কবিতা স্বতস্ফূর্তভাবে আসে। কবিতা স্বতস্ফূর্তভাবে লিখি।
ওপরের কথাগুলি অনেক কবির কাছ থেকেই আমরা শুনেছি। আমাদের মতো তরুণ কবিতাপ্রয়াসীরাও তো বলে থাকি এমন কথা।
কিন্তু 'স্বতস্ফূর্ত কবিতা' মানে কী?
কবিতায় স্বতস্ফূর্ততার ভূমিকাই বা কী?
ভাবছি বিষয়টা নিয়ে। কেউ কি ভাবনা বিনিময় করে সাহায্য করবেন?
মন্তব্য
কবি গুরু অনেক দিন পর লেখায় প্রাণ পেলেন আর লিখলেন "আজি এ প্রভাতে রবির কর, কেমনে পশিল প্রাণের পর।" হয়তো এটাই স্বতস্ফুর্ততা। আমার তাই মনে হয়। মৈত্রয়ী দেবী অথবা প্রমোথ নাথ বিশী কারো লেখায় পড়েছিলাম-কবি এই অবস্থার কথা। যে কবিতা গুলো অবসরে আর অন্য কাজের ভিড়ে লিখেছেন তবে কি তাঁর গুলো কবিতা নয়!
আসল স্বতস্ফুর্ততা সেই সময়ের ভাবের আর দেখার। একজন কবি রাস্তার পথচারীকে রমণীয় দেখে রমণী ভাবে পংক্তি রচনা করলেন। অন্য জন সেই পথচারীকে মাতৃরূপে দেখে শ্রদ্ধায় অবনত হয়ে- শুরু করলেন কবিতার চরণ। দুটি কবিতাই সৃষ্টির সুখরসে ভরা। যদিও ভাবের ভিন্নতায় তাতে কি।
আমি আমার ভাবনার কথা বললাম এটা কোন ছকে বাঁধা থিওরী নয় বা কোন উদ্ধৃতি। যাপিত জীবন আর মননের উচ্চারন মাত্র।
দেখি মৃত্যু, আগুন আর নির্বাচন এমন সময় কেউ কি আপনার ডাকে সাড়া দেবেন? তবে ঋদ্ধ হতে পারতাম।
আর ঐ যে বিদ্রোহী কবির উচ্চরণ-'আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে' সেতো স্বতস্ফুর্তভাবেরই প্রকাশ।
স্বতস্ফুর্তভাবে আপনি আপনার দেখা রঙএর বর্ণনা করতে পারেন।
স্বতস্ফুর্তভাবে আপনি আপনার বিশ্বাসের বর্ণনা করতে পারেন।
স্বতস্ফুর্তভাবে আপনি আপনার ধিক্কার জানতে পারেন সেই সব ঘৃণিতদের। আর যা করেন তা কিন্তু অজান্তেই সেই স্বতস্ফুর্ততারই প্রকাশ। আসল কথা আপনার প্রতিটি ভাবের প্রকাশেই স্বতন্ত্র স্বতস্ফুর্ত। তাই চিন্তা ছাড়া লিখুন না আমাদের খোরাকের বিষয় বস্তু। আগামীর প্রত্যাশায়।
মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....
এভাবে মনে হয় কারো সাড়া পাবেন না। থট প্রোভোক করতে হবে। আপনি আপনার আইডিয়াগুলো শেয়ার করুন। কী কোয়েশ্চেন জুড়ে দিন। দেখবেন পাঠকেরা ভাবা শুরু করেছে।
আমার দুই পয়সা।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
তোমার টুকরো টুকরো কথাদের কুঁড়ি
একদিন যদি ফুল হয়ে ফোটে-
আকাশের নীচে মেলে দেয় ওর পাপড়িদের,
যদি পাখির মতন ডানা মেলে দেয় ওরা-
তবে ওদের উড়ে যেতে দিও।
অনেক অনেকদিন পরে
অনেক সমুদ্র, নদী, পাহাড় পার হয়ে-
অনেক শহর বন্দর গ্রাম সফর শেষে-
হয়তো তারা ফিরে আসবে তোমার কাছেই,
নতুন কোনো স্বর নিয়ে, নতুন সূর্যপিয়াস নিয়ে
অচেনা বৃষ্টিগান নিয়ে, অজানা জ্যোত্স্নাবিলাস নিয়ে......
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয়-
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
'স্বতস্ফূর্ত কবিতা' মানে যা আসে নিজ থেকে, মনের ভেতর উৎসারিত হয় এবং যা আমার আসছে না ব হুকাল ...... ..... .....
জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা
ছড়ায় যেথায় ছন্দ মিলায়,
কবিতা সেথা ভাবের ঝুড়ি,
গদ্য হলে সেথায় শুধু
ভাবের কথার ফুলঝুড়ি।
আমার ধারণা, হঠাৎ কোন কারণে মনে ভাবের উদয় হল আর রচনা করে ফেললেন ... সেটা হল স্বতস্ফুর্ত।
আর, একটা ঘটনা ঘটার পর, রচনা করতে ইচ্ছা করছে কিন্তু লাইনগুলো মাথায় আসছে না .. তাই লিখলেন, কাটাকুটি করলেন (ডিলিট), আবার লিখলেন .... কলমের মাথা কামড়িয়ে ভাবলেন বা কীবোর্ড ছেড়ে মাথার পেছনে হাত দিয়ে ভাবতে থাকলেন, কী লিখলে ভাল হয় বা ঠিকভাবে ভাব ফুটে উঠে ---- এগুলো সম্ভবত স্বতস্ফুর্ত না। ধরেন কারো সন্তান হল, ভাবলো এই উপলক্ষে একটা কবিতা রচনা করি, তারপর জোর করে একটা কবিতা পয়দা করলো - এটা স্বতস্ফুর্ত না।
ছড়া লিখি ... মাথায় ঘুরঘুর করছিলো, ঘুম বাদ দিয়ে উঠে কীবোর্ড চেপে নামিয়ে ফেরলাম .... মাথার পোকা বের করে ছেড়ে দিলাম। -- এটাকে কী বলবেন?
সচলের কবিগণ কোথায়?
--------আপডেট---------
অনেক আগে এক বন্ধু বলেছিল আধুনিক কবিতা লেখা খুব সোজা ... যে কোন একটা বিষয়ে বোর্ডে সাধারণ কথাবার্তা লিখে তারপর দুই পাশ মুছে দিলে ওটা নাকি কবিতা হয়ে যায় ..... এরকম হলে সেটা স্বতস্ফুর্ত হবে না বলেই মনে হয়। না মুছেই, শুধু মনের ভাবে ওরকম লাইন লিখলেই সেটা স্বতস্ফুর্ত।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
নতুন মন্তব্য করুন