অকুতোভয় সাংবাদিক টিপু সুলতানের কথা মনে আছে? দৈনিক প্রথম আলোর ঢাকা অফিসে চাকরি করছেন যে টিপু সুলতান সেই টিপু সুলতান নয়; এ হলো ঢাকায় পেৌছানোর আগে ফেনীতে প্রথম আলোর প্রতিনিধি হয়ে ছিলেন যে টিপু সুলতান তিনি। সেই সময়কার আওয়ামী এমপি জয়নাল হাজারীর ক্যাডারদের মারধরে যিনি কলম ধরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন সেই টিপু সুলতান।
টিপু সুলতানকে কলম ধরার শক্তি ফিরিয়ে দিতে একটা চিকিত্সা-তহবিল গড়েছিল প্রথম আলো। সেই তহবিলের (খুব সম্ভবত) টাকায় থাইল্যান্ডে চিকিত্সা নিয়ে সুস্থ হয়ে আবার কলম ধরেন টিপু সুলতান।
***
গতবছরের ঘটনা। সময়টা ঠিক মনে নেই। প্রথম আলোরই এক সংবাদকর্মী তেজগাওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারালেন। তার জন্যও চিকিত্সা-তহবিল গঠন করে দেশের মানুষের কাছে সাহায্য চাইলো প্রথম আলো।
দুবারই পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় দুই কলাম আকারে দীর্ঘ সময় ধরে তহবিল সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনটি ছেপেছিল প্রথম আলো।
***
এবছর একটা খবর এসেছে প্রথম আলোয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার চিকিত্সা-ব্যয় এত বিপুল যে পরিবারের পক্ষে বহন করা আর সম্ভভ হচ্ছে না। তাই মুক্তিযোদ্ধাটির জন্য 'সাহায্যের আবেদন' জানিয়েছে পত্রিকাটি।
মুক্তিযোদ্ধার চিকিত্সার জন্য সাহায্য চাওয়ার খবরটি এসেছে প্রথম আলোর ভেতরের কোনো এক পৃষ্ঠায়। দায়সারা সাদামাটা 'সাহায্যের আবেদন' শিরোনামে। না, কোনো দুই কলাম বিজ্ঞাপন তৈরি হয়নি মুক্তিযোদ্ধার চিকিত্সায় সাহায্যের আবেদন জানিয়ে। এই মুক্তিযোদ্ধার নাম এ যে এস এম খালেদ।
পুনশ্চ : উল্লেখ করা সবগুলো সাহায্যের বিজ্ঞাপন (ও 'সাহায্যের আবেদন') প্রকাশের সময়টিতে পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন সেই মতিউর রহমানই। এই প্রথম আলোই বইয়ের ব্যবসায় প্রথম পা ফেলেছে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দ দুটিকে পুজি করেই। প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের চিঠি সংগ্রহ করে মানুষের আবেগকে পুজি করে বই-ব্যবসা শুরু করেছে পত্রিকাটি। সেই বইয়ের বিক্রি থেকে পাওয়া টাকার কণামাত্র অংশও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরীরা পাবেন কি-না তার কোনো হদিশই নেই বইটিতে। আর বইটির স্বত্ত্ব সেই মহান ব্যক্তি মতিউর রহমানেরই।
মন্তব্য
প্রথম আলোকে এখানে যেভাবে সাইজ করা হয় তাতে (চিকিৎসা-সহায়তায় সচলায়তনের ভূমিকা বিবেচনায়) এটুকুই যে করেছে তা-ই বা কম কি?পত্রিকা তো ব্যবসা বটেই এবং সেটাকে সময়ের প্রয়োজনে 'রাইট ডিরেকশনে' সম্প্রসারিত করাটাও কিন্তু বিচক্ষণতার লক্ষণ
হাঁ, ব্যবসায়িক বিচক্ষণতায় প্রথম আলো পটু তো বটেই !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
তাও তো কিছু একটা ছেপেছে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
দেখা যাক, সাপ্তাহিক ২০০০ এ কয় কলাম ছাপায়।
সাপ্তাহিক ২০০০-এ কলামই আছে মাত্র তিনটা। ২০০০- যদি এক কলামও না-ছাপায় তাতে প্রথম আলোর অপরাধ খারিজ হয় না।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
এরচে খুব বেশী কিছু কি আশা করার ছিলো পলাশ?
নির্মোহভাবে একটা কথা বলিঃ-
মুক্তিযোদ্ধা এসএম খালেদ আমাদের কাছের জন, তাই আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি। কিন্তু এই মুক্তিযোদ্ধা যদি আমাদের বন্ধুর বাবা না হয়ে অন্য কেউ হতেন, আমাদের সাথে সংশ্লিষ্ট নন এমন কেউ? পত্রিকায় আনাচে কানাচে এমন কতো তো আমরা ও দেখি- সবগুলোতে কি আমরা ও উদ্যোগী হই, হতে পারি? হয়তো অন্য কেউ হন, হয়তো কোন ক্ষেত্রে কেউই হননা ।
যে সাংবাদিকদের উদাহরন দিলেন তারা প্রথম আলোর কর্মী, পেশাগত কারনেই তারা আহত হয়েছেন । সুতরাং তাদের চিকিৎসার বিষয়ে দায়বদ্ধতা প্রথম আলোরই । কিন্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা কিংবা এমনি একজন মানুষের চিকিৎসায় কোন পত্রিকার কিন্তু কোন দায়বদ্ধতা নেই ।
দায়বদ্ধতা যদি কিছু থাকে সেটা এই রাষ্ট্রের । একজন মুক্তিযোদ্ধার তো অবশ্যই- যে কোন সাধারন মানুষের চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের । আমাদের দুর্ভাগ্য- সেরকম রাষ্ট্র আমরা গড়তে পারিনি এখনো ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
মনের কথা বললেন।
কাছের জন বিষয়ক যে-বক্তব্যটি আপনি দিলেন সেটা ঠিক।
আমার সমস্যাটা অন্য জায়গায় : আপনি মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসা করবেন, সেই ব্যবসা নিয়ে হাউকাউ করবেন; অথচ মুক্তিযোদ্ধার চিকিত্সার বিষয়টি আপনার কাছে গুরুত্ব পাবে না- এটা তো সততার লক্ষণ না।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যারা 'ব্যবসা' করে তাদের কাছে আপনি 'সততা'র লক্ষণ খোঁজেন ?
নাহ, পলাশ দত্ত কবিই হয়ে থাকলো মানুষ হইলোনা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নির্বাক। ভাবছিলাম ব্যবসা তো করেই ফেলছে; চক্ষুলজ্জার খাতিরে বোধহয় একটু সত্ হওয়ার চেষ্টা করবে-এই আরকি।
আর একটা বিষয় হলো পত্রিকার কর্মী আহত হলে তার চিকিত্সার ব্যবস্থা পত্রিকারই করা উচিত; উল্লেখিত ক্ষেত্রে দুইটাতে তো আরো বেশি। কারণ তারা পত্রিকার সংবাদ-সংশ্লিষ্ট কারণেই আহত হইছিলেন। তাদের চিকিত্সার ব্যবস্থা পত্রিকার পক্ষ থেকে না-ক'রে দেশের জনগণের ওপর চাপায়ে দিছিলো প্রথম আলো। এই তো।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
এটা ও ব্যবসা পলাশ , যারা ব্যবসা করতে জানে তারা সবকিছু নিয়েই করে ।
অন্য আরেক পোষ্টে বলেছিলাম-কোনদিন যদি রাজাকারের চেতনা'র সুদিন আসে এই দেশে সেদিন রাজাকারদের চিঠি ছেপে ও কেউ কেউ পয়সা বানাবে । এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাজার আছে সুতরাং এটা একটা পণ্য, যারা ব্যবসা করবে তাদের কাছে ।
এটা নিয়ে আমরা হা-হুতাশ করবো এই যা । প্রত্যশা কমিয়ে ফেললে হা-হুতাশ একটু কম হয় , সেই ভালো ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
কারো কারো লেখা পড়লেই মনে হয় "আরে এটাতো আমি বলতে চেয়েছিলাম। " হাসান ভাই তেমন একজন।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
@ হা হা হা হা... এই মন্তব্যে ব্যাপক জাঝা...
আর কিছুই বলার নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
@হাসান মোরশেদ
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
'সাহায্যর আবেদন' কথাটাই মেজাজ খারাপ করে দিল।
লাগবোনা আমাদের এইসব সাহায্য টাহায্য, জাকাত- ফেৎরা। নিজের বাপ-ভাই মনে করে , ঋন শোধের অমূল্য সুযোগ মনে করে কিছু করলে কর, নাইলে গিয়া মুড়ি খাও। আমাগো বাপ, আমরা আছি শত ভাই, আমরাই দেখবো।
'সাহায্যর আবেদন' শিরোনামের সব রকম তুচ্ছ তাচ্ছিল্য বন্ধের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।
হ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পলাশদা, তিন কলাম চওড়া করে খালেদ চাচার সিচুয়েশনটা সংক্ষেপে উল্লেখ করে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাটা দেয়া যায় না ২০০০ এ? এর শিরোনাম হওয়া উচিত "ঋণ শোধ করুন"। আমরা মুখ বন্ধ করে বিশ্বব্যাঙ্ক, এডিবি, আইডিবির ঋণ শোধ করি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছে ঋণ শোধ করতে গেলেই হয়রান হতে হয়।
হিমু ভাইয়ের এই কথাটা আমার খুব মনে ধরছে। এভাবেই করা উচিত। সাহায্যের আবেদন নয় ঋণ শোধ করুন জাতীয় শিরোনাম হওয়া দরকার। কথাটার মধ্যে একটা মেরুদন্ড খাড়া ভাব আছে।
নতুন মন্তব্য করুন