কলেজে পড়ার সময় একটা কৌতুক শুনেছিলাম। কৌতুকটি এরকম:
স্কুলে কয়েক ছেলে এসে তাদের ক্লাসের এক মেয়েকে বলছে, “বল তো বুকে গোল ও দুইটা কী?”
ছেলেদের এ ধরনের জিজ্ঞাসায় মেয়েটিতো প্রচন্ড বিব্রত। মেয়েটির এমন বিব্রতভঙ্গি দেখে ছেলেরা হেসে কুটি কুটি।
“আরে গাধা, বুক বানান হলো বি ডাবল ও কে। BOOK - এ গোল দুইটা হলো “O”।
সামরান হুদা’র গল্পগ্রন্থ ‘তিতাস কোনো নদীর নাম নয়’ পড়তে পড়তে ম্যালাদিন আগে শোনা এই কৌতুকটির কথা মনে পড়ে গেল। চলতে-ফিরতে, দৈনন্দিন যাপনে মেয়েরা যে কত বিব্রতকর পরিস্থিতি, পারিবারিক আচার, সামাজিক বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়, তার আখ্যান দেখি পুরো বইটিতে। বইটির মাধ্যমে সামরান পাঠকদের সামনে মেয়েদের মেয়ে হয়ে উঠার বয়ান হাজির করেছেন নিজস্ব কথনভঙ্গিতে। বলে রাখি, এই কথনভঙ্গিটি বেশ সুরেলা। এক ধরনের গীতলতার স্পর্শ পাওয়া যায়। তাই পড়তে পড়তে কখনো হোঁচট খেতে হয় না আমাদের।
০২.
সিমোন দ্য বুভেয়ার বলেছিলেন, “নারী হয়ে কেউ জন্মায় না, কেউ কেউ নারী হয়ে ওঠে।” আসলেই তাই। সবাই জন্মায় তো শিশু হয়েই। তারপর তার লিঙ্গ নির্ধারিত হয়। সামাজিক আচার, রীতি আর অনুশাসন বলে দেয়, তুমি মেয়ে আর তুমি হলে ছেলে-তুমি সর্ব্বেসেরা, মেয়েদের প্রতিপালক, তোমার জন্য সব দ্বার খোলা। অন্যদিকে, আমরা মেয়েটিকে টিপ দিয়ে, ঝুঁটি বেঁধে, হাতে পুতুল তুলে দিয়ে, বাইরে ঘোরা বন্ধ করে বলি, তুমি মেয়ে। তুমি এই এই কোড অব কন্ডাক্টের জালে বন্দি। এই যে মেয়েকে মেয়ে করে নির্মাণ, সামরানের গল্পগুলোতে এর ছবি দেখি। মুলত লেখক সজ্ঞানেই এই ছবি হাজির করেছেন আমাদের সামনে। আর বলছেন, দেখো, এই আমাদের সমাজ। এখানে এইভাবে একটা দেবশিশুকে মেয়ে করে তোলা হয়। তার জগৎ এইভাবে ক্রমশ সংকুচিত করে তোলা হয়। তাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয় স্বামী নামক প্রভুটির সেবা করার জন্য। স্বামীসেবা আর সন্তান উৎপাদন, পালন ছাড়া তার আর কোনো পরিচয় নেই। কিংবা থাকতে নেই।
০৩.
“স্বীকার করি যে, শারীরিক দুর্ব্বলতাবশতঃ নারীজাতি অপর জাতির সাহায্যে নির্ভর করে। তাই বলিয়া পুরুষ “প্রভু” হতে পারে না। কারণ জগতে দেখিতে পাই, প্রত্যেকেই প্রত্যেকের নিকট কোন না কোন প্রকার সাহায্য প্রার্থনা করে, যেন একে অপরের সাহায্য বাতীত চলতে পারে না। তরুলতা যেমন বৃষ্টির সাহায্য-প্রার্থী, মেঘও সেইরূপ তরুর সাহায্য চায়। জলবৃদ্ধির নিমিত্ত নদী বর্ষার সাহায্য পায়, মেঘ আবার নদীর নিকট ঋণী। তবে তরঙ্গিনী কাদম্বিনীর “স্বামী”, না কাদম্বিনী তরঙ্গিনীর “স্বামী”? এ স্বাভাবিক নিয়মের কথা ছাড়িয়া কেবল সামাজিক নিয়মে দৃষ্টিপাত করিলেও আমরা তাহাই দেখি।
কেহ সুত্রধর, কেউ তন্তুবায় ইত্যাদি। একজন ব্যারিষ্টার ডাক্তারের সাহায্য-প্রার্থী, আবার ডাক্তারও ব্যারিষ্টারের সাহায্য চাহেন। তবে ডাক্তারকে ব্যারিষ্টারের স্বামী বলিব, না ব্যারিষ্টার ডাক্তারের স্বামী? যদি ইহাদের কেহ কাহাকে “স্বামী’ বলিয়া স্বীকার না করেন, তবে শ্রীমতিগণ জীবনের চিরসঙ্গী শ্রীমানদিগকে “স্বামী’ ভাবিবেন কেন?”
বেগম রোকেয়া সেকালে যা প্রশ্নচিহ্নের মধ্যে রেখে দিয়েছিলেন তার সমাধা আজো মেলেনি। মেয়েরা আজো নিজের সাধ-আহ্লাদ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা জলাঞ্জলি দিয়ে পতিগৃহে গমন করেন স্বামীসেবা করার জন্য। কোনো বিপথগামী স্বামীর সুমতি ফিরিয়ে আনার জন্য। যেমনটি আমরা ‘ধরা যাক মেয়েটির নাম লুৎফা’ গল্পে দেখি। গল্পে শ্রীহট্টের অপরূপ রূপবতী মেয়ে লুৎফাকে পড়াশুনার পাঠ না চুকিয়ে স্বামীগৃহে যেতে দেখি। যে স্বামীকে আবার বিবাহ দেয়া হয়েছে যাতে কুপথ থেকে সুমতি ফেরে, ঘরে মন বসে। লুৎফা’র আগমনে অবশ্য স্বামীর সুমতি ঘটে না। বরং স্বামীর সুমতি না ফেরাতে পারায় শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কাছে নাজেহাল হতে, কটুকথা হজম করতে দেখি।
এরমধ্যে আমরা অবশ্য লুৎফাকে মা হতেও দেখি। আর ‘স্ত্রীর পত্রে’র মৃনালের মতো লুৎফাকেও দেখি সন্তানের মাঝে মুক্তির স্বাদ খুঁজে পেতে। স্বামী বেচারার জন্য এটাও স্থায়ী হয় না। তার বেখেয়ালি জীবন লুৎফাকে প্রতিনিয়ত কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। এ থেকে সে মুক্তির আশায় সে আল্লাহর দরবারে মুক্তি খোঁজে। এজন্য লুৎফা সারাক্ষণ জায়নামাজে বসে থাকে। কিন্তু এতে করে তার কপালে জোটে জ্বীন আছরের অপবাদ। লেখক হয়তো এর মাধ্যমে নারীদের নিষ্পেষিত হওয়ার আরেকটি নজির হাজির করেছেন।
আমাদের পুরুষশাসিত সমাজে মেয়েরা সুন্দরী হলেও যে তার পরিবার বিপদগ্রস্থ মনে করে সেটাও দেখি এ গল্পে। এ কারণে লুৎফার বাবা লুৎফাকে বিয়ে দিয়ে বাঁচে। আর জেগে আছ বাংলাদেশ গল্পে দেখি গল্প কথক টিনেজ মেয়েটির সব ভাবনা বাবাকে আগে থেকেই ভেবে রাখতে। যেন তার নিজস্ব কোনো ভাবনা থাকতে নেই। তার কাজ শুধু বাবার কথামতো চলা, আর ভাইয়ার জন্য উলের সোয়েটার বোনা।
০৪.
নারীরা যে কত অনুশাসনে বন্দি, তা দেখতে পাই ‘আমার পিছু ছাড়ে না’ গল্পে। লেখক চমৎকারভাবে অনুশাসনের প্রতীক হিসেবে ‘ভুত’-কে উপস্থাপন করেছেন। নিচের উদ্বৃতিতে আমরা তা স্পষ্টই দেখতে পাবো-
ননীর বাপ বলে, ‘আফাজান, রাইতে একদম ঘরের তেন বাইর হইয়েন না। আমি রোজ রাইতে তাইনে গো দেহি।’ আমি ননীর বাপকে জিজ্ঞেস করি, ‘বুড়ো মিঞা, তোমাকে তারা কিছু বলে না।’ ননীর বাপ আমাদের বুড়ো দারোয়ান উত্তর দেয়, ‘আমি যে দোয়া পইড়া শরীরে ফুঁক দিয়া শরীর বন্ধ কইরা রাখি। তাই হে’রা আমারে কিসু করতে পারে না। নইলে তো কুন কালেই আমারে শ্যাষ কইরা ফ্যালাইত।’
আমাদের বিদ্যমান সমাজ-কাঠামো ও তার অনুশাসন যে পুরুষকে নানা কানুন আর মিছে অহং-এর মাধ্যমে রক্ষা করছে, তাই-ই দেখি এ গল্পে। এই সমাজ তাই বুড়ো দারোয়ানকে শরীর বন্ধের মন্ত্র দেয়, যাতে তার গায়ে কোনো আঁচড় না পড়ে। আর কথক মেয়েটিকে দেয়, ঘরে বন্দি থাকার উপদেশ, রাতের জোসনালোক তার জন্য নিষিদ্ধ।
০৫.
আমি সামরান ওরফে শ্যাজাদি’র লেখার খুব বেশিদিনের পাঠক নই। ব্লগে কিংবা অন্য কোথাও তার যে লেখাগুলো এর আগে পড়েছি, সবই শৈশব আর কৈশোর ঘিরে। তিনি নিজেই বলেছেন, আমি বেঁচে থাকি শৈশব আর কৈশোরে। গল্পগ্রন্থের সব গল্পেই তিনি তার শৈশব ও কৈশোরকে ছুঁ’য়ে আসার মাধ্যমে নিজের কালকেই তুলে এনেছেন। বইয়ের দ্বিতীয় গল্প ‘বাড়ি ফেরার কদম গাছ’ গল্পে পুরোটা জুড়ে আছে একটি মেয়ের বেড়ে ওঠার ফিরিস্তি। আর নিজস্ব শরীর সম্পর্কে জানা, সচেতন হওয়ার অনুভূতি তো আছেই। সবমিলিয়ে এ গল্প হয়ে উঠেছে মেয়ে নির্মাণের বিস্তৃত উপাখ্যান। অনুচ্ছ কণ্ঠে হলেও মেয়ে জন্মের প্রতিবন্ধকতাসমূহের বয়ান পাঠও মেলে গল্পটিতে।
বইয়ের শেষ গল্প ‘তিতাস কোনো নদীর নাম নয়’। নাম গল্পটিতে আমরা একজন কিশোরীর চোখ দিয়ে একটি অঞ্চলের সামাজিক পরিবর্তনের আখ্যান দেখি। দেখি কীভাবে আমাদের প্রাণের সুরগুলো বিলীন হয়ে সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে ধর্মীয় বিধিনিষেধ আর অনুশাসনের কঠিন দেয়াল। কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিনের খুচরো হাসি ঠাট্টাসমূহ, তারও ছবি দেখি এই গল্পটিতে।
০৬.
সামরান হুদা মানে আমাদের শ্যাজাদি, একটি মেয়ের বড় হবার সমস্ত ব্যথা, গোপন যত কথা তার পাঠকদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। আমরা পাঠক হিসেবেও তা খুবই ডিটেইল জানতে পারছি। তবে কিছুটা অতৃপ্তি যে থেকে যায় না, তা নয়। সামরানের গল্পে আমরা শুধু মেয়েদের ঝিনুকের মতো নিরবে সহে যেতেই দেখি। রবীন্দ্রনাথের মৃনাল, আশাপূর্ণা দেবীর সত্যবতী, মহাশ্বেতা দেবীর সুজাতাকে যেখানে আমরা সংগ্রাম করে যেতে দেখি, সাহস নিয়ে রুখে দাঁড়ানোর সংকল্প দেখি, সামরানের গল্পে তেমনটির দেখা মেলে না। তবে ঘটনার বর্ণনাকুশলতায় পাঠে এক ধরনের তৃপ্তির স্বাদ মেলে। সবমিলিয়ে প্রথম গল্পগ্রন্থের মাধ্যমে নিজের শক্তিমত্তার দারুণ প্রকাশ ঘটাতে পেরেছেন সামরান। প্রথম গল্পগ্রন্থেই তিনি নিজেকে চিনিয়ে দিলেন, আমি প্রতিষ্ঠা পেতেই এসেছি। বাংলা কথাসাহিত্যে সামরানের এই প্রতিষ্ঠার পথ প্রথম বই দিয়েই অনেকটা মজবুত করলেন বৈকি।
০৭.
হুম! একটা কথা বলা হয়নি- বইমেলায় শ্যাজাদি বইটিতে অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘দুই মলাটে তিতাস থাক, লেখাটুকু ‘পান্থ’ পাক। বলি কী, লেখাটুকু আমি সত্যি সত্যি পেয়েছি যেমন পাঠে, তেমনি অনুভবেও। আমার বিশ্বাস, যারাই বইটি পড়েছেন কিংবা পড়বেন, তারা ছোটগল্পের আস্বাদ পুরোপুরিই উপভোগ করবেন। আর বইটির প্রচ্ছদ সত্যিই অসাধারণ। প্রচ্ছদ করেছেন আব্দুস শাকুর। বইটির প্রকাশক শুদ্ধস্বর’রও ধন্যবাদ প্রাপ্য চমৎকার এই বইটি মেলায় আনার জন্য।
মন্তব্য
ক্রাচের কর্নেল পড়া শেষ - এবার মিশন "তিতাস কোন নদীর নাম নয়"
পড়া শেষ হলে রিভিউ পড়ে যাবো !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
পান্থ কি চামে চামে অফিসের কাজ সেরে গেলো?
নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারীময় রচনা।
বইটা পড়ি নাই এখনো... পড়ার তীব্র ইচ্ছা নিয়ে অপেক্ষায় আছি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দুরো মিয়া, আপনার দেখছি, বাঙালি স্বভাব পুরোটা পেয়েছেন! একটা মহৎ কাজকে অফিসের কাজ বলে গাল দিলেন।
পড়ে দেখেন বইখানা, তাইলে আপনেরও এমন করে লিখতে ইচ্ছে করবে।
সবাই কি সুন্দর বই পড়ে কি সুন্দর রিভিউ লিখে, আর আমরা শালা বই হাতেই পাই না!
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
সত্যি সবাই পড়ে কিন্তু ভাই আমি হাতে নিয়েও না পড়ে দিনগুজরাচ্ছি। সময় কোথায় সময় বইয়ে দেয়ার..............দুস শালা অ.............ফি.............স (পেটে ক্ষিদা......মনেরটারে ছিকায় তোলা)
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
বইখানা নিয়ে পড়তে হবে
বইটার জন্য অস্থিরতা জাগিয়ে দিলেন, পান্থ।
বইটাকে তুলে ধরার ধরণটা ভালো লাগলো খুব।
(ধরণ...ণ-ত্ব বিধান কি ঠিকঠাক আছে?)
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
শিমুলাপা, 'তুলে ধরার ধরণ' বলতে তো ভাবভঙ্গির (প্রকাশভঙ্গি) কথাই বুঝিয়েছেন, তাই না। সেটা যদি হয় তবে সেক্ষেত্রে সঠিক বানানটা হবে ধরন।
আর ব্যাকরণের নিয়মকানুন বিষয়ে আমি বিশেষ অজ্ঞ। তাই এনিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে লজ্জা দিবেন না।
আইচ্ছা।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বই পড়লেও এমন রিভিউ লেখা আমার হবে না। লেখককে ধন্যবাদ।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
পান্থদাকে সচলায়তনের অফিসিয়াল রিভিউয়ার বানানো যেতে পারে। সব সচলের বই পড়ে একটা করে রিভিউ লিখবেন
রিভিউয়ের জন্য একটা বইও দেয়নি কেউ আমাকে!
রিভিউয়ের জন্য বই দিক বা না দিক, আপনি তো আকতার ভাই, রণ'দার কাছ থেকে বই পাইসেন, আমারে তো কেউ কিছু দেয়নি
আগামী বইমেলায় আপনার বইয়ের রিভিউ লিখব একটা। বই দিয়েন
ভালই হয়েছে।
আর পান্থভাই, ও দুটো ও নয়, ওগুলো ভাওয়েল, আমরাও খ্যাক খ্যাক করে হেসেছি।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
হ, ভাওয়েল।
ভালো লিখেছিস পান্থ ।
সামরানের বইটা ভালো লেগেছে ।
সব কিছু না বলেও পান্থ কী চমৎকার রিভিউ লিখেন...
- আয়েশ করে আর নিজের ভাষার বই পড়ার সেই দিন নাই। পড়ার শখ জাগলে কাঠখোট্টা বৈদেশিক ভাষার দাঁত ভাঙা শব্দের বাহারী সম্ভার ছাড়া উপায় কই!
সচলায়তনে পড়া রিভিউ গুলো তাই মরুভূমিতে শান্ত একটা বাতাসের মতোন। এই রিভিউগুলোই চেটেপুটে খাই।
ফেসবুকে জনৈক ললনা কর্তৃক দাবড়ানি খাওয়া পার্থকে অনেক ধন্যবাদ সেরকম একটা রিভিউয়ের জন্য। এই রিভিউটা দাবড়ানি দেয়া বালিকাটা কোনোক্রমে পড়লে বুঝতো, সে দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা দিতে শিখলো না!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পান্থ জনৈক ললনা কর্তৃক দাবড়ানি খাইছিল নাকি!
প্রথম বইয়ে শ্যাজাদিকে এক বিরাট অভিনন্দন।।
তার লেখার আমি বরাবরই একনিষ্ঠ পাঠক। তবে এই বইটির গল্পগুলো পড়ে অনেকক্ষণ ঘোরবন্দী ছিলাম; আমার ধাতস্থ হতে সময় লেগেছে, কিন্তু মুগ্ধতা এখনো যায়নি।
অনেকদিন আগে সামহোয়ারিনে তার 'তিতাস কোনো নদীর নাম নয়' বড়গল্পটির কয়েকটি পর্ব বিচ্ছিন্নভাবে পড়েছিলাম। এখন একত্রে লেখাটি আবারো পড়ে খুব বেশী ভালো লাগলো। তবে যেনো এর সমাপ্তিটা যেনো হঠাৎ করেই টানা হয়েছে।...
বলতে দ্বিধা নেই 'লুৎফা একটি মেয়ের নাম' গল্পটিকে বইয়ের সবচেয়ে দুর্বল গল্প বলে মনে হয়েছে। আবার এই গল্পটির বেশ কয়েকটি প্যারা ভুল বশতঃ বার বার ছাপা হয়েছে।...
ধনবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
শ্যাজার অনুপস্থিতিতে আমিই জবাব দিই।
এই বই-এর সব লেখাই আমি ছাপার আগে পড়েছি। মোটামুটি প্রথম বা দ্বিতীয় পাঠক । তিতাসের সমাপ্তি আমার মনে হয়েছিল , যা ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। কখনই দ্রুত বলে মনে হয়নি। পড়ে যখন পড়েছি মনে হয়েছিল, এটা শেষ তো হবার নয়, তাই হয়ও নি, এই রকম একটা ব্যপার ছিল। আসলে এই গল্পটি প্রায় সমস্যাহীণ একটি গল্প।
লুৎফা আর জেগে আছে বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত দুর্বল বলে মনে হয়েছিল। আমি তা জানিয়েওছিলাম। পরে নিজের ভুল বুঝতে পারি পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পরে। বিশেষত লুৎফা মনে হয়েছিল ভীষণ জোরালো লেখা। অনুচ্চ স্বরে এমন চাবুক মারা যায় তা আমি কেন ঋত্বিক ঘটকও জানতেন না। খুবই জটিল এর স্ট্রাকচার এটির। গল্প কিসুই নেই প্রায়। কিন্তু স্ট্রাকচারই একসময় গল্প হয়ে উঠতে থাকে। দ্যেলুজের মত কিছু প্রশন আছে, স্ট্রাকচার অফ মেমরিস নিয়ে, যার উত্তর দিতে দিতে পাঠক বাধ্য হন গল্প তৈরি করতে। যে ভাবে পাঠককে এবং লেখককে লেখা যেভাবে ইনক্লুড করে, তুমিও লিখিও এমত কথায় -এসে মনে কে লিখছে এই লেখা? লেখক না পাঠক? এই গলপে মার্জিনের বাইরের টেকস্টগুলিই গল্প।
মুস্কিল হচ্চে সামরানের লেখা আমাদের বাতিল করার কোন ক্ষমতাই নেই, এমন কতগুলি বিষয় নিয়ে সে লিখছে, আমাদের কোন অধিকারই নেই তা খারাপ বা ভালো বলার। যাকে দুর্বল বলে মনে হচ্ছে তাও কতটা নছোড়বান্দা আর ভয়ানক তা টের পাওয়া যায় বেশ কিছুদিন পর। আমার অন্তত তাই মনে হয়েছে।
লুৎফার পুনরাবৃত্তি তার স্ট্রাকচারেরই অংশ। আমার কখনই বাড়তি বলে মনে হয়নি, মজা পেয়েছি। মনে আছে প্রুফ দেখার সময় কম্পোজিটার বারবার বলেছে, একই লাইন দু-তিনবার আছে, বাদ দিয়ে দিই? আমি হেসেছি, কষ্ট করে লিখেছে যখন থাক। বিপ্লব ভাই-এর হতাশাটা আমি ঠিক অনুধাবন করতে পারিনি, তবু বলি, এটা ছাপার ভুল নয়। যদি এক লেখা পড়ছি বলে বাদ দিয়ে থাকেন, তাহলে ভুল করেছেন আপনিই, লেখক নন।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
হুম।
ঝিণুক নীরবে সহো, ঝিণুক নীরবে সয়ে যাও।
ভিতরে বিষের বালি-
মুখ বুজে মুক্তো ফলাও।
(- আবুল হাসান)
অন্যবিধ মুক্তো ফলানোর জন্য পান্থ আর শ্যাজাদি'- দু'জনের জন্যই
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
সচলায়তন সমালোচক সংঘ (সসস) প্রতিষ্ঠা করার সময় হয়ে এসেছে
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
(ই)শশশ!
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
পান্থর রিভিউয়ে জাঝা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
শ্যাজার এই বইটি পড়েছি।বইয়ের এই নারী আমি--আমার চারপাশের এমনি আরো অসংখ্য নারী।
পান্থ'র চমৎকার বিশ্লেষণ কাহিনীতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।ধন্যবাদ পান্থ।
শুভেচ্ছা।
বইটি পড়বার সাধ হচ্ছে, ঢাকায় থাকা বন্ধুকে নামটি দিয়ে দিচ্ছি, কুরিয়ার ভরসা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
এটা বইমেলা ডটকমে পাওয়া যাবে নাকি? প্রশ্নটা কারে করলাম বুঝলেম না
নতুন মন্তব্য করুন