লাবন্য আপার সাথে পরিচয় সেই ২০০০ সালে। একটি পত্রিকা অফিসে। তথন সবেমাত্র ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। হলে থাকি। রাস্তাঘাট তেমন একটা চিনে উঠতে পারিনি। কোথায় কী আছে তাও জানি না ঠিকমতো। লাবন্য আপা আমাকে ঢাকা শহর ও তার সাহিত্য-সংস্কৃতির অলিগলি চেনানোর দায়িত্ব নিলেন। নাহ্, লাবন্য আপা আমাকে নিয়ে সারা শহর ঘুরে বেড়াননি। ভোরের কাগজের পাঠক ফোরামের সেই আড্ডায় বললেন, তুই প্রতিদিন পত্রিকার ‘আজকের ঢাকা’ বলে এক কলাম একটা লেখা বের হয় প্রতিটি পত্রিকায়। সেটা দেখবি। সেখানে ঢাকায় কোথায় কী অনুষ্ঠান আছে, তা জেনে যাবি। তোর যেটা পছন্দ সেটাতে চলে যাবি।
তারপর পাঠক ফোরামের অনেক আড্ডায় গেছি। লাবন্য আপাকে পরে খুব একটা দেখিনি। যোগাযোগও রাখা হয়ে উঠেনি আর। তবে তার কথা মতো ‘আজকের ঢাকা’ কলামটা পড়ে অনেক অনুষ্ঠানে চলে গেছি। বিশেষ করে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক অনুষ্ঠানে। চিনেছি অনেক মানুষকে।
এখন পত্রিকাই পড়া হয় না। ব্যস্ততার চাপে কোথায় কী হয়, তারও খবর রাখা হয় না। তবে অনেকদিন পর আজ সকালে পত্রিকার ই-ভার্সন দেখতে অনলাইনে ঢুঁ মারলাম। উদ্দেশ্য ছিল ‘আজকের ঢাকা’য় কী আছে তার খোঁজ নেয়া। গতকাল আশুরা’র ছুটি ছিল। আজ তাই পত্রিকা বেরোয়নি। জানা হলো না ঢাকার অনুষ্ঠানের খোঁজখবর।
আজকে ঢাকায় হে ফেটিস্টভ্যাল আছে। জাদুঘরে, শিল্পকলায়, টিএসসিতে হয়তো আরো অনেক অনুষ্ঠান আছে। মিডিয়ায় হয়তো সে খবর অনেক বড়ো করে আসবে। আপনি জানবেন। তবে ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে উল্কাবৃষ্টি পর্যবেক্ষণের যে অনুষ্ঠান আজ আয়োজন করা হয়েছে, সে খবর আমাদের মিডিয়া আপনাকে দিবে না। হে’র আন্তর্জাতিক তকমার কাছে এ আয়োজন নস্যি অতি।
বিজ্ঞান সংগঠন ডিসকাশন প্রজেক্ট এবং নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আজ বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত লিওনিড উল্কাবৃষ্টি পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে উল্কাবৃষ্টি দেখা যায়। দেখা পাওয়া উল্কাবৃষ্টির মধ্যে অন্যতম লিওনিড উল্কাবৃষ্টি। নদীর পাড়ে বসে গীতিবাদ্য, কবিতা আর নৃত্যের সঙ্গে উল্কাবৃষ্টি পর্যবেক্ষণ চলবে। থাকবে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন, বিজ্ঞান তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা।
আমাদের চারপাশে হাজারো হেফাজতি মনের বসবাস। এই অন্ধকার দূর করতেই আমাদের তাকাতে হবে বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্যতার দিকে। আমাদের হতে হবে মহাজাগতিক পথের পথিক। তাই আজ মহাজাগতিক উত্সবে সামিল হতে আপনিও চলে আসতে পারেন নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে। টেলিস্কোপে চোখ রেখে দেখতে পারেন মহাজাগতিক আলোকচ্ছটা।
মন্তব্য
এমন আয়োজন হোক, হয়ে চলুক ক্রমাগত। উদ্যোক্তাদের সকলকে অভিনন্দন।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আকাশ পর্যবেক্ষন সফল হোক।
সাইডনোটঃ নারায়নগঞ্জ বানানটা ভুল আছে পোস্টারে
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
চলুক এমন উদ্যোগ। সশরীরে না থাকতে পারলেও সমস্ত মন নিয়ে আছি।
ভালো থাকবেন।
----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
ঢাকায় থাকলে এমন উত্সবে অনায়াসে যোগ দিতে পারতাম। মহাজাগতিক উত্সব সফল হোক।
শব্দ পথিক
নভেম্বর ১৬, ২০১৩
আসিফ ভাইয়ের মহাজাগতিক পথে বইটা পড়ে মুগ্ধতায় কেটেছিলো কয়েকটা দিন, আসিফ ভাইয়ের ডিসকাশন প্রজেক্ট ও অসাধারণ এক প্রয়াস বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়ে তুলতে। ঢাকায় নেই বলে প্রোগামে থাকতে পারছিনা, শুভকামনা থাকল।
মাসুদ সজীব
কালকে-আজকে অনেকক্ষণ তাকায়া ছিলাম আকাশে। কোনো উল্কাই দেখি নাই।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আকাশে যে রাশিফল ছাড়াও অনেক অনেক জিনিস আছে দেখার জন্য সেটা জানা অনেক জরুরি।
আমাদের দেশে বিজ্ঞান মনস্কতা ছড়িয়ে দিতে যাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের স্যালুট।
কালকে তো শরৎকালের মত পেঁজা মেঘের ঠেলায়ই বাঁচা যাচ্ছিল না... উল্কা বহুত দূর অস্ত...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন