কথা গায়ে মাখে না। আপন মনে বলে যায়। প্রতিদিনই জোহরার সাথে দেখা হতো। চোখে চোখে কথা হতো। কিন্তু একদিনও বলতে পারিনি, মনের কথা। জোহরা ঠিকই বুঝতো এটা। তা টের পেতাম আমি। আমার তাকানো দেখে জোহরার গাল অনেক সময় লাল হয়ে যেতে দেখেছি। যদিও আমি মুখ ফুটে জোহরাকে বলার সাহস করিনি কখনো। আমার চেয়ে বেতন বেশি, উঁচু পদে কাজ করে অফিসের এমন অনেকেই জোহরাকে পছন্দ করে। জোহরার অনেক ভুলক্রুটি মাফ করে দেয়। আমরা ওই একই ভুল করলে জুটতো গালি, কখনো কখনো জরিমানাও। জোহরা এমন আস্কারা পেয়ে আরো বেশি ভুল করতো। কাজে তেমন মন দিতো না। এ কারণেই একদিন সেলাই মেশিনের সুঁই এফোড়-ওফোড় করে দিলো জোহরার বুড়ো আঙ্গুলের পাশের আঙ্গুল। গলগল করে রক্ত পড়ে মেঝে ভিজিয়ে দেয়। সবাই জোহরাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়। জোহরা অমন রক্ত পড়া আর চাপা চিৎকার দেখে আমার যে কেমন লাগছিলো! পড়াশোনায় ভালো ছিলাম না। বলতে কি স্কুলে যাওয়ার বয়সেই বাবার সাথে মানুষের বাড়ি বাড়ি কামলা বেঁচতে যেতে হয়েছে আমাকে। জোহরার অমন রক্ত পড়া আর চিৎকার দেখে আল্লাহকে বারে বারে বলতেছিলাম ইশ! আমি যদি ডাক্তার হতাম। তাহলে আজকে জোহরার এই অবস্থা কি সহজেই ভালো করে দিতে পারতাম!
জোহরার ওই অবস্থা দেখে মোটেই ভালো লাগছিলো না। চুপে এক ফাঁকে গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে এসেছিলাম। সেদিন আমার সারাদিনের বেতনই কাটা যায়। সাথে সুপারভাইজারের গালমন্দসহ জুটলো একটা থাপ্পর। জোহরার জন্যই মার খেলাম, এই ভেবে মনে মনে সুপারভাইজারকে মাফ করে দিলাম।
জোহরা কাজে আসে না। তাকে না দেখে আমার সারাদিন যেতেই চায় না। কেমন আনচান করে মন। পিএম স্যারের মেজাজও কেমন খারাপ যাচ্ছে কয়েকদিন। জোহরার আশেপাশে যারা কাজ করে, তাদের অহেতুক বকাঝকা করে যান। পিএম স্যারের বকা খেয়ে মেয়েরা জোহরাকে অভিশাপ দেয়, 'মর, মুখপুড়ি বলে।'
আজ সাতদিন। জোহরা কাজে আসে না। কে যেন বলে জোহরার আঙ্গুলে ইনফেকশন হয়েছে। ভালো না হলে আঙ্গুল থেকে ইনফেকশন হাতে যাবে। একসময় হাতও কেটে ফেলে দিতে হবে। আমাদের গ্রামের রহিমের বাবার এমন দেখেছি। জোহরারও কি তাই হবে? ভাবতেই কেমন ভয় লাগে আমার। ঠিকানা নিয়ে ভয়ে ভয়ে যাই দেখে আসতে। একটু খুঁজতেই পেয়ে যাই জোহরাদের বাসা।
জোহরা বাসাতেই ছিল। বস্তির বেশ পেছন দিকেই ওদের ঘর। খুঁজতে একটু সমস্যা হলেও পেয়ে যাই। দেখি ঘরের চৌকাঠের ওপর বসে আছে। একটা আঙ্গুলে ব্যান্ডেজ বাঁধা। ব্যান্ডেজের কাপড় ময়লা হয়ে আছে। জোহরা আমাকে দেখেই কেমন লজ্জিত হয়।
-আরে জসিম ভাই যে!
-এখন তোমার কী অবস্থা? আঙ্গুল সারতে আর কতদিন লাগবে?
-ডাক্তার ১০ দিন পর যাইতে কইছে। আজকে সাত দিন। আর তিন দিন পর যামু।
-ইনফেকশন হইছে শুনলাম
-না, কে কইছে? আপনি আমাকে নিয়া এতো চিন্তা করেন ক্যান?
জোহরার এ কথার উত্তর আমার কাছে নাই। আমি চুপ করে বসে থাকি। আমার মুখে কোনো কথা জোটে না। জোহরাই বলে, 'আপনি আমারে পছন্দ করেন জানি। কিন্তু আমি আপনাকে পছন্দ করি না।'
জোহরা আমাকে তোমার পছন্দ করতে হবে এমন নয়। আমি শুধু শুধু তোমাকে ভালোবেসে যেতে চাই। এটাতে তুমি না করো না।
জোহরা হঠাৎ-ই খলবল করে হেসে উঠে। আমার কী যে ভালো লাগে এই হাসি দেখে!
আরো সপ্তাহখানেক পরে জোহরা কাজে আসে। সেদিন আমার অসম্ভব ভালো লাগে। পাখি হয়ে উড়তে ইচ্ছে করে। ডলফিনের মতো সাঁতার কাটতে মন চায়। আপনি লেখক মানুষ, আপনাদের মতো করে গুছিয়ে বলতে পারবো না। তবে সত্যি আমার যে কী ভালো লেগেছিল আপনাকে তা বলে বোঝাতে পারবো না।
আমি এমনিতে ঘুম পাগল। তাই নাইট হবে শুনলে মেজাজ খারাপ হয়। নাইটের দিন মালিকগো যে মনে মনে আমি কত অভিশাপ দিই তা একমাত্র ওপর আল্লাহ জানেন। তবে আজকে নাইট করতে হবে শুনে একটুও খারাপ লাগলো না। আজকে যে জোহরারও নাইট পড়েছে। সারারাত জোহরার পাশে থাকা যাবে, এই ভাবে ভাবতেই মন কেমন করে উঠলো। কতদিন যে জোহরা আর আমি এক বিছানায় শুয়ে আছি, এমন স্বপ্ন দেখেছি! এক বিছানায় না হোক, এক সাথে বসে কাজ করছি, তাই ভেবে আমি পুলকিত বোধ করি।
ঘটনাটা ঘটে বেশ রাতের দিকে। জোহরার মেশিনের সুঁই ভেঙ্গে যায়। সুঁই আনতে জোহরা স্টোর রুমে যায়। স্টোরের দায়িত্ব আমিরুল ভাইয়ের। খুবই বদখত লোক সে। জোহরা একা একা যাচ্ছে স্টোরে। আর ওখানে আছে আমিরুল। মনের ভেতর কেমন কু ডেকে উঠে। চুপে চুপে আমিও জোহরার পেছন পেছন যাই।
জোহরা গিয়ে স্টোর রুমের সামনে দাঁড়ায়। আমিরুল কেমন বদ বদ মুখে এগিয়ে আসে। এদিক-ওদিক একবার চোরা চোখে দেখে নেয়। এরপর কি দরকার তা জোহরার কাছে জানতে চায়। জোহরা সুঁইয়ের কথা বলে। আমিরুল আর একটু ঝুঁকে জোহরা আরো কাছে আসে। বলে, তোমার সুঁই একটা কেন, পাঁচটা দিচ্ছি, এইবলেই জোহরার বুক চেপে ধরে। আড়াল থেকে দেখছিলাম। কিন্তু জোহরার বুক চেপে ধরা দেখে আর সহ্য করতে পারি নাই। দেয়ালে একটা লম্বাটে কাঠ ঠেস দেয়া ছিল। তুলে নিয়ে আমিরুলের মাথায় বাড়ি দিই।
আমিরুলের মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। রক্ত দেখে ভয় পেয়ে দৌঁড় দিই। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় আর বের হতে পারি না। গেটের দারোয়ান আমাকে ধরে ফেলে। অফিসে বিচার বসে আমিরুলের মাথা ফাটানো নিয়ে। জোহরা আমিরুলের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই করে না। বিচারে আমার চাকরি যায়। বেতনের সব টাকা যায় জরিমানা হিসেবে। তবে স্যার, চাকরি যাওয়াতে আমার কোনো আফসোস নাই। নিজের কাছে বলতে পারবো, জোহরার ইজ্জত বাঁচাতে আমার যা করার ছিল, করেছি।
জসিমের গল্প এই-ই। একটানা বলে সে খানিকটা হাঁপিয়ে উঠে। এক গ্লাস পানি ঢকঢক করে খায়। আমি তার কাঁধে হাত চাপড়িয়ে বলি, জসিম তুমি নিজের কাছে সৎ আছো, এটাই তোমার বড় পাওয়া। সবার কাছে এমন আনন্দময় প্রাপ্তি থাকে না। তোমার আছে, তুমি সত্যিকারের প্রেমিক।
আমার এ কথায় জসিম আশ্বস্থ হয় কী'না জানি না। তবে আমার দিকে করুণ চোখে তাকায়। কুণ্ঠিত কণ্ঠে বলে, স্যার আমার চাকরি নাই, বাড়িতে আজকে চাল-ডাল নিতে না পারলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমি আর আম্মা না খেয়ে থাকতে পারবো। তবে আমার একটি ছোট্ট বোন আছে, তিন বছর বয়স। ও না খেয়ে থাকলে আমার বুকটা যে ভেঙ্গে যাবে!
মন্তব্য
ভালো লাগলো.. নির্মম সত্যি... ক্ষুধার কারনেই জোহরারা হয় পতিতা আর জসিম হয় ছিনতাইকারী।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
খুব কষ্ট লাগলো যে প্রেমিক জসিম ভাই অনেক সাহসী কাজ করেছেন।
কাজ আপনি পাবেন।
অন্য ব্লগারদের জন্য বলছি যদি কেও পারেন তো দিন না জসিম এর মত হতভাগা কে একটা চাকরি।
এই ব্লগে এইরকম লোক অনেক আছেন।
আমরা খালি মুখে বলি কিনন্তু কাজে গিয়া কারো কোনো খবর নাই।
ক্ষুধার কষ্ট নিয়া আর কয়দিন থাকবে জসিম ও তার পরিবার???
ছোটো বোনটার দিকে চেয়েই তাকে হয়তো কোনো একদিন কোনো অন্ধকারের পথ বেছে নিতে হবে।
তাই আজ যদি আমার হাতে কোনো ক্ষমতা থাকতো তো মন থেকে চেস্টা করতাম।
ভাই টেনশন নিয়েন না । এটা একটা গল্প মাত্র , সত্যি ঘটনা নয় ।
পুরা ডিফেনসিভ রোল
............................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
হ, ডরাইসি ।
পুরোটা পড়ে, ক্যাটেগরি আবার চেক করে শিওর হলাম, যে এটা গল্প।
দারুণ হয়েছে, পান্থ।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এটা গল্পই শিমুল আপা। ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
ভাল লাগল,পান্থ
ধন্যবাদ অনিকেত দা।
গল্পটা কেমন যেন লাগল!
(মহসীন রেজা)
দারুন লিখেছেন পান্থ !!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
গল্পটা ভালো , তবে উপস্থাপনা আরো শক্ত হওয়া চাই ।
চরিত্রগুলোতে আরো জোর দেয়ার দরকার ছিল ।
.....
যদিও গুরুত্বপূর্ণ নয় , তবু তথ্যগত ত্রুটিও গল্পে কাম্য নয় । গার্মেন্টস থেকে মন খারাপ হলেই একজন শ্রমিক যে কোন সময় বেরিয়ে যেতে পারে না , আর চাইলেও নিজের মেশিন ছেড়ে "চুপি চুপি " স্টোরে উঁকি দেয়া যায় না ।
এই জায়গাগুলোতে আরো প্যাচওয়ার্ক দরকার ।
জেবতিক ভাই, সত্যিকার অর্থেই গল্পটি গেল শুক্রবার মিরপুর ২-এ কাঁচাবাজারের পাশে চায়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে পাওয়া। তারপর বাসায় ফিরে চটজলদি লিখে ফেলা। লেখার পর মনে হলো, একবার কাজিপাড়ায় দুলাভাইয়ের গার্মেন্টস থেকে ঘুরে এসে বিষয়গুলো ঠিকঠাক আছে কী'না তা চেক করা, দরকার হলে দুলাভাইয়ের সাথে কথা বলা। কিন্তু নিজের আলসেমির কারণেই তা করতে পারিনি। তারপর আমার আর একটা স্বভাব এতে যোগ হয়েছে, কোনো কিছু লেখা হলে কালবিলম্ব না করে ব্লগে দেয়া। সে কারণেই এই ত্রুটিগুলো রয়ে গেছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সজাগ থাকার চেষ্টা করবো।
গল্প সুন্দর, আবেগে যথেষ্ট কাছে এসে ছুঁয়ে যাওয়া। তোমার স্টাইল তো বরাবরই চার্মিং এবং ইনভলভিং, কোনো সন্দেহ নাই।
তবে, দুইটা কনস্ট্রাকটিভ পয়েন্ট বলি পান্থ-
১. গল্পের মূল অংশটা যেহেতু জসিম-এর জবানিতে, সেই হিসেবে কিন্তু তার বর্ণনা এবং ভাবনা অনেক বেশি গোছানো আর সফিস্টিকেটেড-পশ হয়ে গ্যাছে। গল্পকথকের নিজ জবানির বর্ণনা হ'লে এটা মানিয়ে যেতো বেশ। জসিম-এর ডিরেক্ট-স্পিচ ন্যারেশন এমন ওয়েল-আর্টিকুলেটেড হওয়ার কথা না বোধ হয়। এতে ক'রে প্রোফাইলিং-এ মিস-ম্যাচ মনে হয়েছে একটু। [অন্য কারো কাছে এটা লাগেনি কি না জানি না, তবে আমার কাছে এটা মনে হয়েছে। অবশ্য এটা যদি সচেতনভাবে কোনো একটা অ্যালিয়েনেশন সৃষ্টির জন্য ক'রে থাকো, তাহ'লে হয়তো একদিক থেকে ঠিকই আছে।]
২. আর, এটাও 'বস' হিসেবে বলছি না (), সহ-ব্লগার হিসেবেই অনুরোধ করছি- প্লিজ বানানের ব্যাপারে আর একটু সচেতন হও।
[ পার্বেইচ্চ্যা রে! তওবা কইরা বানান-বুলডা চাড়! ]
-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
০১.
ঠিক বলেছেন। লেখার সময় আমিও এটা ভেবেছিলাম। কিন্তু কি আর করবো, আমি যে জসিমের ভাষাতে অভ্যস্ত না। লিখতে গুবলেট পাকিয়ে ফেলার সম্ভাবনা ছিল ষোল আনা। তাই এড়িয়ে গেছি। আসলে আমার দরকার ছিল, জসিমের লাইফস্টাইলটা একটু পর্যবেক্ষণ করা, স্টাডি করা। দুঃখিত, আমি সেটা না করেই (অ)গল্প লিখতে গেছি। এ দায়ভার একান্তই আমার।
০২.
জো হুকুম, আলমপনা।
সুন্দর গল্প। তবে-
বস, সত্যি, জসিম এ ভাষায় কথা বলে না। তবে নিশ্চয়ই তারও মনে এ ধরনের অনুভূতির জন্ম নেয়। কিন্তু তার ভাষায় বলতে না পারা আমারই ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতা স্বীকার করি।
আমি তো ভেবেছিলাম সত্যি সবার কমেন্টস পড়ে বুঝলাম এটা গল্প হাহাহাহা
ভালো লিখেছেন, মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল পড়ে গল্প দেখে মন খারাপ কমে গেল
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
যাক বাবা, কমেছে তাহলে!
- ফেসবুকে পান্থ একবার এক বালিকার বড় বোনের নিকট দাবড়ানি খেয়ে সিধা হয়ে গেছে। খালি প্রেমের গল্প ল্যাখে এখন।
শেষের অংশগুলোর কারণেই বোধহয় পান্থ'র গল্পগুলো বেশ ভালো লাগে। এমন একটা জায়গায় নিয়ে যায় যে খুব ভালো করে লাইন বা কনটেক্সট খেয়াল না করলে বুঝাই দায় যে এটা গল্প না বাস্তব থেকে তুলে আনা।
গ্রেট জব বস।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ফেসবুকের কাহিনী এইখানে বলে পান্থ'র মানহানি করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
আজই একখানা ১ কোটির টাকার মানহানি মামলার কেস ফাইল করবো ভাবছি। সচলের উকিল-মোক্তারদের সাহায্য চাই।
আরিফ ভাইয়া সাইফুল আর অতন্দ্রর
কমেন্টগুলো ফলো করার অনুরোধ জানাই পান্থকে
গল্প ভালো লেগেছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ব্যাপারটা শুধু কিন্তু মুখের ডেলিভারির প্রমিত-কলোকুয়্যাল-এর না, ভাবনারও কিন্তু ভাষাসূত্র আছে, তারও অর্গানাইজেশনের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় আছে। ওই গভীরের পয়েন্ট-টা বুঝতে পেরেছো আশা করি।
কিন্তু অমন ফার্স্ট ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে ব'সে কনফেশন দেয়ার ফ্যাশনে "এর দায়ভার আমার" টাইপের কথা আর বলতে হবে না তোমার।
আর, মানহানির ব্যাপারে সত্যিই কিছু করতে চাইলে, আমার সাথে যোগাযোগ করো, তবে, টু বি অনেস্ট- এই কেস জেতার সম্ভাবনা কম।
-----------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
নতুন মন্তব্য করুন