প্রথমে তথ্যটা জেনে আঁতকে উঠেছিলাম। বিশ্বাস হয়নি একটুও। বাংলাদেশের টিভি দর্শকরা নাকি প্রতি ১০০ মিনিটের ৭০ মিনিটই দেশের বাইরের চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান দেখেন! আমার নিজের ধারণা ছিল, এটা ফিফটি ফিফটি হবে। কিন্তু না। আবার বাংলাদেশী অনুষ্ঠান দেখার প্রবণতাও দিন দিন কমছে। ঠিক কত পার্সেন্ট, তা আমার জানা নাই। আমি টিভি চ্যানেলগুলোর কেউ না। যারা টিভিতে কাজ করেন, তারা ভালো বলতে পারবেন।
এই অবস্থায় সরকার আরো ১২টি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলকে সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছে। সেই চ্যানেলগুলোর একটি সম্প্রচারে আসবে। তো, সেই চ্যানেলটির বিপণন ও অনুষ্ঠান কৌশল কী হতে পারে তাই নিয়ে কথা হচ্ছিল আমার অফিসের বসের সঙ্গে। তখন বাংলাদেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর মার্কেটের কী অবস্থা তার খোঁজ পড়েছিল। সেসময়ই জানতে পারি এই তথ্যটি। তথ্যটা পেয়েছি, বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান মনিটর করেন এমন একটি সংস্থা থেকে। মার্কেটের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল, আমাদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো বেঁচে আছে কীসের জোরে!
বাংলাদেশে দেখা যায় এমন টিভি চ্যানেলের সংখ্যা ২৭২টির মতো। আর ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে অনুযায়ী টিভি চ্যানেলের দর্শক সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি ১২ লাখ। এই দর্শকদের সবাই ১৫ বছরের উর্ধ্বে। বাচ্চাদের গণনায় নেয়া হয়নি। তবে ৪-১৪ বছর বয়সীদের দর্শক সংখ্যা কম নয়। সে হিসেবে দর্শক সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা। এই দর্শকরা তাদের ২৯.২০% সময় ব্যয় করেন বাংলাদেশী চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান দেখতে। ইন্ডিয়ান হিন্দি ১৮.৭৪%, ইন্ডিয়ান বাংলা ৭.৫২%, ইংরেজি ৪.৫৪% এবং বাকি ৪০% সময় ব্যয় করেন অন্যান্য অনুষ্ঠান দেখতে। আবার ২৯.২০% দর্শক সময়ের সবটুকু কিন্তু বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর নয়। কারণ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দেশের সব টিভি দর্শকদের কাছে পৌঁছায় না। সে হিসেবে টেরিস্ট্রিয়াল সুবিধা থাকায় বিটিভি দর্শক সময় একটু বেশিই পায়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর ভাগে আরো কম সময় পড়ছে। তাই একটু আগে আমাদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর বেঁচে থাকার জোরের কথা বলছিলাম।
দর্শকরা টিভির প্রাণ হলেও টিভি চ্যানেলগুলোকে আসলে বাঁচিয়ে রাখে বিজ্ঞাপন। টিভি চ্যানেলগুলোর রেটকার্ড (প্রতি সেকেন্ডের বিজ্ঞাপন মূল্য) অনুযায়ী দেশে বাৎসরিক বিজ্ঞাপন বাজারের পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রকৃত বিজ্ঞাপন বাজার এর এক-চতুর্থাংশ। অর্থাৎ ৫০০ কোটি টাকা। দেশের এতোগুলো টিভি চ্যানেলের জন্য এটা খুব কম। আর তাই বিজ্ঞাপন পেতে টিভি চ্যানেলগুলোর কামড়াকামড়ি দেখার মতো একটা দৃশ্য হয়ে দাঁড়ায়। আবার এ কারণেই বিজ্ঞাপনদাতারা নানাভাবে টিভি চ্যানেলগুলোকে চাপে রাখতে চেষ্টা করেন। রাখতে পারেনও বটে। এ কারণে আমাদের দেশে বার্তা সম্পাদক বড়ো না বিজ্ঞাপন ম্যানেজার বড়ো সে বিতর্ক উঠে। হয়তো দেখা গেল, যে সংবাদ বার্তা সম্পাদক প্রকাশের জন্য মনোনীত করেছেন, তা বিজ্ঞাপন ম্যানেজারের হুকুমে বাতিল হয়ে যায়। একবার এক পত্রিকার বিজ্ঞাপন ম্যানেজার কথা প্রসঙ্গে বলছিলেন, এক মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো যদি একমাস বিজ্ঞাপন না দেয়, তবে তাদের পত্রিকা সে মাসে সাংবাদিকদের বেতন দিতে পারবে না। পত্রিকা এবং টিভি উভয় ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞাপন দেয়। এরপর বেশি টাকার বিজ্ঞাপন দেয়ার তালিকায় আছে ইউনিলিভার। তারপর রিয়েল এস্টেট এবং হাউজিং কোম্পানি, এনার্জি ড্রিংক, বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। তাই মোবাইল অপারেটর কোম্পানির ভিওআইপি ব্যবসা, রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর ভুমিদস্যুতার খবর কতটা নিরপেক্ষভাবে টিভি পর্দায় উঠে আসবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
দেশে বেসরকারি টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন বাজার বাড়েনি। সেই ৫০০ কোটি টাকাই আছে। নিকট ভবিষ্যতে বাড়বে, এরকম সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আরো ১২টি নতুন চ্যানেল আসছে। এরা এসে এই বিজ্ঞাপন বাজারে ভাগ বসাবে। বিজ্ঞাপন পেতে সব চ্যানেলই মরিয়া হয়ে উঠবে। আর সেইসাথে বিজ্ঞাপনদাতাদের দরকষাকষির ক্ষমতা বাড়বে। টিভি চ্যানেলগুলোকে তাদের সঙ্গে আপোষ করতে হবে আরো নগ্নভাবে। তখন সংবাদ কিংবা অনুষ্ঠান সম্প্রচারে সাংবাদিকসুলভ নৈতিকতা কতটুকু ধরে রাখতে পারবে, সেটা একটা প্রশ্নবোধক ব্যাপার হয়ে থাকছে।
বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন শিল্পে মরার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে এসেছে রাজনৈতিক বিবেচনা। রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশে যেমন বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমতি দেয়া হয়, তেমনটি রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্ধ করে দেয়ার নজিরও আছে। এর আগে বিএনপি সরকারের আমলে একুশে টিভিকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে চ্যানেল ওয়ান এবং যমুনা টিভি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যমুনা টিভি যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি, তবে পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চালু করেছিল। এই চ্যানেল দুটি বন্ধের ব্যাপারে সরকার যতই আইনের কথা বলুক, তাতে তাদের ভূমিকা কিছুমাত্র মুছে যায় না।
গণমাধ্যমের অন্যান্য শাখাগুলোর চেয়ে আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলো বেশ শক্তিশালীই মনে হয়। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে জনগণের তথ্য জানার অধিকার অনেকটা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এসব বেসরকারি টিভি চ্যানেল। রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার আন্দোলনে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। যদিও একদিকে বিজ্ঞাপনের সংকট, অন্যদিকে সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়ার রাজনীতি বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে। তারা যেমন বিজ্ঞাপনদাতাদের মর্জি বুঝে চলার চেষ্টা করেন, তেমনি সরকারি নিয়ন্ত্রণের ভয়ে তটস্থ থাকেন। এরকম অবস্থায় পড়ে, অনুষ্ঠানের মান কোথায় গিয়ে ঠেকছে, সে হিসেব রাখায় যথেষ্ট মনোযোগী হতে পারছেন না। আর তাই দর্শকরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিচ্ছেন বিদেশী চ্যানেলের অনুষ্ঠানমালা। এক্ষেত্রে দর্শকদের দুষে লাভ নেই। তার আছে রিমোটের স্বাধীনতা। তার যাদের অনুষ্ঠান ভালো লাগবে, তা মঙ্গল গ্রহেরই হোক, সে সেটাই দেখবে। বিজ্ঞাপন, সরকারের রাজনৈতিক বিবেচনা আর দর্শকদের মুখ ফিরিয়ে নেয়া- সবমিলিয়ে আমাদের বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য আসলে নিকট ভবিষ্যতে অন্ধকারই অপেক্ষা করছে!
মন্তব্য
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি একটা বিষয় বুঝি না। সব চ্যানেল ক্যানো একই ধরণের বিজনেস মডেল ব্যবহার করছে?
সস্তা দর্শক সাবস্ক্রীপশন + উঁচু দরের টিভি বিজ্ঞাপন = সস্তা নাটক + প্রচুর বিজ্ঞাপন
এটা বদলে কেন প্রিমিয়াম কনটেন্ট তৈরী এবং বিপণন করছে না কেউ?
উঁচু দরের দর্শক সাবস্ক্রীপশন + উঁচু দরের কম মাত্রার টিভি বিজ্ঞাপন = উঁচু মানের নাটক + অল্প বিজ্ঞাপন
পরের মডেলটা বাংলাদেশে টেস্ট করা হয়নি। কিন্তু এই রকম প্রতিযোগীতার বাজারে প্রথম মডেলে টিকে থাকার লড়াই করার চেয়ে নতুন বিজনেস মডেল খোঁজা যুক্তিযুক্ত।
উপরন্তু বাজার যাচাই না করে কি নতুন চ্যানেলগুলো বাজারে আসছে? তাদের রেভিনিউ উঠে আসবে কি আদৌ?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
যারা যারা নতুন চ্যানেল নিয়ে আসছেন, তাদের সবার একই পলিসি- সব শ্রেণীর দর্শককে ধরা। কোনো ডিফারেন্টশিয়েসন নেই। একটা চ্যানেল যে কীনা মার্কেটে ১৩ নং হয়ে আসছে, সে যদি নতুন কিছু না দিয়ে অন্যদের মতো হতে চায়, তবে তার রেভিনিউ কতটুকু ওঠে আসবে, আল্লাহমালুম! এক্ষেত্রে নতুন টিভি চ্যানেলকে বাজারকে ভাঙ্গতে হবে, অথবা নতুন বাজার তৈরি করতে হবে। কিন্তু আমাদের টিভি চ্যানেলের মালিকরা সে পথে হাঁটতে চান না।
১. শিল্পের আনন্দের চেয়ে টাকার আনন্দ বেশি
২. বেশি দামে কম বিজ্ঞাপন বিটিভির জন্য চলে যেহেতু তার প্রতিযোগিতা নেই। কিন্তু বেসরকারী চ্যানেল বেশি হওয়ায় 'বিজ্ঞাপন মডেল' ঠিক করেন বিজ্ঞাপন দাতা।
'পচা সাবান' একটা অনুষ্ঠানের পুরো বিজ্ঞাপন সময় (ধরুন ১০ মিনিট) স্পন্সর করতে পারে, অথবা দশটি অনুষ্ঠানে এক মিনিট করে বিজ্ঞাপন সময় কিনতে পারে। একজন দর্শক যেহেতু একটি অনুষ্ঠান নাও দেখতে পারেন, তাই একই টাকা দশটি অনুষ্ঠান স্পন্সরে ব্যয় হলে প্রচার বেশি। তাই আজকাল ৪/৫ পৃষ্ঠা বিজ্ঞাপন দাতা থাকে একটি অনুষ্ঠানের স্পন্সর হিসেবে।
৩. বাংলাদেশের প্রচার ব্যবস্থায় (ভোক্তা কেন্দ্রীক রিসিভারের বদলে সমষ্টিক বা পাড়া কেন্দ্রীক রিসিভার) "উঁচু দরের দর্শক সাবস্ক্রীপশন" বাস্তবায়ন কীভাবে হবে ভাবছি।
৪. অনেক ব্যবসায়ী গ্রুপ আজকাল পত্রিকা বের করে লাভের জন্য নয়, তথ্য প্রবাহে প্রভাব বিস্তার হরার জন্য। এক্ষেত্রে লোকসান হলেও, মালিকের 'অন্যান্য আয়' এই প্রতিষ্ঠানের আয় বলে চালাতে পারলে, অর্থ সাদা করার একটা পথও তৈরী হয়।
টিভিও সম্ভবত ওদিকেই যাচ্ছে।
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"
-----------
চর্যাপদ
সুচিন্তিত লেখা।
যাক আরেকটি দিন অন্ধকারের গল্প শুনে শুরু হলো।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বস, আমাদের দিন শুরু হয় দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ঢুকে, অফিস করার জন্য। তাই অন্ধকার নয়, আতংকের মধ্য দিয়ে দিন শুরু হয়।
আমি বনানীর যেই ভবনে অফিস করি, তার ডান পাশেই একটা বিশাল ভবনের নির্মান কাজ চলছে, জানি না কেন জানি ইদানিং ভয় হয় নির্মান করতে গিয়ে না জানি আমাদের ভবনের বেজ এর ক্ষতি করে বসে ...
--শফকত মোর্শেদ
আসলেই চিন্তার কথা।
তবে, আপনার দেয়া তথ্যগুলোর কয়েকটা ব্যাপার আরেকটু পরিষ্কার হলে সুবিধা হত:
১। ৪০% দর্শক "অন্যান্য" কিছু দেখেন---এই এতবড় অংশের "অন্যান্য"টা কী, সেটা জানতে কৌতুহল হচ্ছে। ইংরেজী, হিন্দী, বাংলা---এই ৩ টি ধারা বাদে অন্যান্য কী জিনিস দর্শক দেখেন?
২। বিজ্ঞাপন স্লটগুলোর মূল্য ২০০০ কোটি টাকা, কিন্তু এই স্লটগুলো ৫০০ কোটি টাকায়, অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ মূল্যে বিক্রি হয়---এটাই কি বোঝালেন?
৩। এই ৫০০ কোটি টাকা কি প্রতিবছর বাড়ছে না কমছে? যদি বাড়ে, তাহলে কী হারে বাড়ছে? ১০ বছর পর এই বিজ্ঞাপন বাজার কত বড় হবে, এসম্পর্কিত কোন গবেষণা আছে কি?
১নম্বরটার একটা উত্তর মাথায় এক্ষুনি মাথায় এল, দেখি আপনার সাথে মেলে কিনা।
ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
১। অ্যারাবিক, উর্দু, তামিল, মালয়লাম, রাশান, চায়না, ফ্রেঞ্চসহ অন্যান্য ভাষার চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান।
২। হুম ৫০০ কোটি টাকাই। কারণ রেটকার্ডের দামের ওপর ৩০% ডিসকাউন্ট থাকে। আর বড় বড় বিজ্ঞাপনদাতারা দরকষাকষি করে রেট-টা আরো কমিয়ে আনেন।
৩। টিভিতে বিজ্ঞাপনের স্পট বাড়ছে, তবে বিজ্ঞাপন টাকার অংকে বাড়ছে না। কারণ বিজ্ঞাপনদাতাদের বার্গেনিং ক্ষমতা বেশি। বিশ্বমন্দার কারণে দেশে বিজ্ঞাপন বাজার খানিকটা কমে গেছিল, এখন একটু স্থির আছে বলেই মনে হয়। তবে বিজ্ঞাপন বাজারের প্রবৃদ্ধি কেমন এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আর ১০ বছর পর বাজার কত বড় হবে, সে বিষয়ে কোনো গবেষণার খবর আমার জানা নেই।
পরিস্থিতির পরিবর্তন কি হবে না !!
সময়োপযোগী লেখা,
শুভকামনা...
______________________________
বর্ণ অনুচ্ছেদ
ধন্যবাদ বর্ণ অনুচ্ছেদ!
কিচ্ছু বলার নেই, জানোই তো। সারাদিন আমরা এইগুলা নিয়েই আলাপ বালাপ বিলাপ প্রলাপ বকতে বকতে এখন নিজেরাই তো হতাশার অন্ধকারে থাকি, না?
তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তোমার এমন বিশ্লেষণী লেখাগুলো বেশ ভালো এবং কাজের ব্লগিং- সন্দেহ নেই।
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
হুম!
দর্শক সৃষ্টি করা গেলে বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপরে চাপ সৃষ্টি করা যায়। দর্শক সৃষ্টির জন্য মানসম্মত অনুষ্ঠান তৈরি জরুরি। টিভি চ্যানেলগুলো যদি বিজ্ঞাপনদাতাদের মনোরঞ্জনের সহজ রাস্তাটিই বেছে নেয়, তাহলে প্রথম দায়টা তাদের নিজের ওপরেই পড়ে। মিডিয়াও একটি ব্যবসায় এবং এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের কাস্টোমার দর্শক (বিজ্ঞাপনদাতারা নয়)। আমি মানসম্মত বলতে নির্দিষ্ট কোনো দর্শকশ্রেণীর উপযুক্ত অনুষ্ঠান বুঝাচ্ছি না, সবশ্রেণীর দর্শকের উপযুক্তই বুঝাচ্ছি।
লেখায় পাঁচতারা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
দেখুন, আমাদের দেশের সবগুলো চ্যানেলই ফ্রি চ্যানেল। দর্শকরা এক পয়সা দেন না। তাই চ্যানেলগুলোর একমাত্র ভরসা বিজ্ঞাপন। কিন্তু যত টাকার বিজ্ঞাপন আছে বাজারে, তারচেয়ে চ্যানেল সংখ্যা বেশি। বিজ্ঞাপনদাতারা তাই দরকষাকষির সুযোগ বেশি পান।
আর সবশ্রেণীর দর্শকদের যে অনুষ্ঠান তৈরির কথা বললেন, এখন মনে হয় সেটা না করাই উচিত। কারণ, এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই, এনটিভি কিন্তু সবশ্রেণীর দর্শকদের জন্য অনুষ্ঠার সম্প্রচার করে। এক্ষেত্রে এখন একটা নতুন চ্যানেল আসলে, তাকে দর্শক পেতে মার্কেটটা ভাঙ্গতে হবে। এই মার্কেট ভাঙ্গার ব্যাপারটা নানাভাবে হতে পারে। কার জন্য কোন ভাবে ভাঙ্গা সুবিধাজনক তা গবেষণা করে বের করতে হবে।
আপনার উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। একজন দর্শক যখন একটি চ্যানেল দেখেন, তখন তিনি শুধু অনুষ্ঠানটাই দেখছেন না; বরং বিজ্ঞাপনকৃত পণ্যটিরও সম্ভাব্য ক্রেতা হচ্ছেন। দর্শক শুধু কেবল চার্জ দিলেই চ্যানেলগুলোর ব্যবসায়ে কন্ট্রিবিউট করছেন, তা নয়; বরং চ্যানেলগুলো যে বিজ্ঞাপন পাচ্ছে, তার মূলেও দর্শক। গুগোলের প্রধান (একমাত্র?) আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন, ইউজারদের কাছ থেকে সরাসরি কোনো টাকা না নিলেও তাদের চলে। একই সিস্টেমে চ্যানেলগুলো যদি পুরোপুরি বিনামূল্যেও দেয়া হয়, কিন্তু অনুষ্ঠান কোয়ালিটি/প্ল্যানিংয়ের কারণে কোনো চ্যানেল জনপ্রিয় হয়, তাহলে তার বিজ্ঞাপনপ্রাপ্তিও বেশি হওয়া উচিত।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সত্যি কথা, দর্শকদের মুলো হিসেবে দেখিয়েই চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয়। এই কারণে চ্যানেলওয়ালারা কারসাজি করে কখনো কখনো টিভি অনুষ্ঠানের টিআরপি (রেটিং) বেশিও দেখায়। কিন্তু কথা হলো, আমাদের দেশে টিভি বিজ্ঞাপনের বাজার খুব ছোট। এজন্য চ্যানেলওয়ালারা বিজ্ঞাপন পেতে পরস্পর কামড়া-কামড়ি করে। কে কার চেয়ে বেশি কমিশন দেবে, এটা নিয়েও একটা পর্যায় পর্যন্ত প্রতিযোগিতা চলে। আর এ কারণেই তারা দর্শকদের থেকে বিজ্ঞাপনদাতাদের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়। আবার অনুষ্ঠান নির্মাতাদের বলে দেয়া হয়, আপনি স্পন্সর বা বিজ্ঞাপন জোগার করে আনেন। তো অনুষ্ঠান নির্মাতারাও বিজ্ঞাপনদাতাদের মুখ চেয়ে বসে থাকেন। নিচে থার্ড আই ভাইয়ের মন্তব্যে এ বিষয়ে আরো কিছু তথ্য পাবেন। তিনি যেহেতু টিভি চ্যানেলে আছেন, তাই তার কথা আমরা সত্য বলেই ধরে নিতে পারি। আর বলাই দা, আপনি যদি দেশে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো একদিন মনিটর করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন, কোয়ালিটি বা প্ল্যানিংয়ের কী অবস্থা! সেটা নিয়ে বলতে আরেকটা ব্লগ লিখতে হবে!
দাঁত একটু একটু ব্যথা করতেসে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দু:খিত শিমুলাপা! আমি ডেন্টিস না। আপনাকে কোনোভাবেই হেল্প করতে পারলাম না!
আমি পান্থর এই লেখাগুলো ভক্ত! দুর্দান্ত লেখা!
অফটপিক: আমি মোটামুটি ইংরেজি সিনেমার আর খেলার চ্যানেল দেখি। পারতপক্ষে খবর ছাড়া বাংলা অনুষ্ঠান দেখি না- বিজ্ঞাপনের অত্যাচারে বিরক্ত হয়ে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইদানিং টিভি ৬,৭,৮ সিরিজের কোনো চ্যানেল চোখে পড়ছে না।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ গৌতম দা।
সংবাদেও বিজ্ঞাপনের দৌরাত্ম্য কম নয়! অমুক ব্যাংক সংবাদ বিরতি, অমুক ইন্স্যুরেন্স সংবাদ শুরু!
আপনার লেখার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সাথে আমি যদি খানিকটা যোগ করি তাহলে বলতে হয় আমাদের দেশের নির্মাতারা কিন্তু যতটানা দর্শক নির্ভর তারচেয়ে বেশী বিজ্ঞাপন কিংবা ব্যক্তি নির্ভর।
বিজ্ঞাপন নির্ভরতা মাথায় নিয়ে যখন নির্মাতা অনুষ্ঠান নির্মান করেন তখন তিনি ভাবেন তার এই অনুষ্ঠানের কোন কোন পয়েন্টে বিজ্ঞাপন দাতাকে আকৃষ্ট করবে সেই দিক নিয়ে। দর্শকের চাহিদা কিংবা নৈতিকতার বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়না কারণ সাধারণ দর্শকরা অনুষ্ঠানগুলোর জন্য কোন প্রকার বাড়তি পয়সা খরচ করছেন না।
আর বাজার সম্প্রসারণের কথা বলছেন। উন্নত দেশগুলোতে নিদিষ্ট মুভি চ্যানেল আর বিশেষ কোন চ্যানেল দেখতে হলে বাড়তি পয়সা দিতে হয় সেখানে আমাদের দেশে একটা ডিশ কানেকশন থাকলে সব চ্যানেল ফ্রি দেখা যায়।
যেমন ধরুন আমি প্রথম আলো কিনলাম, আমার ১০ টাকা খরচ হলো। এখন আমি কালের কন্ঠও কিনতে চাই আমাকে নিশ্চই আরো ১০ টাকা গুনতে হবে। কিন্তু আমাদের টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে দেখেন এখানে গ্রাহকদের বাড়তি টাকা খরচ না করেই একটা বাটন টিপেই তার সমাধান হচ্ছে। তাই বাজার বাড়ছেনা। টিভি চ্যানেল গুলো অধীক মাত্রায় বিজ্ঞাপন নির্ভর হয়ে উঠেছে।
বার্তা সম্পাদকের চেয়ে বিজ্ঞাপন ম্যানেজার দম্ভের কারণও আছে, আমাদের মালিকরা ভাবেন যিনি টাকা যোগার করে দিচ্ছেন তিনি অধীকতর প্রয়োজনীয়। তিনিই প্রধাণ চালিকা শক্তি তাই বিজ্ঞাপন ম্যানেজাররা বার্তা বিভাগে এসে সংবাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানান কোন সংবাদ যাবে কোনটি যাবে না। কার সাক্ষাতকার সংবাদের ব্যবহার হবে হবে না....সেই ভাবে বার্তা সম্পাদক সংবাদের পিছু ছুটেন না, ছুটেন ব্যক্তির নির্দেশের পিছনে, তাই প্রতিদিন টিভির পর্দায় ব্যংকের ওপেনিংএর ফিতা কাটার দৃশ্য হয় সংবাদ !
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
ধন্যবাদ তানভীর ভাই! আরো দু'পয়সা যোগ করার জন্য।
কোপানি লেখা।
আমার ধারণা মোবাইল কোম্পানি কয়েকটা মার খাবে। রবি যে পরিমাণ বিজ্ঞাপন দেয়, সে টাকা তুলতে পারে কিনা সন্দেহ। কারণ চারপাশে কাউকে রবি দেখলাম না। বাংলালিংকও মার খাবার সম্ভাবনা আছে। গ্রামীণ টিকে থাকবে।
এরপর টিভিগুলা এমনে এমনেই যাবে।
আলমগীর ভাই, রবির নাম পরিবর্তন নিয়া একখানা লেখা লেখার খায়েশ হয়ছিল। তেনারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন নাম পরিবর্তনের জন্য ক্যাম্পেইন করতে। তবে নাম পরিবর্তন করে তারা কতটুকু লাভবান হয়েছেন কে জানে! লোকে এখনো রবি-কে একটেল বলেই ডাকে।
আর একটা ম্যাচিউরড মার্কেটে তিন চারটা কোম্পানি থাকাটা খুব স্বাভাবিক। এখন যেহেতু নতুন কোনো কোম্পানি আসছে না, এরাই থাকবে। তাই ধরে নেয়া যায়, রবি, বাংলালিংক মরে যাবে না। থাকবে।
ব্র্যাক সম্প্রতি তাদের ব্র্যান্ডিং করেছে এবং লোগো পরিবর্তন করেছে প্রচুর টাকাপয়সা খরচ করে। আমি ব্র্যাকে থাকাকালীন বুঝে উঠতে পারি নি এটার আদৌ দরকার ছিল কিনা! এর কিছুদিন পরেই দেখি একটেলও নাম বদলে ফেলেছে। এই ব্র্যান্ডিং, নাম ও লোগো পরিবর্তন নিয়ে একটা লেখা দিতে পারেন। এগুলোর প্রভাব কিংবা উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমার মতো অজ্ঞ মানুষজন উপকৃত হবে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
চমৎকার বিশ্লেষণ।
আমার জন্য একটা তথ্য ছিল বেশ আশ্চর্য হওয়ার মত - ৪০% দর্শক "অন্যান্য" কিছু দেখেন, এবং এই অন্যান্য কিছুর 'ব্যাখ্যা', যেটা আপনি দিলেন। আমি ধরে নিচ্ছি এই সার্ভে করা হয়েছে শুধু মাত্র যাদের ‘ক্যাবল কানেকশন’ আছে সেই সব দর্শকের উপর। কারণ একটা অংশ কিন্তু এখনো শুধু বিটিভিই দেখতে পারে, এবং নিশ্চয়ই তাদের এই সার্ভে থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত কিছুটা আশ্চর্য হওয়ার তথ্য ছিল টিভি চ্যানেল গুলির বিজ্ঞাপনের বাজার মাত্র ৫০০ কোটি টাকার। আরও বারোটা চ্যানেল আসলে নিশ্চয়ই এর পরিমান উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়বে না, কিন্তু চ্যানেল গুলোতে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে। বিজ্ঞাপনদাতাদের দর কষাকষির ক্ষমতা আরও বাড়বে। তার মানে এখন যে সব চ্যানেল আছে তারাও অর্থনৈতিক ভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
আবার যারা অনুষ্ঠান তৈরী করেন,টিভি চ্যানেল বাড়লে তাদেরও দর কষাকষির ক্ষমতা বাড়বে। অনুষ্ঠান তৈরী করার জন্য নতূন প্রতিষ্ঠান তৈরী হবে এবং স্বল্প টাকার অনুষ্ঠান বানতে গিয়ে মান কমে যাবে।
নতুন চ্যানেল আসার ফলে ‘চ্যানেল প্রতি দর্শক’ কমে গেলে বিজ্ঞাপনের উপরও প্রভাব পরতে পারে। এখানে গুরূত্বপূর্ণ হল বিজ্ঞাপনদাতার বিজ্ঞাপনের জন্য অন্যান মাধ্যম বা উপায়ও আছে এবং বিজ্ঞাপনের বিকল্পও আছে (যেমনঃ ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলকে আরও ‘ইনসেন্টিভ’ দেয়া)
প্রিমিয়ার কন্টেন্টের আইডিয়াটা ভাল। তবে আমি নিশ্চিত নই প্রিমিয়ার কন্টেন্টের জন্য টাকা দিতে দর্শকরা রেডি কিনা? কারণ ‘কারেন্ট কন্টেন্টরই’ মান ধরে রাখা যাচ্ছে না, ‘প্রিমিয়ার কন্টেন্টে’ কোথা থেকে আসবে?
পান্থর সাথে একমত যে, গণমাধ্যমের অন্যান্য শাখাগুলোর চেয়ে আমাদের দেশের টিভি চ্যানেলগুলো বেশ শক্তিশালীই মনে হয় অবাধ তথ্যপ্রবাহের এ যুগে জনগণের তথ্য জানার অধিকার অনেকটা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এসব বেসরকারি টিভি চ্যানেল। এই ইন্ডাস্ট্রির যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে তো বিপদ।
তার মানে কী দাঁড়াচ্ছে? নতুন এবং বর্তমানের কিছু চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে? বেশ কিছু ‘মার্জার এন্ড অ্যাকুজিশনের’ ঘটনা ঘটবে? অথবা আরও করপোরাইজড হয়ে যাবে টিভি চ্যানেলগুলি, যেখানে করপোরেটরা বিজ্ঞাপনের বাইরেও টিভি চ্যানেলকে ‘ব্যবহার’ করবে? অথবা নতূন চ্যানেলগুলো অন্য বিজনেস মডেল দাঁড়া করাবে 'দর্শক' ফ্যাক্টরটা গোনায় ধরে? তবে এটা ভেবে স্বস্তি পাই যে নতুন চ্যানেলগুলি নিশ্চয়ই ‘feasibility study’ করে নিজস্ব বিজনেস মডেল দাঁড়া করিয়েছে। দেখা যাক।
অফ টপিকঃ আলমগীর ভাই টেলিকো নিয়ে যেটা বলেছেন, অবস্থা এতটা খারাপ না বোধহয়। আপনি তো ১/৫ বলেছেন ‘লোকজন প্রচুর কথা বলে'।))
৪০% দর্শক "অন্যান্য" কিছু দেখেন নিয়ে দেখছি একটু বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। দেখি আর একটু পরিষ্কার করতে পারি কীনা। আমাদের দেশে টিভি প্রোগ্রাম মনিটর করা হয় একটি 'ডিভাইস' দিয়ে। এখন তার নাম মনে করতে পারছি না। ওই ডিভাইসটি একজন দর্শক কখন কোন চ্যানেল দেখছেন, সেটার হিসেব রাখে। কথা হলো আমরা অনেক চ্যানেল দেখি না। কিন্তু যখন চ্যানেল পরিবর্তন করতে যাই, ধরুন আমি রিমোট টিপতে টিপতে যাচ্ছি। তখন ৫০, ৫১, ৫২ নং চ্যানেল হয়ে ৫৩ নং চ্যানেলে আমার পছন্দের একটি অনুষ্ঠান দেখতে স্থির হলাম। কিন্তু আমি যে ৫০, ৫১, ৫২ নং চ্যানেলে ঢুঁ মেরে গেলাম (এক সেকেন্ড হলেও), তার হিসেব কিন্তু ডিভাইসটি রাখছে। এভাবেই ওই ৪০% এসেছে।
অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তো হবেই। কারণ একসাথে এতগুলি চ্যানেল আসবে। কিন্তু বাজার বাড়ছে না। তো নিজেদের ভেতরেই তো বিজ্ঞাপনের টাকা ভাগ হয়ে যাচ্ছে। আবার দেখেন, আমাদের দেশে এই খাতে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ১৫%। আর সাথে মুদ্রাস্ফীতির হার যোগ করুন। তাহলে কিন্তু প্রকৃত বিজ্ঞাপনের বাজার খুব একটা বাড়ছে না। টিভি চ্যানেলগুলো যে কীভাবে তাদের বিনিয়োগের টাকা উঠাবে, সেটা চিন্তার বিষয়।
আমি ‘মার্জার এন্ড অ্যাকুজিশনের’ চেয়ে লাইসেন্স বিক্রি করে দেয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখি। আর গোদের ওপর বিষফোড়া হিসেবে তো আছে রাজনৈতিক বিবেচনায় বন্ধ করার ইতিহাস।
টিভি চ্যানেলগুলো টিকে থাকতে সবচেয়ে ভালো হয় নতুন কোনো বিজনেস মডেল দাঁড় করানো। সেটা কীভাবে হতে পারে, তা অবশ্য আমার জানা নাই।
একান্ত আমার নিজের অনুমান। গ্রাহক এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিচারে গ্রামীণের ধারে কাছে কেউ নেই। রবির নেটওয়ার্ক ভালো না। বিটিআরসি নতুন করে কোন টাওয়ার বানাতে দেয় না, অন্যদের থেকে ভাড়া নিতে বাধ্য করে। রবি যে ১০০কোটি টাকা খরচ করল এটা তো তাদের তুলতে হবে, নাকি? আমার ধারণা তারা এখনো বিনিয়োগ পর্যায়েই আছে। সে ধারণা থেকে বলা। মানুষ কথা বলছে এটা ঠিক, তবে ফ্লেক্সির দোকানির বইতে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শুধু গ্রামীণের নাম্বারই দেখি।
৪৫%-৪৭% স্টেডি মার্কেট শেয়ার নিয়ে এবং ১ বিলিয়ন ডলার রেভিনিউ জেনারেটিং কোম্পানি হিসাবে গ্রামীণ নিশ্চিত ভাবেই খুব শক্ত অবস্থানে আছে। এবং এটাও ঠিক যে বিজ্ঞাপনের খরচের প্যাটার্ন দেখলে অন্যান্য টেলকোর আর্থিক অবস্থার ব্যাপারে একটা ভুল ধারণা চলে আসে। তারপর আছে প্রতি সিমের উপর ৮০০ টাকা সিম ট্যাক্স।
তবে টেলকো গুলির প্যারেন্ট কোম্পানির আর্থিক সামর্থ হয়ত হঠাৎ করেই কোন কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দেয়। তবে ভবিষ্যতের একত্রিকরণের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
পান্থ রহমান রেজা, খুবই ভালো বিশ্লেষণ করেছেন.
আমি কিছু মন্তব্য করতে চাই-
বাংলাদেশের একজন সফল এবং অভিজ্ঞ একজন বিনীয়গকারী একবার বলেছিলেন, "বাঙালি হলো হুজুগের জাতি, একটা বাবসায় যদি কেউ ভালো করতে থাকে তা হলে সবাই ওই ব্যবসা করার জন্য ঝাপিয়ে পড়বে, কোন হিসেব-নিকেশ ছাড়াই. এবং তারা ওই ব্যবসাটা না ডোবা পর্যন্ত বেরিয়ে আসবে না". আমার মনে হয় উনার মন্তব্য শতভাগ সঠিক. জলন্ত উদহরণ, তথা কথিত "সপিং মল".... আমার মনে হয় না ১২টি নতুন মাধ্যম খোলার পেছনের (অন্যতম) কারণ বিশ্লেষণের অবকাশ রাখে.
বাংলাদেশের মানুষ যে শুধুই ভালো রুচির খোঁজে বিদেশী চ্যানেলগুলোর সরানপন্ন হন তা কিন্তু নয়. সউথ এশিয়ান সোশাল সাইকোলজিস্টরা বলেন- আমাদের এ অঞ্চলে মানুষ বিদেশী সংস্কৃতিকে খুবই উচ্চস্তরের বলে মনে করেন, তুলনায় নিজেদের সংস্কৃতিকে মনে করেন নিন্ম. আমি জানি এটা কেউই আমরা স্বীকার করতে চাই না. কিন্তু এই দৃশ্যটা একবার ভাবুন তো, আপনার বাসায় বিশেষ কোন বাক্তি এল এবং টিভির রুমে বসলো. এককালে পশ্চিমা কোন দেশে থাকতেন. আপনার ধারণা উনি অনেক বিজ্ঞ. আপনি তাকে অভিভূত করতে চান. উনি আপনাকে কোথাও নিয়ে যেতে এসেছেন. আপনি পাশের ঘরে গিয়েছেন কাপড় বদলাতে. যাবার সময় উনি যাতে শুধুই ঝিম মেরে বসে না থাকেন তাই টিভি ছেড়ে গেলেন. সত্যি করে নিজের কাছেই নিজে বলুন তো কোন চ্যানেলটি ছাড়বেন. আমি ৯০ ভাগ নিশ্চিত আপনি cnn অথবা bbc ছাড়বেন অথবা অন্য কোন বিদেশী চ্যানেল. আমার প্রশ্ন হলো আমদের দেশে কি কোন চ্যানেলএ খবর অথবা ভালো কিছুই দেখায় না? (বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বললাম)
দর্শক কম হবার ঘটনাটা হলো আমরা আমাদের তথা কথিত "status" নিয়ে চরম মশগুল. এবং একমাত্র বিদেশীদেরই স্টাটাস আছে যা অনুকরণ করা অতিব প্রয়োজন. বাংলাদেশে ভালো অনুষ্ঠান হয় কিন্তু বাংলাদেশে থাকলে আমরা তার মুল্য দেই না. বাংলা চ্যানেল দেখা মানে তথা কথিত "খ্যাত" হয়ে যাওয়া. আমি নিশ্চিত আপনারা যারা বাংলা কোন অনুষ্ঠানের ভক্ত এবং তা কোন তথাকথিত "কালচার্ড" কাউকে জানান তখন আমি নিশ্চিত একবার হলেও তাদের মুখভঙ্গি তাচ্চিলতার সাথে পরিবর্তিত হয়েছে. আমার জানামতে, যারা আমেরিকা থাকেন তারা অনেকেই মাসে $৫০ ডলার দিয়ে বাংলা চ্যানেল দেখেন, অথচ তারা দেশে থাকতে ভুলেও ঐসব চ্যানেল দেখতেন না. এবং তারা স্বীকার করেন বাংলাদেশে বেশ কয়টি ভালো আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান আছে. আমরা এইসব অনুষ্ঠান নির্মানে কারিগরী দিক থেকে পিছিয়ে, কিন্তু যদি কোন দর্শক আগ্রহ না দেয় এবং ভালো অর্থের সঞ্চালন না থাকে তা হলে কে ঝুকি নেবে আগাবার? সকল প্রাযুটিস (অর্থ জানি না) বাদ দিয়ে একবার হলেও বাংলা কিছু অনুষ্ঠান দেখুন. আপনার শৈল্পিক জ্ঞান থাকলে আপনি ঐগুলাকে আন্তর্জাতিক মানের সাথে তুলনা করতে পারবেন.
আমি আমার বক্তিতা আর দীর্ঘ করলুম না.... কারণ অনেক বলার ছিল, কিন্তু ঘুম আসছে. বুদ্ধিমান মানুষদের আসলে এর থাকে বেশি কিছু বলারও নেই.... তারা বাপারটা বুঝেন.
-----সপ্নরোগী (ওসাইরিস নেমিন ওয়াহিদ)
দর্শক কম হওয়াটা আসলে স্ট্যাটাসের সমস্যা না। যেখানে ভালো অনুষ্ঠান হয়, অথবা যে অনুষ্ঠানগুলো তার ভালো লাগে, সে তাই দেখবে। অনুষ্ঠানগুলো কোন দেশের চ্যানেলে হচ্ছে, এটা তার কাছে কোনো ইস্যু না!
দারুন লেখা
ধন্যবাদ!
বাহ! পাঁচতারা দিলাম! [ মনে মনে! ]
-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আইচ্ছা!
দেরীতে লেখাটা পড়ছি বলে উত্তরও দেরীতে আসছে। আমার কাছে বিশ্লেষণটা একমুখী মনে হয়েছে - শুধু টিভি/মিডিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে লেখা। লেখাটার স্কোপ আরেকটু বেশী হলে মনে হয় ভাল হত।
ভেবে দেখুন বিজ্ঞাপন কারা দিচ্ছে? কোম্পানী (এক অর্থে সরকারও কোম্পানী যা জনস্বার্থে চলে), যারা বেশী বিক্রির আশায় তার প্রতিদ্বন্দীর থেকে জনমানসে বেশী পজিটিভ ইম্প্যাক্ট (যাকে বলে Brand Awareness) ফেলতে চায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এখানে কোম্পানীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কিন্তু বিজ্ঞাপনের চালিকাশক্তি - প্রতিযোগিতা বাড়লে বিজ্ঞাপনও বাড়বে।
আপনি যে এফেক্টের কথা বলেছেন সেটার মানে হল বিজ্ঞাপনের চাহিদার (কোম্পানীর প্রচার করার ইচ্ছা) থেকে যোগান (বিজ্ঞাপনের সময়) বেশী হওয়ার কথা। সেটার কারণ যোগাণ বেড়ে যাবার ফলেও হতে পারে আবার চাহিদা কমার ফলেও হতে পারে। এমনিতে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে কোম্পানীদের প্রচার করার প্রবণতা বেশী হওয়ার কথা - নিত্যনতুন কোম্পানী বাজারে আসার কথা ও তাদের প্রচারের জন্য টিভি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনের অভাব হবার কথা নয়। কিন্তু সবাই যদি টয়োটা গাড়ি কেনে আর সোনির টিভি কেনে তাহলে বিজ্ঞাপনের কোনো দরকার পড়ে না। অন্যদিকে, বাংলাদেশে চার-পাঁচটা সেলফোন কোম্পানী নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় পড়ে অনেক বিজ্ঞাপন দিয়েছে টিভিতে, প্রতিযোগিতা থাকলে বিজ্ঞাপন আসতে বাধ্য। তবে ভেবে নেওয়া উচিত যে সেলফোন কোম্পানীগুলো সবাই লোকাল ব্র্যান্ড - সোনি টিভি বা টয়োটা গাড়ির মত গ্লোবাল ব্র্যান্ড নয়। লোকাল আর গ্লোবাল ব্র্যান্ডের একটা তফাৎ আছে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে। সেটা নিয়ে পরে আসছি আলোচনায়।
আমার মনে হয়েছে চ্যানেলের সংখ্যা বাংলাদেশে পরিমিত আছে, অর্থাৎ ভিউয়ারশিপের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কিন্তু দ্রব্য বাজারীকরণে ততটা প্রতিযোগিতা না থাকায় বিজ্ঞাপনে রিটার্ণ অন ইনভেস্টমেন্ট কম, তাই বিজ্ঞাপনদাতাদের ততটা আগ্রহ নেই বিজ্ঞাপনের খরচা বাড়ানোর। আপনার বক্তব্যের সাথে এটাও জুড়ে দেওয়া যায়।
ডাইভারসিফিকেশন নিয়েও সমস্যা আছে। ধরুণ লাইভ ক্রিকেট/ফুটবল খেলা দেখার চাহিদা অনেক আছে বাংলাদেশে, কিন্তু খেলা দেখানোর সত্ত্ব কেনার মত ইনভেস্টমেন্ট করার আগ্রহ কারো নেই। এই সুবিধাটা প্রায় একচেটিয়া ভারতীয় কোম্পানীগুলো নিয়ে নেয়, কারণ ভারতে খেলা দেখানোর সাথে একই খরচায় তারা খেলা বাংলাদেশেও দেখিয়ে দিতে পারে - সাথে এরা বাংলাদেশে বিক্রিত গ্লোবাল ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনগুলোও পেয়ে যাবে - অর্থাৎ জিরো ইনভেস্টমেন্টে প্রফিট। একই বক্তব্য ইংরেজী সিনেমা বিষয়েও।
এখন টয়োটা গাড়ি বা সোনি টিভি তাদের বিজ্ঞাপন কোথায় দেবে? অবশ্যই ভারতীয় চ্যানেলে। কারণ তাতে তাদের বিজ্ঞাপন একই সাথে প্রায় গোটা উপমহাদেশে দেখতে পাওয়া যাবে। যেহেতু তারা গ্লোবাল ব্র্যান্ড - তাদের সব দেশেই উপস্থিতি আছে। এইটা আবার বাংলাদেশভিত্তিক সেল-ফোন কোম্পানীগুলোর ক্ষেত্রে খুব একটা খাটে না কারণ তাদের উপস্থিতি বাংলাদেশে সীমিত।
গত কয়েকবছরে এই ধরণের বানলাদেশের লোকাল ব্র্যান্ডগুলো গ্লোবাল ব্র্যান্ডের তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে গেছে। তাই বিজ্ঞাপনের বাজার বাংলাদেশে বাড়ছে না।
বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনদাতা বনাম চ্যানেলের সমস্যাটা দুদিকেই - চ্যানেলের সংখ্যাধিক্যের মত লোকাল ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতিও সমস্যার দুটো প্রান্ত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যদি বিজ্ঞাপনের বাজার বাড়তে হয় চ্যানেল নিয়ন্ত্রণের মত লোকাল ব্র্যান্ডের উন্নতিও দরকার।
তবে আমার ব্যক্তিগত মত এই ব্যাপারটা সাময়িক - রিসেসনের কারণেই বিজ্ঞাপনে ঘাটতি। রিসেসন কেটে গেলে সমস্যা দূর হবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এখানে দেখতে পারেন ভারতেও টিভি বিজ্ঞাপনের একই অবস্থা। ভারতীয় চ্যানেল কোম্পানীগুলো ধীরে ধীরে বিজ্ঞাপন ছেড়ে পে-চ্যানেলের আয়ের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। অবশ্য সারা বিশ্বেই একই অবস্থা - এখানে দেখুন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ধন্যবাদ দিগন্ত দা, কিছু বিষয়ে আলো ফেলবার জন্য। আর যে লিংকগুলো দিলেন, খুব কাজের।
আসলে ফ্রি চ্যানেল হওয়ার কারণে আমাদের টিভি যেহেতু বিজ্ঞাপন নির্ভর, তাই টিভি/মিডিয়ার প্রেক্ষিতে লেখাটা চেয়েছিলাম। এই নির্ভরতার পরিণাম কী, তাও ধরতে চেয়েছিলাম।
আমাদের দেশে কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেমন কম্পিটিশন, সে সম্পর্কে কোনো ডেটা আমার কাছে নেই। তবে এফএমসিজি'র ক্ষেত্রে আমাদের এখানে ইউনিলিভারের সাথে অন্যান্য লোকাল ব্র্যান্ডগুলো টিকতে পারছে না। যেকোনো সুপার মলে ঢুকে, শেলফের দিকে তাকালেই এই সত্যটি বোঝা যাবে।
আপনার টয়োটা, সনির উদাহরণ যথার্থ। একটা শোনা ঘটনা বলি। ভারতীয় 'মেন্টোস' ব্র্যান্ডের বাংলাদেশের পরিবেশককে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বিজ্ঞাপন বানান না কেন? তিনি উত্তরে বলেছিলেন, ভারতের চ্যানেলগুলোতে যে বিজ্ঞাপন দেয়, আমার তাতেই হয়ে যায়। ইউনিলিভার আগে বাংলাদেশের মার্কেটের জন্য এখন আর বিজ্ঞাপন বানায় না। ভারতের বিজ্ঞাপনগুলোই ডাব করে চালিয়ে দেয়। লাক্স-এর বিজ্ঞাপনে আগে শমী কায়সায়, ঈশিতাদের দেখা যেত। এখন দেখা যায়, ঐশ্বর্য রায়, ক্যাটরিনা কাইফদের। তাই যদি বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর ভিউয়ারশিপ না বাড়ে, তবে এই গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলো বিজ্ঞাপন ব্যয়ের বরাদ্দ ভারতীয় চ্যানেলগুলোতে বেশি দিতে পারে। কারণ সে তো 'রিচ টু অপরচুনিটি' হিসেব করে তার বিজ্ঞাপন দিবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর বিপদ বাড়বে বৈ কমবে না।
নতুন মন্তব্য করুন