আরো দুটি নতুন পত্রিকা বাজারে আসছে- দৈনিক অধিনায়ক ও দৈনিক সকালের খবর। এ দু’টি মিলে মোট সংবাদপত্রের সংখ্যা কত হলো তা তথ্য মন্ত্রণালয় বলতে পারবে। তবে এর সংখ্যা কয়েক হাজারের কম নয়। পত্রিকাদ্বয়ের প্রথমটির মালিক আওয়ামী ব্যবসায়ী নূর আলী। অন্যটির মালিকানা Rangs গ্রুপের। হালের বাংলাদেশের মিডিয়ার মালিকানা চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবিদের হাতে, যা বেশ আশংকার কথা। অন্যান্য কনজিউমার প্রডাক্টের মতো পত্রিকা ব্যবসা লাভজনক নয়। তেমন একটা লাভ না থাকা সত্ত্বেও এই ব্যবসায় ব্যবসায়ীদের তুমুল আগ্রহ সন্দেহ জাগায় বটে! কেননা একটা পত্রিকার মালিকানা থাকা মানে অনেক বেশি ক্ষমতা রাখা। সেই ক্ষমতার বলে মন্ত্রীদের পর্যন্ত চাপে রাখা যায়। বড়ো বড়ো কাজের কন্ট্যাক পাওয়া যায়। চাইলে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ীকেও এক হাত দেখিয়ে দেয়া যায়। সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম আলো ও কালের কণ্ঠে পত্রিকায় মালিকদ্বয়ের পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ আমরা দেখেছি। এর আগে প্রথম আলো ও যুগান্তর, প্রথম আলো ও আমার দেশ-এ পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
সংবাদপত্রের ব্যবসা মূলত নির্ভর করে বিজ্ঞাপনের ওপর। বৈশ্বিক মন্দা মাল্টিন্যাশনাল ও কর্পোরেট হাউজগুলোর বিজ্ঞাপন দেয়ার ওপর প্রভাব ফেলেছে। তাই বিজ্ঞাপনের বাজার খুব একটা বাড়েনি গত কয়েক বছরে। নতুন পত্রিকাদ্বয়কে বিদ্যমান বিজ্ঞাপন বাজারে ভাগ বসাতে হবে। এই ভাগ বসাতে গিয়ে অন্য পত্রিকার সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। এর সুফল ভোগ করবে বিজ্ঞাপনদাতারা। তারা আরো বেশি দরকষাকষির সুযোগ পাবে। আর এর সুযোগ নিয়ে তারা পত্রিকার ওপর প্রভাব ফেলতে চাইবে। যা অনেক সময় পত্রিকার প্রতিবেদন প্রকাশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কিছুদিন আগের একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করি। শান্তিনগরের কনকর্ড গ্র্যান্ড টাওয়ারে ফাটল ধরেছে। প্রথম দিন পত্রিকায় এ নিউজ এলো। পরের দিন পত্রিকায় কনকর্ড টাওয়ার নিরাপদ ঘোষণার খবর প্রকাশিত হলো। নিরাপদ ঘোষণার খবরটি প্রথম আলো থেকে তুলে দিচ্ছি-
আট ঘণ্টা পর নিরাপদ হলো কনকর্ড গ্র্যান্ড টাওয়ার
আট ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার পর শান্তিনগরের কনকর্ড গ্র্যান্ড টাওয়ার শেষ পর্যন্ত নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে ভবনের বাইরের দিকে তৃতীয় ও চতুর্থ তলার দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ার পর ২২ তলা ওই ভবনটির ১০৫টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিনভর অপেক্ষার পর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দল সংবাদ সম্মেলন করে ভবনটি নিরাপদ ঘোষণা করে। কনকর্ড গ্র্যান্ড টাওয়ার মালিক সমিতির সভাপতি নাসিরউদ্দিন মজুমদার জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার পর ভবনের বাসিন্দাদের মধ্যে ফাটল নিয়ে আতঙ্ক শুরু হয়। বেগুনবাড়ির ঘটনার কারণে এই আতঙ্ক বহু গুণে বেড়ে যায়। সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের সামনে শত শত লোকের ভিড়। দমকল বাহিনীর কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। আসেন স্থানীয় সাংসদ রাশেদ খান মেনন, পুলিশের মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার এ কে এম শহীদুল হক। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেখানে আসেন বুয়েটের তিনজন অধ্যাপক সৈয়দ ফখরুল আমিন, খান মাহমুদ আমানত ও মুনাজ আহমেদ নূল। তারা দীর্ঘ সময় ভবনটি পরীক্ষার পর জানান, ভবনটি নিরাপদ।
এটা প্রথম আলোর সংবাদ, না কনকর্ডের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি? শুধু প্রথম আলো নয়, মোটামুটি সব পত্রিকায় এ ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। ২২ তলা ভবনটিতে কেনো ফাটল ধরল তার কোনো অনুসন্ধান সংবাদ প্রতিবেদনে নেই। কনকর্ডের বিজ্ঞাপন প্রাপ্তি এর পেছনে মূল কারণ কীনা কে জানে। কারণ কনকর্ড আগস্ট ’০৯- জানুয়ারি ’১০ এ পত্রিকায় ২১.৭১ মিলিয়ন টাকা বিজ্ঞাপন দিয়েছে [সূত্র: বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম, ইস্যু: ফেব্রুয়ারি ২০১০]। শুধু কনকর্ড নয়, রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর অনেক খবরই পরিবেশনের আগেই ম্যানেজ হয়ে যায়।
সংবাদপত্র সম্পর্কে বলা হয়, এটা রাষ্ট্রের একটা স্তম্ভ। দেশকে দিকনির্দেশনা দেয়। জনগণের পক্ষে কথা বলে। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আমরা সংবাদপত্রগুলোর সাহসী ভূমিকা দেখেছি। এখন এসব কিছু শুধু বইয়ের পাতায় মানায়। এখন সংবাদপত্র মানে মালিকের ভাষায় মালিকের পক্ষে কথা বলা। জনগণের পক্ষে না। জনগণের পক্ষে কথা বলতে, জনগণের হাতকে শক্তিশালী করতে আমাদের দরকার জহুর হোসেন চৌধুরী, মানিক মিয়ার মতো প্রকাশক।
মন্তব্য
সংবাদপত্রের মালিকদের ভূমিকার চাইতে সেক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অনঢ় ভূমিকাই মুখ্য ছিল।
...........................
Every Picture Tells a Story
মুস্তাফিজ ভাই, আমি সাংবাদিকদের ভূমিকার কথাই বলতে চেয়েছি। তখন তো শাহ আলমের মতো ব্যবসায়ীরা পত্রিকা ব্যবসায় আসেনি। তখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মানে সাংবাদিকদের স্বাধীনতাই ছিল, মালিকদের ছিল না!
নতুন সংবাদপত্রগুলো নিরপেক্ষতা বজায় রাখলেই খুশি হবো।
পান্থ,
দশ বছর আগে একজন সাংবাদিক এক শলা সিগারেট কেনার আগে তিনবার চিন্তা করতো, আর এখন সিনিয়র সাব এডিটর পত্রিকা থেকে সার্বক্ষণিক গাড়ি পায়। আর কী চাস? যা আবার সাংবাদিকতায় যা।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সাংবাদিক হিসাবে হাত ৫/৭ বছর চারকি কইরা হাত পাকানোর পরে যে কয়ডা ট্যাকা পাওন যায়, এট্টা গ্রামীনফুন কুপ্পানি টাইপের কুপ্পানির স্টাটিং বেতনই তার চাইয়া বেশি!!!!!
সমস্যাডা গাড়ি চড়া বা সিকারেট খাওয়ার নগে জড়িত কুনো ব্যাপার না।
যে দেশের সিংহভাগ মানুষ মানসিকভাবে চোর (আমিসহ) সে দেশে এইসব কইয়া লাভ নাই।
এইখানে একটা কথা আছে বাঘ ভায়া। গেরামিন ফুনের কুট্টি পুলা যে কাজ করে, সেই কাজ যে দামড়া পুলা করতে পারে না, সে-ই গেরামিন ফুন রাইখা পত্রিকায় আসে। সুতরাং ঐ তুলনাটা বোধ হয় সবসময় ঠিক না।
এইটা কেন আশংকার কথা? রাজনীতিবিদ আর ব্যবসায়ীরা তাহলে মিডিয়া ব্যবসা করতে পারবে না?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
- আশংকার কথা, কারণ এতে মিডিয়া পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যাবে। উক্ত ব্যবসায়ী বা রাজনীতিবিদের পত্রিকা কখনোই সংশ্লিষ্ট মালিক/প্রকাশকের বিপক্ষে বলবে না তার অনুগত মিডিয়া।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
পত্রিকা চালানোর ব্যাপারে আপনার ব্যবসায়ি দৃষ্টিকোণ কিংবা ‘পক্ষপাতবিহীন’ জাতীয় ভিত্তিহীন অনুমিতির সাথে একমত। তারপরেরও কিছু কথা থেকে যায়।
প্রথমত ইত্তেফাক, সংবাদ কিংবা ডেইলিস্টারের মত প্রত্রিকার প্রাথমিক উদ্যোক্তারা ব্যবসায়ি হলেও তাঁদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একধরণের একসেপ্টেবিলিটি ছিল। যার ফলে মানুষের একধরণের ভাল প্রত্যাশাও ছিল তাঁদের কাছে (যা তাঁরা প্রমান করেছেন)।
দ্বিতীয়ত, নতুন পত্রিকা উদ্যোক্তা হিসাবে যে সকল ব্যবসায়ির কথা বলা হচ্ছে, তাদের ট্র্যাক রেকর্ড আমাদের ভাল কিছু ভাবতে সাহায্য করেনা। যদি তুলনামুলকভাবে ‘ক্লিন’ কোন ব্যবসায়ি পত্রিকার উদ্যোক্তা হত, আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতাম (নাম আর উল্লেখ করলাম না)।
তৃতীয়ত, সবকিছু করপোরেটাইজেশনের যে ট্রেন্ড, তাও কিছুটা ভাবায় আমাদের।
তবে আশার কথা, সবশেষে পাঠকের কাছে এক্সেপ্টেবিলিটিরও ব্যাপার আছে। বেক্সিমকো গ্রুপও পত্রিকা বের করে শেষ পর্যন্ত চালাতে পারেনি।
ভবিষ্যতে দুই/চারজন পাইকারী চাল বিক্রেতাকে পত্রিকা প্রকাশক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে দেখলেও অবাক হব না খুব একটা।
চমৎকার লেখা পান্থ।
কি মাঝি, ডরাইলা?
আরো নতুন পত্রিকার কী প্রয়োজন বুঝতে পারছি না! লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
মূর্তালা রামাত
এই পত্রিকাগুলো কি খুব বেশিদিন টিকবে?
মালিকদের খুব একটা সমস্যা হবেনা। কতগুলো সাংবাদিক বেকার হবে শুধু
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
এর পরে কি তাহলে আসবে "ফজরের আলো" বা "সুবেহ সাদেক" কিংবা "সহঅধিনায়ক"? এভাবে চলতে থাকলে তো নতুন পত্রিকা খুলতে চাইলে নামই পাওয়া কঠিন হবে।
আমি একটা জিনিস ভাবি সেটা হলো সবগুলো পত্রিকাই ঢাকা কেন্দ্রিক। লোকালাইজড ভালো কোন পত্রিকা আসছেনা। লোকাল কমিউনিটিকে প্রমোট করার মতো ব্যবসায়িক সাহস কারো হলোনা।
অফটপিক:
স্যারের নাম মুনাজ আহমেদ নূর। পেপারে ভুল ছাপাইছে।
---------------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
তখনও কিন্তু সংবাদপত্রগুলোর মালিক ঐ ব্যবসায়ীরাই ছিল। আজকের কাগজ,জনকণ্ঠ,মুক্তকণ্ঠ, ইনকিলাব, ইত্তেফাক...কোন পত্রিকা ছিল না ব্যবসায়ীর হাতে ? সরকারী হস্তক্ষেপও তখন ছিল, এখনও আছে।
তাহলে সমস্যাটা কোথায় ?
কোনো সমস্যা নেই। আগেও যা ছিল, এখনও তার কাছাকাছিই আছে। আমরাই শুধু স্মৃতিকাতরতায় ভুগি আর ভাবি সব শুদ্ধ হয়ে যাবে।
অবক্ষয় সবখানেই যদি হয়, সংবাদপত্রেও সে অবক্ষয় হবে। উত্তরন যদি অন্যসব সেক্টরে হয় সংবাদপত্রেও হবে।
অনেক সিরিয়াস আলোচনার মধ্যে আমার অফটপিক মন্তব্যঃ
পত্রিকা দুইটার নাম একটু খ্যাত লাগতেসে আর নাম পায়নাই? "দৈনিক অধিনায়ক"?!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
১০০ ভাগ ঠিক
সুমিমা
এটা টেবিলের ওপরের ব্যাপার। টেবিলের নিচে আরো ব্যবসা থাকার কথা। সংবাদ প্রকাশ করা সংবাদপত্রের কাজ, তবে কিছু সংবাদ চেপে যাওয়া সংবাদপত্রের জন্যে লাভজনক। কয়েকটা সংবাদপত্র মিলিয়ে পড়লে টের পাওয়া যায়, কখন কোন সংবাদপত্র আচমকা মৌন মেরে যায়। এই মৌন মেরে যাওয়ার পেছনে টাকাই সবচেয়ে জোরালো সম্ভাব্য ব্যাখ্যা।
সংবাদপত্র বাংলাদেশে লবিইস্টদের জায়গাটা নিয়ে আছে। কাজটা নিশ্চয়ই কমিশনবিহীন নয়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়! দুটো বিষয় উঠে এসেছে:
১। নতুন পত্রিকার আগমন এবং প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি
২। প্রতিযোগীতার কারনে আয় ঠেকাতে পত্রিকারগুলোর বিজ্ঞাপন দাতার পদলেহন
দ্বিতীয় কারনটা আসলে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় পত্রিকাগুলো ঠিক কোথায় ফেইল করছে। কেন বেনিয়া মুক্ত ব্লগ মাধ্যম দরকার। লক্ষণীয় বর্তমান বাংলা ব্লগের গুরুত্বপূর্ণ দুটো ব্লগই বেনিয়াধীন। আমাদের আসলে আরো নিরপেক্ষ সংবাদ মাধ্যম দরকার।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
বাংলাদেশে সংবাদপত্রের সংখ্যা নিয়ে কোনো পরিসংখ্যান কি অনলাইনে কোথাও আছে?
অনলাইনে কোথাও আছে কীনা বলতে পারবো না! তবে ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে-তে এ বিষয়ে বিস্তারিত আছে। রিপোর্টটা সংগ্রহ করতে পারলে আপনাকে জানাবো।
সংবাদপত্র কোনোকালে কি নিরপেক্ষ ছিলো নাকি থাকার কথা ছিলো? আমজনতার পত্রিকা বলে কিছু আছে? নাকি ছিলো?
সংবাদপত্র বেশিরভাগ সময়ই নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচারের কাজেই ব্যবহৃত হয় বা হইছে। ইত্তেফাক ঘোষণা দিয়াই একটি রাজনৈতিক দলের মুখপত্র ছিলো। দৈনিক সংবাদও তাই। দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক দিনকাল, দৈনিক ইনকিলাব সবগুলারই একটা না একটা উদ্দেশ্য ছিলো। দৈনিক জনকণ্ঠ বা আজকের কাগজও কি রাজনৈতিক ভাবাদর্শ প্রচারের জন্যই না? ভোরের কাগজও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তৈরি ছিলো। নয়া দিগন্তও।
দৈনিক বাংলা সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিলো।
তো এর কোনটার কাছ থেকে নিরপেক্ষতা আশা করেন বা পাইছেন কোনোকালে?
রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্য পত্রিকা হতো, এখন ব্যবসায়ীরাও আসছে। বেক্সিমকো মুক্তকণ্ঠ দিয়ে শুরু করছে। এখন একে একে সব ব্যবসায়ীই আসবে। অবাক হওয়ার কিছু নাই। এটাই স্বাভাবিক।
প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ আসছে। র্যাঙ্গস গ্রুপ করবে। অন্য ব্যবসায়ীরাও করবে। পত্রিকা বের করাটা ব্যাবসায়ীদের জন্য আরেক দিক দিয়েও লাভজনক। প্রচুর ট্যাক্স ফাকিঁ দেওন যায়। লগে মুফতে নিজের প্রচারণা, প্রতিদ্বন্দ্বীরে বাঁশ দেওয়া। এই সুযোগ কেন তারা ছাড়বে?
আর মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা যদি বলেন, তাহলে পত্রিকা যে খুশি সে প্রকাশ করবে, তা নিয়া আপত্তি কেন? ব্যাবসা করে বলে তার মত প্রকাশ করার অধিকার থাকবে না!
বিজ্ঞাপনের যে কথা তুলেছেন তাতে আরো কিছু যোগ করা দরকার ছিলো। আপনি মূলত তুলেছেন বেসরকারী বিজ্ঞাপনগুলোর কথা। কিন্তু পত্রিকাজগতের অন্যতম প্রভাবশালী বিজ্ঞাপন এখনো সরকারী বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে অনেক কাহিনী আছে, আপনি তা খুব ভালো করে জানেন। নামসর্বস্ব পত্রিকা যেগুলোর সার্কুলেশন বলতে নাই, তারাও প্রচুর পরিমাণে নিউজপ্রিন্ট পায়, বিজ্ঞাপন পায় সরকার থেকে, সেগুলোর কথা কে লিখবে?
আপনার মূল ভাবের সঙ্গেই আমি দ্বিমত পোষণ করি। আপনি পুরো লেখাটাই লিখেছেন "সংবাদপত্র থাকবে নিরপেক্ষ, তারা গণমানুষের কথা বলবে" এই কথা মাথায় রেখে। এরকম বুলি পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপনী পে অফ লাইন ছাড়া আর কিছু না। এগুলাতে আস্থা রাখে কেবল বোকা আমজনতারা। আপনি নিজে মিডিয়ার লোক হয়ে এসব বুলিতে আশা রাখছেন!
আমি জীবনে কখনোই সংবাদপত্রর কাছ থেকে নিরপেক্ষতা আশা করি নাই। করিও না। একাধিক সংবাদপত্র পড়ে, চোখকাননাকগলা খোলা রেখে সত্যটা নিজ দায়িত্বে খুজেঁ নিতে হয়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পত্রিকার রাজনৈতিক বিশ্বাস নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। তার রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতেই পারে। কিন্তু কনকর্ডের প্রেস রিলিজ প্রথম আলোর নিউজ হলে পাঠক হিসেবে নিজেকে প্রতারিত লাগে।
বসুন্ধরার আর একটা বের হচ্ছে। এবার ইংরেজি, "the daily sun"। আর একটা কি জানি আছে বাংলা নিউজ নামে।
অফটপিকঃ মুনাজ স্যার ছিল ঐ কমিটিতে??!!! ভালো।
বিজ্ঞাপনের কথায় আসি। বিজ্ঞাপন হল কাগজের প্রাণ, একটা কাগজ বের করতে যা লাগে তার কিয়দংশ কাগজের মূল্য থেকে আসে না। যেখানে মূল্য ৮টাকা, সেখানে কাগজ বের করতে ২৬ টাকা(প্রথম আলো) থেকে ৩২ টাকা লাগে(কালের কণ্ঠ)। বিশাল এই ঘাটতি মেটানো হয় বিজ্ঞাপন দিয়ে। অবশ্য টেবিলের নিচের চালাচালি তো আছেই। তাছাড়া রাজনৈতিক ভয়ভীতিও কাজ করে।
কয়েকটা পত্রিকা আমি জানি না কোন পন্থী, জানলে ভালো হত। new age একটা। তেমন একটা বিজ্ঞাপন ছাপায় না(অনেক আগে দেখছিলাম, এখন চেঞ্জ হয়ে গেছে কিনা কে জানে)। তারপর observer।বাবা একসময় এখানে কাজ করতো। ৯১ এর আগে। observer কোন পন্থী জানি না, শুনেছি এখন খুব খারাপ অবস্থা।
৯১ এ এসএম আলীর আন্ডারে ডেইলী স্টারে যোগ দেয় বাবা।
যাই হোক, মাহফুজ আনমের আগে এসএম আলী ছিলেন এডিটর, তৌফিক আজিজ খান ছিলেন বড় কোন দায়িত্বে।
অনেককিছুই ঘটে টেবিলের নিচে, অনেককিছুই। নিচে বললেও ভুল হতে পারে, এখন উপর দিয়েই ঘটে। খালি আমরা পর্দার ওপাশে থাকি।
আর আমাদের সিস্টেমের কারণে এ ব্যাপারে কোনকিছুই করা যায় না।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
হাত শক্তিশালী হবে না তবে কিছু মানুষের পকেট শক্তিশালী হবে
আমার নিক : সাধারণ
দেশে পয়সাওয়ালা লোকজন বাড়তেছে, খরচাপাতির লোকজন বাড়তেছে, বিনিয়োগে মাধ্যমে খ্যাতি পাওয়ার বাসনাওয়ালা লোক বাড়তেছে, এই অবস্থায় দেশে টিভি চ্যানেল আর পত্রিকার সংখ্যা তো বাড়বেই। অবাক হই না তাই।
বিদ্যুত মিত্র 'সুখ-সমৃদ্ধি' বইয়ে বোধহয় বলেছিলেন, পয়সাকড়ি যথেষ্ট কামানো হয়ে গেলে মানুষজন খ্যাতি অর্জনের দিকে নজর দেয়।
সেদিন খবরে দেখলাম এটিএন বাংলার ডঃ(!) মাহফুজুর রহমান কি একটা অনুষ্ঠানে উপদেশ খয়রাত করছেন বাঘা বাঘা বুদ্ধিজীবিদের সামনে বসিয়ে।
মজাই লাগে!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার যদি কোনদিন সেরকম টাকা পয়সা হয় তাহলে ন্যাটজিওর মত একটা চ্যানেল খোলার ইচ্ছে আছে। এত চ্যানেল দেশে অথচ মৌলিক কোন প্রোগ্রাম নেই। এমন না যে টাকার অভাব আছে, ওরা এসবে টাকা খরচ করতে চায় না।
নতুন মন্তব্য করুন