রথীর বিদ্যাদেশে রবি-সন্দেশ

পলাশ দত্ত এর ছবি
লিখেছেন পলাশ দত্ত (তারিখ: মঙ্গল, ১৩/১০/২০০৯ - ১২:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমেরিকা গেলেন। প্রথম। ১৯১২ সালে। লন্ডনে উইলিয়াম রোদেনস্টেইনের হাতে ইংরেজি গীতাঞ্জলির পাণ্ডুলিপি রেখে আমেরিকার দিকে পা বাড়িয়েছিলেন। পা ফেলার আগে লন্ডনে তার অল্পবিস্তর আলোকসঞ্চারী খ্যাতি অর্জন হয়েছিলো। তিনি সেখানে থাকতে থাকতেই তো ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিলো গীতাঞ্জলির ইন্ডিয়া সোসাইটি সংস্করণ প্রকাশের ব্যবস্থা। তা বেরুনোর আগেই পৌঁছে গেলেন আমেরিকায়। নভেম্বর এক তারিখে বের হলো গীতাঞ্জলি, রাস্তা-পরিক্রমা শেষে দুই তারিখে তিনি পা ফেললেন আমেরিকার আরবানায়। উঠলেন সেখানে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের, মূল ক্যাম্পাসটা ওখানে, অধ্যাপক এ আর সেমুরের বাড়িতে। উদ্দেশ্য ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ইলিনয় ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি করবেন।

তখন আরবানা থেকে দৈনিক পত্রিকা বেরোয় কয়েকটা। ইলিনয় ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয় ডেইলি ইলিনি। আর একটি আরবানা ডেইলি কুরিয়ার। এটা প্রকাশ শুরু ১৮৯৭ থেকে। নভেম্বরে রবীন্দ্রনাথ সেখানে পৌঁছানোর পরপরই ২ তারিখে তৃতীয় পৃষ্ঠায় ছাপা হলো তার সেখানে আতিথেয়তা নেয়ার আগাপশতলাসহ খবর। যে-সেমুরের বাড়িতে উঠলেন রবীন্দ্রনাথ তার কথা একটু পরেও এ লেখায় আসবে। রবীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খ-ন বিষয়ে। এবং অবাক হয়ে দেখবো যে-অভিযোগ নিয়ে তিনি কথা বলছেন সে-অভিযোগ ছাপলেও এ প্রসঙ্গে সেমুরের বক্তব্য ছাপেনি আমেরিকার বড় দুই পত্রিকা।


ডেইলি কুরিয়ারে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে দ্বিতীয় খবর ছাপা হচ্ছে ১৯১২-রই ১০ ডিসেম্বর। যদিও মাসখানেক আগের খবরের শিরোনামে রবির পরিচয় ছিলো ‘ভারতীয় কবি’, এবারের খবরে তার পরিচয় বদল হয়েছে। পত্রিকাটি তাকে চিনলো এবং পাঠকের কাছে চেনালো ‘বাংলার কবি’ হিসাবে। ছাপা হলো সপ্তম পৃষ্টায়। শিরোনামের নিচে ছোটো হরফে এও জানিয়ে দেয়া হলো যে এই লোকটাকে ভারতের কবিতায় নবজাগরণের নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়। এবং কসমোপলিটন ক্লাব তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। বলা হলো : “পোয়েট্রি ম্যাগাজিনের বরাত দিয়ে শিকাগো ট্রিবিউনে এক সম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে। তাতে রবীন্দ্রনাথকে বলা হয়েছে ভারতের কবিতার নবজাগরণের নেতা।”

তারপর এলো ১৯৬ সাল। এইবার সরব হলো ইলিনয় ইউনির পত্রিকা ডেইলি ইলিনি। ২২ অক্টোবর চতুর্থ পৃষ্ঠায় খবর ছাপা হলো ‘কবির আসা’ শিরোনামে। বলা হলো : “দ্বিতীয়বারের মতো কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগমনে সম্মানিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। তিন বছর আগে নীরবে এসে চলে গিয়েছিলেন তিনি। পাঁচ মাসের ওই সফরের সময় তার কয়েকজন অনুরাগী ছাড়া কেউ টেরই পায়নি তার আগমনবার্তা। তারপর তো তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতিমান হলেন। ... রবীন্দ্রনাথ আসছেন। চিরাচরিত পশ্চিমা আতিথেয়তায় তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হওয়া উচিত আমাদের।”

(আর দুই কিস্তিতে এই লেখা শেষ হবে)

স্বত্ত্ব :: পলাশ দত্ত


মন্তব্য

এস, কে, নির্ভানা এর ছবি

রবি ঠাকুরে বিষয়ে এতকিছু জানা ছিল না । পড়ে জানলাম ।

নির্ভানা

পলাশ দত্ত এর ছবি

আমি খুজেটুজে এগুলা নিয়া লিখতেছি বটে, কিন্তু এগুলার আসলে কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না। হাসি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

s-s এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।